বাবা, যাকে এক মূহুর্তের জন্যও ভুলা অসম্ভব। আচ্ছা ভুলার কথা আসছে কেন?! নিজের বাবাকে ভুলে যাওয়া, এটা কি হয়? এটা কি স্বাভাবিক চিন্তায় আসে? কখনোই না।
না হয়, বিশেষ কিছু শ্রেণীর মানুষের পক্ষে নিজের পিতাকে ভুলে যাওয়া সম্ভব। তা না হলে বৃদ্ধাশ্রম তৈরি হয় কেন? আধুনিক ও প্রগতিশীল নামধারী কিছু শ্রেণীর পক্ষে সম্ভব।
সিনেমা কখনো দেখা হয়না, কিন্তু কাহিনী যতটুকু জানা যায় সিনেমায় নাকি পিতা-মাতার জন্য নায়ক-নায়িকারা জানপ্রাণ। তাদের যে কোন বিপদ-আপদ, অসুখ-বিসুখে, যেখানে থাকুক না কেন নায়ক-নায়িকারা হাজির থাকবে ২৪ ঘন্টা। পিতা-মাতার সুখের জন্য নিজের জীবন বিলিয়ে দিতে দ্বিধা করবে না। আরো কত কি...!
বাস্তবে নিজের পিতা মরে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন হয়ে যায়, কিন্তু নায়িকার খবর নেই! যে নায়িকার সামান্য অসুখ হলে পুরো দেশ খবর হয়ে যায়, তার পিতা আগুনে পুড়ে মারা গেল নায়িকা তো বটে কোন মিডিয়াও জানেনা। স্বপ্নের সেই নায়িকা জানে না পিতা কোথায় থাকে, কোথায় যায়, কি করে! জানে না তার পিতা মরে গেছে না বেঁচে আছে! অথবা হয়তো জানে, কিন্তু পিতার মৃত্যু তাদের হৃদয়ে কোন প্রভাব ফেলে না! মৃত পিতার লাশের পাশে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ জাগে না। কি দূর্ভাগ্য সেই পিতার!
হ্যাঁ, ঘটনা বেশ কয়েকমাস আগের। বলছি বাংলাদেশের কথিত একনম্বর নায়িকা শাবনূরের কথা, তার পিতার কথা। সিলেটে বাসের ভিতর আগুনে পুড়ে মারা যান নায়িকা শাবনূরের পিতা। এরপর বেওয়ারিশ হিসেবে লাশ দাফনও করে ফেলে পুলিশ। প্রায় দুই সপ্তাহ পর নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী পায়ের জুতা ও মুখমণ্ডলের ছবি, হাতের ঘড়ি ও কোমরের বেল্ট দেখে স্বামীর পরিচয় সনাক্ত করেন এবং জানান নিহত ওই ব্যাক্তি চিত্রনায়িকা শাবনূরের বাবা। তার প্রথম স্ত্রী শাবনুরের মা।
পিতার সাথে কন্যার কতটুকু অমিল-দূরত্ব থাকলে এটি সম্ভব, কতদিন পিতা-কন্যা কেউ কারো খোঁজখবর না নিলে এত দূরত্ব তৈরি হয়, তা চিন্তা করা যায়?! এটি যে শুধু কন্যার দোষ তা নয়, পিতার দোষও আছে। নিশ্চয় পিতা সেই নৈতিক শিক্ষা দিয়ে নিজের সন্তানকে তৈরি করতে পারেনি, যে নৈতিক শিক্ষা পিতা-মাতাকে সম্মান করতে শিখায়, তাদের প্রতি দায়িত্ববান হতে বলে। পিতা, দূর্ভাগ্য আপনার, কি ভুলই না জীবনে করে গেলেন...!
আর সেই নায়িকা তার অভিনয়ের সকল কান্না-হাসি আসলে অভিনয়েই রেখে দিয়েছে। কোন প্রকার মনুষত্ববোধ তৈরি হয়নি। নিজের পিতার খোঁজখবর যে রাখেনা, পিতার মৃত্যুর খবর পর্যন্ত যে জানে না, সে কি মানুষ?! শাবনূর, আপনার আধুনিকতা, প্রগতিশীলতা কি শিখিয়েছে আপনাকে?! সামান্য বিবেকবোধ কি আপনাদের ভিতর তৈরি হয়নি?! আপনাদের ব্যাক্তিজীবন তাহলে এত পংকিলতায় ভরপুর?!
শাবনুরদের বাস্তব জীবনের যেসব তথ্য জানা যায়, তাতে বুঝা যায় তারা যে পথ ও পেশা ধরেছে তা কোন সুস্থ মানুষের পথ ও পেশা নয়। ওই পথে নিজে সুখের দুনিয়ায় সাময়িক ভেসে থাকলেও বাস্তবে তা মানুষের জীবন নয়...! এই পথ ও পেশা থেকে দূরে থাকাই উত্তম।
রিলেটেড পোস্ট- যে নায়ক-নায়িকারা দেশের কোটি যুবক-যুবতীকে কঠিন প্রেম, বিয়ে, সংসার গড়া শিক্ষা দেয়, তাদের বাস্তব জীবনের অবস্থা কি?