somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাণ্ডালেঃ পাহাড় যেখানে হাত ছানি দিয়ে ডাকে

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পাহাড় না সমুদ্র ? ভ্রমণে যারা অভ্যস্ত, এমনকি যারা খুব একটা ঘুরে বেড়ান না, তাদের অনেকেই বোধকরি এমন প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছেন অনেকবার। আমি বুঝতে পারি না, কেন এই দুটোর মধ্যে তুলনা ? আমার ঘুরে বেড়াতে ভাল লাগে, সেজন্য ঘুরে বেড়াই। নদী, পাহাড়, সমুদ্র, বন, কোন ঐতিহাসিক স্থান এমনকি দিগন্ত বিস্তৃত উম্মক্ত মাঠেও যদি ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ আসে আমি সেটা দারূন ভাবে লুফে নেই। আমি ভ্রমণস্থানের চেয়ে ভ্রমণসঙ্গীকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। কেননা সহযাত্রীরা যদি সহমনোভাবাপন্ন না হন তবে সেই ভ্রমণ আমার কাছে পরিপূর্ণতা পায় না, পরিতৃপ্তির জায়গাটি অতৃপ্তিতেই ভরে ওঠে। নতুন নতুন স্থান ঘুরে দেখাটাই আমার কাছে বেশি অর্থপূর্ণ, আনন্দদায়ক ভ্রমণস্থান নিয়ে তুলনাটা একদম অর্থহীন।

নিত্য নতুন স্থান দেখার মাঝে যে অপার্থিব আনন্দ সেটি প্রকাশ করার মত ভাষাজ্ঞান আমার নেই বললেই চলে, সেজন্য ওপথে আর যেতে চাচ্ছি না, তবে এটা ঠিক কাকতালীয় হলেও আমি সমুদ্রের কাছে যত না গিয়েছি পাহাড়ের কাছে তার চেয়েও অনেক বেশিই, আর এতে বিন্দু মাত্র পক্ষপাতিত্ব ছিল না এটি আমি হলপ করে বলতে পারি। আর আমার এই পাহাড়ে পাহড়ে ঘুরে বেড়ানোর পিছনে যার অবদান সবচেয়ে বেশি তিনি আমার শ্রদ্ধেয় শাহীন (সাইদুর শাহীন, বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী) ভাই। তাঁর প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয়ে আমি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পাহাড়ের সাথে এতোটাই বেশি পরিচিত হতে পেরেছি যা অন্যান্যদের কাছ থেকে খুব কমই পেয়েছি। এই শাহীন ভাইয়ের সুত্রধরে মিয়ানমারে পরিচয় ঘটে রাকিব (রাকিব নাজীর) ভাইয়ের, যার মাধ্যমে পরবর্তীতে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আমি মিয়ানমারে প্রবাসী বাংলাদেশি পরিবারে স্বল্পাকারে হলেও জায়গা করে নিতে পেরেছি।

