স্বাধীনতা পরবর্তীকালের ব্যর্থ সরকার এবং পরপর দু'টো সামরিক শাসন, বিশেষ করে এরশাদের নয় বছরের দুর্বিষহ স্বৈরাচার আমল শেষে বাংলাদেশের জনগন প্রথমবারের মত নির্দলীয় সরকারের অধীনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যক্ষ করে ১৯৯১ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারী। এর আগে '৭৩, '৭৯, '৮৬ এবং '৮৮ এর জাতীয় নির্বাচনের প্রতিটিতেই তৎকালীন ক্ষমতাসীন সরকারগুলোর কমবেশি কারচুপি, ভোটডাকাতির মাধ্যমে গোটা নির্বাচন ব্যবস্থাকেই হাস্যকর করে ফেলেছিল। '৮৮ নির্বাচনে এমনও শোনা গেছে যে সারাদেশে একজনও প্রকৃত ভোটার ভোট দিতে পারেনি, জাতীয় পার্টির ভাড়াটে গুন্ডারা সকাল ১০-১১টার মধ্যে সব ব্যালটে সীল মেরে ভোটকেন্দ্রই বন্ধ করে দিয়েছিল। এই অবস্থায় দেশের অর্ধেকেরও বেশি মানুষের প্রথম প্রকৃত নির্বাচন অভিজ্ঞতা '৯১ সালে। একনায়কতন্ত্রের পতন এবং দুই প্রধান নেত্রীর পাহাড়সমান জনপ্রিয়তার কারনে মানুষের দু'চোখে তখন সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশের আকাশছোঁয়া স্বপ্ন।
একটু পেছনে ফিরে দেখা যাক। এরশাদের বিরুদ্ধে এর আগেও দুটো বড় ধরনের আন্দোলন হলেও '৮৬ সালে শেখ হাসিনাকে বিশাল অংকের ঘুষ দিয়ে নির্বাচনে এনে এবং '৮৭ সালে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে তুমুল দমননীতি চালিয়ে এরশাদ ক্ষমতা ধরে রাখতে সক্ষম হন। আগের সব ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে দুই নেত্রী '৯০ সালের মাঝামাঝির দিকে আন্দোলনের তোড়জোড় শুরু করেন। এসময় একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে - ৬ই জুন ডাকসুর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনকে এরশাদের সবচেয়ে বড় ভুল হিসেবে ধরা যায়।(এরশাদের সবচেয়ে বড় ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এরপরের কোন সরকারই আর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে দেয়নি!) ছাত্রদল একচেটিয়া জয়লাভ করে এবং এই দলেরই মাঝারি সারির নেতা আমানুল্লাহ আমান, খায়রুল কবীর খোকন এবং নাজিমউদ্দিন আলম যথাক্রমে ভিপি, জিএস ও এজিএস পদে নির্বাচিত হন। খালেদা জিয়ার তৎকালীন আপোষহীন নেত্রী ইমেজ এবং ডাকসুতে ছাত্রদলের নিরংকুশ আধিপত্য - দুইয়ে মিলে ছাত্রসমাজে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হল। ডাকসুর এই নবনির্বাচিত পরিষদের নেতৃত্বে সব দলের ছাত্রনেতাদের নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য যাদের প্রায় একক অবদানে আন্দোলন তুমুল বেগবান হয়ে ওঠে।
নভেম্বরের শেষের দিকে এরশাদ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত বন্ধ করে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করে রাখেন। এসময় দ্বিতীয় উল্লেখযোগ্য ঘটনাটি ঘটে - সেনাপ্রধান নুরুদ্দিন খান এরশাদকে সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানান। এরশাদের পক্ষে সেই সময়ে সেনাবাহিনীর শতভাগ সহায়তা ছাড়া এক মুহুর্তও ক্ষমতায় থাকা সম্ভব ছিল না। উপায় না দেখে তিনি খুব শিঘ্রি নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা এবং নির্বাচনের ১৫ দিন আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার প্রস্তাব দেন। দুই নেত্রীই এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে ডিসেম্বরের ৩ তারিখে রাত ১০টার দিকে এরশাদ পরাজয় স্বীকার করে নেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে তখন উপরাস্ট্রপতি মওদুদ আহমেদ ১৫ দিন আগে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার বিষয়টির সৌন্দর্য (!) ব্যাখ্যা করছিলেন আর বাইরে লাখো জনতা শীতের রাত উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমে এরশাদ-মওদুদ গং এর চামড়া খুঁজছিলেন। সেটা ছিল এক স্বপ্নের রাত, একাত্তরের পর গোটা দেশ আরও একবার স্বপ্নে বুঁদ হয়ে উঠেছিল।
অবশেষে ডিসেম্বরের ৬ তারিখে প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিনের কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে এরশাদ বিদায় হন। এর সপ্তাহখানেকের মধ্যেই তাকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয় এবং পরের বছরে ২৭শে ফেব্রুয়ারী নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করা হয়।
আন্দোলনের সামনের সারিতে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য থাকলেও এদের কেউ নিজেরা প্রধান নেতা হবার চেষ্টা করেননি। প্রত্যেক দলের ছাত্রনেতাই যার যার মূল দলের নেতৃত্বকে সামনে রেখে আন্দোলন চালিয়েছেন। ফলে খালেদা-হাসিনা তখন প্রায় দেবীর আসনে অধিষ্ঠিত। সারা দেশের মানুষের সব স্বপ্ন তখন এই দুই নেত্রীকে নিয়ে। দীর্ঘ নয় বছর দু'জন একসাথে আন্দোলন করেছেন, উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। তাই লোকে ভাবছিল - যিনিই ক্ষমতায় আসুন, তিনি অপরজনের সাথে মিলেমিশে এবং শতভাগ সততা দিয়ে দেশকে গড়ে তুলবেন।
শুরু হল বিপুল মহাসমারোহে নির্বাচনী প্রচারনা। চারিদিকে উৎসবের আমেজ। আওয়ামী লীগের শক্তি ছিল বহু যুদ্ধের পোড় খাওয়া একদল দক্ষ রাজনীতিবিদ, একটু বয়স্ক মানুষের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর তুঙ্গস্পর্শী ইমেজ এবং তৃনমূল পর্যায় পর্যন্ত বিপুল সাংগঠনিক ভিত্তি। অন্যদিনে বিএনপির ছিল বিশাল ছাত্রসংগঠন এবং তরুনদের মধ্যে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত ইমেজ। জামাত তাদের মসজিদ-মাদ্রাসাভিত্তিক রাজনীতি দিয়ে মফস্বল এবং গ্রামাঞ্চলে তাদের সংগঠন দাঁড় করাবার চেষ্টা করছিল, জাতীয় রাজনীতিতে তখনও তাদের কোন অবস্থান তৈরী হয়নি। এরশাদসহ জাতীয় পার্টির বেশিরভাগ প্রথমসারির নেতা জেলে অথবা বিপুল দূর্নীতির দায় নিয়ে যেকোন সময় গ্রেফতারের আশংকায় পর্যদুস্ত। এর পাশাপাশি ছিল বহুধাবিভক্ত বাম দলগুলো।
সাংগঠনিক ভিত্তির জোরে খুব শিঘ্রি বিএনপিকে পেছনে ফেলে দেয় আওয়ামী লীগ। দেশের আনাচে-কানাচে তাদের কর্মীরা পৌঁছে গিয়ে বাড়ি বাড়ি ভোট চাইতে শুরু করেন। এই সুস্থ নির্বাচনী পরিবেশেও জামাত ধর্মকে পুঁজি করে তাদের নোংরা কার্যকলাপ অব্যহত রাখে - বেহেশতের টিকেট নামে একটি লিফলেট বিতরন করতে শুরু করে। দাড়িপাল্লায় একটি ভোট মানে বেহেশতের টিকেট! ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝি সবাই মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়, আওয়ামী লীগ এই নির্বাচন জিতে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। কিন্তু সব হিসাবনিকাশ, ভবিষ্যদ্বানী নষ্ট হয়ে যায় দু'টি টেলিভিশন ভাষণে।
