সুফিবাদের ইতিহাস নিয়ে ইমন জুবায়েরের পোষ্ট : উসখুস করতে করতে আর মন্তব্য লিখতে লিখতে, পোষ্টই দিয়ে দিলাম
১. আমি সুফিবাদের একজন ছাত্র। শুধু এজন্যই এই বিষয়ে আমার আগ্রহ অপরিসীম। সুফিবাদ সম্পর্কে আমার ধারনা অলপ কথায় লিখতে পারব না। তবে নিজের মন-প্রাণের বিষয়ে কিছু লেখার আগ্রহ আটকে রাখতে পারলাম না।
সুফিবাদের ধারা দুটি : মুল ধারা ও দুষ্টু ধারা। মুল ধারার ভিত্তি ইসলাম তথা কোরান - হাদিস।
দুষ্টু ধারা ধর্ম ব্যবসায়ীদের হাতে গড়ে উঠেছে : সুনির্দিষ্ট ভিত্তি নেই ( স্বার্থ ও অর্থ - ই এর মুল এদের কেউ কোরান - হাদিস সরাসরি অস্বিকার করে কেউ অপব্যাক্ষা করে )
২. তবে সুফিবাদের বিরোধি - একদলের মতে সুফিবাদের কোনধারাই কোরান হাদীসের অনুসারী নয়, আমি তাদের মতের সাথে একমত নই।
তাদের সাথে যুক্তি তর্কের অবকাশ অবশ্যই আছে, তবে তার আগে মুল ধারা ও দুষ্টু ধারার পার্থক্য আলোচনা করি ।
বিস্তারিত শব্দ নির্ভর সংগা আর কঠিন তাত্ত্বিক বিশ্লষণের চেয়ে কিছু বাস্তব উদাহরণ এই পার্থক্য বেশী স্পষ্ট করতে সাহায্য করবে, তাই আগে কিছু উদাহরণ টানছি :
ক) দুষ্টু ধারার কিছু নমুনা হচ্ছে : আটরশি, চন্দ্রপুরী, দেওয়ানবাগী, রাজারবাগী, মাইযভান্ডারী, বেরেলভী, রিজভীসহ সকল মাজারপন্হী, ওরশপন্হী, জটাপীর, নেংটাপীর, এবং আরো যারা নেশা-ভাং খোর তারাও বিভিন্ন প্রকার মারেফত, কারামত, বাতেনী গায়েবী বিষয়ের দাবিদার।
খ) মুল ধারার নমুনা হচ্ছে : হাসান বসরী ( হিজরী : ১ম শতক ), আব্দুল কাদের জিলানী এবং গাযযালী ( ৫ম শতক), মুজাদ্দিদে আলফে সানী ( ১০ম শতক) এছারা হাতেম আসেম, শিবলী, জুনাইদ, মইনুদ্দীন চিশতী, শিহাবুদ্দীন সোহরাওয়াদরদী, বাহাউদ্দীন নকশব্নদী ওনারা কালজয়ী অনুসরণিয় সুফী।
মাজারপন্হী, ওরশপন্হী, অনেকে আমার মতের সাথে একমত হবেন না।
তাদের সাথে যুক্তি তর্কের অবকাশ অবশ্যই আছে - তবে আপাতত: সেদিকে যাচ্ছিনা।
৩. প্রসংগিক হলেও আলোচনা দীর্ঘায়িত না করার প্রয়াশে সুফীবাদের চার সিলসিলার আলোচনা আপাতত: করব না, সামুর অধিকাংশ পাঠকের জন্যই খুব একটা দরকার মনে হয়নি তাই।
অনেক নিষ্ঠাবান মুসলমানই - এই প্রশ্ন করে থাকেন, বর্তমানে ভাল/সঠিক সুফী আছে কিনা? তাদের পরিচয় পাবার উপায় কি? তাদের শিক্ষা কি? ইত্যাদি।
ইসলামের মুল বিধিবিধান গুলোর আন্তরিক চর্চা, স্রষ্টার গোলামীর মরিয়া চেষ্টা, অন্তরকে পাপ মুক্ত করার সাধনা - এসবই সুফীদের লক্ষ্য, আর এর মাঝেই আছে তাদের পরিচয়। আর 'ইসলামের মুল বিধিবিধান', 'স্রষ্টার গোলামী', 'অন্তরকে পাপ মুক্ত করা' - এসব বিষয়ের খুব স্পষ্ট জানাশোনা ছাড়া - সুফীদের পরিচয় বা সুফীবাদের অনুধাবন সম্ভন নয়।
এছাড়া অনেক কৌতুহলী লোকেরা নিছক জানার জন্য জিগেস করেন বা জানতে চান। কিন্তু ইসলামের কঠোর সাধনা ছাড়া সুফীবাদের মুল শিক্ষা অনুধান সম্বভ নয় - এটা প্রমাণিত সত্য। সব যুগের সট্যপন্হী সুফীরা ইসলামের কঠোর সাধনা করেছেন, আর ইসলামের এই দিকটি সামান্যই তাত্ত্বিক আর তার চেয়ে অনেক বেশী সাধনা বা চর্চার বিষয়।
৪. ভারত বর্ষে সূফীদের প্রভাব : খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতী, নিজামুদ্দীন আউলিয়া, বখতিয়ার কাকী, ফরীদুদ্দীন গন্জেশকর - প্রতে্যাকেই প্রাক মোগল যুগে অত্যন্ত প্রভাবশালি ছিলেন, দিল্লীর মসনদে।
মোগল যুগে আকবরের শাসন আমলে কঠোর ইসলামী অনুসারীদের প্রভাব রাজ দরবারে কমে গেলেও মুজাদ্দিদে আলফেসানী দেশব্যাপী ব্যাপক ইসলামী পুণর্জাগরন ঘটান এবং ধীরে ধীরে কেন্দ্রেও কঠোর ইসলামী অনুশাসণপন্হীদের প্রাধান্য বিস্তার লাভ করে।
৫. বাউল মতবাদ - ইসলামের মুল ধারার সাথে মিল খায় না। তাই এটি সুফীবাদের নামে বেড়ে ওঠা একটি ভিন্নমতবাদ, যার সাথে মুল ইসলাম বা সুফীবাদের সম্পর্ক নেই। মুল ধারার পথিকৃত হাসান বসরী ( হিজরী : ১ম শতক ), আব্দুল কাদের জিলানী এবং গাযযালী ( ৫ম শতক), মুজাদ্দিদে আলফে সানী ( ১০ম শতক) এছারা হাতেম আসেম, শিবলী, জুনাইদ, মইনুদ্দীন চিশতী, শিহাবুদ্দীন সোহরাওয়াদরদী, বাহাউদ্দীন নকশব্নদী এইসব কালজয়ী সুফীদের মত ও পথের সাথেও মিল নেই
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:১৯