টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের সব আয়োজন এগিয়ে চলছে। আমাদের তথাকথিত প্রতিবেশী ও বন্ধু রাষ্ট্র ভারতের এই আয়োজন নতুন কিছু নয়। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তারা আমাদের সাথে যে ধারাবাহিক শত্রুতামূলক আচরণ করেছে এটা তারই সর্বশেষ। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে এ বিষয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বলে পরিচিত আওয়ামী লীগ সরকারের তেমন কোনো মাথা ব্যাথা নেই। নেই কোনো কূটনৈতিক তৎপরতা বা প্রতিবাদ। সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হলো জনগণ জনগণ বলে যিনি মুখে ফেনা তুলে ফেলেন সেই দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মুখে কুলুপ এঁটেছেন। অনেকে অবশ্য ওনাকে মূখ্যমন্ত্রী বলে ভ্রম করেন।
রাজাকাররা এবং যারা এই সরকারকে ভারতপন্থী সরকার বলে কটাক্ষ করে তারা বলেন, বর্তমান সরকারের এই আচরণ স্বাভাবিক। কারণ তারা ভারতকে সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা দেবে, তাদের কথায় উঠবে-বসবে এ রকম অঙ্গীকার করেই ক্ষমতায় এসেছেন। আমি ওনাদের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নই। আমি মনে করি, জনগণের রায়েই বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছেন। সুতরাং এরা জনগণের জন্য যা কিছু ভাল তাই করবেন; এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ওনারা সেই দায়িত্ব কতটুকু পালন করছেন তা প্রশ্নসাপেক্ষ।
এখন কথা হল, এই ব্লগে আমরা যাদেরকে দেশপ্রেমিক বলে মনে করি, যাদের বিভিন্ন লেখায় দেশপ্রেম ঝরে পরে, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করেন তাদের আহামরি কোনো তৎপরতা চোখে পড়ছে না! বেশীরভাগই একেবারে নীরব। অথচ আস্তিক-নাস্তিক, রাজাকার-মুক্তিযুদ্ধ ও বিভিন্ন ব্লগীয় ক্যাঁচাল নিয়ে ওনাদের লেখা প্রতিপক্ষকে এফোঁড় ওফোঁড় করে দেয়। আমি নিজেও এর বাইরে নই! কিন্তু আমার সীমাবদ্ধতা হলো লিখতে না পারা। আমার লেখা ক্ষুরধার নয় যে সামান্যতেই ব্লগাররা জেগে উঠবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে রক্ত নেচে ওঠা কিছু পোস্ট দেখেছি। গাজা গণহত্যা নিয়ে প্রতিবাদমুখর কিছু পোস্ট দেখেছি। বিভিন্ন সময় এ রকম সামাজিক কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ে প্রতিবাদমূলক পোস্ট দেখা যায়। অথচ টিপাইমুখ বাঁধের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট খুব বেশী একটা দেখা যাচ্ছে না। বিশেষ করে সেইসব স্টিকি ব্লগারদের। কিছু সেলিব্রেটি অবশ্য দায়সারা দুই-একটি পোস্ট দিয়েছেন। ইতিমধ্যে দিনমজুরের একটি লেখা স্টিকি হয়েছে বটে।
দেশপ্রেমিক ব্লগারদের কাছে উদাত্ত আহবান আপনারা এই বিষয়ে বিরতিহীন প্রতিবাদ করে যান। ভার্চুয়াল এই প্রতিবাদেই যে একটা কিছু হয়ে যাবে তা নয়; কিন্তু স্ফুলিঙ্গ থেকেই তো দাবানলের সৃষ্টি।