৯৬ থেকে ২০০১ এও আওয়ামী বাকশালের স্বাক্ষী দেশের মানুষ হইছিলো । শিবির জামাতের আন্দোলনের রূপ ছিলো তখন অন্যরকম । শিবিরের সভাপতি মতিউর রহমান আকন্দরে গ্রেফতার করছিলো চিটাগঙে । রাতে গ্রেফতার করছে । এক রাতের মধ্যে শিবিরের নেটওয়ার্ক সব কিছু অচল করে দিলো । সকালে আকন্দ মুক্ত ।
জামাতের নেতাদের মধ্যে একমাত্র দেলওয়ার হোসেন সাইদী- ই এমন একজন, সাধারন জনগনের লেভেলে যার প্রচুর জনপ্রিয়তা রয়েছে । গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে । যেমনেই হোক, একটা আবেগের জায়গা তিনি নিতে পারছেন । সেই সাইদীকে গ্রেফতার করা হইলো আর গলা ফাটিয়ে হুংকার দেয়া শিবির সভাপতির শিবির বাহিনী কিছু করতে পারেনাই । পারবেও না । অথচ গত টার্মে এই সাঈদীর মাহফিলে ১৪৪ ধারা জারি করার পরেও সরকার বন্ধ করতে পারেনায় । সাইদীর তাফসির মাহফিলে গুলি বর্ষন করছে যুবলীগ-ছাত্রলীগ..মাহফিল পন্ড করতে পারেনায় । সাইদীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করছে বিভিন্ন জায়গায়, শিবিরের মিছিলের প্রটেকশনে সাইদী মাহফিল শেষ করে তারপর বাড়ি ফিরছে ।
একটা দেশের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ! দেশের ম্যাক্সিমাম মানুষের কাছে ঘৃনিত হলেও সংখ্যার হিসেবে অন্তত কোটিখানেক মানুষের সমর্থন রয়েছে তাদের । সেই দলের চেয়ারপার্সন - মহাসচিব লেভেলের ৪-৫ জন নেতাকে গ্রেফতার করা হইলো, আর গাধাস্য গাধারা বেড়ালের গায়ে বাঘের চামড়া লাগায়ে লম্বা গলায় কথা বলা ছাড়া আর কিছু করতে পারতেছেনা ।
ইসলামী আন্দোলনের বৈশিষ্টে বিলাসিতা - আরামপ্রিয়তার কোন সুযোগ নাই। ৬ থেকে সাত বছরের আরাম আর আশঙ্কামুক্ত জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে শিবির জামাত খেসারত দিয়েছে ২০১০ এ এসে । প্রথমবারের মত নেতৃত্বের কোন্দল নিয়ে প্রকাশ্যে কুৎসিত নোংরামী করেছে । ইসলামী সংগঠনের নেতৃত্বের মূল কথা যেখানে পদের প্রতি লোভ থাকলে সেই ব্যক্তি সবচেয়ে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে, সেখানে শিবিরের শীর্ষপদ নিয়ে ছাত্রলীগ - ছাত্রদলের মত জঘন্য রাজনীতি করে এক গাধাস্য গাধাকে সভাপতি বানাইছে।
আমি যতটা জানি, শিবিরের ৪০০০ এর বেশি সদস্য (যাদের সদস্য শপথ অনেকটা রক্ত-শপথের মত ভয়ানকভাবে ডেডিকেটেড.. জীবন বাজি রাখার চূড়ান্ত শপথ) এর প্রায় প্রত্যেকেই মনপ্রাণ থেকে শিবিরের বর্তমান সভাপতি - সেক্রেটারীকে প্রত্যাখ্যান করে আছে । কিন্তু মেরুদন্ডহীন জামাত কোন এক অদ্ভূত পাকচক্রে পড়ে প্রত্যাখ্যাত কমিটিকে ব্যাকাপ দিয়ে জিইয়ে রাখছে সমস্যা এখনো । যার ফলাফল একের পর এক বাকশালী আক্রমণে জামাত শিবিরের নিতান্তই মিই মিউ টাইপের আন্দোলন ।
মাহমুদ রহমানের জন্য যে লেভেলের আন্দোলন - আলোড়ন দেশে হয়েছে তার ১০ ভাগের ১ ভাগও করতে পারেনাই জামাত শিবির তাদের নেতাদের জন্য । শিবিরের ডেডিকেশন - সব ধরনের ভয়হীনতা - সুকঠিন শৃঙ্খলা আর নেটওয়ার্কিং - সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য জীবন শেষ করে দেবার যে উন্মত্ততা ছিলো - তার জন্য যে নৈতিক-রূহানী পরিবেশ দরকার, শীর্ষ পর্যায়ে কর্মীদের সমর্থনহীন নেতা বসে থাকার কারনে সেসব আর কিছুই আছে বলে মনে হয়না ।
নিজামী - মুজাহিদ বা মোল্লা - কামারুজ্জামানদের কথা বাদ দিলাম। সাইদীর গ্রেফতারে শিবিরের কঠোর আন্দোলনের সেই রূপ অবশ্যই দেখা যেত । যে রূপ দেখা গেছিলো ৯৬ থেকে ০১ এ । এক শিবিরের বিপক্ষে পুরো আওয়ামীলীগ কখনো দাড়াতে পারেনায় ।