প্রিয় পাঠক অনেক দিন পর আবার লিখছি।ইচ্ছা ছিল নিয়মিত লিখব। কিন্ত ছোট্টি এই জীবনে অনেক কাজ ও দায়িত্বের সাথে জড়িয়ে পরার কারণে নিয়মিত লেখা হয়ে উঠেনা। আমি ক্যান্সার সম্পর্কে লেখা শুরু করেছিলাম। দ্বিতীয় কিস্তির পর এবার তৃতীয় কিস্তি। আজ আমি আাপনাদের সামনে ব্রেইন ক্যান্সার তথা ব্রেইন টিউমার নিয়ে আলোচনা করব। আশা করি আপনাদের কাজে লাগবে। আর কোন প্রকার ত্রুটি থাকলে মন্তব্যে জানাবেন তাতে আমারও শিখা হবে।
ব্রেইন টিউমার:
ব্রেইন টিউমার বলতে মস্তিষ্কের কোন টিশ্যুর অস্বাভাবিক বৃদ্বিকে বোঝায় যা মস্তিষ্কের সঠিক কাজের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাড়ায়। এক কথায় মস্তিষ্কের নিজস্ব কাজে ব্যাঘাত ঘটে।
ধরণ: টিউমার কোষের উৎপত্তি ও এর ক্ষয়ক্ষতির উপর নির্ভর করে ব্রেইন টিউমার বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে।
১. বিনাইন বা মৃদু: এটি হলো সর্বাপেক্ষা কম ক্ষতিকর ব্রেইন টিউমার। এখানে কোনো ক্যান্সার আক্রান্ত কোষ নেই। খুবই ধীর গতিতে এধরণের কোষের বৃদ্ধি ঘটে এর্ং এর বৃদ্ধি হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সীমানা রয়েছে এ সীমানার বাইরে গিয়ে এরা অন্য টিশ্যুতে ছড়িয়ে পরেনা।
২. ম্যালিগন্যান্ট টিউমার: এ ধরণের টিউমারে ক্যান্সার কোষ থাকে এবং বৃদ্ধির জন্য নির্দিষ্ট কোনা বর্ডার নেই। দ্রুত বৃদ্ধি ও আশপাশের ব্রেইন টিশ্যুতে ছড়িয়ে পড়ার কারণে এ ধরণের টিউমারে মৃত্যুঝুকি আছে।
৩. প্রাইমারি/প্রাথমিক টিউমার: এ ধরণের টিউমার ব্রেইনের কোষ থেকেই শুর হয় এবং ব্রেইনের অন্যান্য টিশ্যুতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। অন্যান্য অঙ্গে খুব কমই ছড়ায়।
৪. মেটাস্ট্যাটিক/সেকেন্ডারি: মেটাস্ট্যাটিক/ সেকেন্ডারি ব্রেইন টিউমার বলা হয় এমন ধরণের টিউমারকে যেগুলো শরীরে অন্য কোনো অংশে শুরু হয়ে পরবর্তীতে মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পরে।
কিভাবে বুঝবেন যে আপনার ব্রেইন টিউমার হয়েছে কিনা?
যে কোনো রোগ নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন ধরণের পরীক্ষা করতে হয়। আর ক্যান্সার রোগটি মূলত প্রাথমিক ধাপে খুব কমই ধরা পরে। আর এ জন্য এ রোগে আক্রান্ত রোগীদের মাঝে মৃত্য হার অনেক বেশি।
আর এজন্য প্রত্যেক সচেতন ব্যক্তিরই কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ জেনে রাখা উচিৎ। টিউমারের ধরণ, আাকার ও অবস্থানের উপর ভিত্তি করে রোগের উপসর্গ বিভিন্ন রকমের হয়।
ক. মাথা ব্যাথা: মাথা ব্যাথা খুব গুরুত্ব পূর্ণ কোন রোগ না হলেও এটা বিভিন্ন মারাত্মক রোগের সাথে সম্পকর্তি।সাধারণত আমাদের যখন মাথা ব্যাথা হয় তখন আমরা প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ সেবন করেই সন্তষ্ট থাকি। এ মাথার ব্যাথার পিছনে কি আছে তা জানার চেষ্টা করিনা যার ফলে অনেক সময় রোগের উপসর্গ আমাদের সামনে থাকার পরেও আমরা রোগ নির্ণয় করতে পারিনা। তীব্র ও ক্রনিক মাথা ব্যাথা থাকলে ক্যান্সারের সাথে সম্পর্কিত থাকতে পারে।
খ. দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তন: অপটিক্যাল নার্ভ বা এর খুব কাছে যদি টিউমার হয় তাহলে দৃশ্টি শক্তির পরিবর্তন লক্ষ করা যায়, যেমন: ঝাপসা দৃষ্টি, দৈত দৃষ্টি, অস্বাভাবিক আই মোবমেন্ট ইত্যাদি। তবে এসব উপসর্গের তীব্রতা মুলতা টিউমারের আকার, অবস্থান ও ধরণের উপর নির্ভর করে।
গ. মটর দক্ষতা হারানো: ব্রেইন টিউমার ব্রেনের কিছু নির্দিষ্ট অংশের কাজকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে যেমন, ভারসাম্যতা, মোভমেন্ট। মুখের পেশীতে দুর্বলতাও ব্রেইন টিউমারের কারণে হতে পারে।
ঘ. বিবমিষা বা বমি: বিশেষ করে সকাল বেলা এ উপসর্গ ব্রেইন টিউমার ইনডিকেট করে।
ঙ. কথা বলায় সমস্যা: কিছু কিছু ব্রেন টিউমার কথা বলার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরী করে বলে প্রমান পাওয়া যায়।
চ. জ্ঞানীয় সমস্যা: ব্রেইন টিউমার মানুষের কগনিটিভ এবিলিটির পরিবর্তন ঘটায় যেমন, স্মৃতিশক্তির সমস্যা, দুর্বল মনযোগ, কনফিউশন চিন্তা শক্তি কমে যাওয়া ভাষাগত সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
ছ. দুর্বলতা ও অবশতা: কিছু কিছু ব্রেইন টিউমার শরীরের একপাশ দুর্বল করে দিতে পারে ওযমন পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি।