অক্ষয় কুমারের উত্থান নিয়ে প্রশংসা না করে পারা যায় না। একের পর এক দারুন চিত্রনাট্যের মুভির পাশাপাশি “মাসালা” মুভিও করে যাচ্ছে, যেগুলি সবগুলিই হিট। সর্বশেষ মুভি “গোল্ড”। সত্য ঘটনা, হকি খেলা নিয়ে এক দেশাত্মবোধক মুভি। কিন্তু পরিচালনায় আছেন রীমা কাগতি। অক্ষয় কুমারকে দেখে তাকে দিয়ে ছ্যাবলামি করানোর চুলকানি উঠে গেল। আবার মুভির কাহিনী বেশ ভালো। কিছু ভালো দৃশ্য তো রাখতেই হয়ে গেল। সব মিলিয়ে মুভির নামে যে কী তৈরী হলো সেটা আল্লাহই জানেন।
কাহিনী ১৯৪৮ এর অলিম্পিক। হকির আসরে সবচেয়ে ভালো দল সদ্য স্বাধীন ভারত। কিন্তু স্বর্ণপদক জয়ের জন্য দল কি প্রস্তুত? ১৯৩৬ সালের সেই দল তো আর নেই। নেই সে আমলের হকির শচীন টেন্ডুলকার :”ধ্যানচাঁদ”। নতুন দলকে সোনা জেতানোর স্বপ্ন দেখে তপন দাস (অক্ষয় কুমার)। কিন্তু দলে কী ভূমিকা তার?
তিনি খেলোয়াড় ? না।
কোচ? না।
স্পন্সর? না।
চিয়ারলিডার? মমম... না।
গতিদানব? এক্কেরে ঠিক কইসেন।
অক্ষয় কুমার হচ্ছেন সহকারী ম্যানেজার! কিন্তু ম্যানেজারের কাজ কী? সেটা কেউই জানে না। নির্বাচক, খেলার পরিকল্পনাকারী, দেশের কথা মনে করিয়ে দেয়া, পার্টিতে নাচানাচি করা, ... আপনা যেটা ভাববেন সেটাই তার কাজ।
যাই হোক ১৯৪৬ থেকে দল গঠনে কাজ শুরু করে দেন অক্ষয়। কিন্তু ৪৭ এর দেশভাগের কারণে দল দুই ভাগ হয়ে যায়। এই দল নিয়ে কী স্বর্ণপদক পাওয়া যাবে?
অক্ষয় আমার মতে ভারতের প্রথম সারির অভিনেতা। কিন্তু তপন দাসের চরিত্রটি কী আসলেই ফালতুভাবে লেখা নাকি অক্ষয় অভিনয় করতে পারে নি সেটা বুঝতে পারলাম না। বাঙালি হলেই কি “কী হৌলৌ গৌ?” বলতে হবে? খুবই হতাশাজনক।
অভিনয় ভালো করেছেন সানি কৌশল, কুনাল কাপুর, এবং বিনিত কুমার সিং। এছাড়া ছোট চরিত্রে মৌনি রায় ভালো করলেও ক্যামেরা ছিল তার কোমরের দিকেই। অমিত সাধও ভালো করেছেন তবে তার চরিত্রটি খুবই বাজেভাবে লেখা।
মুভির গানগুলি মোটামুটি হলেও দৃশ্যায়ন জঘন্য মানের। বিশেষ করে “চাড় গায়ি ওয়ে” গানটি সহ্য করা যায় না।
মুভিটির সবচেয়ে খারাপ দিক হলো চিত্রনাট্য। কোন দৃশ্যের পর কোন দৃশ্য কেন হচ্ছে কী কারণে হচ্ছে বুঝতে বেশ কষ্ট হয়। যেমন এক দৃশ্যে সানি কৌশল কে বৃটিশ রা জিজ্ঞেস করে “হকি খেলবা ?”, “না”। পরের দৃশ্যেই সে হকি খেলছে। মানে কি? আরেক দৃশ্যে অমিত সাধ এক ভিক্ষুককে ভিক্ষার নামে প্যান্ট শার্ট সব দিয়ে দেয়।
বুঝলাম সত্য ঘটনা নিয়ে মুভি করা কঠিন। কিন্তু চরিত্রগুলি পুরোপুরি বাস্তব মানুষগুলির সাথে মিল রেখে করা হয়নি। যে কারণে বানোয়াট করতে গিয়ে আরও খারাপ হয়ে গেছে।
মুভিটির শেষ দৃশ্যটি বেশ ভালোই বলতে হবে। তবে শেষ দৃশ্যের কারণে পুরো মুভিকে তো আর ভালো বলা যায় না।
সব মিলিয়ে একবার দেখার মতো।
রেটিং – ১.৫ / ৫.০
https://www.facebook.com/rajinreview/photos/a.2066207476723011/2170648209612270/
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩৯