নতুন বুয়াটা এক সপ্তাহ না পেরুতেই চলে গেল। ওনার সমস্যা হলো রান্নাঘরে ওনার নাকি গরম লাগে। বাড়িওয়ালাকে ওনার অভিযোগ জানাতে হেসেই খুন। ওই শালা আরেক বাইনচোত। পান থেকে চুন খসলেই বাড়ি ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়। গান শোনা যাবেনা, বেশিক্ষণ কম্পিউটার চালানো যাবেনা, একাধিকবার গোসল করা যাবেনা ইত্যকার আরো কত রকমের নিষেধাজ্ঞা। জ্বী আংকেল, জ্বী আংকেল বলে ওনার কথায় সায় দিই। যদি কোনোদিন রাত করে ফিরেছি তো সেরেছে। চিৎকার-চেঁচামেচি করে মহল্লা জাগিয়ে তোলে। ওনাকেই বা দোষ দিই কি করে? ওনার মাশল্লাহ টাইপ স্ত্রী মানে আন্টিই ওনাকে পরিচালিত করে। স্ত্রৈণ পুরুষ আর কি।
ভাড়াটা সবসময় আন্টিই হস্তগত করেন তাও মাসের তিন তারিখের মধ্যেই। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে আছে বাড়িওয়ালার উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়া অতি কৃষ্ণকায় এক কন্যা। মানে অনেকটা হস্তীশাবক টাইপ। বলা নেই কওয়া নেই জানালা দিয়ে আচমকা পানির ঢিল, পাউডার কাগজে আলতো করে মুড়িয়ে গায়ে ছুড়ে মারা কখনওবা ডিভিডির জন্য হস্ত প্রসারিত করে এগিয়ে দেয়া। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় এই অত্যাচারগুলো প্রায়শই সে ওর মায়ের সামনেই করে। কিন্তু সেই মহীয়সী নির্বিকার। গত পরশু সবে মাত্র হিচককের Frenzy মুভিটা শেষ করছি অমনি এসে হাজির। তারপর ওটা দিয়েই বিদায় করলাম।
গতকাল দুপুরে খেয়েছিলাম মিরপুরের এক রেস্টুরেন্টে। রাতে খাওয়ার জন্য বাইরে যেতে যখনি গায়ে শার্ট চাপিয়েছি অমনি ঝমঝম বৃষ্টি শুরু হলো। বিছানায় শুতেই কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি । ঘুম ভাঙতেই দেখি রাত সাড়ে তিনটা। ঢকঢক করে কয়েক গ্লাস পানি খেয়ে আবার সটান শুয়ে পড়লাম। আজ সকালে অফিসে যাওয়ার পূর্বে কয়েকটা ক্রিমক্রেকার্স খেয়েছি। একটার দিকে গিয়েছিলাম উত্তরা। খাওয়া আর হয়ে ওঠেনি। পাঁচটার দিকে বাসায় ফিরে রান্না করে খাওয়ার প্ল্যান আঁটলাম। এরকম উপোস দিতে দিতে রন্ধনকার্যটা ভালোই রপ্ত হয়েছে। একটা ব্রয়লার মুরগি এনে যেই কাটাকুটি শুরু করেছি অমনি সেই পুরনো উৎপাত। অমাবশ্যা দাঁত কেলিয়ে বলে উঠল- ভাইয়া কি করছেন? আমি প্রমাদ গুণলাম। কিছুটা অনুনয়ের পর প্রস্থান করল কালী। রান্না করতে বাজল সন্ধ্যা সাতটা। গোসলটা সেরে জম্পেশ একটা খাওয়া দিলাম। আহ কি মজা!
আম্মা তোমাকে বড্ড বেশি মনে পড়ে। ঢাকা শহরের বুয়ারা এমন হয় কেন?