
প্রারম্ভিক পেঁচাল: আমার মেটাল সিরিজের পোস্টগুলোতে সাধারণত আমার নর্মাল গানপোস্টের পাঠকদের জন্য কিছু থাকে না। আজকে আছে, পোস্টের Come Clarity গানটা যেকোন ধরণের অডিয়েন্সের জন্যই অসাধারণ শ্রুতিমধুর একটা গান, জাঁনরও মেটাল না! এই পোস্টের কন্টেন্ট মেলোডিক ডেথমেটালের উপর। বাংলাদেশের মেলোরকের নামে চলা পপ গানের মত কিছু মনে করলে ভুল করবেন


এক্সট্রিম মেটালের বেইস জাঁনরগুলো হল থ্র্যাশ, ডেথ আর ব্ল্যাক। থ্র্যাশের সরাসরি কোন সাবজাঁনর নেই, তবে ডেথ আর ব্ল্যাকের সাবজাঁনরের অভাব নেই। ডেথমেটালের আজতক যত সাবজাঁনর পেয়েছি সবচেয়ে স্ট্যাবল এবং সম্ভবত মেইনস্ট্রিমে সবচেয়ে জনপ্রিয়তা পাওয়া সাবজাঁনর হচ্ছে মেলোডিক ডেথ মেটাল। একই শহরের তিনটা ব্যান্ডের মেম্বারদের বন্ধুত্ব, ক্রিয়েটিভিটি, প্রচুর এক্সপেরিমেন্টেশন ছিল এর শুরু আর আজ বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় মেলোডিক ডেথ মেটাল ব্যান্ড নিঃসন্দেহে ইন ফ্লেমস!! ২২টা বছর ধরে শাসন করছে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান মেটাল সিনারিও, অল্টারনেটিভ মেটাল এরাতেও ভূমিকা রাখছে অনস্বীকার্যভাবে। স্মুথ, স্ট্যাবল স্টার্টিং পেতে ওয়েট করতে হয়েছে অবশ্য প্রায় ৫টা বছর। বলছি শুরুটা।
Ceremonial Oath. মেলা বছর আগের কথা....১৯৮৮ সালে ফর্ম করেছিল কয়েকজন তরুন মেটালহেড, উদ্দেশ্য ছিল ডেথ মেটাল নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট চালানো, নতুন কিছু আনা। সবকয়জনই মাথাগরম টাইপের লোক ছিল, সাতবছর পরই ভেঙে যায় ব্যান্ডটা। কিন্তু এরই মাঝে ভাল সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিল ক্রিয়েটিভ কয়েকজন মেটালহেডের, পরবর্তীতে অন্তত দুইটা নতুন মেটাল জাঁনর আসে এর প্রাক্তন মেম্বারদের আলাদা আলাদা গ্রুপ থেকে। বেসিস্ট জ্যাসপার স্ট্রমব্ল্যাড, যার অন্যতম কাজ ছিল ব্যান্ডের লিরিকস লিখা ৯৩এর সামারে পরিস্কার বুঝতে পারেন, এই লিরিকসে প্রচলিত ডেথ মেটাল/এক্সট্রিম মেটাল অতটা ভাল হচ্ছে না। করতে চাইলেন নতুন আরেক এক্সপেরিমেন্ট যেখানে বেইস থাকবে নিউ ওয়েভ অফ ব্রিটিশ হেভিমেটাল কিন্তু স্পষ্ট প্রভাব থাকবে এক্সট্রিম মেটালের, মেইনলি ডেথমেটালের দিকেই আগ্রহটা ছিল বেশি। সেখান থেকেই শুরু ইন ফ্লেমসের

