সন্ধ্যামালতী
অন্যান্য ও আঞ্চলিক নাম : সন্ধ্যামনি, কৃষ্ণকলি, সকাল সন্ধ্যা।
Common Name : Marvel of Peru, Four o'clock Flower
Scientific Name : Mirabilis jalapa
সন্ধ্যামালতী যবে ফুলবনে ঝুরে
কে আসি বাজালে বাঁশি ভৈরবী সুরে।।
সাঁঝের পূর্ণ চাঁদে অরুণ ভাবিয়া
পাপিয়া প্রভাতী সুরে উঠিল গাহিয়া
ভোরের কমল ভেবে সাঁঝের শাপলা ফুলে
গুঞ্জরে ভ্রমর ঘুরে ঘুরে।।
----- কাজী নজরুল ইসলাম -----
সন্ধ্যামালতী আমাদের অতিপরিচিত একটি ফুল গাছ। এরা আকারে ছোট, কাণ্ড নরম ও সরল শাখাযুক্ত, অনেক শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট একটি বহুবর্ষজীবী ভেষজ ঔষধি বিরুৎ উদ্ভিদ। গ্রামের অনেক বাড়িতেই সন্ধ্যামালতী দেখা যায় বাড়ি সাজাতে। অনেকের বারান্দায় কিংবা উঠানে সন্ধ্যামালতী ফুল গাছ দেখা যায়। তাছাড়া রাস্তার ধারে বা বাড়ির প্রবেশ পথের পাশে সন্ধ্যামালতী গাছ খুব সুন্দরভাবেই বেড়ে উঠতে দেখা যায়। রোদযুক্ত ও হালকা ছায়াযুক্ত জায়গা সন্ধ্যামালতী ভালো হয়।
সন্ধ্যামালতীর আদিনিবাস পেরু। পুরুর এই বাহারী রূপসী পৃথিবীর অনেক দেশেই ছড়িয়ে পরেছে এবং নিজের অবস্থান বেশ ভালো ভাবেই প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে।
কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি,
কালো তারে বলে গাঁয়ের লোক।
মেঘলা দিনে দেখেছিলেম মাঠে
কালো মেয়ের কালো হরিণ-চোখ।
ঘোমটা মাথায় ছিল না তার মোটে,
মুক্তবেণী পিঠের পরে লোটে।
কালো? তা সে যতই কালো হোক
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।
----- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -----
সন্ধ্যামালতী গাছ সাধারণত ২ থেকে ৩ ফুট উচ্চতার হয়ে থাকে। ডাল-পালা সহ ঝাকালো ঝোপের মতো হয়। প্রচুর ফুল ফোটে এবং সারাবছরই গাছে ফুল ফোটে। সারাবছর ফুল ফুটলেও বর্ষা আর শরতে ফুল সবচেয়ে বেশী ফোটে।
সন্ধ্যামালতী ফুল নানান রঙের হয়। একেক গাছে একেক রঙের ফুল হয়, যেমন- হালকা হলুদ, লাল, ম্যজেন্ডা, গোলাপী, সাদা ইত্যাদি। তবে মজার বিষয় হয়ে সন্ধ্যামালতীর একই গাছে একাধিক রঙের ফুল ফুটতে দেখা যায়। আরো মজার বিষয় হচ্ছে মাঝে মাঝেই দেখা যায় একই ফুলে একাধিক রঙের মিশ্রন রয়েছে। কখনো কখনো কিছু কিছু ফুলে বিভিন্ন রঙের ছোট ছোট তিল বা রেখা দেখা যায়। কিছু কিছু সন্ধ্যামালতী বাতাসে ছড়িয়ে দেয় হালকা মিষ্টি সুগন্ধ। পূজা পার্বণে এ ফুল ব্যবহার করা হয়।
সাজাও আমারে সাজাও।
যে সাজে সাজালে ধরার ধূলিরে
সেই সাজে মোরে সাজাও।
সন্ধ্যামালতী সাজে যে ছন্দে
শুধু আপনারি গোপন গন্ধে,
যে সাজ নিজেরে ভোলে আনন্দে
সেই সাজে মোরে সাজাও।
----- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -----