মিয়ানমারে আসার তিন মাস অতিক্রম হয়ে গেলেও তখন পর্যন্ত সত্যিকার অর্থে পাহাড় দেখতে না পারার বিষয়টি বেশ মনোঃপিড়া দিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু সুযোগের অভাবে সেটি বাস্তবায়ন করাও সম্ভবপর হচ্ছিল না দেখে মনে মনে বেশ হতাশ হয়ে পরছিলাম। অবশেষে সেই সুযোগটি এলো অনেকটাই নাটকীয়ভাবে। সপ্তাহখানেক আগে থেকেই রাকিব ভাই জানিয়েছিলেন তিনি মাণ্ডালে যাচ্ছেন অফিসের ট্যুরে (অফিসের কাজ কর্ম ফেলে ঘোরাঘুরিতে যার বেশিরভাগ সময় চলে যায় বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস) সপ্তাহখানেক তিনি সেখানেই অবস্থান করবেন। মনে মনে খানিকটা হতাশবোধ করলাম, একেতো এই রেঙ্গুন শহরে ছুটিছাটার দিনে তার ঘাড়ে চেপে বসতাম সিন্দাবাদের ভুতের মত যেটি নিশ্চিৎ হাতছাড়া করতে হচ্ছে আর দ্বিতীয়ত উনি খুব মজা করে ঘুরে বেড়াবেন আর আমাদের রসিয়ে রসিয়ে তার বর্ণনা দিবেন যেটি মনে আরও বেশি করে জ্বালা ধরিয়ে দেবে! কিন্তু ভাগ্যটা মনে হয় সেবার একটু প্রসন্নই ছিল, মাণ্ডালে থেকে দ্বিতীয় দিনেই রাকিব ভাইয়ের ফোন। মনে মনে দারুণ অসহায়ত্ব পোষন করে ফোন ধরতেই রাকিব ভাইয়ে উচ্ছসিত কন্ঠ ভেসে এলো! তার কন্ঠস্বরই বলে দিচ্ছিল যে উনি কতটা অফিসের কাজে ব্যস্ত ছিলেন! কোথায় কোথায় ঘুরে বেড়ালেন তার পুঙ্খানুপুঙ্খো বর্ণনা দিতেই মেজাজটা চরমে উঠে গেল। একেতো সাপ্তাহিক ছুটিটা মাঠে মারা যাচ্ছে, তার উপর তার উল্লসিত কন্ঠ! হঠাৎ করেই উনার প্রস্তাব এক ঝটকায় আমার মনে প্রশান্তি বয়ে আনল, একদিনের জন্য যখন তাঁর নিকট থেকে মাণ্ডালে যাবার প্রস্তাব পেলাম। সেই রাতে রওনা দিয়ে মাণ্ডালে পৌঁছলে পরদিন সকালে কেইভ, ঝরনা আর প্যাগোডা দেখার বিস্তর আয়োজন করা হয়েছে। আমি যেন এমন কিছু একটারই অপেক্ষায় ছিলাম কোন কিছু না ভেবেই রাজী হয়ে গেলাম, সঙ্গী হিসেবে সহকর্মী অনুজপ্রতিম মুরাদ (তসলিম আহমেদ) যে কোন মতামত প্রদান করবে সেটি সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করেই রাকিবভাইকে বলে দিলাম সব ব্যবস্থা করে ফেলতে! পরে মুরাদ যখন অফিসের ব্যস্ততাময় তালিকা ঝুলিয়ে দিল, তখন একটু অসহায়বোধ করলাম এবং মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম প্রয়োজনে একলাই রওনা দিব। এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার আগেই উদ্ধারকর্তা হিসেবে আবারও রাকিব ভাইয়ের আবির্ভাব, উনার অনুরোধ ফেলতে না পেরে মুরাদ অবশেষে রাজি হয়ে গেল মাণ্ডালে ভ্রমণে!!!

দিনটি শনিবার থাকায় আমরা রাতের বাসে চড়ে বসলাম রেঙ্গুন থেকে মাণ্ডালের দুরত্ব প্রায় ৬০০ কিমি হবে। রাত আটটার দিকে আমাদের বাস রওনা দিল। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, বাংলাদেশে আমি এতটা অত্যাধুনিক বাস দেখিনি, যেটা কিনা এই রেঙ্গুনে এসে দেখতে পেলাম! পরিকল্পনা ছিল রাতটা বাসের মধ্যেই ঘুমিয়ে পার করব যেন পরবর্তিতে কোন ক্লান্তি ভর না করে, কিন্তু বাসে বসার পর থেকেই পরিকল্পনার পরিগুলো কল্পনাগুলোকে বাসের ভিতর রেখে পাখা পেলে কোথায় যে উড়ে গেল টেরটিও পেলাম না। রাতটি কেটে গেল মুভি দেখতে দেখতে, পছন্দনীয় কিছু মুভি থাকায় সেই সুযোগটিও আর হাত ছাড়া করতে চাইলাম না।

রবিবার ভোরে পৌছানোর কথা থাকলেও আমাদের বাস মাণ্ডালে যখন পৌছল তখন ঘড়ির কাঁটা ৭ টা ছুঁই ছুঁই করছে। পূর্ব আকাশে সূর্যের উপস্থিতি মেঘদের কল্যাণে তেমন ভাবে উপলব্ধি না হলেও তার অবস্থান জানা যাচ্ছিল প্রবল ভাবে। রাকিব ভাই আগে থেকেই তাঁর দুজন সহকর্মীকে পাঠিয়ে ছিলেন আমাদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য, ভোর রাতে ঘুম মাটি করে প্রায় দু ঘন্টা নির্জন বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করায় বেচারাদের জন্য বেশ মায়াই লাগছিল। আন্তরিক ভাবে দুঃখপ্রকাশ করে তাঁদের সাথে হোটেলে উঠে পরলাম নিজেকে একটু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার জন্য। ঘন্টাখানেক বিশ্রাম নিয়ে বেরিয়ে পরলাম রাকিব ভাইয়ের সাথে সকালের নাশতা করার জন্য।

