শচীন ভৌমিকের লেখা ফর এডাল্টস ওনলি থেকে কিছু কিছু অংশ যা পড়ে বেশ তৃপ্তি (!!) পেয়েছি। যারা বইটি পড়েননি তাঁরা পড়ে দেখতে পারেন।----
১।
প্রেমেন্দ্র মিত্রও লিখেছেন-
কুড়ে লােক ফাঁকা মাঠ দেখলে দাঁড়ায়, খানিক বাদে শুয়ে পড়ে।
কিন্তু কাজের লােক মাঠ দেখলেই আগেই যায় মাপতে, তারপর দখল করার জন্য লাঠালাঠি বা মামলা বাধিয়ে তার দখল করে।
ফাঁকা মাঠ দেখলে শুয়ে পড়বার লােক যদি পৃথিবীতে বেশী থাকত, তাহলে মাঠ খুড়ে পরিখা কাটার প্রয়ােজন অন্তত হত না।”
২।
ঝকঝকে দিন। ২০ বছরের একজন স্বাস্থ্যবান যুবক সুন্দর একটি ঝর্ণার পাশে চোখের উপর টুপি টেনে দিবানিদ্রা দিচ্ছিল।
ধনী এক ভদ্রলােক ছেলেটির চরম আলস্য দেখে রেগে গিয়ে বললেন, ওহে এভাবে কুড়ের মত ঘুমুতে তােমার লজ্জা করে না?
ছেলেটি চোখের উপর থেকে টুপিটা সরিয়ে বলল, না।
ভদ্রলােক : এই বয়সে তােমার মেহনৎ করা উচিত, কাজকর্ম করা উচিত, পয়সা রােজগার করা উচিত।
ছেলেটি : তারপর ?
ভদ্রলােক : রােজগার করে অন্য দশটা পুরুষের মত বিয়ে করা উচিত।
ছেলেটি : তারপর ?
ভদ্রলােক : তারপর ছেলেপুলে হলে তাদের মানুষ করা উচিত।
ছেলেটি : তারপর ?
ভদ্রলােক : তারপর বৃদ্ধ বয়সে রেস্ট করবে।
ছেলেটি বলল : আমি এখনই তাই করছি। এই কথা বলে ছেলেটি তার টুপিটা চোখের ওপর টেনে নির্বিকার চিত্তে দিবানিদ্রায় মগ্ন হল।
৩।
একজন লোক বিয়ার পান করছিল আর বার বার পেচ্ছাপ করতে যাচ্ছিল।
সবাই জানেন বিয়ার দ্রুতবেগে পাকস্থলী কিডনী ব্লাডার হয়ে ইউরিন রূপে বেরিয়ে আসে।
বেশ কিছুক্ষ পান করার পরে আরেক বােতল যখন আনা হল তখন সে বােতল নিয়ে সােজা বাথরুমে চলে গেল। বােতল উপুড় করে ঢেলে দিল কমােডে। আর রেগে গিয়ে বললো- শালা, যাবে তো সােজা যাও। আমার পেটে গিয়ে তােমাকে বেরুতে হবে না। সােজা চলে যাও বাওয়া। অনেক বােকা বানিয়েছ আর বােকা বনছি না বাপু।
৪।
প্রায় প্রত্যেক হিন্দু ভাইদের আলাদা আলাদা ‘আইডল’ রয়েছে।
কেউ কৃষ্ণভক্ত, কেউ কালী, কেউ রামভক্ত, কেউ দুর্গা। তাদের ঈশ্বরের সংখ্যাও কম নয়। তেত্রিশ বা ছত্রিশ কোটি দেব-দেবী আছে। বলা বাহুল্য, স্বর্গে কোনদিন জন্মনিয়ন্ত্রণের ঝামেলা ছিল না। যাকগে।
এক লোককে জিজ্ঞেস করা হলো তােমার আইডল কে?
