somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প কিন্তু গল্প না

০৭ ই মে, ২০২১ বিকাল ৪:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



রাত প্রায় ১২টা ১৫ মিনিট।
জিলানী ভাই বল্লো হিরা ভাই কি সত্যিই শ্মশানে যেতে চান?
আমি আর জিলানী ভাই আশ্রমের এক রুমে মশারির ভেতর শুয়ে আছি, অন্য রুমে বশির, জজ মিয়া আর মহিউদ্দিন, বাইরে টঙের উপর সারোয়ার একা শুয়ে, ইস্রাফিল বাইরে কি জেন করে।

আমি বললাম চলেন যাই দেখে আসি যদি কাউকে পাই!

আশ্রম থেকে চিতাখোলা মাত্র ৫ মিনিটের হাঁটা পথ।
চিতাখোলার পাশেই বিশাল বড় মন্দির।
মন্দিরে একজন ব্রাহ্মণ মানে পূজারি রাতে একা থাকে। লোক মুখে শুনেছি পূজারির বয়স শতবছরের উপরে! সব্বাই নাকি জন্মমের পর থেকেই তাকে এমনিই দেখতেছে। উনার বয়স থেমে আছে হয়তো। (আমি নিজেও অনেক বছর একই দেখতেছি)।

রাত প্রায় সারে ১২টায় আমি ইস্রাফিল এবং জিলানী ভাই হাঁটা শুরু করলাম চিতাখোলার উদ্দেশ্যে।
আমরা সবাই লুঙ্গি আর গেঞ্জি গায়ে। গত এপ্রিল মাসের ২ তারিখের কথা। সেদিন কেন জানিনা প্রচন্ড কুয়াশা ছিলো। চারিদিক খোলা পান্তর কিন্তু বেশিদূর দেখা যায়না। এই সময় এতো কুয়াশা ভাবা যায়না!

আধা পথ চলার পর আমার একটু একটু করে শীত লাগতে ছিল। হাতের লাইটের চার্জ শেষ। জ্বলে নিবে - জ্বলে নিবে।

জিলানী ভাই ভাবছিলো এতো রাতে সুন্দর বিছানা-মশারি ছেড়ে ঘুম ঘুম চোখে আমি এতো বড় রিস্ক নিবনা।
আমাদের এতো বেশি রিস্ক নিতেই হলো।
তবে আমার জীবনে এই প্রথম রাত বারো টার পর চিতাখোলায় যাওয়া।
আমি জানিনা আমার মত আর কত জনের এমন অভিজ্ঞতা হইছে???
(চলবে,,,,,)

(যদি বেচে থাকি ঈদের পর আশ্রমের পাশের ঐ শ্মশানে বসেই বাকিটুকু পোস্ট করবো। হয়তো একই সময়ে, অবশ্যই মেঘলা রাতে।)




উপরের অংশটুকুর বয়ান লিখেছে আমার বন্ধু হীরা।
নিচের অংশটুকুতে ঐ একই সময়ের কথা লিখেছি আমি আমার বয়ানে।




০২-০৪-২০২১
"গল্প কিন্তু গল্প না" (ওয়ান পয়েন্ট হাফ)
রাত প্রায় ১২টা ১৫ মিনিট, এটা ঢাকা শহরের রাত না। যেখানে বসে আছি সেখানে রাত ৮ টা মানে সব শুনশান।
আশ্রমের প্রায় নির্মিত দুটি ঘরের একটিতে ঘুমাচ্ছে বসির, জজ মিয়া আর মহিউদ্দিন। অন্যটিতে হীরা, জিলানী ভাই। ইস্রাফীল এখনো বাইরে অন্ধকারে ঘুরে বেড়াচ্ছে বিড়ালের পায়ের নিঃশব্দতায়। কিছুক্ষণ আগে মশাল গুলিতে তেল ঢেলেছে। পাশের মাচার উপরে তাবুতে শুয়ে আমি লক্ষ্য করছি সবটাই।

বাতাস না থাকলেও অতিরিক্ত গরম না। বরং চারদিকে অসময়ের কুয়াশা ঘিরে আছে। তাবুতে ঢুকার সময় আমার সাথে সাথে অনাহুত কিছু মশাও ঢুকে গেছে। অনেক কষ্টে সেগুলি মেরেছি আমি।

মহিউদ্দিনের নাক ডাকায় বিরাম নেই। নাক ডাকার শব্দে ঘুমতে না পেরে জিলানী ভাই আর হিরা শুয়ে শুয়ে আলোচনা করছে খাল পারে যাওয়ার। আমাকে জিজ্ঞাসা করতেই আমি না করে দিয়েছে, যাবো না। যদিও আশ্রম থেকে খালের দূরুত্ব খুব বেশি না তবুও ধান ক্ষেতের ভিতর দিয়ে খাল পর্যন্ত যেতে ধান গাছের এচড়ে শরীর চুলকাবে, আর বোনাস হিসবে যেকোনো সময় কাদায় পরে যেতে পারি।

আলাপে আলাপে খাল পার থেকে সরে ওদের গন্তব্য ঘুরে গেলো শ্মশানের দিকে। আশ্রম থেকে শ্মশানের দূরুত্বও খুব বেশি না, রাতের অন্ধকার গেলে সর্বচ্চো ৫ মিনিটের হাঁটা পথ, দিনের আলোয় ৩ মিনিট।

আমারও ইচ্ছে হলো সাথে যাবার, কিন্তু তাবু থেকে বেরিয়ে আবার ঢুকার সময় আমার সাথে সাথে মশারাও ঢুকে যাবে, সেগুলিকে আবার মারতে হবে। এই ভাবনায় আমি আর গেলাম না ওদের সাথে। বুঝতে পারলাম নীরা, জিলানী ভাই আর ইস্রাফীল রওনা হয়ে গেছে শ্মশানের পথে।

ধান ক্ষেতের উপর দিয়ে সাদা কুয়াশার চাদর এগিয়ে আসছে আমার দিকে, অন্য পাশে ৪টি মশাল টিমটিম করে লালচে আলো দিচ্ছে। অন্য পাশে মহিউদ্দিনের নাক ডাকার শব্দ। আমি একা একা শুয়ে আছি এটা মাচার উপরে বদ্ধ তাবুতে। শামুকে গতীতে সময় এগিয়ে চলে। একসময় আমার সামান্য চোখ লেগে আসে।

বেশ কিছুক্ষণ পরে ওদের ফিরে আশার সাড়া পেয়ে তন্দ্রাটা কেটে যায়।
শ্মশানে কাদের দর্শন মিললো রাতের অন্ধকারে!!
সেই বয়ান নাকি আসবে ঈদের পরে, সেই শ্মশানে বসেই পোস্ট করবে হীরা।
অপেক্ষায় থাকি আমরা।

নোট :
আশ্রম : আমাদের মনের কোনের ছোট ছোট স্বপ্নগুলিকে আশ্রয় দিতেই এই আশ্রম, স্বপ্নের আশ্রম।
আশ্রমের ছবি তুলেছে হীরা
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০২১ বিকাল ৪:০৬
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×