টাইম ট্রাভেল (Time Travel) সময় ভ্রমণ বা কাল ভ্রমণ বা সময় পরিভ্রমণ খুবই আকর্ষণীয় একটি থিওরি। টাইম ট্রাভেল নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। বিজ্ঞানের সূত্র মতে ভবিষ্যৎ ভ্রমণ সম্ভব হলেও অতীত ভ্রমণ খুবই প্যাচালো জিনিস। অতীত ভ্রমণের মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি প্যারাডক্স। যেমন- গ্র্যান্ডফাদার প্যারাডক্স, হিটলার প্যারাডক্স, বুটস্ট্রাপ প্যারাডক্স, প্রিডেস্টিনেশন প্যারাডক্স, ফার্মির প্যারাডক্স, ইনফরমেশন প্যারাডক্স, বাটারফ্লাই ইফেক্ট ইত্যাদি। আমার খুবই পছন্দের একটি বিষয় এই টাইম ট্রাভেল। তবে আজকে এই সব প্যাঁচালো প্যরাডক্স নিয়ে লিখতে বসি নাই। আজকের বিষয় টাইম ট্রাভেল সিনেমা।
এই টাইম ট্রাভেল নিয়ে চমৎকার সব সিনেমা তৈরি হয়েছে। আমি খুব আগ্রহ নিয়ে সেই সব সিনেমা দেখি। সব যে দেখতে পারি তা তো না। এদের মধ্যে কিছু আছে সাইন্স ফিকশন, কিছু আছে শুধুই ফিকশন, কিছু আছে হরোর, কিছু আছে কমেডি ধরনের সিনেমা। আজকে আমার দেখা ৫টি টাইম ট্রাভেল সিমেনার কথা ছোট্টো করে এই পর্বে লিখবো। এমন গোটা দশেক পর্ব আসবে।
০১। 13 Going on 30
২০০৪ সালে মুক্তি পাওয়া 13 Going on 30 ঠিক টাইম ট্রাভেল মুভি না। এটি একটি ফ্যান্টাসি কমেডি মুভি। মুভিটিতে মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছে - জেনিফার গার্নার, মার্ক রাফালো।
১৩ বছরের কিশোরী জেনা রিঙ্ক (জেনিফার গার্নার) তার জন্মদিনের উইশে চায় কিশোরী থেকে তরুনী হয়ে ঊঠতে। অলৌকিক ভাবে তার ইচ্ছাটা সত্যি হয়ে যায়। ১৩ বছর বয়সী জেনা রাতে ঘুমিয়ে পরের দিন সকালে নিজের বিছানায় যখন ঘুম থেকে উঠে তখন সে দেখতে পায় সে ৩০ বছরের তরণী হয়ে গেছে। এক রাতে সে ৩০ বছরের তরুণী হয়ে গেলেও তার মন রয়ে গেছে সেই ১৩ বছরের কিশোরীর। মাঝের ১৭ বছরের কোনো স্মৃতি তার নেই। বর্তমানে সে ফ্যাশন ম্যাগাজিনে কাজ করে। শুরু হয় তার নতুন এক জীবন।
IMDb রেটিং 6.3/10, আর ৮৭% দর্শক সিনেমাটি পছন্দ করেছে। অনেক বছর আগে আমি সিনেমাটি দেখে খুব মজা পেয়েছি।
০২। Army of Darkness
আর্মি অফ ডার্কনেস সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৯২ সালে। এটি একটি কমেডি, হরর মুভি। Evil Dead মুভি সিরিজের ৩য় সিনেমা এই Army of Darkness মুভিটি। সিনেমায় মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছে - ব্রুস ক্যাম্পবেল, এমবেথ ডেভিডজ।
হার্ডওয়্যার স্টোরের একজন লোক ভৌতিক ঘটনাচক্রে নিজের সময় থেকে পিছিয়ে টাইম ট্রেভেল করে ১৩০০ খ্রিস্টাব্দে পৌছে যায়। সেখান থেকে তাকে নিজের সময়ে ফিরে আসতে হলে মৃতদের একটি সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে বুক অফ দ্য ডেড (নেক্রোনোমিকন) পুস্তকটি পুনরুদ্ধার করতে হবে। তারপরেই সে তার বর্তমান সময়ে ফিরে আসতে পারবে।
IMDb রেটিং 7.4/10, আর ৯২% দর্শক সিনেমাটি পছন্দ করেছে।
০৩। Arrival
২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া এ্যারাইভেল একটি মিস্ট্রি সাই-ফাই মুভি। সিনেমায় মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছে - অ্যামি অ্যাডামস, জেরেমি রেনার, ফরেস্ট হুইটেকার।
সারা পৃথিবীজুড়ে এলিয়েনদের বারোটি রহস্যময় মহাকাশযান উপস্থিত হয়। এলিয়েনরা বিচিত্র কিছু বৃত্তাকার সাইন ব্যবহার করে মানুষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে। সামরিক বাহিনীর থেকে একজন ভাষাবীদকে নিয়ে আসা হয় এলিয়েনদের সাথে যোগাযোগ করতে। প্রথমে মনে হচ্ছিলো এলিয়েনরা পৃথিবীর জন্য হুমকি নিয়ে এসেছে, তারা হয়তো যুদ্ধ করতে চায়, কোন এক ধরনের অস্ত্রের বিষয়ে তারা কথা বলছিলো। শেষ পর্যন্ত জানা যায় এলিয়েনদের রহস্যময় মহাকাশযানগুলি এসেছে ভবিষ্যৎ থেকে।