সাইড প্রজেক্ট হিসেবে স্ট্রমব্ল্যাড ৯০সালেই শুরু করেছিলেন ইন ফ্লেমস। কিন্তু ৯৩এ স্রেমনিয়াল ওথ ভাঙার আগে পর্যন্ত ইন ফ্লেমসের ভবিষ্যত সবসময়ই ঝুঁকির মুখে ছিল। স্ট্রমব্ল্যাড ছিলেন লীড গীটারে, ড্রামসেও ছিলেন একজন (নামটা ভুলে গেছি এখন)। কিন্তু কোন ফুলটাইম ভোকাল ছিল না, সেশনাল ভোকাল দিয়ে কাজ চালানো হত তখন। তখন সেশনাল ভোকাল ছিলেন মাইকেল স্ট্যান (ডার্ক ট্রান্কুয়ালিটি)। ডেব্যু এলবামটা আসে স্রেমনিয়াল ওথ ভাঙার পরের বছর, ৯৪এ। বাজারে মুটামুটি ভালই সাড়া জাগায় লুনার স্ট্রেইন নামের এলবামটা- কারণ প্রচলিত ডেথ মেটালের বাইরে অন্য কোন এক ফ্লেভার ছিল এলবামটায়। ২০০৫ এ এলবামটা রিমাস্টার করে নতুন কাভার নতুন ভোকাল, টোটালি নতুন করে আবার ছাড়া হয়। প্রোডাকশনের সময় সুইডিশ প্রেসকে জ্যাসপার জানান- এলবামটার উদ্দেশ্য ছিল ডেথ মেটালে ফোকের এক্সপেরিমেন্ট করা (আউটকাম সিগনিফিক্যান্টলি আলাদা ছিল এখনকার ফোক মেটালের চেয়ে)। বাস্তবিকই তাই- এক্যুস্টিক গীটার তো ছিলই, ভায়োলিনও ইউজ করা হয়েছিল কয়েকটা গানে

ইউটিউব লিংক, এলবামের ইন ফ্লেমস গানটার; মিউজিক ভিডিও নেই গানের
কিন্তু এভাবে আর চলছিল না। ১৯৯৫এ জ্যাসপার ব্যান্ডে জয়েন করার জন্য বলেন বোজর্ণ জিলোটেকে ড্রামসে, আর পুরান স্রেমনিয়াল ওথের ভোকাল এন্ডার্স ফ্রিডেন কে রিকোয়েস্ট করেন ভোকালে। সেটাই এখনকার ইন ফ্লেমসের স্টার্ট


Artifacts of Black Rain
ইউটিউব লিংক, বড় করে দেখতে
হোরাকল ছিল এই লাইনআপের লাস্ট এলবাম। খুব সাফার করতে হয় এলবামটার সময়, গ্লেনের সাথে ব্যান্ডের বাকিদের রিলেশন ভাল যাচ্ছিল না, সারাদিন সবাই পরে থাকতেন বিয়ার নিয়ে। এরই মাঝে বের হয় হোরাকল। ডেপাচি মোডের একটা গানের কাভার করেছিল ইন ফ্লেমস ঐ এলবামে, বাকি গানগুলোর কনসেপ্ট ছিল বড়ই ভাবের