সন্ধ্যামালতীর বীজ গুলি গোলাকার ও কুঁচকানো। প্রথমে হলুদে সবুজ থাকে কিছুদিন পরে পরিপক্ক হওয়ার পরে কালো রঙের হয়। বীজ শুকিয়ে গেলে নিজে থেকে ঝরে পড়ে ও বাগানে ছড়িয়ে যায় এবং প্রাকৃতিক ভাবেই বিস্তার লাভ করে। এর জন্য বিশেষ কোনো যত্ন নিতে হয় না। বলা চলে বিনা যত্নেই সন্ধামালতী তার রূপের পরসা সাজিয়ে বসে বিকেল বেলা।
- সন্ধ্যামালতী ফুল খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে রঙের কাজে ব্যবহার হতে পারে।
- কেক, জেলী ইত্যাদির রং হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
- পাতা প্রদাহ কমাতে এবং ফোড়ার চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়।
- পাতার রস ক্ষতের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
- বীজের চূর্ণ প্রসাধনী হিসাবে ব্যবহৃত হয়। তবে এর বীজগুলি কিছুটা বিষাক্ত।
- মাথা ব্যথা নিরাময়ে, ক্ষত ধুতে শুকনো ফুলের গুঁড়ো ব্যবহার করে।
- কুষ্ঠেরর মতো ত্বকের চিকিৎসার জন্য মূল ব্যবহার হয়।
- ফুলের রস ক্ষত এবং কানের জন্য ব্যবহৃত হয়।
- মূলের রস কানের ব্যথা, ডায়রিয়া, আমাশয়, সিফিলিস এবং লিভারের সংক্রমণের জন্য ব্যবহার করা হয়।
- মৌমাছি ও বিচ্ছুর কামড়ে ব্যথা নাশ করতে এর ডাল ব্যবহার করা হয়।
- পাতার রস খেলে দ্রুত কাশি কমে যায়।
- গাছের পাতার রস আগুনে পোড়া জায়গায় লাগালে উপকার পাওয়া যায়।
- শিকড় সিদ্ধ করে খেলে পেটের ব্যথায় উপকার পাওয়া যায়।
জাগো কৃষ্ণকলি, জাগো কৃষ্ণকলি।
মধুকরের মিনতি মানো, ডাকে জাগো বলি’,
বিহগ-কাকলি।।
তব দ্বারে বারে বারে মন-উদাসী
ভোরের হাওয়া এসে বাজায় বাঁশি,
ফিরে গেল ভ্রমরা মউ-পিয়াসি —
অযথা বিতানে কানে কথা বলি।।
হের হাতের তার ফুলঝুরি ফেলে’ ধূলায়
উদাসী বসন্ত মাগে বিদায়,
দীরঘ-শ্বাস ফেলি ঝরা পাতায়।
চাহে রঙিন ঊষা তব রঙের আভাস
তব লাল আভায় লজ্জা পায় হিঙুল পলাশ।
এলো কোকিল তোমার রঙে খেলতে হোলি।।
----- কাজী নজরুল ইসলাম -----
তথ্য সূত্র : বাংলাপিডিয়া, উইকিপিডিয়া, অন্তর্জাল।
ছবি ও বর্ণনা : মরুভূমির জলদস্যু।
ছবি তোলার স্থান : উত্তর বাড্ডা, ঢাকা, বাংলাদেশ।
ছবি তোলার তারিখ : ১৭/১০/২০১৯ ইং
=================================================================
আজি যত কুসুম কলি ফুটিলো কাননে
অশোক, অর্কিড, অলকানন্দা, অলকানন্দা (বেগুনী), অলকানন্দা (হলুদ), অ্যালামন্ডা (বেগুনী), আকন্দ, আমরুল, অপরাজিতা, আফ্রিকান টিউলিপ,
উগান্ডা শিখা, উর্বশী, উর্বসী, এরোমেটিক জুঁই, এ্যালামন্ডা (বেগুনী)
কলাবতী, কচুরিপানা ফুল, কসমস, কালো পঙ্গপাল, কালো বাসক, কালো বাদুড় ফুল, কর্ণফ্লাওয়ার, কন্টকলতা, ক্যালেনডুলা, ক্যাসিয়া রেনিজেরা, কামান গোলা, কাগজ ফুল, কাঠগোলাপ, কাঁটামুকুট, কন্টকমুকুট, কাঞ্চনার, কাঞ্চনক, কুর্চি, কুরচি, কৃষ্ণচূড়া, খাড়া মুরালি
