somewhere in... blog

মন্দির দর্শন : ০০২ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি পূজা মন্ডপ ও নাচঘর বা নাট মন্দির

১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি বাংলাদেশের জমিদার বাড়িগুলির মধ্যে খুবই সুপরিচিত এবং বেশ বড় একটি জমিদার বাড়ি। পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি সম্পর্কে একটি লেখা আমি পোস্ট করেছিলাম সামুতে।

ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে কলকাতা থেকে রামকৃষ্ণ সাহা মণ্ডল নামে একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি টাঙ্গাইল জেলার পাকুটিয়ায় এসে ইংরেজদের কাছ থেকে ক্রয় সূত্রে মালিক হয়ে পাকুটিয়ায় জমিদারী শুরু করে।

রামকৃষ্ণ সাহা মণ্ডলের ছিল দুই ছেলে, বৃন্দাবন চন্দ্র মণ্ডলরাধা গোবিন্দ মণ্ডল
রাধা গোবিন্দ মণ্ডল ছিল নিঃসন্তান, অন্যদিকে বৃন্দাবন চন্দ্র মণ্ডলের ছিল তিন ছেলে। এরা হলো- ব্রজেন্দ্র মোহন মণ্ডল, উপেন্দ্র মোহন রায় ও যোগেন্দ্র মোহন মণ্ডল

১৯১৫ইং সালের ১৫ই এপ্রিল প্রায় ১৫ একর এলাকা জুড়ে তিন ভাইয়ের নামে উদ্ভোদন করা হয়া পাশাপাশি তিনটি প্যালেস বা অট্টালিকা। তখন থেকে জমিদার বাড়িটি তিন মহলা বা তিন তরফ জমিদার বাড়ি নামে পরিচিতি পায়। যদিও এর আরেক নাম "পাকুটিয়া সাত আনি জমিদার বাড়ি"। সাত আনি কেনো, সেটি আমার জানা নেই।


নাচঘর অথবা নাট মন্দির


জমিদার বাড়ির সামনে রয়েছে একটি বিশাল খেলার মাঠ। মাঠের একপাশে রয়েছে টিনের তৈরি চৌচালা একটি দ্বিতল স্থাপনা। স্থাপনার নিচের অংশটি উন্মুক্ত, কোনো আচ্ছাদন বা প্রাচির নেই। অনেকগুলি খুঁটির উপরে দাঁড়িয়ে আছে অদ্ভূত এই স্থাপনাটি। অনেকে বলেন এটি নাচঘর। এখানে জমিদারী আমলে জমিদারেরা নাচ গানের আসর বসাতেন। সারা রাত ধরে চলতো নাচ-গান আবার কেউ কেউ বলেন এটি আসলে নাট মন্দির। সেকালে পূজার সময় ও পূজার পরে নাকি নাচে-গানে মুখর থাকত এই নাট মন্দিরটি। টিনের তৈরি চৌচালা এই ঘরটি আকারে যেমন বড়, তার গঠনও অভিনব।








পূজামণ্ডপ


জমিদার বাড়ির পশ্চিম দক্ষিণ দিকে আছে একটি মন্দির বা পূজামণ্ডপ। জমিদারী আমলের সেই সময়ে কলকাতা থেকে নামকরা সব কারিগর এসে দেবী দূর্গার মূর্তি তৈরি করতো পূজার আগে আগে। জাকজমক ভাবে পূজা উৎসব পালিত হতো। সেইসব দিন আর নেই। মন্দিরে সম্ভবত এখন আর পূজা হয়না। মণ্ডপটি বেশ কারুকাজময় ছিলো দেখলেই বুঝা যায়। সম্ভবতো এখানে পূজা ছাড়াও অন্য অনুষ্ঠানও উদযাপন করা হতো। একট চারকোনা উঁচু ভিত্তি তৈরি করে তার উপরে একতালা এই পূজামণ্ডপটি তৈরি করা হয়েছিলো। বেশ কয়েক ধাপ সিঁড়ি টপকে উঠতে হয় মূল মেঝেতে। সিঁড়ির দুই দিকে এক জোড়া করে কারুকাজময় গোল স্তম্ভ রয়েছে। প্রতিটি স্তম্ভের উপরের অংশে নকশা করে তৈরি করা একজোড়া করে পরী ফুল হাতে দাড়িয়ে আছে। স্তম্ভের দুই পাশে রয়েছে ছোট ছোট দুটি বারান্দা। দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ আর ডিজানের বারান্দা দুটি সকলেরই পছন্দ হবে।
সময়সুযোগ হলে দেখে আসতে পারেন আপনিও।