সকাল নটার নাগাদ সবাই এসে উপস্থিত হতেই রওনা দিলাম উদ্দেশ্য পি ও লিন (Pyin OO Lwin)। আমাদের জন্য রাকিব ভাই আগে থেকেই একটা মাইক্রবাসের ব্যবস্থা করে রাখায় যাত্রাপথে কোন অসুবিধার মুখোমুখি হতে হয় নি। মাণ্ডালে মূল শহর থেকে কিমি দশেক যেতেই চোখে পড়ল মাথা উচু করে প্রবল বিক্রমে দাঁড়িয়ে থাকা পাহাড়্গুলো। প্রথম দিকে একটু তন্দ্রামত থাকায় ঠিক কখন থেকে পাহাড়ের শুরু সেটা বলতে পারব না, কিন্তু রাকিব ভাইয়ের উচ্ছসিত কন্ঠ কানে আসতে চোখ মেলে দেখি সামনে বিশাল সবুজের সমাহার! আমাদের গাড়ি যতই সামনে এগুতে থাকে ততই যেন আমরা সবুজের মধ্যে প্রবেশ করতে থাকি। তুলনা জিনিসটা আমার বরাবরই অপ্রিয়, আমি এতে কখনই সাচ্ছন্দ বোধ করিনি, এখনও করি না, কিন্তু তারপরেও এই সবুজের মাঝে চলতে গিয়ে ছোট্ট একটা তুলনা নিজের অজান্তেই মনের অলিগলিতে ঘুরপাক খেতে লাগল আমাদের বান্দারবন বেশি সুন্দর নাকি এই মাণ্ডালের অচেনা পাহাড়্গুলো ? যতই সামনের দিকে এগুতে থাকলাম প্রশ্নটির বলয় যেন ধীরে ধীরে আরও বেশি করে বিস্তৃত হতে লাগল। অনেকেই আমার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই পারেন, কিন্তু আমি ঠিক যেন অনুভব করতে পারছিলাম দুটোর মাঝে কিসের তফাৎ !! বান্দরবনের পাহাড়্গুলোকে দেখলেই মনে হয় যেন কোন ঋষি মনিষী ধ্যানমগ্ন অবস্থায় ঠায় দাঁড়িয়ে আছেন! তাদের সুতীক্ষ্ণ চূড়া গুলো আকাশের বুক চিড়ে আরো উপরে ওঠার প্রবল ইচ্ছেয় মত্ত, তার বিপরীতে মাণ্ডালের পাহাড়্গুলোকে দেখে মনে হচ্ছিল দুড়ন্ত কোন কিশোর সারাটা মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তার দুরন্তপনাকে সাক্ষী রেখে। তবে হ্যাঁ এটি সত্য যে এখানে পাহাড়ের বুক চিড়ে যেভাবে চলাচলের জন্য বেশ প্রশস্ত রাস্তা তৈরী করা হয়েছে তেমনটি বোধকরি সমস্ত বান্দরবন বা রাঙ্গামাটি জুড়ে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না!

মাঝপথে খানিকটা যাত্রা বিরতি দেয়ার ফলে হাল্কা পাতলা চা নাস্তা কপালে জুটল, সেই ফাঁকে চলল কিছু ছবি তোলা। জায়গাটির নাম খুব বিদ্ঘুটে হওয়ায় স্মৃতিশক্তিকে সেটি মনে রাখবার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরলাম ক্যামেরা হাতে।





প্রায় মিনিট তিরিশেক সময় নষ্ট করে আবার যাত্রা শুরু করলাম মাহারন্ট ঠ্যু ক্যা থ (Maharaunt Htoo Kan Thar) প্যাগোডার উদ্দেশ্যে। মিয়ানমারে আর যাই হোক প্যাগোডার যে অভাব নেই সেটি এরই মধ্যে দৃঢ় বিশ্বাসে পরিনত হয়েছে। কাজেই এই পিওলিউনে এসে প্যাগোডা দেখার কি আছে সেই প্রশ্ন যখন মাথা চারা দিয়ে উঠি উঠি করছে ঠিক তখনই চোখে পড়ল সবুজের উপর স্বর্ণালী রঙের প্রতিচ্ছবির অসাধারণ উপস্থিতি। সবুজাভ পাহাড়ের ঠিক চূড়ায় সোনারাঙ্গা প্যাগোডা যেন মাথা ঊচিঁয়ে নিজের উপস্থিতির কথাই প্রকাশ করছে নিভৃতে অথচ দৃঢ় চিত্তে! পাহাড়ের উপরে দাঁড়ালেই চোখে পরে দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ মাঠ, যার দিকে তাকিয়ে থাকলে কখনই যেন দৃষ্টিতে ক্লান্তি ভর করে না!


