somewhere in... blog

স্বৈরাচার: রাষ্ট্র যন্ত্রের গহীনে লুকানো শেকড়

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আজ একটি নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দীর্ঘকাল ধরে ক্ষমতায় টিকে থাকায় প্রশাসন এবং রাষ্ট্রযন্ত্রে এক গভীর পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। কিন্তু এই পরিবর্তন ইতিবাচক না হয়ে বরং নেতিবাচক প্রবণতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। আজ আমরা এমন এক পরিস্থিতিতে এসে পৌঁছেছি যেখানে ক্ষমতার চেয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে দুর্নীতি, অন্যায় এবং স্বৈরাচার।

একজন সরকারি কর্মকর্তা যেখানে ৫৯ বছর বয়স পর্যন্ত চাকরি করার সুযোগ পান এবং সাধারণত ৩০ বছর কর্মজীবন কাটান, সেখানে গত ১০-১২ বছরে যারা চাকরিতে প্রবেশ করেছেন, তারা শেখ হাসিনা সরকারের প্রভাবিত ও প্রণোদিত। এদের অনেকেই আজকের প্রশাসনের চালিকাশক্তি, এবং তারা আরও ১০-১৫ বছর এই দায়িত্ব বহন করবেন। তবে তারা কেমন শিক্ষা এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করবেন, সেটি সময়ই বলে দেবে। বাস্তবতা হলো, তারা শেখ হাসিনার সরকারের তৈরি ক্যাডার সার্ভিসের অংশ, যারা দুর্নীতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে জড়িয়ে গেছে এবং সরকারের দলীয় সংগঠন ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত।

সরকারি ব্যবস্থার এই অবনতির পাশাপাশি, দেশের তরুণ সমাজও সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। আজকের ২৫ বছরের কম বয়সী যুবকরা তাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষণীয় সময়ে দেখেছে দুর্নীতি, স্বৈরাচার এবং অব্যবস্থাপনা। এই তরুণ প্রজন্মের হাতে দেশের ভবিষ্যত, কিন্তু তাদেরকে ক্ষমতায় পৌঁছাতে আরও ৫-১০ বছর লাগবে। তারা কীভাবে শিক্ষা নিয়ে দেশ সেবা করবে, তা এখনও প্রশ্নসাপেক্ষ।

স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা তার অবৈধ ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে নিয়মবিরোধী ও আইনবিরোধী কাজ করতে পিছপা হননি। প্রশাসনের পদ খালি না থাকা সত্ত্বেও তিনি মেধাবীদের বাদ দিয়ে পদলেহী, অযোগ্য এবং দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের প্রমোশন দিয়ে প্রশাসনকে ভারী করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে সাংবিধানিক সংস্থার শীর্ষ পদে যারা আসীন, তাদের অধিকাংশই সেই সংস্থার তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হবার যোগ্যতাও রাখেন না।

পুলিশ বাহিনীর অবস্থা আরও করুণ। দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশ অফিসাররা পালিয়ে গেলেও, তাদের স্থলে যারা বসেছে, তাদেরও রেকর্ড পরিষ্কার নয়। থানার ওসি, জেলার এসপি, মেট্রোপলিটন এলাকার ডিসি/এডিসি এবং ডিআইজি রেঞ্জ—এরা সবাই বদলি হতে পারে, কিন্তু এদের চরিত্রের পরিবর্তন হবে কিনা, সেটি অত্যন্ত সন্দেহজনক। একইভাবে ইউএনও থেকে শুরু করে এসি ল্যান্ড, সাবরেজিস্ট্রার—তাদেরও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরও রাষ্ট্র সংস্কার করতে গিয়ে দেখা যাবে, প্রশাসনের মূল শেকড়ে লুকিয়ে থাকা এই দুর্নীতিবাজদের দমন করা সহজ হবে না। তাদের জন্যই প্রশাসন দুর্নীতিগ্রস্ত থেকে যাচ্ছে, এবং যারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে আসীন হবে, তাদের অনেকেই শেখ হাসিনার সমর্থক বা সহযোগী। এটি রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎকে আরো অস্পষ্ট এবং হতাশাজনক করে তুলছে।

