বি.দ্র. কারণ বেশীর ভাগ টাইম এয়ারপোর্ট থাকার কারণে এবং সানুরে পৌছাতে রাত হয়ে যাওয়ায় কারণে ১ম দিনে দেয়ার মত কোন ছবি নেই।
চারপাশে নানা বর্ণের এবং নানা ভাষার মানুষ। তিন মাসের বাচ্চা থেকে শুরু করে ৬৫ বছরের মানুষ। ইমিইগ্রেশন এরিয়াতে পুরোই হাউ কাউ অবস্থা। বালি এয়ারপোর্ট মোটামুটি সাজানো গোছানো হলেও এই মুহূর্তে প্রচন্ড ভীড়। ৭/৮ টা ইমিগ্রেশন কাউন্টার হলেও কাউন্টার পর্যন্ত পৌছাতে অনেক সময় লেগে গেল।
আমি আর আমার জামাই আলাদা কাউন্টারে দাড়িঁয়েছিলাম।পরে Husband & Wife শুনে আরেক কাউন্টারে নিয়ে গেল।পাসপোর্ট, হোটেল বুকিং সব চেক করে এন্ট্রি ভিসা সীল মেরে দিল।এরপর দৌড়াতে দৌড়াতে গেলাম Luggage Counter-এ।এসে দেখি আমাদের ব্যাগগুলো বেল্ট থেকে কেউ নিচে রেখে দিছে। ব্যাগ দুটা নিয়ে Exit path এর দিকে হাটা দেয়ার পথে একটা গোল মতন জায়গা আছে যেখানে Shelf ভর্তি বালির ম্যাপ, ট্যুরিস্ট ইনফরমেশন Brochures. আমাদের দরকার মত Brochure সংগ্রহ করে সোজা দিলাম হাটা।
এক্সিট গেট পার হয়ে গেলাম সীম কিনতে। এক্সিট গেটের আশে পাশে সীম কেনার জন্য দোকান পাবেন। আমরা Telkomsel-এর সীম কিনেছিলাম। ১২ জিবি ইন্টারনেট ডাটা সহ দাম নিয়েছিল ২,৫০,০০০ ইন্দোনেশিয়ার রুপিয়াহ। দাম বেশী নিছে তারপরও এয়ারপোর্ট থেকে কিনছি কারণ-
১) আমরা সানুরে ছিলাম, সেখানে Telkomsel-এর কোন Authorized Showroom নাই। কুটায় ওদের Showroom আছে কিন্তু কুটা যাওয়া সম্ভব না। আর ট্যুরিস্ট সীম অবশ্যই Registration করতে হয় না হলে সীম চালু করা যায় না। সময় স্বল্পতার কারণে সানুরে গিয়ে এইসব কিছু খোঁজারও সময় নাই।
২) Telkomsel এর নেটওয়ার্ক অন্য সব অপারেটরদের চেয়ে ভাল। Island গুলোতে খুব ভাল নেটওর্য়াক পাইছি। পরে বুঝছি ১২ জিবি না নিলেও চলতো। আমার খালি গুগল ম্যাপ দেখছি আর মাঝে মাঝে বাসায় ইমোতে কথা বলছি। কোনকিছু না করলে ৪ জিবি enough। হোটেলগুলার ফ্রি WI-FI এর চাইতেও আমার ইন্টারনেট ভাল কাজ করছে।
Landing থেকে শুরু করে সীম কেনা এই পর্যন্ত মোট সময় গেছে ২.৫ ঘণ্টা। সময়টা সবচেয়ে বেশী গেছে ইমিগ্রেশন লাইনে। ৩টা বিমান প্রায় একই সময়ে ল্যান্ডিংকরছে। সীম কিনতে সময় লাগছে ১৫ মিনিট। অবশেষে এয়ারপোর্টের বাইরে আসলাম। আগে থেকেই আমরা গাড়ি বুক করে রাখছিলাম। ড্রাইভার রবি। উনাকে পেয়েছি Imtiaz Uddin ভাইয়ের মাধ্যমে। ভাইকে পাইছি TOB গ্রুপ থেকে । উনি আমাকে রবির Whatsapp Number দিলে বাংলাদেশ থেকে যোগাযোগ করে নিয়েছিলাম। রবি ৩:০০ টা থেকে এয়ারপোর্টে বসে ছিল। আমাদের বিমান ল্যান্ড করার কথা ছিল বিকাল ৩:৩০ এ। কিন্তু ঘন মেঘের কারণে ল্যান্ডিং-এ ৪০ মিনিট দেরী হয়।