সে বলল- আইডল মানে? যে, ‘ডল"কে আমার ‘আই" সর্বদা তৃষ্ণার্তের মত দেখতে চায় সে তাে? সে হল—নোরা ফাতেহি।
বােঝ ঠ্যালা । Eye আর Doll-এর সন্ধি করেছে IDOL .
আবার জিজ্ঞাসা করা হলো কোন দেবতা বা অবতারের তুমি ভক্ত?
উত্তর দিল, কর্ণের। বীর ও দাতা কর্ণের নয় বরং ঘুমের রাজা কুম্ভকর্ণের ভক্ত।
অনেকে আবার গণেশ ঠাকুরের ভক্ত। মা দুর্গা যখন কার্তিক ও গণেশ দুই ছেলেকে বলেছিলেন, যা পৃথিবী ঘুরে আয় । দেখি কে তাড়াতাড়ি ঘুরে আসতে পারে।
কার্তিক ময়ূরে বসে সুপারসােনিক জেটের মত উধাও হলেন পৃথিবী প্রদক্ষিণে।
কিন্তু গণেশ তার ইদুর বাহন নিয়ে লােকাল ট্রেনের স্পীডে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করতে পারবেনা। তাই গতির কাজ বুদ্ধি দিয়ে সারলেন উনি। চট করে মা’র চারদিকে ঘুরে এসে বললেন, মা, তুমি আমার পৃথিবী। তােমাকে প্রদক্ষিণ করে সারা পৃথিবী প্রদক্ষিণ হয়ে গেছে আমার। মা দুর্গা ছেলের মাতৃভক্তি দেখে মহাখুশি।
৫।
শার্লক হোমসের ডাক পড়েছে স্বর্গে।
ঈশ্বর শার্লক হোমসকে ডেকে বললেন- দেখ বাপু স্বর্গের কোথাও ইভকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। সে চলে গেছে পৃথিবীতে। কানাঘুষা শুনতে পাই ইভ নাকি পৃথিবীতে গিয়ে একটি নুডিস্ট কলোনীতে অবস্থান করছে। এদিকে আদম বেচারা ইভকে ছাড়া একা একা স্বর্গে মনমরা হয়ে ঘুরে বেরাচ্ছে। তুমি বাপু ইভকে একটু খুঁজে বের করতো।
শার্লক হোমস খুব দ্রুতই ইভকে খঁজে বের করে স্বর্গে নিয়ে এলো।
ঈশ্বর খুব অবাক হয়ে শার্লক হোমসকে প্রশ্ন করলেন - কিহে এতো দ্রুত কি করে খুঁজে পেলে ইভকে? তুমিতো ইভকে চিনতে না!
শার্লক হোমস বললো- এটা খুব সহজ ছিলো। প্রথমে আমি আপনার বলে দেয়া নুডিস্ট কলোনিতে গিয়ে হাজির হই। সেখানে দেখলাম হাজার হাজার নর-নারী সকলে নগ্ন হয়ে আছে। তাই ইভকে খুঁজে পাওয়া আমার জন্য খুব সহজ হয়ে গেলো। কারণ আমি জানি আপনি ইভকে তৈরি করেছেন আদমের পাজরের হাড় দিয়ে। যেহেতু ইভ কোনো নারীর গর্ভে জন্ম নেয়নি তাই তার তলপেটে কোনো নাভীর গভীর চিহ্ন থাকবে না। ফলে ইভকে চিনে খুঁজে বের করতে খুব একটা কষ্ট বা সময় লাগেনি আমার।
৬।
একজন নারীবিদ্বেষী স্বাস্থ্যবান যুবক খুবই দেশভক্ত। একদিন সে ঠিক করল সে যুদ্ধে সৈনিক হিসেবে নাম লেখাবে। বন্ধুরা তার সাহসকে প্রশংসা জানাল। সে বীরদর্পে রিক্রুটিং অফিসে নাম লেখাতে গেল। কিন্তু হঠাৎ কি ভেবে নাম না লিখিয়ে ফিরে এল। বন্ধুরা ঘিরে ধরল তাকে। বলল, কি রে, মরবার ভয়ে ফিরে এলি ? এই তাের দেশভক্তি? এই তাের সাহস? ছেলেটি বলল, না। মেয়েদের হাতে লাঞ্ছনা হতে হবে ভেবেই জয়েন করলাম না।