গাঁদা, গেন্ধা, গন্ধা, রক্তগাঁদা, গামারি, গামার, গাম্বার, গোলাপ, গোলাপি আমরুল, গ্লুকাস ক্যাসিয়া, গৌরিচৌরি, গিরিপুষ্প, গুলেটু, গুলমোহর, ঘোড়া চক্কর
চন্দ্রপ্রভা, চন্দ্রমুখী চন্দ্রমল্লিকা (হালকা গোলাপি), চন্দ্রমুখী চন্দ্রমল্লিকা (সাদা), চন্দ্রমুখী চন্দ্রমল্লিকা (লালচে গোলাপি), চন্দ্রমুখী চন্দ্রমল্লিকা (কমলা), চন্দ্রমল্লিকা (হলুদ-সাদা), ছোটপানা
জবা, সাদা জবা, ঝুমকো জবা, ঝুমকা জবা, লঙ্কা জবা, পঞ্চমুখী জবা, বহুদল জবা, রক্ত জবা, হলুদ জবা, ক্রিম জবা, গোলাপী জবা, হাইব্রিড জবা, হাইব্রিড গোলাপী জবা, হাইব্রিড ক্রিম জবা
জারবেরা, জ্যাকারান্ডা, ঝুমকোলতা, ঝুমকো জবা
টগর, জংলি টগর, ডালিয়া, তমাল, তারাঝরা
দাঁতরাঙ্গা, দাদমর্দন, দদ্রুমর্দন, দাদমারী, দেবকাঞ্চন, দোলনচাঁপা, দুপুরমনি, ধুতুরা
নাগেশ্বর, নাগচম্পা, নাগেসর, নাগলিঙ্গম, নীল হুড়হুড়ে, নীল জ্যাকারান্ডা, নীলচূড়া, নীল বনলতা, নীল লতা, নীলাতা, নীল-পারুল, নীল-পারুল লতা, নয়নতারা,
পপী, পুন্নাগ, পারুল লতা, পঞ্চমুখী জবা, পুর্তলিকা, পুত্তলিকা, পটপটি
ফাল্গুনমঞ্জরী, ফুরুস (সাদা)
বরুণ, বড়নখা, বিড়াল নখা, বিলাই আঁচড়া, বাদুড় ফুল, বাগানবিলাস, বাসন্তীলতা, বোগেনভিলিয়া, বোতল ব্রাশ, ব্লিডিং হার্ট, বন পালং, বন তেজপাতা, বার্মিজ গোলাপি সোনাইল, ভাট ফুল, ভ্রমরপ্রিয়া
মাধবীলতা, মাধবিকা, মধুমঞ্জরি, মিয়ানমার ফুল
রঙ্গন, রুক্সিনী, রক্তক, রুদ্রপলাশ, রাজ অশোক, রাজ অশোক, রাধীকা নাচন, রাধাচূড়া, রত্নগণ্ডি, রাণীচূড়া, রসুন্ধি লতা, রুয়েলিয়া, রক্ত জবা, রক্তকাঞ্চন, রক্তপুষ্পক, রক্তপুষ্পিকা, রক্ত শিমুল, রক্ত কমল, রক্তচূড়া
লতা মাধবী, লতা পারুল, লাল আকন্দ, লাল কাঞ্চন, লাল শাপলা, লাল কমল, লাল শিমুল
শটি ফুল, শাপলা (সাদা), শাপলা (লাল), শিউলি, শেফালি, শেফালিকা, শিবজটা, শিবঝুল, শিমুল, শ্বেত অপরাজিতা, শ্বেত পুষ্পা, শ্বেত অকন্দ
সন্ধ্যামালতী, সুলতান চাঁপা, সুভদ্রা, সুখ মুরালি, সূর্যমুখীসোনাপাতি, সিদ্ধেশ্বর, সিদ্ধেশ্বরা, সোকরে, সোর্ড লিলি, সাদিমুদি
হাতি জোলাপ, হাতিশুঁড়, হলুদ জবা
অশোক ফুলের ছবি, নাগেশ্বর ও ভমর, পলাশ ফুটেছে......, ডালিয়া, ধুতরা ফুল, একটি দাঁতরাঙ্গা ফুল
মিষ্টি জলপাইয়ের ফুল, ডালের ফুল, চুকাই ফুল, চুকুর ফুল, সরষে ফুল, সর্রিষা ফুল, তিল ফুল, বিষকাটালি, পাহাড়ি বিষকাটালি,
বাংলাদেশের সংরক্ষিত উদ্ভিদের সচিত্র তালিকা, অশোক সমগ্র, কৃষ্ণচূড়া, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া ও কনকচূড়া বিতর্ক, পলাশ ও পারিজাত পরিচিতি, পারিজাতের পরিচয়, চাঁপা নিয়ে চাপাবাজি, আতা কাহিনী, বিলম্ব, মাছি ফাঁদ উদ্ভিদ, জল জমানি পাতা, শিউলি
=================================================================
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৮