ম্লান আলোকে ফুটলি কেন গোলক-চাঁপার ফুল।
ভূষণহীনা বনদেবী কার হবি তুই দুল।।
হার হবি কার কবরীতে
সন্ধ্যারানী দূর নিভৃতে,
বসে আছে অভিমানে ছড়িয়ে এলোচুল।।
মাটির ধরার ফুলদানিতে তোর হবে কি ঠাঁই,
আদর কে আর করবে তোরে, বসন্ত যে নাই হায় বসন্ত নাই।
গোলক-চাঁপা খুঁজিস কারে —
সে দেবতা নাই রে হেথা শূন্য যে আজি গোকুল।।
----- কাজী নজরুল ইসলাম -----
কাঠগোলাপ
অন্যান্য ও আঞ্চলিক নাম : কাঠচাঁপা, কাঠচাম্পা, গবুবীয় চাঁপা, গরুড়চাঁপা, গুলঞ্চ, গুলঞ্চচাঁপা, গুলাচি, গোলকচাঁপা, গোলাইচ, গোলাঞ্জবাহার, গৌরচাম্পা, চালতাগোলাপ।
Common Name : Calachuchi, Dead Man's Fingers (Australia), Flower Of The Cross, Frangipani, Graveyard Tree (Caribbean Islands), Kalachuchi, Kappal arali, Mary's Flower, May Flower (Nicaragua), Pagoda Tree (Far East), Plumeria, Sacuanjoche, Seemai arali, Singapore Frangipani, Singapore graveyard flower, Temple Tree (India), West Indian Jasmine.
Scientific Name : Plumeria
ফরাসী উদ্ভিদবিদ শার্ল প্লুমিয়ে-র নামানুসারে কাঠগোলাপের বৈজ্ঞানিক নাম Plumeria রাখা হয়েছে।
কাঠগোলাপ আমাদের দেশে খুবই সহজলভ্য এবং পরিচিত ফুল। প্লুমেরিয়ার শত শত হাইব্রিড তৈরি হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে।
দুনিয়ার প্রায় সব ফুলই সুন্দর তাতে কোনো সন্দেহ নেই, তবে সবচেয়ে সুন্দর ফুলগুলির মধ্যে একটি হচ্ছে কাঠগোলাপ। সারা দুনিয়া জুড়ে নানার রং আর আকারের কাঠগোলাপ আছে।
তোমার জন্য নীলচে তারার একটু খানি আলো
ভোরের রঙ রাতের মিশকালো।
কাঠগোলাপের সাদার মায়া মিশিয়ে দিয়ে ভাবি
আবছা নীল তোমায় লাগে ভালো।
----- অর্ণব -----
ফিলিপাইনস দ্বীপপুঞ্জের মানুষেরা বিশ্বাস করে, কাঠগোলাপ গাছে ভূত থাকে। তাই তারা কবরস্থানে কাঠগোলাপের গাছ লাগিয়ে রাখে। তারা মনে করে ভূতেরা মৃত আত্মাগুলির যত্ন নিবে, পাহারা দিবে, কবরের উপরে ফুল বিছিয়ে দিয়ে কবরকে শোভিত করবে। এই কারণেই তারা কাঠগোলাপকে ডাকে Graveyard Tree নামে।
হাওয়াই দ্বীপে প্রচুর কাঠগোলাপের গাছ আছে। সেখানে অতিথিদের কাঠগোলাপের ফুলের মালা পরিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হতো। দ্বীপের মেয়েরা কানে কাঠগোলাপ ফুল গোঁজে। বাম কানে ফুল দিলে বুঝতে হবে সে বিবাহিতা, আর ডান কানে ফুল দিলে বুঝতে হবে সে এখনো অবিবাহিতা।