(Maharaunt Htoo Kan Thar Pagoda)

আমাদের সহযাত্রীদের অধিকাংশ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হওয়ায় তারা কিছুটা সময় ধর্মকাজে ব্যস্ত হয়ে পরলেন, আমার সেই ফাঁকে চলল ক্যামেরার সাথে বন্ধুত্বটা দৃঢ় করার অপচেষ্টা। ল্যাণ্ডস্কেপ আমার অন্যতম প্রিয় হওয়া সত্ত্বেও আমি এটাতে এখন নবিষ পর্যায়েই রয়ে গিয়েছি, বোধ করি ভবিষ্যতেও থেকে যাব! সবুজেরও যে কত রকম রঙ হতে পারে, সেটি যেন আবার নতুন করে উপলব্ধি করলাম এখানে এসে। মিনিট চল্লিশ যাত্রা বিরতির পর প্রার্থনা আর ছবি তোলা শেষ হলে আমাদের মাইক্রোবাস আবার রওনা দিল পিওলিউন কেইভের উদ্দেশ্যে। চারপাশের সুবিশাল সবুজের অদৃশ্য চাদর ভেদ করে মিনিট বিশেক পর আমরা যখন কেইভে উপস্থিত হলাম, নিজেকে মনে হচ্ছিল কোন কল্পনার জগতে ভুল করে উপস্থিত হয়েছি। পাহাড়ি গুহায় প্রবেশের পূর্ব মুহুর্তেই রয়েছে দৃষ্টি নন্দন ঝর্ণাধারা যেটি পাহাড়ের ভিতর থেকে বাইরে এসে পরছে কৃত্তিমভাবে তৈরীকৃত একটি দীঘিতে। পর্যটকেরা সেই জলে মনের আনন্দে জলকেলিতে ব্যস্ত। অনেকেই আবার নিজেদের শারিরীক কৌশল প্রদর্শনে মত্ত। চারিদিকে যেন অদ্ভুত এক আনন্দময় পরিবেশ। দলের সবাই একত্রিত হয়ে আমরা ধীরে ধীরে প্রবেশ করি সেই পাহাড়িগুহায়। আমি কোন নৃতত্ত্ববিদ নই এই জন্য আমার পক্ষে সঠিকভাবে বলা সম্ভবপর নয়, তবে গুহাপথের প্রবেশদ্বারেই পাহাড়ের শরীরবেয়ে নেমে আসা সুতীক্ষ্ণ ফলাগুলো বারবার আমাকে সুন্দরবনের ম্যাংগ্রোভ শ্বাসমূলের কথাই স্মরণ করে দিচ্ছিল। মনে হচ্ছিল বহু শতাব্দীরও আগে কোন একসময় এই সুউচ্চ পাহাড়টি সমুদ্রতলের অংশ ছিল যা পরবর্তীতে বিশার ভুমিকম্পের মাধ্যমে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে!


প্যাগোডার প্রবেশ পথের ঝর্ণাধারা...

পাহাড়ের গা কেটে কেটে বসানো পাইপের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত বিদ্যুতের উপস্থিতিতে গুহাটি সম্পূর্ণমাত্রায় অন্ধকারাচ্ছন্ন নয়, কিন্তু কেমন যেন একটি আলো আধারীর ছাপ বিদ্যমান। তবে দেশটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী প্রধান হওয়ায় গুহার চারপাশ জুড়ে গৌতমবুদ্ধের প্রতিকৃতি বসানো। পুরো গুহাটি ঘুরে দেখার সময় মনে হচ্ছিল গুহার মাঝে তারা যে ভাবে গৌতমবুদ্ধ এবং তাঁর অনুসারীদের প্রতিকৃতি যেভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে সেটি দেখতে পেলে স্বয়ং বুদ্ধও যেন লজ্জায় হেট হয়ে পড়তেন!!! গুহার প্রতিটি বাঁকে বাঁকেই বুদ্ধের প্রতিকৃতি প্রতিস্থাপনে আমার কাছে গুহার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কিছুটা হলেও বিঘ্নিত হয়েছে বলেই মনে হয়েছে। তারপরেও গুহাটি যেকোন পর্যটকের মনে প্রশান্তি এনে দেবে এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।

