আমার ব্লগ লেখার এক বছর হলো আজকে।
(মেলা বড় পোস্ট)
বাংলা লেখালেখি করতাম যখন প্রথম কম্পিউটার কিনি তখন। বিজয় ইন্সটল করে বাংলাতে নিজের নাম লিখতে মজাই লাগতো। লেআউটটা প্রিন্ট করে নিয়েছিলাম, দেখে দেখে টাইপ করতাম। এবার দেশে যেয়ে দেখি, আমার রুমে এখনো সেই প্রিন্টআউটটা আছে! তারপর আর তেমন বাংলা লেখা হয় নাই কম্পিউটারে। গত বছর এক বড় ভাই বাংলাতে একটা লাইন লিখবেন, আমার হেল্প চাইলেন। আমি বললাম আমার কাছে তো বিজয় নেই, দেখি কি করা যায়। নেট ঘেটে পেলাম অভ্র। অভ্রতে ফোনেটিকে লেখার সিস্টেম দেখে মুগ্ধ। হালকা কিছু বাংলা লেখা লেখলাম। তারপর মাল্টিপ্লাই এ একটা অ্যাকাউন্ট খুলি। সেখানে দুই চারটা হাবিজাবি গান আর ছবি পোস্ট করি। তার কিছু দিন পরেই সামহোয়ারইনব্লগ এর হদিস পাই আরিফ জেবতিক ভাইয়ের ভ্যালরিকে নিয়ে করা পোস্টের লিঙ্ক পেয়ে। এসে যেইসব পোস্ট দেখি, সবই প্রায় ছিলো জামাতি। আমিও এটাকে জামাতিদের সাইট ভেবে উইন্ডো ক্লোজ করে দেই। কিছুদিন পরে আবার কেন জানি আসি। এসে বেশ কিছু ভালো লেখা চোখে পড়ে, তখন এক বছর আগে এইদিনে সাইন আপ করে ফেলি। প্রথম পোস্টে প্রথম কমেন্টার ছিলেন সোনার বাংলা। ওনার কার্যকলাপ আমার তেমন ভালো লাগে নাই কখনো, কিন্তু প্রথম কমেন্টটা উনি করেছিলেন দেখে কখনো ওনার বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারি নাই, শুধু একবার তার এক পোস্টে মাইনাস দিয়েছিলাম। এছাড়া কখনো ওনার সাথে তর্ক বিতর্কে তেমন জড়াই নাই।
সাইন আপ করার পরে আস্তে ধীরে কমেন্ট করা চলতে থাকে। কিছুদিন পরে একটা ভিডিও পোস্ট দিয়েছিলাম। মাত্র একজন না দুইজন কমেন্ট করেছিলো। ভিডিওটা ছিলো নাইটক্লাব ইন ঢাকা। ফুয়াদের সোনা বন্ধু রিমিক্সের সাথে ঢাকার ক্লাব জগতের ছবি দিয়ে করা একটা ইউটিউব ভিডিও। পরে যখন মানুষজনের পোস্টে কমেন্ট করা শুরু করি, তখন এই পোস্টটা মুছে দেই, কে আবার কি মনে করে ভেবে! আস্তে ধীরে কমেন্ট করা চলতে থাকে কিন্তু নিজে পোস্ট লেখার কিছুই খুঁজে পাই না। এইভাবে চলতে থাকে। আসার পর পর পুরান পোস্ট ঘেটে টের পেলাম সচলায়তন হয়ে বেশিরভাগ ভালো ব্লগার চলে গেছে সেখানে। পুরান পোস্ট ঘাটতে ঘাটতে ভার্সিটির মুখ চেনা সিনিয়র কয়েকজনকে দেখলাম। মনে মনে ভাবতে লাগলাম, বাহ! এরাও এখানে!
