স্বাধীনতা দিবসে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে ফুল দিতে না যাওয়ায় সাধারণ ছাত্রীদের বেধড়ক পিটিয়েছে বদরুন্নেসা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নাসরিন সুলতানা ঝরা। এ হামলায় অন্তত ২২ জন ছাত্রী গুরুতর আহত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার সকালে বদরুন্নেসা কলেজে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা আহতদের চিকিৎসা নিতে বাইরে যেতেও দিচ্ছে না । জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৬টায় ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে ফুল দিতে যাওয়ার কথা ছিল বদরুন্নেসা কলেজ ছাত্রলীগের। এ উপলক্ষে রাতেই কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি গ্র“পের মেয়েরা রুমে রুমে গিয়ে সকাল সোয়া ৬টার মধ্যে সবাইকে হল গেটে আসতে বলে। কিন্তু সাধারণ মেয়েদের ঘুম থেকে উঠতে দেরি হলে রুমের দরজায় লাথি মেরে চিৎকার করে সভাপতি ঝরা। সকাল সাড়ে ৯টায় ৩২ নম্বর থেকে ফিরে নাসরিন সুলতানা ঝরার নেতৃত্বে আইরিন, নিশাত, শিমুল, নাজনিন, শায়লা, মনিসহ ১০-১২ জন ছাত্রলীগ ক্যাডার হলের ৩০৯, ৩১১, ৩০০৩, ৩০৬ ও হলরুমে মেয়েদের লাঠি ও রড দিয়ে বেধড়ক পিটুনি দেয়। এতে অন্তত ২২ জন আহত হন। আহতরা হলেন লাবনী, আমেনা, খুশি, জান্নাত, রুমা, সুমি, হিরা, তহমিনা, রুমকি, মনি, তানিয়া, খুশি, রিয়া প্রমুখ।
আহতদের অনেকেরই হাত, পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ফেটে ও ফুলে গেছে। তবে কাউকেই হলের বাইরে যেতে দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনা সাংবাদিকদের জানানো হলে তাদের নেত্রীরা হল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে বলেও জানায় আহত কয়েকজন ছাত্রী। তারা জানায়, রোববার পত্রিকায় যাদের নাম আসবে তাদের সবাইকে হল থেকে বের করে দেয়া হবে বলে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে হুমকি দেয়া হয়েছে। এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ছাত্রলীগ নেত্রী জানান, ঝরা মেয়েদের ওপর প্রায়ই এ ধরনের নির্যাতন চালায়। তাদের জোর করে মিছিল, মিটিংসহ বিভিন্ন কাজে বাধ্য করে। কিন্তু মেয়েরা সবই মুখ বুঝে সহ্য করছে।
ছাত্রলীগ নেত্রী অভিযোগ করে বলেন, ঝরার এসব কাজে সাহায্য করছেন কলেজের অধ্যক্ষ। কারণ অধ্যাপিকা মেরিন জাহান অধ্যক্ষ হওয়ার আগে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। আর ঝরা সমাজবিজ্ঞানের ছাত্রী। তিনি বলেন, মেরিন জাহান একজন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ও সংসদ সদস্যের বোন হওয়ায় সে কাউকেই পাত্তা দিচ্ছেন না।
যুগান্তর
মানবজমিন