এর ফাঁকে নজরে পরল গুহার ঠিক মাঝখানে বিশাল আকৃতির বুদ্ধ প্রতিকৃতি, আমাদের সহযাত্রীদের মধ্যে যাঁরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছিলেন তাঁরা যথারীতি প্রার্থনায় মগ্ন হলে আমার সুযোগ হল গুহার কিছু অংশ ক্যামেরা বন্দী করার এবং বলাই বাহুল্য সে সুযোগ আমি হাত ছাড়া করলাম না! ঘন্টা দেড়েক গুহায় অবস্থান শেষে বোধ করি আমার মত আর সবারই খুব ক্ষুধা মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছিল, লজ্জার মাথা খেয়ে বলব বলব করতেই আমাদের ভ্রমন আয়োজক হাল্কা পাতল নাস্তা করার প্রস্তাব যখন পেশ করলেন তখন দেখতে পেলাম সকলেই সেটি বিনা বাক্যব্যায়ে লুফে নিলো।


প্যাগোডার মধ্যে অবস্থিত বিশালাকৃতির বৌদ্ধ প্রতিকৃতি...

মিনিট বিশেক পাহড়িপথ অতিক্রম করে আমরা যে জায়গায় এসে উপস্থিত হলাম, সেটি দেখেই মনটা অপার বিস্ময়ে বিস্মিত হয়ে উঠল। ছবির মতই অদ্ভুত রকমের সুন্দর এই রেঁস্তোরার নামটাও বড়ই বিচিত্র “ডিসেম্বর”!! এমন উদ্ভট নামের কারণ অনুসন্ধানের পরিবর্তে ছবি তোলাটাই বেশি লাভজনক ভেবে ক্যামেরা হাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। পুরো মিয়ানমার জুড়েই মধ্য সেপ্টেম্বরেও বেশ ভাল রকমের বৃষ্টি হয়। আমরাও আমাদের এই ভ্রমণে সেই বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পাই নাই, পুরো যাত্রাপথেই হালকা পাতলা বৃষ্টির দেখা আমরা পেয়ে আসছিলাম একটু থেমে থেমেই, কিন্তু ডিসেম্বরে প্রবেশ করতেই মাথার উপর আকাশ যেন ভেঙ্গে পড়ল। চারিদিকে সংখ্য গাছগাছালিতে ভরা এই রেঁস্তোরাটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল ছোট ছোট আকৃতির অনেকগুলো কুটিরের উপস্থিতি। প্রাথমিক দৃষ্টিতে মনে হবে এই কুটিরগুলো বিচ্ছিন্নভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পুরো রেঁস্তোরা জুড়ে, কিন্তু একটু ভালো ভাবে লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে যে এর মাঝেও অন্যরকম একটি বিন্যস্ত ভাব বিদ্যমান। এই রেঁস্তোরার নিজস্ব গোখামার থাকায় বিশুদ্ধ গোদুগ্ধ পান করার প্রলোভন অনেকেই এড়াতে না পেরে সেটাই অর্ডার দিয়ে বসল। আমরাও হালকা পাতলা নাস্তা নিয়ে শহরের কোলাহল থেকে শতমাইল দূরে নির্জনে নিভৃতে বসে বসে প্রকৃতির জলস্নান উপভোগ করতে লাগলাম। ঝুম বৃষ্টির মাঝে অনেকটা গোলপাতাকৃতির পাতা দিয়ে তৈরী উম্মুক্ত কুটিরে বসে থাকার মাঝেও যে একটি অপার্থিব আনন্দ থাকতে পারে, সেটি যেন নতুন করে উপলব্ধি করলাম এই ডিসেম্বর নামের উদ্ভটাকার রেঁস্তোরায় এসে!


বৃষ্টিস্নাত ডিসেম্বর রেস্তোরাঁ...