কাঠগোলাপ মেক্সিকো, মধ্য আমেরিকা, ভেনেজুয়েলা ও দক্ষিণ ভারতের স্থানীয় ফুল হলেও বর্তমানে পৃথিবীর অনেক দেখেই একে দেখতে পাওয়া যায়। ১৯৭১ সালে নিকারাগুয়ার জাতীয় ফুল হিসাবে লাল কাঠগোলাপকে (Plumeria rubra) ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশে বেশ কয়েক রকমের কাঠগোলাপ দেখতে পাওয়া যায়। ধবধবে সাদা, সাদার মধ্যে উজ্জ্বল হলুদ ছোপ, লাল, খয়রি লাল ইত্যাদি নানান রং এর কাঠগোলা হরহামেশাই দেখতে পাওয়া যায় সৌখিন বাগানে। রমনীদের অনেকেই খোঁপায় কাঠগোলাপ ফুল গুঁজে ছবি তুলতে পছন্দ করে।
কাঠগোলাপের গাছ এবং কাঠগোলাপের ফুল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে খুবই পবিত্র এবং পূজার উপকরণ।। তারা তাদের নানান পূজায় কাঠগোলাপের ফুল ব্যবহার করে। তাছাড়া বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছেও এটি খুবই পবিত্র। বৌদ্ধরা এটিকে মৃত্যুহীন প্রাণের প্রতীক বলে মনে করে। তারাও এই ফুল ধর্মানুষ্ঠানে ব্যহার করে। হিন্দু ও বৌদ্ধ মন্দিরগুলিতে কাঠগোলাপের গাছ রোপন করা হয়। কাঠগোলাপের গাছকে তাই টেম্পল ট্রি (Temple Tree) ডাকা হয়।
কলম করে কাঠগোলাপের বংশবিস্তার করা তুলনামূলক ভাবে সহজ। কখনো কখনো কলম করা গাছে পাতা গজানোর আগেই ফুল ফুটতে দেখা যায়। কাঠগোলাপের গাছ বিচিত্র গড়নের হয়ে থাকে। কিছু গাছ ছোট ঝোপালো আকৃতির হলেও কিছু কিছু গাছ আবার ৮ থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। এর নিকটাত্মীয় করবী।
শীতে কাঠগোলাপ গাছের অধিকাংশ পাতা ঝরে যায়। নিষ্পত্র ন্যাড়া গাছটিকে তখন মৃত বলে মনে হয়। পাতা ঝরার পর ডালে একটি চিহ্ণ রয়ে যায়। বসন্তে গাছে নতুন পাতা গজায়। অনুকুল পরিবেশ পেলে কিছু কিছু গাছ সাধারণত চিরসবুজ থাকে। পাতা আকারে বেশ বড় ও পুরু, শিরা-উপশিরা স্পষ্ট। পাতাগুলো ডালের শেষ প্রান্তে গুচ্ছবদ্ধ হয়ে থাকে। ফুলের পাশাপাশি এর পাতার বিন্যাসের সৌন্দর্যও দৃষ্টিনন্দন। এই গাছ নরম, ভঙ্গুর শাখা-প্রশাখা ছড়ানো-ছিটানো, বিষাক্ত দুধকষভরা। কাঠগোলাপ ফুলগাছ সাধারণত লবণ এবং খরা-সহনশীল, তবে শুষ্ক বায়ুতে একে পানি দিতে হয়। গাছে ৫ থেকে ৬ ইঞ্চি লম্বা শক্ত খোলস যুক্ত ফল হয়। কোনো পশুপাখি এই ফল খায় না।
