somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এরপর আর ভালোবাসিনি।

২৮ শে জুন, ২০২৪ দুপুর ২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




২০১৩ সালের শেষের দিকে হবে।। সময়টা অনেক আগের কিন্তু। মোবাইলে গান শুনতে শুনতে আনমনে " আমাকে আমার মতো থাকতে দাও" গেয়ে উঠলাম সবার সামনে। সবাই চমকে উঠে বলল, গানতো ভালোই গাইলি। আমিও খানিকটা লজ্জাই পেলাম। আমাকে গান গাইতে দেখেনি কেউ। এরপর হঠাৎ তুমি আসলে। কেউ একজন পরিচয় করিয়ে দিলেন। তারপর এনরিকের সবচেয়ে আলোচিত গানটা অন্য একজন কে দিয়ে অনুরোধ করে দিতে বললে ব্লুটুথ এ দেবার জন্য। আমি তখন অন্তর্মুখী, মেয়েদের উপেক্ষা করে চলা একজন মানুষ। অথচ ঐ ছোট্ট ঘটনা আমাকে চমকে দিয়ে চলে গেল। শীতের শুরুর ঝলমলে রোদে তোমার সিড়িতে বসে থাকা আমাকে কিছুটা পেছনে নিয়ে গেল। মনে হলো দু হাজার বছর পেছনে আমি। সামনে তুমি। আমরা একটি চমৎকার সকাল শুরু করতে যাচ্ছি। তুমি আমাকে চেনো, আমি তোমাকে। এটাই হবার ছিলো। আর কিছুই হবার কথা ছিলো না।



২০১৪ এর মার্চের ঘটনাটাও ঠিক তেমনই। রমনার ঐ বেঞ্চে তোমার হাতে আমার হাত রেখে বুঝতে না পারাটা আমাকে আজো ভাবায়। হাতগুলোর আসলে হয়েছিলো কী? লিয়াম নেসন কে দেখেছিলাম ভালোবাসার প্রকাশে প্রেয়সীর হাতে ওভাবে হাত রাখতে। কব্জির একটু উপরে দু আঙুলে আলতো ভাবে তর্জনী আর মধ্যমা আঙুল রেখে বৃদ্ধাঙ্গুলে তোমার সুইসাইডাল এটেম্পটের শুকিয়ে যাওয়া দাগগুলোকে ঢেকে ফেলাই মনে হয় যেনো আসল উদ্দেশ্য ছিলো। তোমার ব্যাগ থেকে বডি স্প্রে নিয়ে নিজের চুলে স্প্রে করার ব্যাপারটা আসলে তেমন বড় কিছু নয়। যদি কোন কিছুর সাথে তুলনা করতে হয় তা একটি ভাল্লুক ছানার এক হাত তার মাথার চারপাশে ঘুরিয়ে আনার আশ্চর্য আদুরে ভংগীর সাথে করা যেতে পারে। অদ্ভুত তো। এসব মেটাফোর আসলেই কোন মেটাফোরের পর্যায়ে পড়ে? এসব ফিগার অব স্পিচের কোন একটির সাথে আদৌ মিলেছে কী? কোন প্রেমিকের কবিতায় এতো অদ্ভুত প্রেমে পড়ার মতো কোন কিছু আজতক ধরা পড়েছে? আমি এসবেই আটকে আছি বহুকাল। কতো স্পস্ট একেকে টি সিন। আমার প্রিয় ডিরেক্টর টরেন্টিনোর কথা কী এখানে বলা যায়? সে তো রোমান্টিক ফিল্মের ডিরেক্টর ও নয়। তবে কোনদিন রোমান্টিক সিন সাজালে বোধয় তিনি ,,,,, হা হা হা।


২০১৫ এর কোন ঘটে যাওয়া আষাঢ় এর সাথে আজকের আষাঢ় এর একদম আষ্টেপৃষ্ঠে মিল ছিলো। আমি রিক্সা থেকে নেমে সি এন জি তে উঠবো। তুমি যখন নামলে বৃস্টি শুরু হলো। আজকের মতো। বৃষ্টির সময়ে তুমি যে রিক্সা থেকে নেমে আমার কাছে হেটে আসলে ঐ রাজকীয় ভংগিমার প্রচন্ড শক্তি ছিলো এক ভয়ংকর নির্মম বাস্তববাদী পুরুষকে এক নিমেষে ভালবাসায় বাধ্য করার। ভেজা দুটি কাকের মতো দুজনে যার যার গন্তব্যে রওনা দিতে হলো। তবে ঘাড়ে তোমার নিশ্বাসের উত্তাপ টা তখন সহ্য হচ্ছিলো না। চলে আসবো এটা ভাবতে আনন্দ হচ্ছিলো। কারণ বেশিরভাগ সময়ই আমার কারো সাথে আদিখ্যেতা সহ্য হয় না। অথচ ফিরে আসার সময় আমার পেটে তখন ভালোবাসা ছাড়া কিছুই ছিলো না।

