একসময় Star Movies, HBO ইত্যাদি চ্যানেল গুলিতে প্রতি রাতেই হলিউডের মুভি দেখতাম। পরে আরো কিছু চ্যানেলে হিন্দি ডাব হলিউড মুভি দেখাতো। সেগুলিও আগ্রহ নিয়ে দেখতাম। কত শত মুভি দেখেছি তখন!!
কিছু কিছুর নাম মনে আছে, কিছু কিছুর মনে নেই। কোনোটির হয়তো নাম মনে আছে, কাহিনী মনে নেই। কোনটি একাধীকবার দেখা হয়েছে, কোনটি একবার দেখেই আর দেখার ইচ্ছে হয়নি। হলিউডের পুরনো মুভি গুলির মধ্যে সবচেয়ে পুরনো যে মুভিটির কথা মনে পরে সেটি হচ্ছে ১৯৭৩ সালে রিলিজ হওয়া হরোর সিনেমা The Exorcist. সেটিকে প্রথম ধরে রিলিজ ডেট হিসাবে আমার দেখা ১৬ থেকে ২০ পর্যন্ত মুভি সম্পর্কে সামান্য কিছু তথ্য দিচ্ছি।
১৬ : Innerspace (1987)
এটি একটি আমেরিকান সায়েন্স ফিকশন কমেডি মুভি।
বিজ্ঞানীদের একটি গ্রুপ পরীক্ষাগারে যেকোনো জিনিস ছোট করার একটি সফল যন্ত্র আবিষ্কার করেছে। সেটি দিয়ে এতোটাই ছোট করা যায় যে তা খালি চোখে দেখা যায় না। তারা ঠিক করেন একজন পাইলটকে একটি বিশেষ যান সহ ছোট করে একটি খগোসের শরীরে ইনজেক্ট করবেন। টাক পেন্ডলটন একজন পাইলট, সে এই পরীক্ষায় অংশ নেয় এবং বিশেষ যান সহ ছোট হয়ে একটি সিরিঞ্জের ভিতরে অবস্থান করে। খরগোসের শরীরে ইন্জেক্ট করার আগেই সেখানে কিছু দুষ্কৃতিকারী আক্রমণ করে এবং ক্ষুদ্রকরণ যন্ত্রের বিশেষ অংশ নিয়ে যায়। এদিকে বিজ্ঞানী দুষ্কৃতিকারীদের হাত থেকে টাককে বাঁচাতে জ্যাক পুটার নামে একজন ব্যক্তির শরীরে ইনজেকশনটি পুশ করে দেয়। পরে টাক জ্যাকের শরীরের ভিতরে ঘুরে ঘুরে জ্যাকের কানে পোছে কথা বলে বাইরের ঘটনা সম্পর্কে বুঝতে পারে। টাক জ্যাককে তার বান্ধুবী লিডিয়ার কাছে নিয়ে যায়। লিডিয়েকে সব কিছু বুঝিয়ে বলার পরে সে তাদের সাহায্য করতে রাজি হয়। শেষ পর্যন্ত তারা নানান কৌশলে দুষ্কৃতিকারীদের কাছ থেকে ক্ষুদ্রকরণ যন্ত্রের বিশেষ অংশ উদ্ধার করে এবং টাক তার স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আছে।
১৭ : Predator (1987)
দ্য প্রিডেটর ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম মুভি Predator। এটি বৈজ্ঞানীক কল্পকাহিনী নির্ভর অ্যাকশন মুভি ফ্র্যাঞ্চাইজি। এই সিরিজে আরো ৩টি মুভি আছে। ভয়ংঙ্কর মহাজাগতিক ভিনগ্রহী প্রাণীদের নিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই সিরিজ।
ডাচ (আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার) একজন সৈনিক, ভিয়েতনামের বিদ্রোহী শিবিরে আটকে রাখা একদল রাজনীতিবিদকে গোপনে উদ্ধার করার জন্য মার্কিন সরকার তাকে তার দল নিয়ে উদ্ধার মিশনে পাঠায়। ডাচদের দল বিদ্রোহী শিবিরে পৌঁছে দেখে সেখানে কোনো রাজনীতিবিদ নেই। লড়াইয়ে বিদ্রোহীরা নিহত হয় এবং আনা নামের একটি মেয়েকে বন্দী করে। ডাচদের দলটি তাদের যেখান থেকে তুলে নেয়া হবে সেই দিকে এগুতে থাকে। ডাচরা বুঝতে পারে জঙ্গলের মধ্যে প্রায় অদৃশ্য একটি প্রাণী তাদের তাড়া করছে। একে একে প্রাণীটি ডাচের দলের সকলকে হত্যা করে ফেলে। শুধু ডাচ আর আনা বেঁচে থাকে। ডাচ আনাকে হেলিকপ্টারের দিকে পাঠিয়ে দিয়ে নিজে প্রাণীর সাথে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেয়। নদীর জলে নামার কারণে তখন প্রাণীটির অদৃশ্য হওয়ার যন্ত্রটিতে ত্রুটি দেখা দেয়ায় প্রাণীটি দৃশ্যমান হয়ে যায়। প্রিডেটরটি ডাচকে যোগ্য শত্রু হিসাবে স্বীকার করে এবং তার সভ্যতার রীতিতে খালি হাতে লড়াইয়ে নামে। ডাচ প্রচুর মার খাওয়ার পরে একটি ফাঁদের নিচে প্রিডেটরটিকে পিষে ফেলতে পারে। আনা হেলিকপ্টারে নিয়ে সেখানে পৌছে ডাচকে তুলে নেয়।
১৮ : RoboCop (1987)
রোবোকপ একটি সাইন্সফিকশন সুপার হিরো টাইপ সিরিজ যেখানে এখন পর্যন্ত ৪টি মুভি রিলিজ হয়েছে।
RoboCop (1987)
RoboCop 2 (1990)
RoboCop 3 (1993)
RoboCop (2014)
শুনেছিলাম RoboCop Returns নামে আরো একটি মুভি তৈরি হচ্ছে। রিলিজ হয়েছে কিনা জানি না।
সিরিজের প্রথম মুভি RoboCop-এ দেখানো হয় ডেট্রয়েট শহরে সন্ত্রাসীরা খুবই উৎপাত শুরু করেছে। পুলিশ কোনো ভাবেই তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেনা বলে পুলিশ বাহিনীতে কিছু রোবট নেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। OCP নামের একটি কোম্পানীর সিনিয়র প্রেসিডেন্ট ডিক জোনস ED-209 নামের একটি রোবট প্রদর্শন করে কিন্তু সেটি ছিলো ত্রুটিপূর্ণ ফলে সেটি বাতিল হয়ে যায়। তখন জুনিয়র এক্সিকিউটিভ বব মর্টন তার নিজের রোবোকপ প্রকল্পের কথা জানায়। তবে রোবোক হবে একটি সাইবর্গ। অর্থাৎ রোবোকপের শরীর কৃত্রিম হলেও তার মস্তিষ্ক হতে হবে মানুষের।
এদিকে পুলিশ অফিসার অ্যালেক্স মারফি এবং তার সঙ্গী অ্যান লুইস, কুখ্যাত অপরাধী ক্ল্যারেন্স বোডিকার এবং তার গ্যাং-কে ধরতে গেলে বোডিকার মারফিকে হত্যা করে। তখন মার্ফির মস্তিষ্ক ব্যবহার করে মর্টন রোবোকপ-কে তৈরি করে ফেলে। তখন রোবোকপের পুরনো সব স্মৃতি মুছে দেয়া হয়।
রোবোকপ পুলিশের সাথে যোগ দেয়ার সাথে সাথেই প্রচন্ড দক্ষতার সাথে সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করতে শুরু করে। দেখতে দেখতে সে জনগনের প্রিয় হয়ে উঠে। তবে রোবোকপের কিছু আচরণ দেখে লুইস বুঝে যায় অ্যালেক্স মারফি-ই আসলে রবোকোপ। এর মধ্যে অ্যালেক্স মারফির কিছু কিছু স্মৃতি রোবোকপের মাঝে ফিরে আসতে শুরু করে।
একসময় রোবোকপ বোডিকার গ্যাংকে ট্র্যাক করে এবং আক্রমণ করেন। তার মাধ্যমে রোবোকপ অনেকগুলি চক্রান্তের কথা জেনে নায়। তখন ED-209 নামের একটি রোবোটকে পাঠানো হয় রোবোকপকে মারার জন্য। রোবোকপ ভয়ানক ভাবে আহত হয়। লুইস রোবোকপকে পুনরায় ঠিক করার জন্য সাহায্য করে। কিন্তু সেখানে বডিকার দলবল নিয়ে হাজির হয়। রোবোকপ তখন বোডিকারের লোকদের গুলি করতে শেষ করে দেয়। কিন্তু লুইস মারাত্মক ভাবে আহত হয়। শেষ পর্যন্ত রোবোকপ বডিকারকে হত্যা করে। পরে রোবোকপ বোর্ড মিটিং চলাকালীন সময় সেখানে উপস্থিত হয়ে সমস্ত চক্রান্তের কথা ফাস করে দেয়।
১৯ : Bloodsport (1988)
Bloodsport একটি মার্শাল-আর্ট অ্যাকশন মুভি সিরিজের প্রথম মুভি।