ইউটিউব লিংক, হোরাকল এলবামের হোরাকল; মিউজিক ভিডিও নেই; চমৎকার একটা ইনস্ট্রুমেন্টাল
এই লাইনআপের পয়লা এলবাম ছিল কলোনি, ১৯৯৯তে। মেলোডিক ডেথ মেটালের চরম উৎকর্ষের সময় ছিল সেটা, ক্লিন ভোকালের ইউজ ছিল বেশ কয়টা গানে- মেলোডিক ডেথ মেটালের অন্যতম বৈশিষ্ট্য যেটা গানের পয়েন্টে। মেলোডিক ডেথ মেটালের ফর্মেশন, ক্রাইটেরিয়া নিয়ে পরে ডিটেইলস আলোচনা করছি, শুধু এটুকু না বলে পারছিনা- রিভিউয়ারদের দৃষ্টি খুব ভালই টেনেছিল এলবামটা। অর্ডিনারি স্টোরি, ভালই সাড়া জাগিয়েছিল মেটালহেডদের মাঝে। ২০০০ সালে বের হয় ক্লেম্যান, ব্যাপক সাড়া পড়ে গিয়েছিল ইউরোপে তখন। পিনবল ম্যাপ গানটা মেলোডিক ডেথমেটাল লাভারদের জাতীয় সংগীত হেয় গিয়েছিল কিছুদিনের জন্য। ঐ বছর একটা লাইভ এলবামও বের করেছিল ইন ফ্লেমস।
Ordinary story
ইউটিউব লিংক, বড় করে দেখতে
Pinball Map
ইউটিউব লিংক, বড় করে দেখতে
এক্সপেরিমেন্টের চুড়ান্ত রুপ দেখা গিয়েছিল পরের এলবাম রিরুট টু রিমেইন-এ। উল্লেখ্য এর আগের ক্লেম্যান এলবাম পর্যন্ত মেলোডিক ডেথ মেটালের ফর্মেশন চলেছে পুরাদমে, অল্টারনেটিভ মেটাল বলতে গেলে গাওয়া হতনা ইন ফ্লেমসের। মেইনলি এই এলবাম থেকেই অল্টারনেটিভ মেটালের দিকে কিছুটা ঝোঁক হতে দেখা যায় ইন ফ্লেমসের। দুইটা গান ফোকাস করব এলবামের- ট্রিগার নির্ভেজাল মেলোডিক ডেথ মেটাল কিন্তু ক্লাউড কানেক্টেড-কে মেইনস্ট্রিমের অল্টারনেটিভ মেটাল ধরতে পারেন। তবে পার্থক্যটা কানে বাজবে ইজিলি, মেটালকে বেইস ধরে সোলোতে ব্লুজ রিফের ইউজ করলেও মেটালের প্রভাব কানে ধরা পরে খুব সহজে।
Cloud connected
ইউটিউব লিংক, বড় করে দেখতে
Trigger
ইউটিউব লিংক, বড় করে দেখতে
ইন ফ্লেমসের বাকি এলবামগুলোর কথা পরে বলছি। মেলোডিক ডেথ মেটালের বিবর্তন আর ইন ফ্লেমসের বৈশিষ্ট্যগুলো ফোকাস করছি এখন। ডার্ক ট্রান্কুয়ালিটি, ইন ফ্লেমস, এট দ্যা গেটস তিনটাই ছিল সুইডেনের গ্যুটেনবার্গের ব্যান্ড, এবং রিলেশনও ভাল ছিল ব্যান্ড মেম্বারদের মাঝে, এদের কাজের ফসলই আজকের মেলোডিক ডেথ মেটাল; আগেই বলেছি। এদের জাঁনরকে অনেকে গ্যুটেনবার্গ মেটালও বলে! তবে বাস্তবিকই জ্যাসপার স্ট্রমব্ল্যাডকে মেলোডিক ডেথ মেটালের গডফাদার বললে মনে হয় খুব একটা ভুল হবেনা; ইন ফ্লেমসের অনেক গান জ্যাসপারের লেখা, গীটারিস্ট হিসেবে ক্রিয়েটিভিটি তো আছেই। মেলোডিক ডেথ মেটালের যে বৈশিষ্ট্য আমি বলব এখানে, পুরোটাই ইন ফ্লেমসের জন্যও লেখা।
মেলোডিক ডেথ মেটাল দুইটা প্রাইমারি জাঁনরের ক্রসজাঁনর, যদিও ডেথমেটালের ইনফ্লুয়েন্সটাই বেশি মনে হয় কখনো কখনো। নিউ ওয়েভ অফ ব্রিটিশ হেভিমেটাল হেভিমেটাল জাঁনরের নতুন দিগন্ত এনেছিল সত্তরের দশকের শুরুতেই, পায়োনিয়ার ব্যান্ডগুলো এখনকার সব মেটাল ব্যান্ডের গুরু। কিন্তু অস্বীকার করার উপায় নেই আশির দশকের শেষের দিকে ধীরে ধীরে নিউ ওয়েভ অফ ব্রিটিশ হেভিমেটালের মেইনস্ট্রিমে জনপ্রিয়তা কমা শুরু করে। নতুন অনেক ক্রসজাঁনর, ফিউশন তখন আশা শুরু করেছে, হেভিমেটাল মিউজিক নতুন এক জেনারেশনে প্রবেশ করে তখন। মেটালিকা, স্লেয়ার, এনথ্রাক্স এখনো তুমুল জনপ্রিয় কিন্তু ব্রিটিশ মেইনস্ট্রিমটা কিন্তু আর এরা সরাসরি ফলো করছে না এখন। মোটরহেড, আয়রন মেইডেনদেরর জন্যও সেম কথা প্রযোজ্য, তবে ওরাই এখনো রেশটা ধরে রেখেছে। একটা জিনিষ সবাই মানবে, নিউ ওয়েভ অফ ব্রিটিশ হেভিমেটালের ব্যান্ড প্রায় সবকয়টাই লিজেন্ডারি ব্যান্ড।