মন্দিরের সামনের সিঁড়ি


মন্দিরের পিছন দিক








স্তম্ভের নকশা


স্তম্ভের নকশায় একজোড়া পরী ফুল হাতে দাড়িয়ে আছে


স্তম্ভের নকশায় একজোড়া পরী ফুল হাতে দাড়িয়ে আছে


কারুকাজময় বারান্দা




তথ্য সূত্র ও বর্ণনা : উইকিপিডিয়া, অন্তর্জাল, নিজ।
অবস্থান : পাকুটিয়া, নাগরপুর, টাঙ্গাইল, বাংলাদেশ।
GPS coordinates : 24°01'14.8"N 89°59'17.1"E
গুগল ম্যাপ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি পূজা মন্ডপ এবং পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি নাচঘর
ছবি তোলার তারিখ : ২৫শে নভেম্বর ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দ।

=================================================================
মন্দির দর্শন : ০০১ : শ্রীশ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম

আমার দেখা প্রাচীন মন্দির সমগ্র - ০১
আমার দেখা প্রাচীন মন্দির সমগ্র - ০২
আমার দেখা প্রাচীন মন্দির সমগ্র - ০৩
আমার দেখা প্রাচীন মন্দির সমগ্র - ০৪

বাংলার প্রাচীন মঠ (স্মৃতি-মন্দির) সমগ্র - ০১
বাংলার প্রাচীন মঠ (স্মৃতি-মন্দির) সমগ্র - ০২
বাংলার প্রাচীন মঠ (স্মৃতি-মন্দির) সমগ্র - ০৩

মঠ (স্মৃতি-মন্দির) দর্শন : ০০১ : পালপাড়া মঠ
মঠ (স্মৃতি-মন্দির) দর্শন : ০০২ : সেনপাড়া মঠ
মঠ (স্মৃতি-মন্দির) দর্শন : ০০৩ : আমিনপুর মঠ ও ঠাকুরবাড়ি মঠ

বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০১
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০২
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৩
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৪
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৫
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৬
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৭

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০১ : বালিয়াপাড়া জমিদার বাড়ি
জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০২ : বীরেন্দ্র রায় চৌধুরী বাড়ি
জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৩ : জ্যোতি বসুর পৈতৃক বাড়ি
জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৪ : আমিনপুর ঠাকুর বাড়ি
জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৫ : বড় সর্দার বাড়ি
জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৬ : বালিয়াটি জমাদার বাড়ি
জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৭ : বালিয়াটি ছয় আনি জমিদার বাড়ি
জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

=================================================================
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২
৬৭ বার পঠিত
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রিয় কন্যা আমার- ৭১

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১০:৩১

প্রিয় কন্যা ফারাজা, গতকাল রাতে এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখেছি।
স্বপ্নটা এই রকম: ঢাকা শহরের রাস্তা গুলো সব নদী হয়ে গেছে। নদীতে সমুদ্রের মতো বড় বড় ঢেউ। ভয় পাচ্ছি যদি নৌকা উলটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সঠিক ইতিহাসে জানতে হলে মেজর ডালিমকেও আমলে নিতে হবে

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৯

সঠিক ইতিহাস জানতে হলে যেমন আপনাকে মেজর ডালিমের বক্তব্যকে আমলে নিতে হবে তেমনি ‌শেখ মুজিবের বক্তব্যও নিতে হবে।

আপনি একজনের ১৭ বছর একই ওয়াজ করা বক্তব্যকে বাইবেল আর মেজর ডালিমের বক্তব্যকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতার ঘোষক কে?

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:২৭

মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ১৯৫৭ সালের কাগমারী সম্মেলনে "আসসালামুয়ালাইকুম" বলে পাকিস্তানকে বিদায় জানানোর ঘটনা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। তিনি তখন পূর্ব বাংলার জনগণের অধিকার, ভাষা, ও স্বাধীনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেলিম অনোয়ারের ব্যান নিয়ে আপনি কিছু বলছেন না কেন?

লিখেছেন জেনারেশন৭১, ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:৩৫



এই ব্লগে কাকে ব্যান, সেমিব্যান, কমেন্ট ব্যান করলে আপনি খুশী হয়ে থাকেন? চাঁদগাজী/সোনাগাজীকে নিশ্চয়ই; এটা ভালো! চাঁদগাজী/সোনাগাজী "ব্যক্তি আক্রমণ" করে থাকে। সেলিম আনোয়ার কি আক্রমণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ষড়যন্ত্র করে অন্য দেশের সাহায্য নেয়া আওয়ামীলীগের পুরানো অভ্যাস

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:২৭

বহুদিন পর্যন্ত এই দেশের লোক জানতো যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা মিথ্যা ছিল। জনগণের ধারণা ছিল শেখ সাহেবকে শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যে পাকিস্তানের শাসকরা এই মামলা সাজিয়ে ছিল। কিন্তু বেশ কয়েক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×