আমাদের আশ্রম এর কথা আপনারা অনেকেই জানেন। আশ্রমের লালু-ভুলুর কথা মনে আছে অনেকেরই। সেইযে শীতের শুরুর দিকে কেউ একজন লালুকে তার ভাই-বোনদের সাথে বস্তায় ভরে এনে আশ্রমের পাশে ফেলে দিয়ে গিয়েছিলো। সেখান থেকে শুধু লালুই বেঁচে গিয়েছিলো কোনো রকমে। পরে লালুর খেলার সাথী হিসেবে আনা হয়েছিলো ভুলুকে। কিছুদিন আগে আমি জানিয়েছিলাম ছোট্ট ভুলু হারিয়ে গেছে। অনেকেই পরে জানতে চেয়েছিলেন ভুলুকে পাওয়া গেলো কিনা। না, ভুলুকে আর পাওয়া যায়নি।
সেই পোস্টে লিখে ছিলাম-
ভুলু হারিয়ে যাওয়াতে কেয়ারটেকার দম্পতি মন বেশ খারাপ। উনাদের চেয়েও বেশী মন খারাপ লালুর। বেচারার চঞ্চলতা কমে গেছে। বেশ বুঝা যায় লালু তার সঙ্গী ভুলুর অভাব বেশ বুঝতে পারছে।
গত ১৫ই ফেব্রুয়ারি আশ্রম থেকে জানানো হয় লালুর শরীর ভালো না। ভুলু হারিয়ে যাওয়ার পর থেকেই লালু মন খারাপ করে থাকতো। এরমধ্যে লালু সম্ভবতো খারাপ কিছু খেয়ে ফেলেছে, যেটি ওর খাওয়ার কথা নয়। ১৩ তারিখে লালুকে বোমি করতে দেখা গেছে, তারপরে খারাপ পটিও করেছে। এরপর থেকেই খাওয়া দাওয়া একেবারেই কমিয়ে দেয়। চুপচাপ শুয়ে শুয়ে বিশ্রাম নিতো। অল্পতেই কাহিল হয়ে যেতো। দুইদিন পরে গত পরশু বিকেলে লালু আশ্রমের বাইরে তালতলাতে গিয়ে শুয়ে ছিলো। সন্ধ্যার আগে ওর জন্য বিছানা রেডি করে আনতে গিয়ে দেখে প্রায় প্রাণহীন দেহ পরে আছে লালুর। তার কিছু পরেই লালুর নিশ্চুপ প্রস্থান ঘটে। এভাবেই আশ্রমে লালু-ভুলুর শেষ অধ্যায় রচিত হয়।
আমি ধারনা করছি ভুলুকে কেউ বেঁধে রেখেছে বলেই সে আশ্রমে ফিরে আসতে পারে নি। আর লালু সম্ভবতো ভুল করে বিষাক্ত কোনো কিছু খেয়ে ফেলেছিলো। কিন্তু আশ্রমে আশপাশে বিষাক্ত কিছু পাওয়ার কথা নয়। তাছাড়া লালু আশ্রম ছেড়ে খুব বেশী দূরে কখনোই যেতো না। খাবারের বিষয়ে লালুর কোনো বাছবিচার ছিলো না এটা অবশ্য সত্যি।
লালু এতটা বড় হয়ে এভাবে মারা যাবে এটা আমরা কেউই বুঝতে পারি নি। ভুলুর চেয়ে লালুর জন্য সকলেরই মায়া বেশী ছিলো। নতুন করে আবার আশ্রমের জন্য লালু-ভুলু টু নিয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে শিঘ্রই।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:৪২