আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু
এই পর্বে স্প্রিং মোল্লা সূরা আল-বাকারার ৩০ থেকে ৩৭ নাম্বার আয়াত পর্যন্ত পড়ে যা উপলব্ধি করতে পেরেছিলো বা তার মনে যেসব উদ্ভট প্রশ্ন জেগেছিলো সেগুলি তুলে ধরবো।
২-৩০ : আর স্মরণ কর, যখন তোমার রব ফেরেশতাদেরকে বললেন, ‘নিশ্চয় আমি যমীনে একজন খলীফা সৃষ্টি করছি’, তারা বলল, ‘আপনি কি সেখানে এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন, যে তাতে ফাসাদ করবে এবং রক্ত প্রবাহিত করবে? আর আমরা তো আপনার প্রশংসায় তাসবীহ পাঠ করছি এবং আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি। তিনি বললেন, নিশ্চয় আমি জানি যা তোমরা জান না। (অনুবাদ : আল-বায়ান)
আমরা দেখতে পাচ্ছি ৩০ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ ফেরেস্তাদের জানালেন যে তিনি পৃথিবীতে তাঁর খলিফা সৃষ্টি করবেন। খলিফাদের চরিত্র নিয়ে ফেরেস্তারা কিছুটা সংশয় প্রকাশ করলো। কারণ এর আগের খলিফা জ্বীন জাতী সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে। ঠিক তখন আল্লাহ ঘোষণা করলেন - নিশ্চয় আমি জানি যা তোমরা জান না।
কিন্তু... এই আয়াত নিয়ে স্প্রিং মোল্লার বক্তব্য একেবারেই আলাদা। এইসব বিচিত্র চিন্তা স্প্রিং মোল্লার মাথায় কি করে আসে আমি মাঝে মাঝে তা নিয়ে ভাবি, কোনো কুল পাই না।
স্প্রিং মোল্লার বক্তব্য : আদম আর শয়তানের কোনো দোষ নাই। সব আল্লামিয়ার খেলা। ফেরেস্তাগো সরদার হযরত আজাজিল দেখলেন আল্লামিয়া আগেই পৃথিবী বানাইছেন, ৮টা জান্নাত বানাইছেন, ৭টা জাহান্নাম বানাইছেন। আদমরে তৈয়ার কইরা বেহেস্তে রাখছেন। তাইলে আল্লামিয়ার পরিকল্পনার কি হইবো? আল্লামিয়া প্রথমেই ঘোষণা দিছেন খলিফা পাঠাইবেন পৃথিবীতে। আদম পৃথিবীতে গেলেই বাকি পরিকল্পনার মূল্য থাকে, নইলে পৃথিবী, জান্নাত, জাহান্নাম, বেবাক খালি পইরা থাকে। তাই হযরত আজাজিল নিজেরে উৎসর্গ কইরা ফেরেস্তাগো সর্দারি ছাইড়া শয়তান হইলো, আদমরে পৃথিবীতে পাঠানোর দায়িত্ব নিজের কান্দে নিলো।
২-৩১ : আর তিনি আদমকে নামসমূহ সব শিক্ষা দিলেন তারপর তা ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপন করলেন। সুতরাং বললেন, ‘তোমরা আমাকে এগুলোর নাম জানাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হও'। (অনুবাদ : আল-বায়ান)
২-৩২ : তারা বলল, ‘আপনি পবিত্র মহান। আপনি আমাদেরকে যা শিখিয়েছেন, তা ছাড়া আমাদের কোন জ্ঞান নেই। নিশ্চয় আপনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়’। (অনুবাদ : আল-বায়ান)
২-৩৩ : তিনি বললেন, ‘হে আদম, এগুলোর নাম তাদেরকে জানাও’। অতঃপর যখন সে এগুলোর নাম তাদেরকে জানাল, তিনি বললেন, ‘আমি কি তোমাদেরকে বলিনি, নিশ্চয় আমি আসমানসমূহ ও যমীনের গায়েব জানি এবং জানি যা তোমরা প্রকাশ কর এবং যা তোমরা গোপন করতে’? (অনুবাদ : আল-বায়ান)
৩১, ৩২ ও ৩৩ নাম্বার আয়াত নিয়ে স্প্রিং মোল্লার একটা অভিযোগ আছে। আল্লাহ নাকি এখানে আগেই প্রশ্ন ফাঁস করে দিয়ে আদমকে সব শিখিয়ে দিয়েছে। আর ৩৪ নাম্বার আয়াতে হযরত আজাজিল আল্লাহর উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে আল্লাহর হুকুম অমান্য করে শয়তানে পরিনত হয়।
২-৩৪ : আর যখন আমি ফেরেশতাদেরকে বললাম, ‘তোমরা আদমকে সিজদা কর’। তখন তারা সিজদা করল, ইবলীস ছাড়া। সে অস্বীকার করল এবং অহঙ্কার করল। আর সে হল কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত। (অনুবাদ : আল-বায়ান)
কথায় কথায় একদিন "স্প্রিং মোল্লা" বলেছিলো - এই ৩৪ নাম্বার আয়াতে আল্লামিয়া একটা প্যাজগি লাগাইছেন। আল্লামিয়া সব সময় কয় আমারে ছাড়া অন্য কাওরে সেজদা করবা না। আর এইখানে ফেরেস্তাগো কইলেন আদমরে সেজদা করো!!
