এবার ঈদে গিয়েছিলাম ইন্দোনেশিয়ার বালিতে। বালির সানুর এবং গিলি আইল্যান্ডস মানে গিলি ট্রাওয়ারগান (সংক্ষেপে গিলি টি), গিলি মেনো এবং গিলি এয়ার। আমরা গিয়েছিলাম মালেশিয়ান এয়ার লাইনসে এবং ঈদের আগে আগে টিকেট কাটার কারণে টিকেটের দামও ছিল প্রচুর। এমনকী বাজেট এয়ার লাইনসের টিকেট প্রাইজ এবং মালেশিয়ান এয়ার লাইনসের টিকেট প্রাইজ প্রায় সমান সমান হয়ে গিয়েছিল। আমার মতে, ঈদে যদি কোথাও যাওয়ার প্ল্যান থাকে, তবে টিকেট ০৩ মাস আগেই বুক করা উচিৎ।নাহলে টিকেটেই অনেক টাকা চলে যায়। আর ঈদ ছাড়া অন্য সময়ে ১.৫-০২ মাস আগ থেকে টিকেট বুক করলে মোটামুটি রিজেনেবল প্রাইজে পাওয়া যায়। আমাদের Departure time ছিল রাত ০২:০০ টায়। ট্রানজিট ছিল মালেশিয়ায়, ০৫ ঘন্টার। আমরা অতি উত্তজেনায় ১০:০০ টার মধ্যেই এয়ারপোর্ট হাজির। শেষে হুদাই কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরি করে সোজা ইমিগ্রেশনে চলে আসলাম। ইমিগ্রশনে জিজ্ঞাসা করল কোথায় যাবেন, কতদিন থাকবেন, চাকরী করি কিনা জানতে চাইল। আমি চাকরী করি জানার পর Office permission দেখতে চাইল। আমার Travel order ইমিগ্রেশন অফিসারকে দেখালে সে খুব ভাল মানুষের মত মুখ করে বলল, আপা আমি এই Travel order টা রেখে দেই। আমি বললাম দেন।আমার জামাই জিজ্ঞাসা করল আমার NOC দেখলেন না । অফিসার হেসে আমাকে দেখিয়ে বলল, উনার Travel Order এ লেখা আছে স্বামীর সাথে Travel করবে।তাই আপনারটা লাগবে না। তারপর অফিসার আরো কিছু কথা বলল যার সারাংশ হচ্ছে আমরাই আমাদের পাসপোর্ট ভ্যালু নষ্ট করছি ইত্যাদি ইত্যাদি। আমরা অনেক আগে ইমিগ্রেশন প্রসেস শেষ করে এয়ারপোর্টের ভিতর ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম। EBL লাউঞ্জে বসে বুফে খাবারের দাম শুনে স্রেফ মনে হলো ডাকাতি। শুধু EBL না অন্যান্য সব লাউঞ্জেরও একই অবস্থা। দেখে শুনে মনে হলো বাসা থেকে ভরপেট খেয়ে বের হয়ে আসার বুদ্ধিটা খুবই ভাল ছিল।আর এইসব মেয়োনিজ মাখানো সালাদ দিয়ে পার পারসন ২০০০ টাকার বুফে খাওয়ার কোন মানে হয় না। এর চাইতে যেখানে যাচ্ছি সেখানে এই টাকা দিয়ে ভরপেট খাবো এবং Honestly speaking সস্তায় ভরপেট প্রচুর খেয়েছি। যাই হোক, যথাসময়ে বিমানে চেক-ইন করে দুইজনে বসে পড়লাম। যথাসময়ে বিমান ছাড়ল। বিমান জার্নি আমার কাছে খু্বই কষ্টের কারণ একে তো মনে হয় বিমান আকাশে উঠার পর টুক করে পড়ে যাবে আর এই চিন্তায় আমারও ঘুমও হয় নাই। খালি আল্লাহ আল্লাহ করছি কখন জার্নি শেষ হবে। পরদিন সকাল ০৮:০০ টায় আমরা মালয়েশিয়াতে পৌছে গেলাম আর ঐদিন মালয়েশিয়াতে ঈদের দিন ছিল। লাগেজ বালি থেকে Receive করতে হবে বিধায় এয়ারপোর্টে নেমে সকালে হাল্কা নাস্তা আর কফি খেয়ে ধীরে সুস্থে পুরো এয়ারপোর্ট ঘুরে দেখলাম। এয়াপোর্টে সবসময়ই জিনিসপত্রের প্রাইজ বেশী থাকে এবং মালয়েশিয়া এয়ারপোর্টও তার ব্যতিক্রম না। সময় কাটানোর জন্য কচ্ছপ গতিতে পুরো টার্মিনাল -১ ঘুরে দেখার পর মেট্রোতে করে টার্মিনাল -২ তে চলে আসলাম, যেখান থেকে বালির উদ্দেশ্যে বিমান ছাড়বে। ঠিক দুপুর ১২:০০ টায় বালির উদ্দেশ্যে বিমান ছাড়ল। বালির কাছাকাছি আসলে বিমান থেকে মেঘে ঢাকা পর্বতগুলোর কালো ছায়া, ভারত মহাসাগরের নীল পানি আর চকচকে রোদ সবকিছু পরিষ্কার দেখতে লাগলাম।ঘন মেঘের কারণে ল্যান্ডিং-এ দেরী হলো। ঠিক বিকাল ০৪:০০ টায় সাড়ে ০৩ ঘণ্টারও বেশী বিমান জার্নি শেষে অবশেষে বালির Ngurah Rai International Airport-এ পৌছালাম।বিমান থেকে নেমে শাটল বাসে করে মূল এয়ারপোর্টে নামার সাথে সাথে সবাই দিল দৌড়। কারণ ইমিগ্রেশন লাইন।আমরা যখন ঢুকলাম ততক্ষণে লাইন সাপের মত সাত/আট পাক দিয়ে ফেলছে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:০২