নেক্সট আসা যাক ডেথ মেটালের দিকে। হেভি ডিসটর্টেড গীটারের কাজ, ব্লাস্ট বিট, ডেথ গ্রোল....হার্শ ভয়েস....হাইপিচড স্ক্রিমিং; এগুলোই ছিল ডেথ মেটালের কমন স্ট্রাকচারাল ফর্ম। গীটার বাজাতে জানাই শেষ কথা না, ক্রিয়েটিভিটি শেষ কথা না; অসাধারণ দক্ষতা দরকার- টর্মেলো পিকিং, ফাস্ট প্লেয়িং, পিক চেন্জে এবং চুজিং-এ মুন্সিয়ানা কম্পোলসারি একজন ডেথ মেটাল গীটারিস্টের জন্য। এর ফ্যানগোষ্ঠীও আলাদা সারা বিশ্বেই, লিরিকসও সেরকম!! আশির দশকে এর উৎপত্তি কিন্তু মেইনস্ট্রিমে সাকসেস আসা শুরু হয় নব্বইয়ের গোড়া থেকে। ঠিক সেই সময়টায় যখন সাকসেস আশা শুরু করেছে ঠিক তখন ডেথ মেটাল থেকে সুইচ করাটা অনেকেই বোকামি বলবে, তবে সুইডেনের এই তিনটা ব্যান্ড প্রমাণ করেছে তাদের চয়েস ভুল ছিলনা, এক্সপেরিমেন্টেশন তাদের আজ মুটামুটি নতুন এক জাঁনরের লিজেন্ড বানিয়ে ছেড়েছে।
জ্যাসপার স্ট্রমব্ল্যাডের এক্সপেরিমেন্ট ছিল সম্পূর্ণ নতুন চেহারায়। ডেথ মেটাল ব্যান্ডের বেসিস্ট ছিলেন (শেষের দিকে অবশ্য গীটারে ছিলেন)। কিন্তু নতুন জাঁনরের কাজ করার জন্য বেইস হিসেবে বেছে নেন নিউ ওয়েভ অফ ব্রিটিশ হেভিমেটাল। ডেথমেটালের দক্ষতাটা কাজে লাগান এখানেই, মেজর গীটারের কম্পোজিশন, ব্লাস্ট বীট এগুলোর ইউজ আবার থাকে অনেকাংশেই ডেথ মেটালের। উল্লেখ্য; হেভিমেটালের ফাস্ট রিফিং, ডাবল বেস ড্রামিং অনেকটা একই থাকে মেলোডিক ডেথে; তবে ক্ষেত্রবিশেষে ব্লাস্ট বীট বেশি দেখা যায়। মেইন পার্থক্যটা চোখে পড়ে ভোকালে, ক্লীন ভোকালের ইউজ কম, আবার করলেও সেটা বেশি করা হয় কোরাসের সময়- যেটা এক্সট্রিম মেটালের জন্য খুবই আনকমন। ভোকাল রেন্জ থাকে ডেথ গ্রোল মেইনলি, হার্স ভোকালের ইউজ খুব বেশি মেলোডিক ডেথ মেটালে। এই কথাগুলো ইন ফ্লেমস আর ইন ফ্লেমসকে পায়োনিয়ার ধরা ব্যান্ডগুলোর জন্য প্রযোজ্য, ডার্ক ট্রান্কুয়ালিটিতে আবার মেটালকোরের মত ক্রিপি ভয়েসের ইউজও দেখা যায়। তবে গানের স্ট্রাকচার সবারই সেম। আমেরিকার মেলোডিক ডেথ মেটাল ব্যান্ডগুলোতে মেটালকোরের প্রভাব বেশি দেখা যায়, মেলোডিক ডেথ মেটাল দাবি করা বেশিরভাগ ব্যান্ডকেই আমার মেটালকোর মনে হয়েছে বাস্তবে। এনিওয়ে, ইন ফ্লেমসের কোন গানেই ব্রুটাল ডেথ মেটাল ব্যান্ডের মত হাইপিচড স্ক্রিমিং দেখা যায়নি কখনো।
লিরিকসের চেন্জটা উল্লেখযোগ্য ইন ফ্লেমসের জন্য। ডেথ মেটালের কমন লিরিকাল কনটেন্ট বেশ এক্সপ্লিসিট সবসময়, সেটার অল্টার দেখা যায় ইন ফ্লেমসের ক্ষেত্রে। ডেথ মেটালের কমন টপিকস হরর, ব্লাড, ডেথ, গড, ডেমনস, এন্জেলস, এথিজম, ভায়োলেন্স......এগুলোর ইউজ অনেক কম দেখা যায় ইন ফ্লেমসের জন্য। জেস্টার রেস, হোরাকল, প্রথমদিকের এলবামগুলোতে এস্ট্রোনমি রিলেটেড জিনিষ বেশি দেখা যেত। রিরুট টু রিমেইন থেকে পরবর্তী এলবামগুলোতে ভাব-ভালবাসা