রবি নামের প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাড়িয়ে থাকায় আমরা সহজে উনাকে চিনে ফেললাম। কিন্তু আমার অবজারভেশন হচ্ছে- হোটেল পিকআপের জন্য আগে থেকে গাড়ী বুক করার কোন দরকার নাই। এয়ারপোর্টের এক্সিট দিয়ে বের হয়ে ব্লুবার্ড ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে চলে যাবেন। কাউকে বললেই চিনিয়ে দেবে ব্লুবার্ড ট্যাক্সি স্ট্যান্ড কোথায়। ব্লুবার্ড ট্যাক্সি মিটারে চলে। তাই ভাড়াও মিটার অনুসারে আসবে। বালির জ্যামে না পড়লে ভাড়া Reasonable । তবে এইখানে একটা ছোট সমস্যা আছে। কোনটা আসল ব্লুবার্ড ট্যাক্সি চিনবেন কিভাবে।
বালি হচ্ছে ফটিক চাঁদদের (ওভার চালাক) জায়গা। ব্লুবার্ড ট্যাক্সির কালার হচ্ছে নীল। এই নীল কালারের আরো অনেক ট্যাক্সি আছে যেমন- বালি ট্যাক্সি, হেন তেন ইত্যাদি। এখন ব্লুবার্ড ট্যাক্সি চিনবেন কিভাবে? ব্লুবার্ড ট্যাক্সির সামনে ও পেছনের কাচেঁ এবং দরজায় ব্লুবার্ড ট্যাক্সি কথাটা ইংরেজীতে লেখা থাকে। এই কথাটা মাথায় রাখবেন। না হলে আরো নীলের ভীড়ে আপনি গোলাপী হয়ে যাবেন। তাড়াহুড়া না করে একটু সময় নিয়ে ভালমত দেখে তারপর ট্যাক্সিতে উঠুন। উঠে ড্রাউভারকে বলুন কোথায় যাবেন আর মিটার চালু করতে বলুন। একমাত্র ব্লুবার্ড ট্যাক্সির ড্রাইভাররা কাজ চালানোর মত ইংরেজী জানে। বাকীরা খালি yes no জানে। ভুলেও অন্য কোন ট্যাক্সিতে চড়বেন না। এমন ঘুরানো ঘুরাবে ভাড়া হবে আসলের তিনগুন আর ড্রাইভারের ইংরেজী না জানা থাকার কারণে আপনি পড়বেন মহাবিপদে। আমরা ঠিক এমন বিপদে পড়ছিলাম শেষের দিকে সানুরে থাকা অবস্থায়।
যাই হোক রবি আমাদের নিয়ে গেল সানুরে । আমরা আগেই ঠিক করছিলাম সানুরে থাকব।সানুর বালিরই একটা শহর । অনেকে বলে গ্রাম্য শহর। প্রথমে মনে হয়েছিল ভুল সিদ্ধান্ত নিলাম কিনা, কুটাতে থাকলে ভাল হতো কিনা। পরে সব দেখে শুনে মনে হয়েছে সানুরে থাকটা একদম ঠিক হয়েছে। এরপর কখনও বালি গেলে এইখানেই থাকব।................চলবে..............
*** যেখানে সেখানে ময়লা না ফেলে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গাতে নিজে ময়লা ফেলুন এবং বাচ্চাদেরকেও এই বিষয়ে উদ্ধুদ্ধ করুন।
ভ্রমণের ১ম দিনের ১ম ভাগের লেখা পড়তে ক্লীক করুন- Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ২:৪২