১. পায়রা
যা থাকে শীত-আকাশের গুটানো আস্তিনের ভেতর
যা আছে সান্ধ্য-উন্মাদের অনর্গল প্রলাপে
যার টান মাটি থেকে সবুজ পাতাগুচ্ছের দিকে
যা বেড়ে ওঠে কাটাকুটিভরা মলিন রাফখাতার ভেতর
বাবা শিখিয়েছিলেন কিভাবে কেটে বের করতে হয়
পায়রার পেট থেকে বিষ মেশানো গোধূম বীজ;
বীজতলার দিকে নিম্নভূমির ঘন কুয়াশার ভেতর সে নেমে যায়;
একঝাঁক পায়রা হঠাৎ উড়ে ওঠে, ডানা ঝাপটিয়ে
তারা উড়ে যায় এমন একটা দিকে, যেখানে মৃত্যু
তাদের উড়ে যাবার পথ কুয়াশায় শাদা;
একগুচ্ছ বেদনা ডানা ঝাপটায় সমস্ত সকাল!
২. কেউ আজ মারা যায়নি
যম একবার জিজ্ঞাসা করে গোরখোদককে, কার জন্য কবর খুঁড়েছ আজ?
গোরখোদক হাসে, তুমি জানো--
কেউ আজ মারা যায়নি আমাদের শহরে।
গোরখোদক : মৃত্যুতে পরিশ্রুত চোখ। মৃত্যু জমাট বেধে আছে হৃদয়ে, যেন নিজেও সে অতল আর নির্জন একটা কবর।
যম : ত্রাসনির্মিত শরীর; মানুষের অসহায় অস্বীকার নিয়ে তাকে চলতে হয় জীবন আর মৃত্যুর মাঝপথ ধরে; তবু মৃত্যু তাকে বানিয়েছে মৃতেরই মতো করুণ।
যম বলে, এখানে আমার আজ ছুটি।
গোরখোদক বলে, তাই আমিও একটু বেশি মাতাল হয়েছি আজ,
কেউ আজ মারা যায়নি আমাদের শহরে!
৩. বুড়ো লোকটা
ভুলে যেতে যেতে তার মন এখন একটা বধ্যভূমি;
এক শীতল যুদ্ধে মৃত্যুর মুখোমুখি তাকে দাঁড়াতে হয় প্রতিদিন।
বুড়ো লোকটার নিশ্বাসে করুণ হ্রেষাধ্বনি
সেই ঘোড়াটার, নিয়তি যার আরোহীকে ফেলে গেছে
শূন্য মাঠে, একা।
তবু সে লাল ট্রাউজার পরে, জগিং করে,
ভোরবেলা আবার তরুণ ঘোড়ার মতো পৃথিবীর পিঠে চড়ে বসে;
ভাবতে থাকে, এই জীবন নিয়ে কী করবে সে?