কাঠগোলাপ ফুল সারা বছর ধরে ফুটতে দেখা যায় তবে গ্রীষ্ম, বর্ষা ও শরতে বেশি ফুল ফোটে। সাধারণত কাণ্ডের ডগায় একগুচ্ছ কাঠগোলাপ ফুল তার সবটুকু সৌন্দর্য নিয়ে ফোটে। ফুটন্ত ফুলের সুঘ্রাণে চারপাশ মৌ মৌ করে। ফুলের গন্ধ রাতে তীব্রতা পায়। ফুলে কোনো মধু নেই। মধু না থাকলেও এই ফুলের কদর একটুও কমে নাই। মধুর লোভে প্রজাপতি আর মৌমাছি না এলেও ফুলের গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে পতঙ্গ এর পরাগায়ন ঘটায়। কাঠগোলাপের ফুলে পাঁচটি ছড়ানো পাপড়ি থাকে। ফুলগুলি সাধারনত আকারে বেশ বড় হয়, তিন থেকে পাঁচ ইঞ্চি চওড়া হতে পারে।
শুনতে পাই এই গাছ থেকে তেল, সুগন্ধি, লোশন ও মোম বানানো হয়। গাছের নানা অংশের ঔষধি ব্যবহার রয়েছে। নারকেল তেলের সঙ্গে এর কষ চর্মরোগের ওষুধ হিসেবে কাজ করে। এর পাতা ফুলের তোড়াতে ব্যবহার করা হয়। হাওয়াইতে কাঠগোলাপ ফুলের মালা তৈরি করা হয়। কোথাও কোথাও এই মালা ব্যবহার করা হয় বিয়ের জয়মাল্য হিসেবে।
আমার বিদায়-রথের চাকার ধ্বনি ঐ গো এবার কানে আসে।
পুবের হাওয়া তাই কেঁদে যায় ঝাউ-এর বনে দীঘল শ্বাসে।।
ব্যথায়-বিবশ গুলঞ্চ ফুল
মালঞ্চে আজ তাই শোকাকুল,
মাটির মায়ের কোলের মায়া ওগো আমার প্রাণ উদাসে।
----- কাজী নজরুল ইসলাম -----
তথ্য সূত্র ও বর্ণনা : উইকিপিডিয়া, অন্তর্জাল।
ছবি ও বর্ণনা : মরুভূমির জলদস্যু।
ছবি তোলার স্থান : বৃক্ষমেলা, ঢাকা, বাংলাদেশ।
=================================================================
অশোক, অর্কিড, অলকানন্দা, অলকানন্দা (বেগুনী), অলকানন্দা (হলুদ), অ্যালামন্ডা (বেগুনী), আকন্দ, আমরুল, অপরাজিতা, আফ্রিকান টিউলিপ,
উগান্ডা শিখা, উর্বশী, উর্বসী, এরোমেটিক জুঁই, এ্যালামন্ডা (বেগুনী)
কলাবতী, কচুরিপানা ফুল, কসমস, কালো পঙ্গপাল, কালো বাসক, কালো বাদুড় ফুল, কর্ণফ্লাওয়ার, কন্টকলতা, ক্যালেনডুলা, ক্যাসিয়া রেনিজেরা, কামান গোলা, কাগজ ফুল, কাঠগোলাপ, কাঁটামুকুট, কন্টকমুকুট, কাঞ্চনার, কাঞ্চনক, কুর্চি, কুরচি, কৃষ্ণচূড়া, খাড়া মুরালি
গাঁদা, গেন্ধা, গন্ধা, রক্তগাঁদা, গামারি, গামার, গাম্বার, গোলাপ, গোলাপি আমরুল, গ্লুকাস ক্যাসিয়া, গৌরিচৌরি, গিরিপুষ্প, গুলেটু, গুলমোহর, ঘোড়া চক্কর
চন্দ্রপ্রভা, চন্দ্রমুখী চন্দ্রমল্লিকা (হালকা গোলাপি), চন্দ্রমুখী চন্দ্রমল্লিকা (সাদা), চন্দ্রমুখী চন্দ্রমল্লিকা (লালচে গোলাপি), চন্দ্রমুখী চন্দ্রমল্লিকা (কমলা), চন্দ্রমল্লিকা (হলুদ-সাদা), ছোটপানা