বাংলাদেশের জন্য এখন প্রয়োজন একটি সুস্থ প্রশাসনিক ব্যবস্থার পুনঃপ্রতিষ্ঠা। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ক্ষমতার পরিবর্তন যতটা জরুরি, ততটাই গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রশাসনের শুদ্ধতা ও জনগণের আস্থা। শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনের পতন ঘটলেও তার রেখে যাওয়া শিকড় যতক্ষণ না উপড়ে ফেলা যায়, ততক্ষণ রাষ্ট্রকে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা থেকে মুক্ত করা যাবে না।

নতুন প্রজন্মের কাছে আমাদের আশা রাখতে হবে। তারা হয়তো স্বৈরাচারী সরকারের দুঃশাসনের মধ্য দিয়েই তাদের জীবনের প্রথম পাঠ নিয়েছে, কিন্তু তাদের মধ্যেই রয়েছে সম্ভাবনা—একটি সৎ, নির্ভীক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আজ একটি নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দীর্ঘকাল ধরে ক্ষমতায় টিকে থাকায় প্রশাসন এবং রাষ্ট্রযন্ত্রে এক গভীর পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। কিন্তু এই পরিবর্তন ইতিবাচক না হয়ে বরং নেতিবাচক প্রবণতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। আজ আমরা এমন এক পরিস্থিতিতে এসে পৌঁছেছি যেখানে ক্ষমতার চেয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে দুর্নীতি, অন্যায় এবং স্বৈরাচার।

একজন সরকারি কর্মকর্তা যেখানে ৫৯ বছর বয়স পর্যন্ত চাকরি করার সুযোগ পান এবং সাধারণত ৩০ বছর কর্মজীবন কাটান, সেখানে গত ১০-১২ বছরে যারা চাকরিতে প্রবেশ করেছেন, তারা শেখ হাসিনা সরকারের প্রভাবিত ও প্রণোদিত। এদের অনেকেই আজকের প্রশাসনের চালিকাশক্তি, এবং তারা আরও ১০-১৫ বছর এই দায়িত্ব বহন করবেন। তবে তারা কেমন শিক্ষা এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করবেন, সেটি সময়ই বলে দেবে। বাস্তবতা হলো, তারা শেখ হাসিনার সরকারের তৈরি ক্যাডার সার্ভিসের অংশ, যারা দুর্নীতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে জড়িয়ে গেছে এবং সরকারের দলীয় সংগঠন ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত।

সরকারি ব্যবস্থার এই অবনতির পাশাপাশি, দেশের তরুণ সমাজও সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। আজকের ২৫ বছরের কম বয়সী যুবকরা তাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষণীয় সময়ে দেখেছে দুর্নীতি, স্বৈরাচার এবং অব্যবস্থাপনা। এই তরুণ প্রজন্মের হাতে দেশের ভবিষ্যত, কিন্তু তাদেরকে ক্ষমতায় পৌঁছাতে আরও ৫-১০ বছর লাগবে। তারা কীভাবে শিক্ষা নিয়ে দেশ সেবা করবে, তা এখনও প্রশ্নসাপেক্ষ।

স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা তার অবৈধ ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে নিয়মবিরোধী ও আইনবিরোধী কাজ করতে পিছপা হননি। প্রশাসনের পদ খালি না থাকা সত্ত্বেও তিনি মেধাবীদের বাদ দিয়ে পদলেহী, অযোগ্য এবং দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের প্রমোশন দিয়ে প্রশাসনকে ভারী করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে সাংবিধানিক সংস্থার শীর্ষ পদে যারা আসীন, তাদের অধিকাংশই সেই সংস্থার তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হবার যোগ্যতাও রাখেন না।

পুলিশ বাহিনীর অবস্থা আরও করুণ। দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশ অফিসাররা পালিয়ে গেলেও, তাদের স্থলে যারা বসেছে, তাদেরও রেকর্ড পরিষ্কার নয়। থানার ওসি, জেলার এসপি, মেট্রোপলিটন এলাকার ডিসি/এডিসি এবং ডিআইজি রেঞ্জ—এরা সবাই বদলি হতে পারে, কিন্তু এদের চরিত্রের পরিবর্তন হবে কিনা, সেটি অত্যন্ত সন্দেহজনক। একইভাবে ইউএনও থেকে শুরু করে এসি ল্যান্ড, সাবরেজিস্ট্রার—তাদেরও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরও রাষ্ট্র সংস্কার করতে গিয়ে দেখা যাবে, প্রশাসনের মূল শেকড়ে লুকিয়ে থাকা এই দুর্নীতিবাজদের দমন করা সহজ হবে না। তাদের জন্যই প্রশাসন দুর্নীতিগ্রস্ত থেকে যাচ্ছে, এবং যারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে আসীন হবে, তাদের অনেকেই শেখ হাসিনার সমর্থক বা সহযোগী। এটি রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎকে আরো অস্পষ্ট এবং হতাশাজনক করে তুলছে।

বাংলাদেশের জন্য এখন প্রয়োজন একটি সুস্থ প্রশাসনিক ব্যবস্থার পুনঃপ্রতিষ্ঠা। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ক্ষমতার পরিবর্তন যতটা জরুরি, ততটাই গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রশাসনের শুদ্ধতা ও জনগণের আস্থা। শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনের পতন ঘটলেও তার রেখে যাওয়া শিকড় যতক্ষণ না উপড়ে ফেলা যায়, ততক্ষণ রাষ্ট্রকে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা থেকে মুক্ত করা যাবে না।

নতুন প্রজন্মের কাছে আমাদের আশা রাখতে হবে। তারা হয়তো স্বৈরাচারী সরকারের দুঃশাসনের মধ্য দিয়েই তাদের জীবনের প্রথম পাঠ নিয়েছে, কিন্তু তাদের মধ্যেই রয়েছে সম্ভাবনা—একটি সৎ, নির্ভীক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ফুলকপি পাকোড়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:২০



ফুলকপি নিয়ে চারিদিক বেশ হৈচৈ চলছে । ক্রেতা হিসাবে আমাদের কিছুই করার নেই দুঃখ প্রকাশ ছাড়া । তো ফুলকপির পাকোড়া খুব স্বাদের জিনিস । ঝটপট বানিয়ে ফেলুন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাইরে নাইরে না!!!!!!!!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:২২



বেশ কিছুদিন আগে দ্য সানডে টাইমসে একটা আর্টিকেল পড়ছিলাম। লেখক হিপোক্রেসির ধরন বোঝাতে গিয়ে একটা কৌতুকের অবতারনা করেছিল। কৌতুকটা এমন..........ছয় বছরের ছোট্ট জো তার বাবাকে গিয়ে বললো, ড্যাড, আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঈশ্বর!

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৯







নিটশের ঈশ্বর মৃত হয়েছে বহুদিন আগে, জড়াথস্ট্রুবাদের ঈশ্বর বদলে যায়নি, একটাই থেকেছে ; আব্রাহামিক ঈশ্বর অনেক ভাষায় কথা বলা শিখিয়েছে মানুষকে ;বুদ্ধের ঈশ্বর অভিমান করে কথাই বলতে চায়নি ; মিথলজীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানেরা ভাগ্যন্নোয়নের জন্য পশ্চিমে গিয়ে, পশ্চিমের সংস্কৃতিকে হেয় করে ধর্মের নামে।

লিখেছেন জেনারেশন৭১, ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২০



এখন পশ্চিম চাহে যে, মুসলমানেরা যেন "ভাগ্যান্নষন"এর জন্য তাদের দেশে আর না যায়; কারণ, মুসলমানেরা পশ্চিমের সংস্কৃতিকে হেয় করার জন্য ধর্মকে ব্যবহার করে। একই আব্রাহামিক ধর্মের লোকজন হলেও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:০০

প্রতিযোগিতার এই দুনিয়ায় এখন আর কেউ নিজের মতো হতে চাই না, হতে চাই বিশ্ববরেণ্যদের মতো। শিশুকাল থেকেই শুরু হয় প্রতিযোগিতা। সব ছাত্রদের মাথায় জিপিএ ৫, গোল্ডেন পেতে হবে! সবাইকেই ডাক্তার,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×