somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজিন রিভিউ: Bang Bang

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পাইলাম। অবশেষে পাইলাম। কী পাইলাম? চোখের শান্তি পাইলাম। । মুভি দেখি আনন্দ পাওয়ার জন্য। অবশেষে পেলাম সেই আনন্দ এক ধামাকা থেকে যার নাম ‘Bang Bang’। হৃতিক রোশান পেল তার জায়গামত চরিত্র। হয়তো প্রথম কোন হিন্দী মুভি যাকে নকলের দোষ দেয়া যাবে না। কারণ মুভিটি আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১০ সালের Knight and Day মুভির পুনঃনির্মাণ।

কাহিনী একটু পেঁচানো। বিখ্যাত ঐতিহাসিক “কোহিনূর” হীরা চুরি হয়ে গেছে। চোর আমাদের হৃতিক বাবাজী । এত দামি জিনিস কারে বেচুম? আইসা পরে আমাদের ভিলেন ওমর জাফর ( Danny Denzongpa)। এদিকে শিমলার ঠান্ডায় এক ঠান্ডা সুন্দরী ব্যাংক রিসিপশনিস্ট হারলীন সাহানী ( Katrina Kaif)। জীবন পুরাই ঠান্ডা এবং একাকী। কী আর করা? ইন্টারনেটে TrueLuvv.com এ জীবনসাথী খোঁজার চেষ্টায় এক ভিকি নামক বান্দার সাথে ডেট ঠিক হয় রেস্টুরেন্টে খাওয়ার। হারলীন আছে বসে কিন্তু অন্য জনের খবর নেই। জীবনটা হয়তো এভাবে একাকী খাওয়ার টেবিলটার মতই থেকে যাবে। হঠাৎ একজনের আবির্ভাব। কিন্তু পরে জানা যায় যে সে তার “ভিকি” নয়। সে এক আন্তর্জাতিক চোর “রাজভীর নান্দা” ( Hrithik Roshan)। যার বর্তমান কাজ হারলিনকে ব্যবহার করে নিজের চুরির জিনিসটি অক্ষত রাখার চেষ্টা। জীবন পুরাটাই পাল্টে যায়। এক ব্যাংকের বোরিং চাকরী থেকে হঠাৎ এক অপরিচিত ব্যক্তির হাত ধরে ছুটে চলা এবং পিছনে পুলিশ এবং ওমর জাফরের লোকদের তাড়া খাওয়া। বিরাট এক বিপদে পড়ে যায় হারলিন। কি দোষ ছিল তার?

মুভিটিকে বিশ্লেষণের আগে এটির হলিউড সংস্করণ টম ক্রজ এবং ক্যামেরন ডায়াজ এর Knight and Day এর সাথে একটু তুলনা তো করতেই হয়। Knight and Day মুভিটি আসলে একটি অ্যাকশান-কমেডি মুভি। যেটি দেখতে গিয়ে মনে হয়েছে পুরাই হিন্দী মুভিই দেখলাম। এদিকে Bang Bang মুভিটি অ্যাকশান – কমেডি না বলে অ্যাকশান-রোমান্টিক বলতে হবে। ভারতীয় দর্শকদের কথা চিন্তা করে মুভিটির কাহিনী কিছুটা সহজ করা হয়েছে যেটি বেশ ভালো লেগেছে। নির্দেশক Siddharth Anand এর পরিচালনা আসলেই দারুন ।