ঐ সময়েই রাগইমন কে নিয়ে ত্রিভুজের করা কমেন্ট এর কারনে মারামারির পোস্টও বেশ কিছু চোখে পড়ে। আস্তে ধীরে বান্দর গ্রুপের বেশ কয়েকজনের সাথে খাতির হয়ে যায়। তাদের পোস্টে যাওয়া শুরু করি। উদাসী স্বপ্নের সাথে ঐ সময় ভালো খাতির হয় আমার। রাগুর পোস্টও মাঝে সাঝে পড়তাম। জোনাকি, উদাসী, জেবিন, জয়িতা, অন্যরকম, মানুষ এরা মিলে ভালো আড্ডা দেয়া হইতো তখন। ও! মনের কথাও ছিলো তখন। তুষারমানব নামে একজন ছিলো, সেও উধাও! বিমার সাথে খাতির হয় একটু দেরিতে। মুকুলের সাথেও লেটে খাতির হয় আমার। গানের ব্যাপারে বিমার তুলনা নাই আর মুকুল এর সদ্য লেখা কোবতে এনজয় করি। ছায়ার আলো ভেগে গেছে। পজেটিভ এর সাথেও আড্ডা দেয়া হইতো তখন। অলস এর লিঙ্ক আমাকে মানবী আপু দিয়েছিলেন। তাকেও আর দেখি না। মানবী আপুও উধাও। কাছিমকে দেখি এই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেও আমাকে আপনি ডাকতো! আউলার সাথে মানুর মারামারি বেশ এনজয় করতাম। আস্তে ধীরে আমিও তাদের সাথে যোগ দেই। অচেনা বাঙ্গালি ভাইকে তখন অচু ডাকতাম, উনিও বেশ আড্ডা দিতেন আমাদের সাথে। দেশে যেয়ে দেখি উনি অনেক সিনিয়র একজন। তখন থেকে অচিনদা বলে ডাকি।
আমি পোস্ট লেখার কিছু পাই নাই তখনো। বিডিনিউজ থেকে কিছু কপি পেইস্ট পোস্ট করলাম। প্রথম নিজের লেখা পোস্টটা ছিল রোজার ঈদ নিয়ে রেজিস্ট্রেশন করার তিন মাস পরে। আজকে সেই পোস্টটা দেখতে গিয়ে বেশ মজা পেলাম। মানু, মকু (মনের কথা) এরা তখন আমাকে রাশু ডাকতো, কিন্তু মুকুল, বিমা তখনো রাশু ভাই ডাকতো! মোস্তফা মনির সৌরভ ভাইও সেইসময়ে ব্লগিং করতেন। আমার জন্মদিন নিয়ে একটা পোস্টও দিয়েছিলেন উনি। এখন আর দেখি না। ফেইসবুকে মেসেজ দিলেও রিপ্লাই পাই না। মাথামোটার সাথে পরিচয় হয় সেই সময়ের কিছু আগে দিয়ে। নাদান এর সাথে মেইনলি রাতে কথা হতো। ইনতু নামে আরেকজন ব্লগার ছিলো। সেও উধাও হয়ে গেছে।
ব্লগে এসে এটিমকে চিনি। জামাতিদের লাফালাফি দেখি। প্রথম প্রথম চুপচাপ থাকতাম। তারপর আমিও কখনো এটিমের কারো কারো সাথে কখনো বান্দর গ্রুপের সাথে মিলে তাদের বিরুদ্ধে কমেন্ট করা, মাঝে সাঝে ফ্লাডিং করা শুরু করি। ২৮ শে অক্টোবরের কথা মনে আছে। সেইদিন জামাতিগুলো পাগল হয়ে গেছিলো! মেলা ফ্লাডিং করা হয়েছিল তাদের কান্নাকাটি থেকে ব্লগ রক্ষার জন্য।
মনে পড়ে আস্তমেয়ে/সন্ধ্যাবাতির আমি সাগর এর এক পোস্টে গোলাম আজম নিয়ে লাফালাফি। প্রথম প্রথম আমি আস্তমেয়ের পোস্ট পড়তাম, লেখে ভালো। কিন্তু জামাতের দিকে তার আগ্রহ দেখে তার পোস্ট পড়া বাদ দেই। মাহবুবা আখতার যখন ব্লগে আসে, তখন আমি ছিলাম। প্রথম থেকেই সে বেশ সুন্দর লেখা দিত। মাঝে মাঝে আঞ্চলিক ভাষার পোস্ট। কিন্তু তার পোস্ট পড়াও বাদ দিছি ৭ জানুয়ারিতে অনেক ব্লগারদের ব্যান করার পরের আন্দোলনের সময়ে তার পোস্ট কন্টিনিউ করা দেখে। একই কারনে প্রচেত্য এর পোস্টও আর পড়ি না। মুনিয়ার লেখাও পড়তাম, তার পোস্টে সাইফ শেরিফের সাথে কয়েকবার তর্ক করছিলাম দেখে শেরিফ আমাকে নিয়ে একটা পোস্টও দেয়। পরে দেখি মুনিয়া আমার উপরে বিরক্ত আমার একটা কমেন্টের ভিন্ন মিনিং করে। তার পোস্ট পড়াও তখন খোদাহাফেজ জানিয়ে দেই।
ভালো লাগে পড়তে তানজিলা, আউলা, জোনাকি, সোনিয়া, পুস্প, সাজিপু, তারার হাসি, চিটি, নিশা আর নিলার পোস্ট, এছাড়া রাগু আর আইরিন এর পোস্টে মাঝে সাঝে যাই। জয়িতা, জেবিন আর রুধীন আপুর পোস্ট মিস করি খুব। মানবী আপু একবার রেসিপি লিখে দিছিলেন আমার রান্নার করুন অবস্থা দেখে। ওনাকেও খুব মিস করি। ভুলু নামে একজন রেসিপি দিতেন, তাকেও আর দেখি না। আশিক হাসান ভাইয়ের আফ্রিকা নিয়ে লেখা ভ্রমণ কাহিনী উপভোগ করেছিলাম বেশ। ফয়সল নামে একজন লিখতেন আগে, বেশ কিছু সাইন্স ফিকশন পড়েছিলাম তার ব্লগে, ওনাকেও দেখা যায় না আর। রিয়াজ শাহেদ ভাই নতুন আসছেন, তবে ওনার কমেনট পড়ে মজা পাই। আসিফ আহমেদ এর পোস্টও ভালো লাগে। রনদীপন বসুর অনেক কবিতা মাথার উপর দিয়ে যায়।
আস্তে আস্তে একটা বদভ্যাস হয়ে যায় সব পোস্ট পড়ার। মোটামোটি সব পোস্টেই একটা ঢু মারতাম তখন আমি। এখন সেই অভ্যেস কমে গেছে একদম। অনেক ব্লগারকেই চিনি না আর তেমন। নতুন আসা ব্লগারদের মাঝে শান্ত, তামীম, হনলুলু, রাতিফ, রন্টি, রাতমজুর, যূঁথী, ইমন, লিপিকার, সবাক, আরিফুর রহমান ভাই আর পুসকি ও নিবির অভ্রের সাথে ভালো খাতির হয়ে গেছে। আরো বেশ কিছু নতুন ব্লগারদের লেখা ভালো লাগে, নাম বলতেছি না, অনেকেই আছেন। মৈথুদার পোস্ট বেশিরভাগই মাথার উপর দিয়ে যায়। লালদরজা ভাইয়ের লেখা ভালো লাগে, কিন্তু উনি চুপ মেরে গেছেন। আরেকজন হলেন জ্বীনের বাদশাহ ভাই। আমার খুব প্রিয় এক ব্লগার, কিন্তু উনিও খুব অনিয়মিত এখন। গন্ডারের গুতা দেওয়াও খুব মজা লাগতো। সেও আর তেমন আসে না। নাজিরুল ভাই, প্রণব ভাই আর এরশাদ বাদশাহ ভাই এর লেখাও ভালো লাগে। নিবেদীতা আর দোলাহাসান এর লেখা মিস করি