বন্ধুরা অবাক, সে কি রে, যুদ্ধে মেয়েরা আসে কোথেকে। ছেলেটি বলল, তবে শােন।
ধর সৈনিক দলে নাম লেখালাম। দেন দেয়ার আর টু পসিবিলিটি—হয় আমাকে পিছনে রাখবে, নয় ফ্রন্টে পাঠাবে।
পিছনে রেখে দিলে নাে প্রবলেম। কিন্তু ফ্রন্টে পাঠালে এগেন দেয়ার আর টু পসিবিলিটিস।
হয় যুদ্ধে আমি শত্রুকে মারব নয়তাে শত্রু আমাকে মারবে।
আমি শত্রুকে মারলে নাে প্রবলেম, কিন্তু শত্রু আমাকে মারলে দেয়ার আর টু পসিবিলিটি।
হয় আমি আহত হব, অথবা নিহত হব।
আহত হলে নাে প্রবলেম কিন্তু নিহত হলে দেয়ার আর টু পসিবিলিটিস।
হয় ওরা আমাকে জ্বালিয়ে দেবে নয়তাে ওরা আমায় কবর দেবে।
জ্বালিয়ে দিলে নাে প্রবলেম, কিন্তু কবর দিলে দেয়ার আর টু পসিবিলিটিস।
হয় ওরা পাথুরে জায়গায় কবর দেবে বা মাটি চাপা দিয়ে কবর দেবে।
পাথর দিয়ে কবর দিলে নাে প্রবলেম, কিন্তু মাটি চাপা দিয়ে কবর দিলে দেয়ার আর টু পসিবিলিটিস।
হয় আমার কবরের ওপর বড় বড় গাছ জন্মাবে, নয়তো ঘাস জন্মাবে।
ঘাস জন্মালে নাে প্রবলেম কিন্তু বড় গাছ জন্মালে দেয়ার আর টু পসিবিলিটিস।
হয় সে গাছের কাঠ দিয়ে ফার্নিচার তৈরি হবে, নয়তাে সে গাছের কাঠ থেকে কাগজ তৈরি হবে।
ফার্নিচার তৈরি হলে নাে প্রবলেম। কিন্তু কাগজ তৈরি হলে দেয়ার আর টু পসিবিলিটিস।
হয় সে কাগজ দামী ভাল কাগজ হবে, নয়তো সস্তা বাজে কাগজ তৈরি হবে।
দামী কাগজ হলে নাে প্রবলেম, কিন্তু সস্তা বাজে কাগজ তৈরি হলে দেয়ার আর টু পসিবিলিটিস।
হয় সে কাগজ দিয়ে খবরের কাগজ তৈরি হবে নয়তাে সে কাগজ দিয়ে টয়লেট পেপার তৈরি হবে।
খবরের কাগজ হলে নাে প্রবলেম, কিন্তু টয়লেট পেপার হলে দেয়ার আর টু পসিবিলিটি।
হয় টয়লেট পেপার পুরুষরা ব্যবহার করবে, নয়তো মেয়েরা ব্যবহার করবে।
পুরুষরা ব্যবহার করলে আমার কোন আপত্তি নেই। কিন্তু মেয়েরা আমাকে তাদের বটুম সাফ করার জন্য ব্যবহার করবে এ আমি কিছুতেই সহ্য করতে পারবো না। মেয়েদের পায়ুর জন্য আমি আমার আয়ূ ক্ষয় করবো না।
শচীন ভৌমিকের লেখা "ফর অ্যাডাল্টস ওনলি" বইয়ের "কুড়েমি ও কাগজ" নামক অংশ থেকে।
মদিরা : (ফর অ্যাডাল্টস ওনলি)
নগ্নতা : (ফর অ্যাডাল্টস ওনলি)
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১:৩১