রাঙ্গামাটি ভ্রমণ – সুভলং ঝর্ণা ও কাপ্তাই হ্রদে নৌবিহার
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
ঢাকা ২৫ জানুয়ারি রওনা হয়ে ২৬ তারিখ সকালে পৌছাই খাগড়াছড়ি। একটি মাহেন্দ্রা গাড়ি রিজার্ভ করে নিয়ে সারা দিনের জন্য বেরিয়ে পড়ি খাগড়াছড়ি ভ্রমণে। একে একে দেখে ফেলি “আলুটিলা গুহা”, “রিছাং ঝর্ণা”, “শতবর্ষী বটবৃক্ষ” আর “ঝুলন্ত সেতু”।
পরদিন ২৭ জানুয়ারি খাগড়াছড়ি থেকে রাঙ্গামাটির দিকে রওনা হই একটি চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করে। পথে থেমে দেখে নিই “অপরাজিতা বৌদ্ধ বিহার”।
২৭ তারিখ দুপুরের পরে পৌছাই রাঙ্গামাটি। হোটেলে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে আসি দুপুরের খাবার খেতে। আগেই ছমির উদ্দিনকে (বোট ম্যান) টাকা দিয়ে এসেছি বোটের জন্য তেল কিনতে। খাবার শেষ করেই বেরবো নৌভ্রমণে, গন্তব্য “সুভলং ঝর্ণা”।
তাইপিং রেস্তরাতে দুপুরের খাবার খেলাম (বেশ ভালো মানের খাবার)। ইতোমধ্যে বোট এসে দাঁড়িয়ে আছে ঘাটে। বোটের ছাদে চেয়ার আর টুল দেয়া আছে সবার জন্য, সবাই সেখানেই বসেছি। আকাশে সূর্য তার আধিপত্য বিস্তার করে আছে রোদের শাসনে। শীতের বিকেলে জল ছোঁয়ে আসা শীতল বাসাত তার ঠাণ্ডার কামড় বসাতে পারছেনা মিষ্টি রোদের জন্য।
{ছবি ১ : বাচ্চাদের জন্য হালকা খাবার আর পানিও আনতে গেছে স্বপ্ন, ফেরার নাম নেই।}
চলতে শুরু করে আমাদের বোট ভট-ভট শব্দে নিথর জল কেটে। চার পাশে ছড়িয়ে আছে জলের সাথে মানিয়ে নেয়া জনজীবন।
{এমন দুটি গ্রুপের সাথে দেখা হয়ে ছিল আমাদের, ছুড়ে কলা দিয়ে ছিলাম খেতে}
এতো সুন্দর এই কাপ্তাই লেক তা লিকে-বলে বা ছবি দেখিয়ে বুঝানো সম্ভব নয়। দেখতে হবে নিচ চোখে। জলের উপরে বিকেলের কোন তুলনাই হয় না। জলের উপর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা ঘন জঙ্গলে ঢাকা টিলার উপর যখন বিকেলের হলদে রোদ এসে পরে তার মায়া ভোলার নয়। সেই সোনালী পাহারের ছাড়া পরে নিচের টলটলে জলে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দেয়া যায় এই অপরূপ দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে।
{হোলদে রোদের সোনালী ঝিলিক হ্রদের জলে}
{পেদা টিংটিং রেস্টুরেন্ট, উচিত হবে এই সব রেষ্টুরেন্টএ খাওয়া থেকে অনেক দূরে থাকা}
{পাহাড়ের আড়ালে মুখ লুকাচ্ছে সূর্য}
{সামনের পথ যেন পাহারের আড়ালে হারিয়ে গেছে}
{সামনেই সুভলং ঝর্ণা}
প্রায় এক ঘণ্টা ১০ মিনিটের যাত্রা শেষে পৌঁছে যাই “সুভলং ঝর্ণা” এর কাছে। কিন্তু হায়, এক ফোটা জল নেই ঝর্ণায়। বোট ম্যান চালাকি করেছে আমাদের সাথে, ঝর্ণা যে এখন শুকনো এটা সে বলেনি আমাদের। প্রতিটা খাবার জিনিসের একটা ভাল দিক থাকে। আগামীতে আবার রাঙ্গামাটি আসার একটা অজুহাত তৈরি হল এই শুকনো ঝর্ণার কারণে।
{জলহীন সুভলং ঝর্ণা}
{বর্ষায় এই পথে তোরে ঝর্ণার জল বয়ে চলে, এখন শুকনো}
কিছুটা সময় এই শুকনো ঝর্ণার ধারে কাটিয়ে ভঙ্গন মনোরথে ফিরে চলি বোটে। অলরেডি সূর্যি মামা তার রাজত্ব হারাতে বসেছে। শীত তার শিশুর দাঁতের ধার নিয়ে প্রস্তুত হয়েছে আক্রমণে, সেই তুলনায় আমাদের প্রস্তুতি নেই বললেই চলে।