সকল রাজনৈতিক দলের প্রধান বাংলাদেশ টেলিভিশনে আধঘন্টা তাদের দলের পরিকল্পনা এবং কর্মসূচী নিয়ে বক্তব্য রাখার সুযোগ পান। নির্বাচনের ১৫-২০ দিন আগে এই কার্যক্রম শুরু হয় এবং প্রতিদিন একটি রাজনৈতিক দল বক্তব্য রাখছিলেন। শেষ দিনে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারী ২৪ তারিখে (নির্বাচনী আইন অনুসারে ৪৮ ঘন্টা আগেই প্রচারনা সম্পূর্ন বন্ধ করতে হয়) খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনাকে একই দিনে বক্তৃতা দেয়ার সময় নির্ধারন করা হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ে সারা দেশের মানুষ অধীর আগ্রহে টিভি সেটের সামনে দুই নেত্রীর ভাষণ শোনার জন্য অপেক্ষায়। কিন্তু ভাষণ আর শুরু করা যাচ্ছিল না কারন দু'জনই গোঁ ধরে আছেন যে সবার শেষে বক্তব্য রাখবেন। কোনভাবেই সমাধানে আসতে না পেরে বিটিভি কর্তৃপক্ষ লটারীর প্রস্তাব দেয়। শেখ হাসিনা লটারীতে হেরে গিয়ে প্রথমে এবং খালেদা জিয়া শেষে বক্তব্য রাখেন।
দু'টো বক্তৃতার গুনগত মানের পার্থক্য এত বিশাল ছিল যে আগে বা পরে দেয়ার মধ্যে কোন প্রভাব ফেলত না। শেখ হাসিনা তার বক্তব্যের প্রায় পুরোটাই ব্যয় করেন বিএনপি এবং জিয়ার সমালোচনায়। জিয়ার আমলে কোন এক মন্ত্রীর বাড়ি থেকে ইঁদু নামক এক সন্ত্রাসী ধরা পড়েছিল, সেই ইতিহাসও তিনি দেশের মানুষকে দীর্ঘ সময় নিয়ে শোনান। তার নিজের দলের নির্বাচনী ইশতেহার বা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, এসব কিছুই তিনি বিস্তারিত আলোচনা করেননি। জেলে থাকা এরশাদের মন্ত্রী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন এই ভাষণ সম্পর্কে পরে বলেছিলেন, 'প্রতিটা লাইন শুনছিলাম আর বুঝতে পারছিলাম আওয়ামী লীগের ভোট কমছে'। মানুষ কিছুটা হতভম্ব এবং প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে উঠে এই ভাষণ শোনার পর। অন্যদিকে, খালেদা জিয়া তার ভাষণে একবারও আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ না টেনে তার নিজের দলের কর্মসূচী বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন। উল্লেখ্য, এই দুটো ভাষণ একসাথে রেকর্ড করা হয়েছিল। ফলে অন্য জন কি বলছেন, সেটা কারও পক্ষে জানা সম্ভব ছিল না। বিপুল সংখ্যক ভাসমান ভোটার এই ভাষণ শোনার পর তাদের সিদ্ধান্ত বদলে ফেলে।
অবশেষে ২৭শে ফেব্রুয়ারী স্বাধীন বাংলাদেশ প্রথমবারের মত দেখল একটি সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ন নির্বাচন। অল্প কিছু কেন্দ্রে ছোটখাট সহিংসতার খবর পাওয়া গেলেও মোটের উপর এটা ছিল পুরোপুরি নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন। প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার অক্লান্ত পরিশ্রম এবং সততা দিয়ে এই নির্বাচন সম্পন্ন করেছিলেন। দেশবিদেশের সকল পর্যবেক্ষকও শাহাবুদ্দিন সাহেবের ভূয়সী প্রশংসা করেন। নির্বাচন শেষ হবার আগে শেখ হাসিনাও টিভিতে ঘোষনা করেন যে নির্বাচন সম্পূর্ন সুষ্ঠু হচ্ছে এবং তার দল দু'শটি আসন পাবার আশা করে। অতিরিক্তি আত্মবিশ্বাসী হয়ে তিনি প্রতিপক্ষকে সাবধান করে দেন যে নির্বাচনে হেরে গিয়ে কেউ যেন পরে কারচুপির অজুহাত না দেয়।
এবারই প্রথম নির্বাচনী ফলপ্রকাশে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। ফলে রাত বারটার কিছু পর থেকেই বিভিন্ন আসনের ফল আসতে থাকে। পরদিন দুপুরের মধ্যেই এটা পরিষ্কার হয়ে যায় যে পাশা উলটে গেছে, আওয়ামী লীগ নির্বাচন হেরে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা নিজে ৩টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ২টিতেই পরাজিত হন, এর মধ্যে ঢাকা-১০ (রমনা-তেজগাঁও) আসনটিও ছিল। খালেদা জিয়া ৫টিতেই জয়লাভ করেন। শেষ পর্যন্ত বিএনপি ১৪০টি এবং আওয়ামী লীগ ৮৮টি আসন লাভ করে।