জবা, সাদা জবা, ঝুমকো জবা, ঝুমকা জবা, লঙ্কা জবা, পঞ্চমুখী জবা, বহুদল জবা, রক্ত জবা, হলুদ জবা, ক্রিম জবা, গোলাপী জবা, হাইব্রিড জবা, হাইব্রিড গোলাপী জবা, হাইব্রিড ক্রিম জবা
জারবেরা, জ্যাকারান্ডা, ঝুমকোলতা, ঝুমকো জবা
টগর, জংলি টগর, ডালিয়া, তমাল, তারাঝরা
দাঁতরাঙ্গা, দাদমর্দন, দদ্রুমর্দন, দাদমারী, দেবকাঞ্চন, দোলনচাঁপা, দুপুরমনি, ধুতুরা
নাগেশ্বর, নাগচম্পা, নাগেসর, নাগলিঙ্গম, নীল হুড়হুড়ে, নীল জ্যাকারান্ডা, নীলচূড়া, নীল বনলতা, নীল লতা, নীলাতা, নীল-পারুল, নীল-পারুল লতা, নয়নতারা,
পপী, পুন্নাগ, পারুল লতা, পঞ্চমুখী জবা, পুর্তলিকা, পুত্তলিকা, পটপটি
ফাল্গুনমঞ্জরী, ফুরুস (সাদা)
বরুণ, বড়নখা, বিড়াল নখা, বিলাই আঁচড়া, বাদুড় ফুল, বাগানবিলাস, বাসন্তীলতা, বোগেনভিলিয়া, বোতল ব্রাশ, ব্লিডিং হার্ট, বন পালং, বন তেজপাতা, বার্মিজ গোলাপি সোনাইল, ভাট ফুল, ভ্রমরপ্রিয়া
মাধবীলতা, মাধবিকা, মধুমঞ্জরি, মিয়ানমার ফুল
রঙ্গন, রুক্সিনী, রক্তক, রুদ্রপলাশ, রাজ অশোক, রাজ অশোক, রাধীকা নাচন, রাধাচূড়া, রত্নগণ্ডি, রাণীচূড়া, রসুন্ধি লতা, রুয়েলিয়া, রক্ত জবা, রক্তকাঞ্চন, রক্তপুষ্পক, রক্তপুষ্পিকা, রক্ত শিমুল, রক্ত কমল, রক্তচূড়া
লতা মাধবী, লতা পারুল, লাল আকন্দ, লাল কাঞ্চন, লাল শাপলা, লাল কমল, লাল শিমুল
শটি ফুল, শাপলা (সাদা), শাপলা (লাল), শিউলি, শেফালি, শেফালিকা, শিবজটা, শিবঝুল, শিমুল, শ্বেত অপরাজিতা, শ্বেত পুষ্পা, শ্বেত অকন্দ
সন্ধ্যামালতী, সন্ধ্যামনি, সুলতান চাঁপা, সুভদ্রা, সুখ মুরালি, সূর্যমুখীসোনাপাতি, সিদ্ধেশ্বর, সিদ্ধেশ্বরা, সোকরে, সোর্ড লিলি, সাদিমুদি
হাতি জোলাপ, হাতিশুঁড়, হলুদ জবা
অশোক ফুলের ছবি, নাগেশ্বর ও ভমর, পলাশ ফুটেছে......, ডালিয়া, ধুতরা ফুল, একটি দাঁতরাঙ্গা ফুল
মিষ্টি জলপাইয়ের ফুল, ডালের ফুল, চুকাই ফুল, চুকুর ফুল, সরষে ফুল, সর্রিষা ফুল, তিল ফুল, বিষকাটালি, পাহাড়ি বিষকাটালি,
বাংলাদেশের সংরক্ষিত উদ্ভিদের সচিত্র তালিকা, অশোক সমগ্র, কৃষ্ণচূড়া, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া ও কনকচূড়া বিতর্ক, পলাশ ও পারিজাত পরিচিতি, পারিজাতের পরিচয়, চাঁপা নিয়ে চাপাবাজি, আতা কাহিনী, বিলম্ব, মাছি ফাঁদ উদ্ভিদ, জল জমানি পাতা, শিউলি
=================================================================
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:৪৭