ভোকাল এন্ডার্স ফ্রিডেনের কথাই বলা যাক শুরুতে। নব্বইয়ের দশকে তার পরিচয় ছিল ডেথ মেটাল ভোকাল হিসেবে, কারণ তার ডেথ গ্রোলের ডেপথ, হার্স ভোকালের কমন ইউজ। কলোনি এলবামে প্রথমবারের মত ক্লিন ভোকালের ইউজ দেখা যায় কয়েকটা গানে, অনলি ফর দ্যা উইক গানে স্পেশালি। গলা ভাল



Anders Fridén

Jesper Strömblad

Björn Gelotte

Peter Iwers

Daniel Svensson

নতুন (না পুরাতন?!) গীটারিস্ট Niclas Engelin

জেস্টারহেড

সেই ইন ফ্লেমসের আরেকটা!!

গীটার ক্লিয়ারলি অনেক বড় একটা ফ্যাক্টর মেলোডিক ডেথ মেটালের জন্য। বোজর্ণ জিলোটে পরে জয়েন করেছেন ব্যান্ডে, যথেষ্ট প্রতিভাবান গীটারিস্ট আর জ্যাসপারের তো কথাই নাই



বেসিস্ট পিটারের টেকনিক আহামরি এমন কিছু নয় আর দশটা মেটাল ব্যান্ডের তুলনায়। ফিঙ্গারিং টেকনিক ইউজ করেন বাজানোর জন্য। ইএসপির বেস ইউজ করতেন মেইনলি, কখনো কখনো আইবানেজের বেসও ইউজ করতে দেখা গেছে, এখন আইবানেজের সিগনেচার বেস বাজান। ওনার আরেক নাম ডিজে কেওস, আনঅফিসিয়ালি টার্নটেবল নিয়ে কাজ করেন।
ড্রামসের কাজ একটু আনকমন মেলোডিক ডেথ মেটালের জন্য, কেননা গানের ভার্স/কোরাস স্ট্রাকচার বজায় থাকলেও এখানে হেভিমেটালের ডাবল বেস ড্রামিং-এর সাথে সাথে একই গানে ব্লাস্ট বীটের ইউজও দেখা যায় প্রায় ক্ষেত্রেই। পারকিউশনের ইউজ অসম্ভব রকমের বেশি ড্রামসে। ড্রামসে ড্যানিয়েল সভেনসন নিঃসন্দেহে যে কোন ব্যান্ডের জন্যই সম্পদ হিসেবে পরিগণিত হবেন। ১৯৩০-এর দিকে ড্রামার মোয়েলার একটা বই লিখেছিলেন আমেরিকান গৃহযু্দ্ধের সময়কার ড্রামারদের টেকনিকের উপর, তখনকার সময়েও তাদের টেকনিক ছিল সাউন্ড, ফাস্ট! সাজেস্টেড মেথডটা অনেক টাফ শেখা, সবাই পারেও না, কিন্তু শিখতে পারলে লাভ অনেক- ড্রামিং অনেক ফাস্ট হয়, ড্রামারকে দেয় খুবই দ্রুত নোড চুজ করার এবিলিটি, কিন্তু ইনজুরিতে আক্রান্ত হওয়ার রেট অনেক কম। টেকনিকটার নাম মোয়েলার মেথড। মোয়েলারের স্টুডেন্ট ছিলেন জিম; জিম ২০০৯এ মারা যাওয়ার পর এই মুহুর্তে খুব অল্প কয়েকজন ড্রামার টেকনিকটা জানেন, সভেনসন সেই অল্প কয়েকজনের একজন। সভেনসন এখন টামা ড্রামসের এনডোর্সড।
