যার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ, চরমভাবে ব্যর্থ একটি ছাত্র-আন্দোলন হয়ে গেলো যার বিরুদ্ধে এবং ক্ষমতার জোরে ইতোমধ্যে খালাস পেয়ে, বিভাগে জয়েন করে পুনরায় চেয়ারমেন হয়ে বসেছে যে শিক্ষক, সেই ছানোয়ার হোসেন আজ বেদমভাবে প্রহৃত হলো ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে। এ ঘটনায় আজই জরুরি সিণ্ডিকেট বসে পাঁচজন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিস্কার করেছে এবং তাদেরকে আনা হচ্ছে ডিসিপ্লিনারি কমিটির খাড়ার নিচে। কাল বসছে শিক্ষক সমিতির জরুরি সভা। সেখানে ভয়াবহ লানৎ অপেক্ষা করছে আন্দোলনকারীদের জন্য। ছানোয়ারের পক্ষ নেয়া ঘাপটি মেরে থাকা লোকগুলো এখন মুখ/দাঁত দেখাচ্ছে প্রকাশ্যে, বিকাল থেকেই একদল লাঠিয়াল আন্দোলনকারীদের ধরে ধরে ধুমছে পেটাচ্ছে। এবং নিঃসন্দেহে, আরও অনেক কিছু ঘটবার আছে সামনে।
আগেও বহুবার শিক্ষক মার খেয়েছেন ছাত্রের হাতে, শিক্ষক মার খেয়েছেন শিক্ষকের হাতে, হামেশাই ছাত্ররা মার খাচ্ছে ছাত্রদের হাতে, এমনকি ছাত্রদেরকে মার খেতে দেখা গেছে শিক্ষকের হাতেও। এমনটাই চলতেছে। এই সমস্ত শরীরী নিপীড়নকেই আমি প্রতিবাদ/প্রতিরোধের বর্বরোচিত ভাষা হিসেবে দেখি এবং যে-কারণে যৌন নিপীড়নের বিরোধিতা করি সেই একই কারণে এই শরীরী নিপীড়নকেও সমর্থন করি না। কিন্তু আজকে এই ‘শিক্ষক’ মার খাবার পর শিক্ষকদেরকে যেভাবে তড়িৎ ভূমিকা রাখতে দেখছি তেমনটা অন্য ক্ষেত্রে দেখি নাই। আন্দোলন চলাকালে, ক’দিন আগে, আন্দোলনকারী এক ছাত্রকে রড দিয়ে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠানো হলো, তড়িৎ-ভূমিকা-রাখা লোকদের কাউকেই সেদিন কিছু বলতে/করতে দেখা যায় নাই। আজকেও অনেক ছাত্র বেধড়ক মার খেয়েছে/খাচ্ছে, তাদের মার-খাওয়া শরীরের গুরুত্ব শিক্ষকের মার খাওয়া শরীরের চেয়ে কম মূল্যের বলে কিভাবে ভাবা যায়? শিক্ষক কর্তৃপক্ষকুল শরীরী হামলাকে ক্রমশ স্বাভাবিক করেই আজ এ পর্যন্ত এনেছে বলে মনে হয়।
ছাত্ররা নিরুপায়ভাবে ক্ষোভ প্রশমনের যে কায়দা বেছে নিলো, এর দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সুবিধার দৌড়ে থাকা কোটারী ইঁদুরগণ এবং ছানীকে বাঁচানোর দলীয় শিক্ষককুল কীভাবে এড়াতে পারে?