সবগুলো আসনের ফল আসার পর শেখ হাসিনা মাত্র দু'দিন আগে নিজের মুখে বলা সুষ্ঠু নির্বাচনের ঘোষনা থেকে সরে এসে বিএনপির বিরুদ্ধে তথাকথিত 'সুক্ষ্ম কারচুপি'র অভিযোগ আনেন। নির্বাচনে হেরে যাবার পর এমনিতেই আওয়ামী লীগের অবস্থা ছিল শোচনীয়, তার মধ্যে এই সুক্ষ্ম কারচুপির অভিযোগ তাদের হাসির পাত্রে পরিনত করে। দলের কাছে নিজের ইমেজ বাঁচাতে শেখ হাসিনা হাস্যকর পদত্যাগ নাটকের আশ্রয় নেন, দলীয় প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ছাত্রলীগের হাজার কর্মী তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের অনুরোধ করলে আবার ফিরে আসেন। এই নাটক সাধারন মানুষের কাছে তার ইমেজ আরও নিচে নামিয়ে দেয়। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডঃ কামাল হোসেন দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিএনপিকে অভিনন্দন জানান। আওয়ামী কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বিশেষ করে শেখ হাসিনা এ অভিনন্দনকে ভাল চোখে দেখেনি, তাদের সমালোচনায় বিরক্ত হয়ে কামাল হোসেন আওয়ামী লীগ ছেড়ে চলে যান।
নির্বাচনের সবচেয়ে বিষ্ময়কর ঘটনা ছিল জেলে বসেও এরশাদ রংপুরের ৫টি আসন থেকে নির্বাচিত হন এবং তার দল ৩৫টি আসন লাভ করে। মাত্র ৩ মাস আগে এরশাদের প্রতি মানুষের যে প্রচন্ড ঘৃনা লক্ষ্য করা গিয়েছিল, সেই বিবেচনায় জাতীয় পার্টির এতগুলো আসন কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। শহুরে মধ্যবিত্ত সমাজ আর গ্রামের নিম্নবিত্তদের রাজনৈতিক চিন্তাভাবনার মধ্যে যে আকাশপাতাল পার্থক্য, সেটা পরিষ্কার হয় জাতীয় পার্টির এই ফলাফলে।
শেখ হাসিনার ফলাফল মেনে না নিয়ে কারচুপির মিথ্যা অভিযোগ দেশের মানুষের গত কয়েক মাস ধরে লালন করা স্বপ্নকে কিছুটা নষ্ট করে দেয়। এক অজানা আশংকা পেয়ে বসে সবাইকে। স্বপ্ন পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় যখন বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভের জন্য জামাতের সহযোগিতা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য বিএনপির দরকার ছিল ১১টি (১৫১-১৪০) আসন, আওয়ামী লীগের ৬৩টি (১৫১-৮৮) আসন। আওয়ামী লীগ যদি জাতীয় পার্টি, জামাত এবং অন্যান্য ছোট দলগুলো থেকে আরও ১০টি আসন আনতে পারত, তবে তারাই সরকার গঠন করত। দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে জাতীয় পার্টির সাথে কোয়ালিশন করা প্রধান দুই দলের পক্ষে সম্ভব ছিল না। বিএনপি অন্য অনেকগুলো ছোট দলকে রাজি করানোর বদলে এক জামাতকে নিজের দিকে টেনে নেয়া সহজ সমাধান মনে করল। বিএনপির শর্টকাট যাত্রাই বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে ঘৃন্য ঘটনা। জামাতকে জাতীয় রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করে দিল বিএনপির এই সিদ্ধান্ত। সরকার গঠনে সহযোগিতার বদলে জামাতকে ৩০টি সংরক্ষিত মহিলা আসনের মধ্যে দু'টি দেয়া হয়। এর মাধ্যমে গোলাম আজমের বেয়াইন সংসদে প্রবেশ করেন।
রাজাকার ও দূর্নীতিমুক্ত দেশের স্বপ্নের সলিল সমাধি ঘটে। এরপর এখন পর্যন্ত দেশের মানুষ আর স্বপ্ন দেখতে সাহস পায়নি, তেমন কোন উপলক্ষ্যও তৈরি হয়নি। আমরা অপেক্ষায় আছি আরেকটি গনআন্দোলনের।
পুনশ্চ দু'বছর পর জামাত অনেক বড় একটি পুরষ্কার বিএনপির কাছ থেকে আদায় করে নেয় - গোলাম আজমের নাগরিকত্ব!
নির্বাচনের বিস্তারিত ফলাফল