জেস্টার রেস এলবাম পর্যন্ত ইন ফ্লেমসের গানে অনেক এডিশনাল ইন্সট্রুমেন্ট ইউজ করা হত, কিবোর্ড, ইলেক্ট্রিক ভায়োলিন, ভায়োলিন....! সমস্যাটা হত কনসার্টের সময়, সব ইন্সট্রুমেন্ট ইউজ করা ডিফিকাল্ট লাইভ কনসার্টের সময়। এরপরের এলবামগুলোতে কম্পোজিশনের সময় কনসার্টের ব্যাপারটা মাথায় রেখে করা শুরু করে ইন ফ্লেমস, কিবোর্ডের ইউজও আর তেমন একটা দেখা যায়নি লাইভ কনসার্টে। অবশ্য গীটারের ইফেক্ট যে পরিমাণে ইউজ করেন দুই গীটারিস্ট, সমস্যা অর্ধেক এমনিতেই কমে যায়। কিবোর্ডে মেইনলি জ্যাসপার স্ট্রমব্ল্যাডই থাকেন; এবং এখন পর্যন্ত ইন ফ্লেমসের কোন প্ল্যান নেই ফুলটাইম কিবোর্ডিস্ট নেয়ার!
জেস্টার রেস এলবামের পরই জ্যাসপার আর ফ্রিডেন ঠিক করেন ইন ফ্লেমসের এক্সিজটিং এবং আপকামিং বিপুল ফ্যানগোষ্ঠীর জন্য কোন একটা সিম্বল ঠিক করবেন। জেস্টার রেস এলবামের সিম্বলটাকেই তারা চুজ করেন সিম্বল হিসেবে, ফ্যানদের নাম দেন জেস্টার হেড! এই জেস্টার হেডের সাইন এরপরের সবকয়টা এলবামের কভারে কোন না কোন জায়গায় সবসময় থাকে ইন ফ্লেমসের।
ইউরোপে ইন ফ্লেমসের জনপ্রিয়তা অনেক, ইউরোপের বাইরে ট্যুরে যায় ওরা তবে কম। স্লেয়ার, স্লিপনট, ক্রিয়েটর, মাডভাইন, ড্রিম থিয়েটার, সোলফ্লাই, জুডাস প্রাইস, মোটরহেড, সেপালচুরা, চিলড্রেন অফ বডম, মেগাডেথ....বড় প্রায় সবকয়টা ব্যান্ডের সাথে ট্যুরে গেছে অনেকবার। অজফেস্টে গিয়েছিল দুইবার, ভক্তদের উন্মাদনা ছিল দেখার মত। রক এম রিং-এ মুটামুটি প্রতিবছরই যায় ইন ফ্লেমস, ২০০৮ পর্যন্ত রেগুলার গেছে। এরপর থেকে একবছর পরপর যাচ্ছে, গতবার গেলেও এবছর দেখলাম যাচ্ছেনা

সুইডিশ সরকারের দেয়া গ্রামিস (স্ক্যান্ডিনেভিয়ান অঞ্চলে গ্র্যামি এওয়ার্ডের সমতুল্য ধরা হয় গ্রামিস-কে) জেতা একমাত্র মেটাল ব্যান্ড ইন ফ্লেমস! ২০০৮ সালে বেস্ট ইন্টারন্যাশনাল ব্যান্ডের এওয়ার্ড জিতেছিল মেটালহ্যামারে। ইন ফ্লেমসকে পায়োনিয়ার ধরা ব্যান্ড অনেক- ট্রিভিয়াম, অল দ্যাট রিমেইনস, এভেন্জড সেভেনফোল্ড, এজ আই লেয় ডাইয়িং, ক্যামেলট....নিউ এজের মেটাল জাঁনরের প্রায় সব ব্যান্ড। ব্যান্ড মেম্বারদের সাইড প্রজেক্টগুলোও যথেষ্ট জনপ্রিয়, সাপোজ প্যাসেন্জার, আগে ছিল হ্যামারফল!
ওকে, বাকি এলবামগুলোর কথা বলা শুরু করি আবার