IMDb রেটিং 7.9/10, আর ৮৪% দর্শক সিনেমাটি পছন্দ করেছে। খুবই চমৎকার একটি মিস্ট্রি সাই-ফাই মুভি। বেশ আগ্রহ নিয়ে আমি মুভিটি কয়েকবার দেখেছি। প্রথমবারেই সবটা বুঝে নেয়ে একটু কঠিন।
০৪। Avengers : Endgame
অ্যাভেঞ্জারস: এন্ডগেম মুভিটি ২০১৯ সালে মুক্তি পায়। একটি মার্ভেল স্টুডিও এবং ওয়াল্ট ডিজনি স্টুডিওস মোশন পিকচার্সের আমেরিকান সুপারহিরো মুভি। মুভিটিতে মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছে - রবার্ট ডাউনি জুনিয়র, ক্রিস ইভান্স, মার্ক রাফালো সহ আরো অনেকেই।
অ্যাভেঞ্জারস মুভি সিরিজের ৪র্থ কিস্তি এই সিনেমাটি। সিরিজের ৩য় কিস্তি অ্যাভেঞ্জারস: ইনফিনিটি ওয়ার সিনেমায় দেখা যায় থেনোস পাওয়ার স্টোনগুলি ব্যবহার করে এক তুড়িতে পৃথিবীর অর্ধেক মানুষ এবং এ্যাভেঞ্জারদের অনেককেও ধ্বংস করে দেয়। এই সিনেমায় অ্যাভেঞ্জারদের বেঁচে থাকা সদস্যরা এবং তাদের সহযোগীরা টাইম মেশিন ব্যবহার করে অতীতে গিয়ে পাওয়ার স্টনগুলি জোগাড় করে বর্তমানে ফিরে এসে আবার সবাইকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে।
IMDb রেটিং 8.4/10, আর ৯৩% দর্শক সিনেমাটি পছন্দ করেছে। সিনেমার আসল মজা নিতে হলে আপনাকে অ্যাভেঞ্জারস সিরিজ এবং মার্ভেল স্টুডিও এর অন্যান্য সুপারহিরো মুভিগুলিও দেখতে হবে।
০৫। Clockstoppers
ক্লকস্টপারর্স ২০০২ সালে মুক্তি পাওয়া আমেরিকান সায়েন্স ফিকশন অ্যাকশন কমেডি মুভি। মুভিটিতে মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছে- জেসি ব্র্যাডফোর্ড, পলা গার্সেস।
কিশোর জ্যাক গিবসের বাবা একটি কর্পোরেশনের হয়ে ঘড়ির মত দেখতে কিছু "হাইপারটাইম ডিভাইস" তৈরি করে যা ব্যবহার করেলে ব্যবহারকারীর গতী প্রচন্ড রকম ভাবে বেড়ে যায়, ফলে তার কাছে মনে হয় তার চারপাশের সময় বুঝি প্রায় থেমে গেছে। জ্যাক হঠাৎ করেই তার বাবার আবিষ্কার করা এমন একটি ঘড়ি পেয়ে যায় এবং সেটি ব্যবহার করে সে এবং তার বান্ধুবী ফ্রান্সেসকা নানা ধরনের মজার কাজ করতে থাকে। কিন্তু তারা একসময় বুঝতে পারে যে এই হাইপারটাইমে তারা একা নয়, বরং কর্পোরেশনের এজেন্টরা এই ঘড়ি ব্যবহার করে তাদের ধরার চেষ্টা করছে। এরপরে জ্যাক আর ফ্রান্সেসকা মিলে জ্যাকের বাবাকে কর্পোরেশনের হাত থেকে উদ্ধার করার অভিযানে নামে।
IMDb রেটিং 5.2/10, আর ৩৮% দর্শক সিনেমাটি পছন্দ করেছে। সিনেমাটি দেখার সময় আমারও মনে হয়েছে আহা এমন একটা ডিভাইস যদি পাওয়া যেতো! আপনারও তাই মনে হবে।
=================================================================
সিনেমা নিয়ে আমার আরো কিছু পোস্ট -
আমার দেখা হলিউড মুভি : ০১ + ০২ + ০৩ + ০৪
আমার দেখা হলিউড মুভি সিরিজ :
মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের সুপাহিরো মুভি
X-Men মুভি সিরিজ
Batman মুভি সিরিজ
স্পাইডার ম্যান মুভি সিরিজ
অ্যাকশন মুভি সিরিজ - ডাই হার্ড ফ্র্যাঞ্চাইজি
সাই-ফাই মুভি সিরিজ Alien
দ্য প্রিডেটর ফ্র্যাঞ্চাইজি : প্রথম মুভি - Predator, দ্বিতীয় মুভি - Predator 2, তৃতীয় মুভি - Predators, চতুর্থ মুভি - The Predator, পঞ্চম মুভি - Prey
কোরিয়ান সিনেমা : গোল্ডেন স্লাম্বার + হার্ড হিট
ওয়েব সিরিজ শী-হাল্ক : অ্যাটর্নি অ্যাট ল সিজন - ১ : এপিসোড - ১ + এপিসোড - ২ + এপিসোড - ৩
হইচই ওয়েব সিরিজ : ব্যোমকেশ : সিজন-১ + সিজন-২
বলিউডের যে হিন্দি সিনেমা গুলি দেখেছি আমি : ২০২১ সালের সিনেমা + ২০২০ সালের সিনেমা + ২০১৯ সালের সিনেমা + ২০১৮ সালের সিনেমা (প্রথম ভাগ) + ২০১৮ সালের সিনেমা (শেষ ভাগ)
জনি ডেপের সিনেমা "Nick of Time"
The Invisible Guest
টাইম-লুপ নিয়ে হিন্দি সিনেমা Looop Lapeta
আইনি ড্রামা সিনেমা - জয় ভীম (Jai Bhim)
দ্য বিগ বুল
=================================================================