somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এন্টি ক্লীশে সম্পর্কিত এক ভয়ঙ্কর?? রাতে

১৮ ই মে, ২০০৯ ভোর ৬:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৮-০৫-০৯
রাত দশটা। শান্তিনগরের অসম্ভব শান্ত একটা গলি ধরে ফিরছিলাম হলের দিকে। ছাত্রের অন্য সময় ফাঁকা নেই, তাই রাত্রি করেই পড়াতে যেতে হবে এবং ফিরতে হবে ততোধিক রাত্রিতে। বাজে টিউশনি-ভাগ্যকে দুষতে দুষতে,টিউশনি দাতা বন্ধুকে আন্তরিক গালাগাল দিতে দিতে এবং এরপরও কেন এমন টিউশনি করাচ্ছি-জনিত আত্মবিবমিষায় এমনিতেই যথেষ্ট বিষণ্ণ লাগছিলো। ভীতু মানুষ, তাই বর্ষণ শেষের এই জনশুন্য গলির বাঁক থেকে বাঁক পেরিয়ে মূল রাজপথে আসার মধ্যবর্তী সময়টা আরো অস্বস্তিতে কাটছিল।বাঁক গুলো যেন আশ্চর্য ধারাবাহিক,স্বল্প পরিচিত রাস্তা তাই আরও অধিকতর গা-ছমছমে। হঠাৎ পদশব্দে পেছন ফেরার আগেই লোকটা(যে লোকটার কারনে এই গল্প ) আমার হাত ধরেছিলো। মুহূর্তেই শোনা বেশকিছু ছিনতাই-এর কাহিনী মনে পড়ে গেল। আবছা আলোয় লোকটাকে ভালো দেখা যাচ্ছিল না, দেখবার চেষ্টাও করিনি অবশ্য ত্রস্ত আমি।লোকটাও, নিশ্চিত, ভালো দেখছিলো না আমাকে,অবশ্য সেটা বোধহয় অপ্রাসঙ্গিক। আটকানো হাত ধরেই মরিয়া হয়ে আগানোর চেষ্টা করলাম ভীত ও উত্তেজিত আমি। ঠিক তখনই সামনের বাঁক থেকে কিছু আকস্মিক আলো এবং দুজন মানুষের কথা ভেসে এলো।
তখনো লোকটার সাথে কোনো কথা হয় নি আমার, লোকটার হাতেও উঠে আসে নি কোনো ছোরা বা পিস্তল এবং যথেষ্ট বোকার মত আমিও চেঁচাইনি তারস্বরে।
সামনের লোক দুজন চলে যাবার জন্যই অপেক্ষা করছে ও,ভাবছিলাম আমি।আর তখন অদ্ভুত ভালোমানুষের মত লোকটা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলো আমার নাম,জিজ্ঞেস করেছিলো আমি কী করি। আমার নামটা আমি কেন বলেছিলাম অমন সময় সে প্রশ্ন আমার নিজেরই রয়ে গেছে।তবে হ্যাঁচকা টানে আমি হাতটাও ছাড়িয়ে নিয়েছিলাম তখনই এবং তৎক্ষণাৎ চেপে ধরেছিলাম লোকটার শার্টের কলার।সামনের লোকদুজনও ততক্ষনে চলে এসেছে একেবারে কাছে। লোকটাও তখনই উল্টো ঘুরে প্রাণপণ দৌড়াতে শুরু করেছিলো।উল্টো ঘুরতে গিয়ে তার শার্টের একটা বিশাল অংশ ছিঁড়ে রয়ে গিয়েছিলো আমার হাতে।সামনের লোকদুটোও বলা কওয়া ছাড়াই পকেট থেকে বিশাল ছুরি বের করে ছুটতে শুরু করল তার পিছু পিছু।
হতবাক আমি কিছুক্ষণ নির্বাক দাড়িঁয়ে রওনা দিলাম,নিরাপদে ফেরাটাই যেহেতু সবচেয়ে জরুরী মনে হয়েছিলো তখন।হলে ফিরে প্যান্টের পকেটে পেয়েছিলাম সেই ছেঁড়া শার্টের বিশাল টুকরো।গাঢ় নীল রংয়ের শার্ট। কখন যে ঢুকিয়ে ফেলেছিলাম পকেটে,খেয়ালই নেই! কী করে খেয়াল থাকবে? সেই ভীতিকর সময়ে খেয়াল রাখাটাই তো আশ্চর্যের ছিলো।
দুদিন পরের প্রথম আলোতে শেষের পাতায় ছাপা হয়েছিলো খবরটা।শান্তিনগরে গত পরশুদিন রাতে হওয়া একটা খুনের খবর,খুন হয়ে যাওয়া লোকটার ছবিসমেত। চেহারা বোঝা যাচ্ছিল না লোকটার যদিও তার গায়ের শার্টের রংটা ছিলো খুবই স্পষ্ট- গাঢ় লাল।
এবং শার্টটার কলারের কাছটাতে কোনো ছেঁড়া আমি দেখতে পাই নি ,তার ওপর লোকটা মারা গিয়েছিলো বুলেটের আঘাতে, ছুরির কোনো চিহ্নও ছিলো না শরীরে।অবশ্য এতে করে আমার সমস্যার কোনো সমাধান হয় নি। লোকটা কেন আমার নাম জিজ্ঞেস করেছিলো আর আমিই বা বোকার মত কেন তার প্রশ্নের জবাব দিয়েছিলাম উত্তর খুঁজে পাই নি আজো।
টিউশনিটা অবশ্য আমি পরের সপ্তাহে ছেড়ে দিই নি ,এখনও তাই উত্তর পাওয়ার একটা জোরালো সম্ভাবনা রয়ে গেছে।