না, চোখে পড়লেই পড়ে ফেলি। প্রলয় এর সাথে বেশ ভালো সম্পর্ক হয়ে গেছিলো। কিন্তু কিছুটা বাড়াবাড়ির কারনে এখন তার সাথে আর কমেন্ট আদান প্রদান তেমন করা হয় না। বিবর্তনবাদীর লেখা এনজয় করি। ফকির ইলিয়াস ভাই আর মুজিব মেহদী ভাই এর কবিতা মাঝে মাঝে বুঝি না, আবার মাঝে মাঝে বুঝি। ফয়সাল নোই ভাই দেখলাম আমার এই না বোঝা নিয়ে কমেন্টের কারনে কিছুটা বিরক্ত হয়েছেন আমার উপর। মোস্তাফিজ রিপন ভাই এর লেখা ভালো লাগে, তবে সব সময়ে পড়া হয় না।
চতুরভুজের কথা মনে পড়ে। সুন্দর সুন্দর লেখা দিতো। পরে হাসিব ভাই তার জামাতি কমেন্টগুলোর এক ডিটেইল্ড হিস্ট্রি তুলে ধরেন। সেও কিছুদিন পরে আর আসে নাই। রাজাকার কামরুজ্জামানের ছেলেরাও ব্লগিং করতো। এখন আর দেখা যায় না তাদের আর তাদের সহব্লগারদের। ব্লগে জামাতিদের উৎপাত এখন অনেক কম।
মজার এক চরিত্র ছিলো কম্পিউটার গুরু। নানান নিকে এসে নানান কৌতুক করে যেত। একবার সমকামী একবার এই সেই। তবে তার কমেন্টগুলো মজার ছিলো। এখন আর তারে দেখি না। মজা পাইতাম অশ্রুর লেখা কবিতাগুলোতে। মাঝে মাঝে এইরকম মজার কিছু ক্যারাক্টার ব্লগটাকে আনন্দই দিত। আলেকজান্ডার ডেনড্রাইড জাফর ইকবালকে নিয়ে একটা পোস্ট লিখে হাইয়েস্ট মাইনাস (১৫০+) খাবার রেকর্ড করে। এইরকম আরেকটা ছিলো দুষ্টছেলে। কত যে মাইনাস খেলো, হিসেব নেই। নূরে আলম নামে আরেক মজার ব্লগার ছিলো। তার কৌতুকের পোস্টগুলোতে ভালোই মজা হইতো। ৩০-৪০ টা ইমো বা হা হা লিখে দিয়ে আসতো সবাই মিলে। পোস্ট দিতে না দিতেই একগাদা মাইনাস তার বরাদ্দ ছিলো। তাকে নিয়ে ফ্যান ক্লাব বানানো হয়, বেশ কিছু গল্পও লেখা হয়েছিলো তাকে নিয়ে। নূরে আলম অনেককেই ব্লক করে রাখে, ফলে সে পোস্ট দিলে গন্ডার বা মাথামোটা পালটা পোস্ট দিতো, আর বাকিরা যেয়ে কমেন্ট করে আসা হইতো সেখানে। মজা লাগতো ইংলিশে পোস্ট আসলে সবাই মিলে ঝাঁপিয়ে পড়ে মাইনাস দেয়াতে। এখন আর তেমন দেখি না। আলী ঢালীর যুদ্ধও খারাপ লাগতো না যখন সর্বোচ্চ পোস্টের তালিকা ছিলো। হালের সেনসেশন হলো চিকন মিয়া। ইদানিং দেখি সে কবি হইছে। তার কমেন্টও ভালো লাগে।