{শীত.....}
{জেলেরা জাল ফেলেছে জলে, রাতের বেলা তুলবে টেনে।}
{হ্রদের মাঝে টিলার বন জ্বলছিল আগুনে}
{রাতে আঁধারে রিজার্ভ বাজারের আলোর খেলা হ্রদের জলে}
রাত হয়ে গেছে, আজকের মত ভ্রমণের পাট চুকলো। আগামী কাল আবার শুরু হবে ভ্রমণ রাঙ্গামাটিতে।
পূর্বের পর্বগুলি -
“খাগড়াছড়ির পথে”।
“খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – প্রথম পর্ব”।
“[link|http://zizipooka.com/travel/1845|খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – আলুটিলা গুহা[]”।
“খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – রিছাং ঝর্ণা”।
“খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – শতবর্ষী বটবৃক্ষ”।
“খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – অপরাজিতা বৌদ্ধ বিহার”।
“রাঙ্গামাটি ভ্রমণ – সুভলং ঝর্ণা ও কাপ্তাই হ্রদে নৌবিহার”।
প্রথম প্রকাশ:
এখনো অনেক অজানা ভাষার অচেনা শব্দের মত এই পৃথিবীর অনেক কিছুই অজানা-অচেনা রয়ে গেছে!! পৃথিবীতে কত অপূর্ব রহস্য লুকিয়ে আছে- যারা দেখতে চায় তাদের ঝিঁঝি পোকার বাগানে নিমন্ত্রণ।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর
লেখক বলেছেন: আপনাকেও জানাই নব বর্ষের শুভেচ্ছা
আলোচিত ব্লগ
এক্স লইয়া কি করিব
যাচ্ছিলাম সেগুনবাগিচা। রিকশাওয়ালার সিট কভারটা খুব চমৎকার। হাতে সেলাইকরা কাঁথা মোড়ানো। সুন্দর নকশা-টকশা করা। নর্মালি এররকম দেখা যায় না। শৈল্পিক একটা ব্যাপার। শুধু সিটকভার দেইখাই তার-সাথে কোন দামাদামি না কইরা... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইলিশনামা~ ১
১৯৮৫ সালে ডক্টর মোকাম্মেল হোসাইন ‘ ব্রিটিশ কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে যেই রিসার্চ পেপারটা( থিসিস – এম এস এর জন্য) জমা দিয়েছিলেন সেটা এখানে মিলবে;
[link|https://open.library.ubc.ca/cIRcle/collections/ubctheses/831/items/1.0096089|Spawning times and early life history of... ...বাকিটুকু পড়ুন
সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডার | SAD
শীতকালীন সর্দি-কাশি, জ্বর, হাঁপানি, অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, কনজাংকটিভাটিস, নিউমোনিয়া কিংবা খুশকি মতো কমন রোগের কথা আমরা জানি। উইন্টার ডিসঅর্ডার বা শীতকালীন হতাশা নামক রোগের কথা কখনো শুনেছেন? যে ডিসঅর্ডারের... ...বাকিটুকু পড়ুন
চট্টগ্রাম আদালত চত্বরের একজন প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে লিখছি
আজ চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে যে বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল তা নানান গুজব ও ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতা এড়াতে প্রকৃত ঘটনাটি নিরপেক্ষভাবে একজন প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে লিখছি।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে... ...বাকিটুকু পড়ুন
১. ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:৩৮ ০
ছবিগুলো দেখে মুগ্ধ। শুভ নববর্ষ।