ইউনূস সরকারের ৮ মাস: জনগণের দুঃখ-দুর্দশার প্রতিচ্ছবি
গত ৮ মাসে ইউনূস সরকারের শাসনকাল যেন এক বিভীষিকাময় অধ্যায় হয়ে দাঁড়িয়েছে সাধারণ জনগণের জীবনে। যে স্বপ্ন আর আশার বাণী নিয়ে এই সরকার ক্ষমতায় এসেছিল, বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি। বরং জনগণের জীবনযাত্রা নেমে এসেছে নাজুক অবস্থায়। প্রতিটি খাতে এক চরম অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি এবং ব্যর্থতার ছাপ স্পষ্ট।
অর্থনৈতিক মন্দা ও জনগণের দুর্দশা
সরকারের ব্যর্থ নীতিমালার কারণে সাধারণ মানুষের আয়ে দেখা দিয়েছে মারাত্মক সংকোচন। পরিসংখ্যান বলছে, গত আট মাসে গড় আয় কমেছে প্রায় ৫০%। দিন এনে দিন খাওয়া মানুষগুলো আজ অভুক্ত রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি জনজীবনকে করে তুলেছে দুর্বিষহ। চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কথা বলা হোক না কেন, সব কিছুর দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। অথচ সরকার নিরব কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেই এই দুঃসহ পরিস্থিতি মোকাবেলায়।
আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি
এ সরকারের আমলে আইন-শৃঙ্খলার অবস্থা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। খুন, ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ভয়াবহভাবে বেড়েছে। দিনের পর দিন অপরাধীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও প্রশাসনের তৎপরতা নেই বললেই চলে। মানুষ আজ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে নিজের ঘরেও। নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে এই বিশৃঙ্খল পরিবেশে।
দুর্নীতি ও প্রশাসনিক ব্যর্থতা
সরকারি দপ্তরে ঘুষ-দুর্নীতি যেন অন্ধকারের কালো ছায়া হয়ে নেমে এসেছে। প্রশাসনের উচ্চপর্যায় থেকে নিম্নপর্যায় পর্যন্ত দুর্নীতির জাল বিস্তৃত। ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় মানুষ এখন আদালতের বদলে সংবাদমাধ্যমে গিয়ে বিচার প্রার্থনা করছে। এ চিত্র একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কল্পনাও করা যায় না।
একটি জবাবদিহিমূলক সরকার চাই
আজ সময় এসেছে প্রশ্ন তোলার, প্রতিবাদ জানানোর। একটি রাষ্ট্রের মূল চালিকাশক্তি তার জনগণ। এই সরকার যদি জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়, তবে তা জনগণের অধিকার ক্ষুণ্ন করার শামিল। ইউনূস সরকারের কাছে আমরা জানতে চাই এই অরাজকতা, অভাব, অনটন, ও নৈরাজ্যের দায় কে নেবে?
আমরা চাই একটি জবাবদিহিমূলক, মানবিক ও দূরদর্শী সরকার যে সরকার জনগণের পাশে থাকবে, শোষণের নয়, উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সক্ষম হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ২:৫১