বৃষ্টি থামার বিন্দুমাত্র লক্ষণ দেখতে না পেরে অবশেষে বৃষ্টিকে সঙ্গী করেই আবার রওনা দিলাম। এবারে গন্তব্য ময়েগোপিট (Moegyopyit) গ্রাম। আমাদের এক সঙ্গীর বাবা মা সেখানে বসবাস করেন। ভদ্রলোক বার্মীজ আর্মিতে ছিলেন বহু বছর। এখন অবসর জীবন যাপন করছেন। মুসলিম এই ভদ্রলোকের স্ত্রী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হওয়ায় তাঁর সন্তান সন্ততিও মাতৃধর্মকে বেছে নিয়েছে আর এটি নিয়ে ভদ্রলোকের বিন্দুমাত্র ক্ষোভ নেই। সদা হাস্যময় এই ভদ্রলোকের অদ্ভুত আতিথিয়তা আমাকে মুগ্ধ করল দারূন ভাবে। ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরেজীতে উনি যখন আমাদের সাথে আলাপচারিতা চালিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন আমার কাছে মনে হয়েছিল এই ভদ্রলোক বুঝি আমার দীর্ঘদিনের পরিচিত, সময়ের ক্ষরস্রোতে মাঝে শুধু সাময়িক বিচ্ছিন্ন হয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি এলাহি কারবার। রাকিব ভাই বস মানুষ হওয়ার সুফল যেন এবার পেতে বসেছি আমরা। নানা পদের খাবারের উপস্থিতি অন্যদের কথা জানি না, তবে আমাকের নিদারুন বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি করে তুলছিল যেন। সত্যি কথা বলতে কি আমি আমার সুদূর কল্পনাতেও ঠাঁই দেইনি যে এমন অজোপারাগাঁয়ে এমন আপ্যায়ণের মুখোমুখি হতে পারব, তাও আবার দেশি স্বাদে!! প্রতিটি রান্নাই ছিল অদ্ভুত রকমের সুন্দর আর তার স্বাদ ছিল মনে রাখার মত। খাবারের প্রতি আমার খুব বেশি দূর্বলতা না থাকলেও সেদিনের খাবারটি আমার কাছে সত্যি অসাধারন মনে হয়েছে আর এটি স্বীকার করতে আমার বিন্দুমাত্র দ্বিধা নেই।


মধ্যহ্ন ভোজন শেষে বিদায়ের প্রস্তুতি...

ভদ্রলোকের কাছেই জানতে পারলাম যে নিকটেই একটি প্যাগোডা তৈরি হতে যাচ্ছে সেটিও আবার একটি পাহাড়ের চূড়ায়! আর সেই পাহাড় থেকে পুরো গ্রাম তো দেখা যায়ই পিউলুইনের অনেকাংশই দৃষ্টিগোচর হয়। এমন সুযোগ হাত ছাড়া করার প্রশ্নই আসে না! সেজন্য খাওয়া দাওয়া শেষ হতে না হতেই নির্লজ্জের মত আবার বেড়িয়ে পড়লাম সেই পাহাড়ের উদ্দেশ্যে। পাহাড়ের গা বেয়ে পেঁচানো আকৃতির মেঠো পথ ধরে আমরা মিনিট দশেক পর যে জায়গাটায় এসে উপস্থিত হলাম সেটি এক কথায় ভূস্বর্গ!! চারিদিকে যত দূর পর্যন্ত দৃষ্টি যায় শুধু ধু ধু সবুজ আর সবুজ। সেই সবুজের ফাঁকে ফাঁকে কখনও বা স্বর্ণালী আঁচ কোথাও বা ইট কংক্রিটের খাঁচা তবে তার সংখ্যা নিতান্তই কম। পাহাড়টির পাশেই বিশালাকৃতির আরেকটি পাহাড় দাঁড়িয়ে যেন জমজ দু বোন, বাকিটা পুরো উম্মুক্ত প্রান্তর। দূরে অনেক দূরে যেখানে ক্লান্ত দৃষ্টি অবশ হয়ে আসে সেখানে যেন নীল আকাশ আর সবুজ প্রান্তরের মিতালী! মাস তিনেক মিয়ানমারে এসেও পাহাড় দেখতে না পাবার দুঃখ যেন একমুহূর্তে কর্পূর মত উবে গেল অসম্ভব সুন্দর এই দৃশ্য দেখে!!! বৃষ্টি না থাকলেও আকাশের বুকে জমে থাকা কালো মেঘের ফাঁক গলে উকি দিয়ে যাওয়া নীল আকাশ আর দূরের ঘন কালো সবুজের মিতালী যেন অপূর্ব এক দৃশ্যের অবতারনা করেছিল সবার মনেই। সবাই নিজ নিজ ছবিতোলায় মত্ত হয়ে যাওয়ায় সেখানে প্রায় মিনিট তিরিশেক সময় কাটাতে হয়েছিল। এদিকে সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে তখন পর্যন্ত আরো দুটো স্থান অসমাপ্ত রয়ে গেছে। দ্রুত বেশ কয়েকটি ছবি নিয়ে আমরা আবারও রওনা দিলাম, আমাদের গন্তব্য এবার বি ঝর্ণা (BE Waterfall) প্রকৃতির সৌন্দর্যকে নিয়ন্ত্রনে এনে সেটিকে যে আরো সুন্দরভাবে পরিবেশন করা যায় সেটি আমার জানা হলো এই বি ঝর্ণায় এসে। প্রকৃতির নিয়মে পাহাড়ি গা বেয়ে নেমে আসা পাহাড়ি ঝর্ণাকে শৃংখলিত না করে বরং অলংকৃত করে উপস্থাপন করলে সেটিও যে দৃষ্টি নন্দন হয় তার অন্যতম উদাহরণ এই বি ঝর্ণা।