ফারহান দাউদ সেইসময়ে রাতে ব্লগিং করতো। তার সাথে রাতে মাঝে মাঝে আড্ডা দেয়া হতো। ভালো লাগতো তার লেখা। সে আমার উপর বিরক্ত ই-বুকের ব্যাপারটা নিয়ে; আমারই ভুল আমি বুঝি। তার অক্টোবর মাসের পোস্টে যেয়ে দেখি তারে আমি অগাণিতিক এর ব্লগের লিঙ্ক দিয়ে আসছি আর আক্ষেপ করছি ছেলেটা লেখে না দেখে! তখন থেকেই অগাণিতিকের লেখার এক বড় ভক্ত আমি। মেহরাবের লেখাও বেশ ভালো লাগে। আশরাফ এর অনেক পোস্টে দেখি কমেন্ট করছি, কিন্তু উত্তর নাই। এখন চেঞ্জ আসছে; উত্তর দেয়। শামীম এর সাথে সবচেয়ে বেশি খাতির হয় দেশে যাওয়ার পর তার সাথে গল্প করে। মুজতাবাকে দেখে অবাক হয়েছিলাম, এই বয়সেই কি গালি জানে ছেলেটা! চানাচুরের পাগলামিও মজা লাগে। আইজুদাও আমার খুব প্রিয় এক ব্লগার। সুনীল সমুদ্র এর কবিতা খুব পছন্দ করি। রাচিন নামে এক পিচ্চি ছেলে ব্লগিং করতো আগে, সেও আর নাই। নিহনের আঁকাআঁকিও ভালো লাগে।
স্কুল লাইফের এক ফ্রেন্ড এর দেখা পাই ব্লগে এসে, কৈলাশ; বেটা মজায় দেশে বসে আছে এখন। রোডোয়ার লেখাতে এক ধরনের নতুনত্ব পাই, আরাম পাওয়া যায় পড়ে। মজা লাগে বাহার ভাই এর পোস্ট। দূরন্ত ভাই এর ভিন্নধর্মী পোস্ট পড়ে ভালো লাগে, যখন গল্প আর কবিতা পড়তে পড়তে টায়ার্ড হয়ে যাই, তখন ওনার পোস্টগুলো সত্যি আনন্দ দেয়। পিয়াল ভাইকেও খুব মিস করি এখন। আকাশচুরির লেখা ভালো লাগে। মুন্না, নাঈম, অ্যামেটার, নাজমুল হাসান, শারফু এদের পোস্টে এখন আর তেমন যাওয়া হয় না, আগে যেতাম খুব। জামাল ভাস্কর ভাইয়ের লেখা ভালো লাগে ওনার ভিন্নধর্মী স্টাইলের জন্য। রুবেল শাহ এর পোস্ট পড়তাম, এখন তেমন সময় পাই না যাবার। ইমরোজের লেখা ভালো লাগে তার আবেগের জন্য। ময়ুরবাহনের ফটোব্লগ পড়ে ইন্ডিয়ার অনেক কিছুই জানতেছি। নতুন, দুঃখবিলাস এনাদের পোস্টও পড়ি।
তীরন্দাজদার ছোট গল্পগুলো এক নিঃস্বাসে পড়ে শেষ করে ফেলার মত। রাহা ভাইয়ের টুকটাক ব্লগিংও দেখি, আমি মনে করতাম উনি বুঝি বাইরে থাকে! প্রায়ই দেখতাম অনেক রাতে লগইন করতে ওনাকে। অরুনাভ ভাই একবার পাগলামি করে সব পোস্ট মুছে দিছিলেন। সালাউদ্দীন সুমনের নেই নেই কবিতাগুলো মজাই লাগে। ফাহমিদুল হক ভাইয়ের সিরিয়াস লেখাগুলো পড়ি। ওনার গল্পগুলো পড়ে বেশ আরাম পাই। বইপাগল ভাইয়ের কোরান এর পোস্ট পড়া হতো না, তবে ওনার সংযম দেখে ভালোই লাগতো। বিবর্তনবাদীর লেখাও সময় করে পড়ে ফেলি।
আমার ব্লগ লেখা শুরু করার অন্যতম অবদান এস্কিমো ভাইয়ের। উনি আমাকে জামাতের বিরুদ্ধে একটা সিরিজ লেখার জন্য উৎসাহ দেন ও ম্যাটেরিয়ালস দিয়ে হেল্প করেন। সেই সাহস থেকেই আজকে এতো পোস্ট লিখে বসে আছি। সেইসময়ে একটা কবিতা লিখি। জীবনের প্রথম কবিতা। লিখে পাবলিশ করার সাহস হয় নাই। তাই মানুর পোস্টে পেইস্ট করি আমার লেখা কবিতা বলে। মানু তখন আলাদা পোস্ট ছাড়ে রাশুর কোবতে নাম দিয়ে। আর সেই আমি এখন যা মনে আসে লিখে পাবলিশ করে ফেলি চোখ বুঁজে।
নাদান, গন্ডার, সৌপ্তিক, খোলাচিঠি, কানাবাবা, ভাসমান, নাজীমউদ্দীন, মৃমৃ, সামী, প্রিয়তি, রাহী ভাই, নরাধম, দ্বিধা, মাথামোটা, পুতুল, ইরতেজা, ইমন, বঙ্গাব্দ, আনিকা, স্বাপ্নিক, নির্বাসিত, প্রাগৈতিহাসিক, মোজাম্মেল ত্বোহা, দেবদারু, বিহংগদা, সন্ধ্যাপ্রদীপ, কালবেলা, ব্লুজ, অদ্ভুত ভালোবাসা, মৃন্ময় আহমেদ, শেষ বিকেলের মেয়ে, বালুকাবেলা, সুতরাং, অন্যকোথাও, শাহেদুর রহমান, মোহাম্মদ, জিহাদ, ভুতের আড্ডা, সলিল, ব্যর্থ প্রেমিক, প্রাকৃত এদেরকেও আর ব্লগে দেখি না তেমন। সিঁদুরে মেঘ আর নীলাঞ্জনা নামের দুই খুব ভালো কবিকেও আর দেখি না।
“বাংলাভাষী” খুব ভালো ভালো ছবি আকঁতেন। তিনিও আর নেই ব্লগে। আদিবাসী দুইজন ব্লগার ছিলেন, তাদেরকেও আর দেখি না। সুমি নামে একজন ছিলেন, সব পোস্ট মুছে দিয়ে চলে গেছেন। তার লেখাও পড়তাম। তানভীর ভাইকেও মিস করি। উনি সচলে চলে গেছেন। আরণ্যক যাযাবর আর মনিটর আমার খুব দুই প্রিয় ব্লগার। তারাও আর নাই। শিপনদা বিজি কবিতা পোস্ট নিয়ে। স্নোবল, নেই মানুষ এদেরকেও আর দেখি না। মাহবুব সুমন ভাই এর লেখা তেমন পড়া হয় না, তবে তাকে আমি খুব পছন্দ করি আর টাকিলা কাক্কু ডাকি! মন ভালো না আর নীলু এই দুই জনকেও আর দেখি না। অচেনা বাঙ্গালি ভাইও অনুপস্থিত মেলাদিন ধরে। মানব মানিক এর একটা কবিতা ছিলো বারবনিতাদের নিয়ে। খুব ভালো লেগেছিলো। প্রত্যুদাকে দেখলাম চলে যাবেন বলতেছেন। ওনার পোস্ট তেমন পড়ি নাই, কিন্তু পছন্দ করি অনেক ওনাকে। নেমেসিস ভাইকে দেখি সব পোস্ট মুছে দিতে। নাভদ ভাই এখনো ব্যানড হয়ে আছেন প্রথম পাতায়। একস্লিপ নামে একজন সাপ্তাহিক সেরা পোস্ট দিতেন, তাকেও দেখা যায় না আর। পিঙ্ক ফ্লয়েড ভক্ত চাচামিঞাকেও তেমন দেখি না।
আমার পুরো ব্লগ লাইফে একজন মানুষকেই শুধু অপছন্দ করি, সে হলো কালপুরুষ।
কি মনে করে ২০০৬ এর অক্টোবর মাসের কিছু পোস্ট ঘাটলাম, বেশ ভালো ভালো পোস্ট পাতায় পাতায়। আক্ষেপ লাগে তাদের লেখা পড়তে পারি নাই বলে। প্রচুর নতুন ব্লগারের আনাগোনা এখন। অনেক অচেনা অচেনা লাগে এখন ব্লগটাকে, কিছুটা পানসেও লাগে, আগের মত ফুর্তি ফুর্তি আমেজটা আর নেই, তাও এইটা আমার এক প্রিয় জায়গা, প্রিয় আড্ডাস্থল।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ ভোর ৬:৩৩