মুভিটিকে ভালো লাগার জন্য একটি নামই আসে। সেটি Hrithik Roshan এর। অসাধারণ!! কীভাবে পারে? Tom Cruise এর সাথে তার তুলনা করাটা খুব একটা ঠিক হবে না কারণ এই মুভির চরিত্রটি Knight and Day এর Roy Miller এর থেকে সামান্য আলাদা। Tom Cruise কে যেখানে দুর্দান্ত লেগেছে হৃতিককে লেগেছে দুর্দান্তিস! প্রতিটি মুভির জন্য তার নিষ্ঠা এবং শ্রম তাক লাগানোর মত। কিন্তু এই মুভিতে একশান দৃশ্য দৃশ্যায়নকালীন বেচারার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ পর্যন্ত হয়ে গেছে। ব্রেন সার্জারীর পরও সে একশান দৃশ্য করতে স্টান্ট ব্যবহার করতে অপারগতা জানায়। এই মুভি ভারতের অন্য কোন অভিনেতা দ্বারা করা একেবারেই অসম্ভব। শুধু একশান নয়। হৃতিকের অভিনয়, চলাফেরা, ভাআআআবস, স্টাইল এবং সবশেষে নাচ সবই এক্কেবারে কেল্লা ফতে।

মুভিটি পুরোপুরি নায়ক প্রধান হলেও Katrina Kaif এর চরিত্রটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দারুণ লেগেছে ক্যাটরিনাকে। হৃতিক-ক্যাটরিনার জুটির রসায়ন দেখে পুরাই টাশকি খাইসি। এতদিন লাগলো এই দুজনকে একই সাথে পুরোপুরি নায়ক-নায়িকা হিসেবে দেখতে? এই মুভি যেমন হৃতিক ছাড়া চিন্তা করা যায় না তেমনি ক্যাটরিনা ছাড়াও অসম্ভব। হৃতিকের পাশে আর কোন ভারতীয় নায়িকা যেন মানাবেই না। এর জন্য ক্যাটরিনার প্রশংসা না করে পারা যায় না। সাধারণ এক শিমলার নিষ্পাপ মেয়ে বলুন কিংবা শেষ দৃশ্যে দুর্দান্ত নাচ সবকিছুতেই অপূর্ব ক্যাটরিনা। হৃতিক – ক্যাটরিনার আরো মুভি এখন সময়ের দাবি।

হলিউড সংস্করণ থেকে অন্যতম পরিবর্তন ছিল ভিলেন ওমর জাফরের চরিত্রটি যেটি Danny বেশ ভালোভাবেই করেছেন। এছাড়া অন্যান্য চরিত্রে Pawan Malhotra, Kanwaljit Singh, Deepti Naval, Jimmy Shergill কে ভালোই লেগেছে। Jaaved Jaffrey’র চরিত্রটি পুরোপুরি অপচয় বলে মনে হয়েছে। দারুন লেগেছে ক্যাটরিনার দাদী চরিত্রে Kamlesh Gill কে।

সংগীতের কথায় আসি। মাত্র ৪ টা গান আছে। সবগুলিই বেশ ভালো। Vishal-Shekhar এর কাজ বরাবরের মতই দারুন। “তু মেরি” , “ব্যাং ব্যাং” গান দুটিতে হৃতিক নাইচা কোপায় ফেলসে। ক্যাটরিনাও কম যায় না। তবে “মেহেরবান” গানটিতে দুজনকে ফাটাফাটি লেগেছে। দারুন দৃশ্যায়ন।

একশান নিয়ে আর কী বলবো। ফ্লাইবোর্ড, রেস কার কোনটিই Knight and Day তে ছিলনা। নতুন একশান সংযোজন গুলি দেখে মুখ আসলেই হা হয়েছিল।

মুভিটির একটি খারাপ দিক বলা যেতে পারে সেটি হল আবহ সংগীত। একশান মারামারি চলতেসে আর পিছনে ফ্যাচফ্যাচে শব্দ শুনতে খুব একটা ভালো লাগেনি। Selim Sulaiman থেকে আরো একটু বেশী আশা করা যায়।

Knight and Day মুভিটি অত্যন্ত নান্দনিক। যারা হিন্দী মুভির ভক্ত তাদের আরো নান্দনিক লাগবে Bang Bang। আর হৃতিকের ভক্ত হলে তো কথাই নেই।

সব মিলিয়ে ধামাকা মুভি।

রেটিং – ৪ / ৫
৮টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×