প্রকৃতির অপরূপ নিদর্শন বি ঝর্ণা...

বি ঝর্ণাকে কেন্দ্রবিন্দু করে তার চারপাশজুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে ছোট কিন্তু দৃষ্টিনন্দন একটা থিম পার্ক। ঘুরতে আসা পর্যটকদের বিশ্রামের কথা চিন্তা করেই সেখান দু চারটে রেস্তোরাঁরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ঝর্ণাটি দেখলেই মনের মানসপটে ভেসে আসে যেন কোন দুরন্ত কিশোরী চঞ্চল পায়ে নেচে বেড়াচ্ছে পুরো পাহাড় জুড়ে। চারপাশে দৃষ্টি ফেললেই অদ্ভুত রকমের এক প্রশান্তি ভর করে দুচোখ জুড়ে, ঘন সবুজের যে এতটা মহনীয় শোভা সেটি এখানে না এলে বোধ করি জানা হতো না! পরন্ত বিকেলে মরে আসা রোদের আলোয় পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসা জলধারা যেন অদ্ভুত এক সৌন্দর্যের চির সাক্ষী হয়ে পর্যটকদের চোখে ধরা দেয়। চারপাশে নিরাপত্তা বলয় তৈরী করেও ঝর্ণাধারার কাছে গিয়ে পর্যটকদের ঝর্ণার শীতল জলের স্পর্শ নেবার সুযোগ করে দেবার জন্য মনে মনে কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ না জানিয়ে পারলাম না। প্রায় ঘন্টাখানেক সময় কোথা দিয়ে যে কেটে গেল টেরও পেলাম না! সম্বতি ফিরল যখন রাকিব ভাইকে উনার ম্যানেজার তাড়া দেয়া শুরু করলেন কেননা তখনও আরেকটি স্পট বাকি, অথচ সময় খুব দ্রত শেষ হয়ে আসছে!


বি ঝর্ণার আরেকটি মোহনীয় রূপ...