Touch of red
ইউটিউব লিংক, বড় করে দেখতে
My sweet shadow
ইউটিউব লিংক, বড় করে দেখতে
২০০৬ এ বের হয় ইন ফ্লেমসের সবচেয়ে ফেমাস এলবাম (আমার ফেভারিট) কাম ক্ল্যারিটি। আজ পর্যন্ত সাড়ে চারলাখ কপি বিক্রি হয়েছে এলবামটা সারা ওয়াল্ডে। সুইডেনে ১ নাম্বার পজিশনে ডেব্যু হয় এলবামটার, বিলবোর্ডে ৫৮নাম্বারে, অরিজিনাল এলবামটা অন্য নামে বের হওয়ার কথা ছিল ২০০৫এ। হিউজ এক্সপেরিমেন্ট চালানো হয়েছিল গানগুলোতে- মেলোডিক ডেথ মেটাল, অল্টারনেটিভ মেটাল, হেভিমেটাল তো ছিলই, সবচেয়ে অবাক করা বিষয় ছিল, একটা অসাধারণ হার্ড রক পাওয়া গিয়েছিল এলবামটায়। লিড সিঙেলস ছিল কাম ক্ল্যারিটি- আমার চোখে ২০০৬এর বেস্ট হার্ড রক; কম্পোজিশন, লিরিকস, গীটার সোলো, সবসহ। কাম ক্ল্যারিটির গীটার সোলোটা আমি অনেকদিন ফোনে রিংটোন হিসেবে ইউজ করেছি...অসাধারণ!! আরেকটা সিঙেলস ছিল টেক দিস লাইফ, ঐটা আবার নির্ভেজাল মেলোডিক ডেথ মেটাল, তবে হাইপিচড ভয়েস দেখা গিয়েছিল গানটায়।
Take This Life
ইউটিউব লিংক, বড় করে দেখতে
Come clarity
ইউটিউব লিংক, বড় করে দেখতে
২০০৭এর শেষের দিকে দুবাইতে ডেজার্ট রক ফেস্টিভালে আসে ইন ফ্লেমস। ২০০৮এ বের হয় এই বিখ্যাত লাইনআপের লাস্ট এলবাম এ সেন্স অফ পারপাস। এই এলবামে মেলোডিক ডেথ মেটাল বেশি ছিল, অল্টারেটিভ মেটাল ছিল খুবই কম। এই এলবামেই বের হয় ব্যান্ডের সবচেয়ে লম্বা ডিউরেশনের গান দ্যা চুজেন পেসিমিস্ট (সাড়ে আট মিনিটের গান)! এই এলবামের ব্যাপারে পজিটিভ নেগিটিভ দুরকমের রিভিউই এসেছিল। একসাইড বলেছিল- ইন ফ্লেমস পুরান ফ্যানদের সম্মান জানিয়েছে এলবামের গানগুলো কম্পোজিশনে, অন্যদিকে আরেকদল বলেছিল- ব্যান্ডের ক্রিয়েটিভিটি শেষের দিকে। হারমোনাইজড লীডের ইউজ কমে গিয়েছিল এই এলবামের গানগুলোতে। তবে যে যাই বলুক, ভক্তরা পজিটিভ ফিডব্যাকই দিয়েছিল, সুইডেনে নাম্বার ওয়ান আর বিলবোর্ডে ২৮ নাম্বারে ডেব্যু হয় এলবামটার। উল্লেখ্য, প্রথমবারের মত কয়েকটা গানে বোজর্ণ জিলোটেকে সোলোতে লীড রোলে দেখা যায় এই এলবামে। এলিয়াস গানটা যোগ করছি পোস্টে।
ইউটিউব লিংক, বড় করে দেখতে
২০১০এর শুরুর দিক ব্যান্ড আনঅফিশিয়ালি ছেড়ে দেন ফাউন্ডার গীটারিস্ট জ্যাসপার স্ট্রমব্ল্যাড। ২০১১তে, এরপরের এলবাম ছিল সাউন্ডস অফ এ প্লেগ্রাউন্ড ফলিং। এলবামের পুরা দায়িত্বে ছিলেন বোজোর্ণ জিলোটে, গান লেখা, গানের কম্পোজিশন, প্রোগ্রামিং সব। পজিটিভ রিভিউ পায় এলবামটা সব জায়গা থেকেই। সিঙেলস দুটাই ছিল মেলোডিক ডেথ মেটাল, সোলোগুলোও ছিল চমৎকার। Deliver us যোগ করলাম পোস্টে।
ইউটিউব লিংক, বড় করে দেখতে
জ্যাসপার স্ট্রমব্ল্যাড এখন আর ইন ফ্লেমসে নেই। জ্যাসপারের ব্যান্ড ছাড়ার ব্যাপারটা ফ্লাশ হয় গত বছর। জ্যাসপার এলকোহলিজমের জন্য সিরিয়াস অসুস্হ ছিলেন গত তিন বছর, ২০০৯এর মাঝামাঝি হায়েটাসে যাওয়ার কারণও সেটা। ২০১০এর শুরুর দিকে আর পারছিলেন না কোনভাবেই, তখনই ডিসিশন নেন ব্যান্ড ছাড়ার। ব্যাপারটা নিয়ে মন কষাকষিও চলছিল ব্যান্ডে, এন্ডার্স ফ্রিডেন টুইটারে এবং অলমিউজিকের ইন্টারভিউয়ে বলেছিলেনও জিনিষটা; যে জ্যাসপারের সাথে ব্যান্ডের গুড টার্ম যাচ্ছে না। জ্যাসপার ব্যান্ড ছাড়ার পর এক প্রেস নোটে বলেন- ইন ফ্লেমস ছাড়ার সম্পূর্ণ দায় তার নিজের, ব্যান্ডের অগ্রযাত্রায় সমস্যা হয়ে পড়ছিল তার এলকোহলিজম এবং রিসেন্ট একটিভিটিসগুলোতে সুস্হির কোন ভূমিকা রাখতে পারছিলেন না জ্যাসপার। গত বছরের শেষেরদিকে আবার একটিভ হওয়ার চেষ্টা শুরু করেছেন জ্যাসপার স্ট্রমব্ল্যাড, বন্ধু বোজর্ণ জিলোটেকে নিয়ে বানানো সাইড প্রজেক্টে আবার গান লিখার চেষ্টায় আছেন। ২০০৯ থেকে গত বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত আনঅফিসিয়াল ট্যুর গীটারিস্ট ছিলেন নিকোলাস (এর আগেও ট্যুরে গীটারের কাজ করেছেন দশ বছর), গতবছরের শেষের দিকে তাকে অফিসিয়ালি গীটারিস্ট হিসেবে নেয়া হয়েছে। এন্ডার্স ফ্রিডেনের সাথে সাইড প্রজেক্ট প্যাসেন্জার এখনো আছে অবশ্য।
দেখা যাক, নতুন গীটারে ইন ফ্লেমস আর নতুন কি দেখায়!!!
কনসার্টের নমুনা দুয়েকটা