২-৩৫ : আর আমি বললাম, ‘হে আদম, তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর এবং তা থেকে আহার কর স্বাচ্ছন্দ্যে, তোমাদের ইচ্ছানুযায়ী এবং এই গাছটির নিকটবর্তী হয়ো না, তাহলে তোমরা যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। (অনুবাদ : আল-বায়ান)
৩৫ নাম্বার আয়াত নিয়া স্প্রিং মোল্লার বক্তব্য খুব বেকায়দার। বুঝে উঠা মুশকিল হয়ে যায় সে কি বলতে চাচ্ছে। আমাকে বুঝাতে চেয়ে ছিলো এই ভাবে -
দেখো ভাইটি, ৩৪ নাম্বার আয়াত পর্যন্ত আদম ছিলো একলা। আল্লামিয়া বললেন ‘তোমরা আদমকে সিজদা কর’। মানে আদম তখনও একলা, হাওয়া বিবি তখনো নাই বেহেস্তে। ততোক্ষণ পর্যন্ত আদমের লেইগা বেহেস্তের কোনো কিছু নিষিদ্ধ আছিলো না। ৩৫ নাম্বার আয়াতে যেই না বিবি হাওয়া আসলেন সাথে সাথে বেহেস্তে এমন একটি গাছের কথা কওয়া হইলো যার কাছে যাওয়া নিষেধ। আল্লামিয়া বললেন - এই গাছটির নিকটবর্তী হয়ো না। মানে গাছটা তখন তাদের সামনেই আছিল। হাওয়াও আসলেন লগে লগে গাছটাও আসলো, হাওয়া নাই গাছটাও নাই, বিষয়টা বুইঝা দেখো ভাইটি।
২-৩৬ : অতঃপর শয়তান তাদেরকে জান্নাত থেকে স্খলিত করল। এবং তারা যাতে ছিল তা থেকে তাদেরকে বের করে দিল, আর আমি বললাম, ‘তোমরা নেমে যাও। তোমরা একে অপরের শত্রু। আর তোমাদের জন্য যমীনে রয়েছে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আবাস ও ভোগ-উপকরণ’। (অনুবাদ : আল-বায়ান)
স্প্রিং মোল্লা বলে - তোমরা নেমে যাও। তোমরা একে অপরের শত্রু। এই তোমরা একে অপরের শত্রু খুবোই ডেন্জারাস কথা। তোমরা বলতে যে আল্লামিয়া কারে কারে বুঝাইছে বুঝা বড় মুশকিল। অথচো আমিতো শত্রু একজনরেও দেখি না!!
২-৩৭ : অতঃপর আদম তার রবের পক্ষ থেকে কিছু বাণী পেল, ফলে আল্লাহ তার তাওবা কবূল করলেন। নিশ্চয় তিনি তাওবা কবূলকারী, অতি দয়ালু। (অনুবাদ : আল-বায়ান)
স্প্রিং মোল্লা বলে - আল্লামিয়া কোরআনে পরিষ্কার কইরা কয়া দিলো আল্লামিয়ার শিখায়া দেওয়া কিছু দোয়ার ব্যবহার কইরা আদম আল্লামিয়ার কাছে তওবা করলো, মাফ চাইলো। আল্লাহ মিয়া আদমের তওবা কবুল কইরা তারে মাফ কইরা দিলো। তয় হুজুররা ওয়াজে কেমনে কেমন কয় পৃথিবীতে আইসা আদম-হাওয়া বছরের পর বছর কান্দাকাটি কইরা আল্লার কাছে মাফ চাওনের পরে নবীর উছিলায় আদম-হাওয়ারে মাফ করছে!!
আল্লামিয়া কইলো মাফ কইরা পৃথিবীতে পাঠাইছে, হুজুরা কয় পৃথিবীতে আসার পরে মাফ করছে। আরেকটা বিষয়, এই আয়াতে শুধু আদমের তওবার কথা কওয়া হইছে, বিবি হাওয়ার কথা নাই!!
বিশেষ ঘোষণা :
স্প্রিং মোল্লা কি : গাড়ির ড্যাশবোর্ডে ছোট কিছু পুতুল রাখে অনেকেই, যেগুলির ঘাড়ে স্প্রিং লাগানো থাকে। একটু নাড়া খেলেই মাথাটি ডাইনে-বামে-সামনে-পিছে দুলতে থাকে। স্প্রিং মোল্লার অবস্থা তেমনই। একটু নাড়া খেলেই টালমাটাল হয়ে যায়।
স্প্রিং মোল্লা কে : এখানে কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণীকে কটাক্ষ করে স্প্রিং মোল্লা বলা হয় নাই। স্প্রিং মোল্লা বিশেষ একজন ব্যক্তি।
স্বীকারোক্তি : স্প্রিং মোল্লা আরবী ভাষার কিছু জানে না। সে কোরআনের বাংলা অনুবাদ পাঠ করে মাত্র।
স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১
স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ৩ এবং ২৫
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০২৪ দুপুর ১:৫৩