মার্কিন সৈনিক ফ্রাঙ্ক ডুক্স (জিন-ক্লদ ভ্যান ড্যাম) কারাটে প্রতিযোগীতার সর্ব শেষধাপ কুমিতে অংশগ্রহণ করার জন্য হংকং এসেছেন। কুমিতে একটি অত্যন্ত গোপন এবং অত্যন্ত হিংসাত্মক মার্শাল-আর্ট প্রতিযোগিতা। তার পিছনে লেগে থাকা সামরিক অফিসারদের চোখ এড়িয়ে সে ঠিকই তার গন্তব্য পৌছতে পারে। সেখানে শুরু হয় একটি কঠিন প্রশিক্ষণ। দিনের পর দিন কঠিন প্রশিক্ষণ সহ্য করে সে নিজেকে যোগ্য লড়াকু হিসেবে তৈরি করে নেয়। এর মধ্যে রূপসী সাংবাদিকা জেনিস কেন্ট এর সাথে একটি একটি রোমান্টিক সমস্পর্ক তৈরি হয় তার। তারপর শুরু হয় সেই ভয়ঙ্কক কুমিতে লড়াই। বিভিন্ন দলে বিভক্ত প্রতিযোগীতদের মাঝে শুরু হয় মরনপন লড়াই। বিজয়ীরা উঠে যায় নেক্সট লেভেলে। শেষ পর্যন্ত বেঁচে থেকে লড়াই করে ফ্র্যাঙ্ককে বিজয়ী হতে হবে। কিন্তু সে কি বাঁচতে পারবে?
যাইহোক, এটিও একটি সিরিজ। প্রথম মুভির সাফল্যের পরে এর আরো অনেকগুলি সিকুয়েল বেরিয়েছে। তবে তার কোনোটিতেই জিন-ক্লদ ভ্যান ড্যাম অভিনয় করেন নি।
২০ : Die Hard (1988)
ডাই হার্ড হল একটি আমেরিকান অ্যাকশন মুভি সিরিজ। এই সিরিজে এখন পর্যন্ত ৫টি মুভি রিলিজ হয়েছে।
১৯৮৮ সালে মুক্তিপায় ডাইহর্ড সিরিজের প্রথম মুভি Die Hard.
নিউ ইয়র্ক সিটি পুলিশ ডিপার্টমেন্টের গোয়েন্দা জন ম্যাকক্লেন (ব্রুস উইলিস) ক্রিসমাসের সময় লস অ্যাঞ্জেলেসে আসে তার স্ত্রীর সাথে দেখা করে তার রাগ ভাঙ্গিয়ে আবার একসাথে থাকার জন্য। জন ম্যাকক্লেন তার স্ত্রীর অফিসে উপস্থিত হওয়ার পরে সেখানে একদল জার্মান কট্টরপন্থী সন্ত্রাসী অফিস বিল্ডিংটিতে আক্রমণ করে সবাইকে জিম্মি করে নেয়। সন্ত্রাসীরা বিল্ডিংয়ের ভল্টে থাকা ৬৪০ মিলিয়ন ডলারের বন্ড হাতিয়ে নেয়ার জন্য এই আক্রমণ করে। ভাগ্যক্রমে জন ম্যাকক্লেন লুকিয়ে পরতে পারে। পরে জন ম্যাকক্লেন নানান কৌশলে সন্ত্রীদের একে একে পরাস্থ করে এবং তার স্ত্রী ও অন্যান্য বন্দীদের উদ্ধার করে নেয়।
=================================================================
সিনেমা নিয়ে আমার আরো কিছু পোস্ট -
আমার দেখা হলিউড মুভি - ০১
আমার দেখা হলিউড মুভি - ০২
আমার দেখা হলিউড মুভি - ০৩
সাই-ফাই মুভি সিরিজ Alien
দ্য প্রিডেটর ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম মুভি Predator
দ্য প্রিডেটর ফ্র্যাঞ্চাইজির দ্বিতীয় মুভি Predator 2
দ্য প্রিডেটর ফ্র্যাঞ্চাইজির তৃতীয় মুভি Predators
দ্য প্রিডেটর ফ্র্যাঞ্চাইজির চতুর্থ মুভি The Predator
আমার দেখা অসাধারন একটি সিনেমা : ফরেস্ট গাম্প ১
আমার দেখা অসাধারন একটি সিনেমা : ফরেস্ট গাম্প ২
আমার দেখা অসাধারন একটি সিনেমা : ফরেস্ট গাম্প ৩
জনি ডেপের সিনেমা "Nick of Time"
The Invisible Guest
টাইম-লুপ নিয়ে হিন্দি সিনেমা Looop Lapeta
আইনি ড্রামা সিনেমা - জয় ভীম (Jai Bhim)
২০২১ সালের বলিউডের যে হিন্দি সিনেমা গুলি দেখেছি
=================================================================