ওয়াকেন ২০০৭এ গাওয়া কাম ক্ল্যারিটি! আমার সারা জীবন মনে থাকবে এই কনসার্টের কথা

http://www.youtube.com/watch?v=V-ZD1I4krRw
রক এম রিং ২০০৬ এ পারফর্ম করা ক্লাউড কানেক্টেড! রাতের পার্ফমেন্স জটিল ইন ফ্লেমসের

http://www.youtube.com/watch?v=kFiNzCXkrIw
আর ফুল কনসার্ট রাখলাম একটাই, ২০০৬ গ্রাসপপেরটা (বেলজিয়াম)
http://www.youtube.com/watch?v=eKgJpkgVDYw
এম.পি.থ্রী ডাউনলোড লিংক
আমি স্যরি, শুরুর দিকের এলবামগুলোর আর একদম লেটেস্ট এলবামটার কোন গানেরই ডাউনলোড লিংক পাইনি। ইউটিউবে আছে, দেখতে পারেন

Ordinary story, Pinball map
Only for the week, Cloud connected
Trigger, T he quiet place
Touch of red, My sweet shadow
Take this life, Come clarity
The mirror's truth, Alias
****সিরিজের আগের ব্যান্ড ছিল
KoRn
SlipKnot, System of A Down এবং সিরিজ শুরু হয়েছিল Mudvayne দিয়ে।