তিন মাস আগে চীনে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। তারপর আমাদের চোখের সামনেই এক এক করে বিশ্বের বহু দেশে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে দেখেছি আমরা। ইউরোপ-আমেরিকার তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান চীনের অতি নিকটে। সেই হিসেবটুকু ধর্তব্যে নিয়েও আমরা সচেতন হবার এবং এ ভাইরাস মোকাবেলা করা জন্য অন্য অনেক দেশের তুলনায় বেশি সময় পেয়েছিলাম। কারণ, চীনে সংক্রমণের মাস তিনেক পর এই ভাইরাস আমাদের দেশে বিস্তার ঘটেছে। কিন্তু আমাদের দূর্ভাগ্য যে নূন্যতম কোন ব্যবস্থা তো নেয়াই হয়নি উলটো এক ধরনের তথ্য গোপনের মানসিকতা সরকারের আচরণে ফুটে উঠছে বার বার। যার ফলাফল আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি সবাই। শুধু এই একটি ঘটনাই নয়, গত এক যুগে অজস্র বিষয়ে আমরা এই সরকারের এমন উদাসীন আর অবহেলার নজির দেখে আসছি। এটা জাতি হিসেবে আমাদের চরম দূর্ভাগ্য যে এরাই আমাদের শাসক। আজ আপনারা ইজতেমা মাঠে করোনা রোগীদের কোয়ারিন্টিন করার কাজে হাত দিচ্ছেন! অথচ আরো এক মাস আগেই এই কাজটা করে রাখতে পারতেন। এখন পারলে আগেও পারতেন। সারা দেশের সকল হাসপাতালে আপনাদের পক্ষে যে ব্যাবস্থা নেয়া সম্ভব না সেটা স্বীকার করে নিতে অসুবিধে কোথায় ছিল? এখন তো সব কিছুই প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছে- আপনাদের সীমাহীন ব্যর্থতার অগনিত চিত্র! কিন্তু আরো এক মাস আগ থেকেই আপনারা যদি শুধু মাত্র বিমান বন্দরে পর্যাপ্ত ব্যাবস্থা নিতেন তাহলে আজ পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ হতো না। যারাই বিমানে করে আসছেন তাদেরকে সরাসরি সেখান থেকে একটি পূর্ব নির্ধারিত হাসপাতালে নিয়ে ১৪ দিন উত্তম পরিবেশে পর্যবেক্ষনে রাখতে পারতেন। বেশি চাপ হয়ে গেলে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ রাক্তে পারতেন। তাহলে অন্তত আর সারা দেশ নিয়ে উদবিগ্ন হতে হতো না। কারণ, এখন অব্দি যে ক'জন আক্রান্ত হয়েছে তার সবই বিদেশ ফেরত মানুষের সাথে রিলেটেড বলে জানি। সুতরাং আমাদের আক্রান্ত হবার মূল জায়গাই হলো বিমান বন্দর, যা আমরা এখনকার পরিস্থির চেয়ে আরো সহজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারতাম। কিন্তু আমরা এতো গলাবাজি করি যে কাজ করার সময় কোথায় আমাদের? "উন্নয়নের মহা সড়ক" আর "উন্নয়নের রোল মডেল" দিয়ে এখন সরবত গুলে খান আপনারা? মানুষ যদি সত্যিই আরো বেশি মরে তাহলে কারো রেহাই নেই- এমনকি যারা দেশের টাকা লুট করে বিপদ দেখলেই বিদেশে পালানোর আগাম বন্দোবস্ত করে রেখেছে তারাও নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৯