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০০৯ সকাল ৭:৫৫
৯টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যদি এমন হতো.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:২৮

যদি এমন হতো....

বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা-দারিদ্র-মহামারী, যুদ্ধবিগ্রহের ধ্বংসযজ্ঞে মানুষে মানুষে, দেশে দেশে সকল বৈরীতা ভুলে একটা সুখী পরিবার গঠন করে দুনিটাকে সত্যিকার ভূস্বর্গ করতে...
শুরু হতো বাংলাদেশ থেকে। সব রাজনৈতিক দল মুক্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

নির্বিকার ( কবি দাউদ হায়দার স্বরনে তারি লেখা কিছু কবিতা থেকে উৎসাহিত হয়ে)

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:০৫



জন্মেছি, এও এক ঘটনা মাত্র।
কারও ইচ্ছেতে নয়, কারও অনিচ্ছেতেও নয়।
রক্তের গন্ধে ভরা এক সকালে
আমি নেমে এসেছি, অপ্রত্যাশিত চিৎকারে ।

শহরের ধুলো, গলির বিক্রি হয়ে যাওয়া রোদ,
বাসের পাদানিতে ঝিমিয়ে পড়া শরীর,
সবকিছু দেখেছি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতের পাশে আমেরিকা-ইসরায়েল। পাকিস্তানের পাশে কারা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩


গত রাতে ইসরায়েল থেকে ভারতে বিপুল পরিমাণ যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে গেছে একটি কার্গো বিমান। তাতে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির গাইডেড মিসাইল বিপুল পরিমাণে আছে। এই মিসাইলগুলো অতি নিখুঁতভাবে মেঘ, বৃষ্টি বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারত ও পাকিস্তান উভয় সম্পূর্ণ কাশ্মিরের দখল পেতে মরিয়া

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৩



ভারত হয়ত এবার যুদ্ধকরেই পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির দখল করতে চায়। পাকিস্তানও হয়ত যুদ্ধকরেই ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির দখল করতে চায়। এমতাবস্থায় ভারতের পাশে ইসরাইল এবং পাকিস্তানের পাশে চীন থাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবার কমন শত্রু আওয়ামী লীগ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:৫৮


শেখ হাসিনা সবসময় তেলবাজ সাংবাদিকদের দ্বারা বেষ্টিত থাকতেন। তেলবাজ নেতাকর্মীরাও বোধহয় তার পছন্দ ছিল। দেশে কী হচ্ছে, না হচ্ছে, সে সম্পর্কে তার ধারণাই ছিল না। সামান্য কোটাবিরোধী আন্দোলন উনার পক্ষে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×