তাড়াহুড়ো করেই আবার মাইক্রোতে চেপে বসতে হলো, এবারের গন্তব্য পিওলিউন জাতীয় উদ্ভিদউদ্যান (Pyin oo Lwin National Botanical Garden)। মিনিট বিশেক সংক্ষিপ্ত যাত্রা শেষে আমরা যে স্থানটিতে এসে নামলাম সেটি ছিল সম্ভবত আমাদের পুরো ভ্রমণের সবচেয়ে আকর্ষনীয় স্থান। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে কি ভাবে যে আরো অসম্ভব রকমের সুন্দর করে আরো বেশি দৃষ্টি নন্দন করা যায় তার অন্যতম উদাহরণ হয়ে থাকবে এই উদ্যান। এখান পা ফেলতেই মনের গহীনে অপার্থিব এক প্রশান্তি খেলা করে গেল। মনে হচ্ছিল পৃথিবীর সমস্ত কোলাহল এখানে এসে যেন হঠাৎ করে নিশ্চুপ হয়ে পরেছে। চারপাশটা এতো বেশি শান্ত যেন একটু মনোযোগ দিয়ে কানপাতলেই নিজের শ্বাস প্রশ্বাসের শব্দও শুনতে পাওয়া যাবে! ছবির মত ঝকঝকে সুন্দর এই উদ্যানের কোথাও বিন্দুমাত্র অপরিচ্ছন্নতার ছাপ দেখতে না পেয়ে সত্যি সত্যি খুব অবাক হয়ে গেলাম, কেননা চার পাশে এতো গাছগাছালি যে পরিচ্ছন্নতার পরিবর্তে অপরিচ্ছন্নতাই এখানে সবচেয়ে বেশি মানান সই হতো! হঠাৎ করে ক্যামেরার দিকে মনোযোগ দিতেই মনটা খারাপ হয়ে গেল, সারাদিনের ধকলের ফলে ক্যামেরার ব্যাটারীর আয়ু যে কখন শেষ হয়ে পরেছে বুঝতেই পারিনি। ব্যাটারীর চার্য শেষ হবার আর সময় পেল না! নিজেকে প্রচণ্ড বকাঝকা করলাম। একরাশ বিরক্তি নিয়েই উদ্যানে প্রবেশ করলাম। কিছুক্ষণ পর একটি শাটল গাড়ির ব্যবস্থা করা হলো পুরো উদ্যানটি ঘুরে দেখবার জন্য, সন্ধ্যে ৬টা নাগাদ উদ্যান বন্ধ হয়ে যায় সেজন্য আমাদের হাতে খুব বেশি সময়ও ছিল না। শাটল গাড়িতে উঠে ঘুরে বেড়ানোর সময় বুঝতে পারলাম এই উদ্যানের বিস্তৃতি কতটা বিশাল! অসংখ্য নাম না জানা গাছগাছালির ভেতর দিয়ে শাটল গাড়ি প্রথমে এসে থামল উদ্যানের ওয়াচ টাওয়ারে। বিদেশী বলে টাওয়ারের প্রবেশ পথে টিকিট কেটে ঢুকতে হলো, আরেকবার বিরক্ত বোধ করলাম এই বার্মীজদের সভ্যতা আর ভব্যতার নমুনা দেখে, বিদেশি হলেই আপনার আর কোন রক্ষা নেই, পয়সা ঢালতেই হবে কোন আনুপাতিক হিসেব না করেই!


উদ্ভিদ উদ্যানের প্রবেশ পথের নান্দনিক রূপ...

তবে ওয়াচ টাওয়ারে ওঠার পর মনে ভেতের জমে থাকা বিরক্ত ভাবটা যেন কর্পূরের মত উবে গেল। চারপাশটা যেন ব্যাঙের ছাতার মতই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বিশালাকৃতির গাছগাছালি! যত দূর দৃষ্টি যায় শুধু সবুজ আর সবুজের ছড়াছড়ি। এতোটা সবুজের সমাহার শেষ কবে দেখেছি মনে করতে পারলাম না। মুগ্ধ হয়ে শুধু উপভোগ করতে থাকলাম চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রকৃতির এই অসম্ভব সৌন্দর্যকে। আগে মনে হতো, অপার্থিবতারও একটা সীমা থাকে, কিন্তু এখানে এসে মনে হল আমি যেন কোন অসীম অপার্থিবতার সামনে এসে দাঁড়িয়ে! এখানে অনন্তকাল ধরে অবস্থান করলেও বোধকরি কোন ক্লান্তি ভর করবে না!

দূর আকাশে সূর্যের গড়িয়ে পরা দেখে বুঝতে পারলাম সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে, বিষণ্ণ মন নিয়ে টাওয়ার থেকে নামতে নামতে মনে হচ্ছিল কোন এক স্বপ্নের মধ্য দিয়ে এতক্ষণ চলছিলাম, এখন যেন সেই স্বপ্নীল জগৎ থেকে জেগে উঠতে হবে! সন্ধ্যে ঘনিয়ে আসতেই শুরু হলো আমাদের ফেরার পালা, সেই একই পথ ধরে আবার ছুটে চলা। কর্মময় জীবনের সমুদ্রে ক্ষুদ্র তরীটি ভাসিয়ে দেবার আগে এ যেন শেষ পদক্ষেপ। জানি আবারও ব্যস্ত হয়ে উঠতে হবে শহরের কোলাহলময় নাগরিক জীবনে, কিন্তু এটাও জানি যখনই প্রাণশক্তির প্রয়োজন দেখা দেবে তখনই প্রকৃতির কাছে এলেই সেই সঞ্জীবনী সুধা মিলবে কেননা প্রকৃতি কখনই সঙ্কীর্ণতায় শৃংখলিত হয়ে থাকে না, সে সব সময়ই উদার হাত বাড়িয়ে আপনার জন্যই অপেক্ষা করে, আমরাই শুধু সেই অপেক্ষার প্রহর বাড়িয়ে দেই।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:২২
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×