তারপর কেটে গেছে অনেক বছর। কতোবার দেখা হলো। দেখা হবার আকুলতাটা ছিলো আমার মধ্যেও অস্বীকার করবো না। তোমার হিসেব নিকেশ আমার চোখ এড়ায় নি। জড়িয়ে ধরেও আর ঐ ভালোবাসাটা খুজে পাই নি। তোমার বেশভূষা যুগের বিষে পালটে গিয়েছিল বিধায় আমার এমন হয়েছিলো কিনা জানিনা। তবে তার ভূমিকা থেকে থাকবে। তুমিও পালটে গিয়ে থাকবে বোধয়। আমার এ যুগের পরিবর্তন সবসময়ই নির্লজ্জ লেগেছে। ঐ ভালোবাসাটা কোন সিরিয়াল কিলারের প্রথম খুনের সাথে তুলনা করলে কেমন হয়। কিংবা প্রথম সিগারেটের সাথে। প্রথম লিখে ফেলা কোন প্রেমের গল্পের সাথে অথবা জিমে ভর্তি হবার পর প্রথম লেগ ডে'র সাথে। প্রথম বন্ধুর দেয়া কোন দুষ্টু কার্ডের সাথে বা নিজের টাকায় কেনা বাইকে প্রথম চড়ে বসার সাথে। আচ্ছা, প্রথম বই চুরি করার সাথে তুলনা করলে কেমন হয়? নিজেকে আমি ধন্যবাদ অবশ্যই দিই কারণ অদ্ভুত এই হৃদয় নিয়েও আমি ভালোবাসায় আক্রান্ত হতে পেরেছিলাম।

আমি দুঃখিত। এরপর তোমাকে আমি কদাচিৎ ভালোবাসতে পেরেছিলাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুন, ২০২৪ দুপুর ২:৫১
৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জনাব মডারেটর সমীপে: প্রসঙ্গ ব্লগার অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য'র অপমানমূলক মন্তব্যের প্রতিবাদ

লিখেছেন শেরজা তপন, ৩০ শে জুন, ২০২৪ দুপুর ১২:৫০


গত ২৫শে জুন ব্লগার সৈয়দ মশিউর রহমান-এর ''ভারতীয়রা গত ১০ মাসে বাংলাদেশ থেকে নিয়ে গেছে ৫০.৬০ মিলিয়ন ডলার তাহলে অবৈধ পথে কত?'' একটা পোস্টে অনিকেতের মন্তব্যের সুত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগের ৩ বেকার!

লিখেছেন সোনাগাজী, ৩০ শে জুন, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১



ব্লগারদের মাঝে অনেকই বেকার আছেন নিশ্চই; আমার জানা মতে, আমি, কবি মুসা ও রাজনীতির ছাত্র, ব্লগার না'হল তরকারী এই মহুর্তে বেকার। আমি সামান্য শারীরিক সমস্যা নিয়ে বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

যৎ সামান্য ডাম্ব (DUMB) কাহানী!!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ৩০ শে জুন, ২০২৪ বিকাল ৩:১৭



আগেই বলে নেই, বিভ্রান্ত হবেন না। এটা কোন ভাষা শিক্ষার ক্লাশ না, এটা হলো তবলার টুকটাক।

ইংলিশ DUMB শব্দের ট্র্যাডিশনাল মানে হলো বোবা। তবে অধুনা ইংল্যান্ডে ''বেকুব'' কিংবা ''উজবুক'' বোঝাতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যত অহংকার সব ভেঙ্গে যাবে নিমেষেই=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:১২



©কাজী ফাতেমা ছবি
এই ঘর বাড়ী, অফিস পাড়া, কাগজের স্তুপ
কাজের ব্যস্ততা স্তব্ধ হয়ে যাবে একদিন নিমেষে;
এই যে নিঃশ্বাস নিয়ে নিঃশ্বাস ছাড়ার শান্তি
দেহে রক্তের উঠানামা, একদিন সব হয়ে যাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি একজন কানাডিয়ান?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ৩০ শে জুন, ২০২৪ রাত ১০:৩৮


আগামীকাল, পয়লা জুলাই কানাডা ডে, সরকারি ছুটির দিন। ইতিহাসের এই দিনে কি যে হয়েছিলো সেটা আমার জানা নেই। গুগল করা যায়। গুগল, তুমি কি জানো পয়লা জুলাই কেন কানাডা ডে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×