ইদানীং স্কুল কিংবা কলেজ ড্রেস পরিহিত ছেলেমেয়ে গুলোকে দেখে কেমন একটা অদ্ভুত অনুভূতি হয়,অবচেতন নিউরনের সিন্যাপ্স আর ডেনড্রাইটের আন্দোলন জানান দেয় “ছাত্রজীবন”আমার সায়াহ্নে।ভোর হলে দোর খুলে মায়ের আঁচল ধরে যেই খুকুটি একদিন নিজের অজান্তেই সুদূর দিগন্তের এই পথে যাত্রা করেছিল,আজকে সেই পথটারই সীমানা দাঁড়িয়ে গেছে।এভাবে কি শেষ হওয়ার কথা ছিল?কতশত অপূর্ণতা সেই পথে ফেলে এসেছি,তা পূর্ণ করার কোন দ্বিতীয় সুযোগ কি পাবার নয়?আমাকে যে ফেরার বড় বেশি প্রয়োজন।
আমি একবার ফিরতে চাই, কোন অলৌকিক শক্তির বলে,চতুর্থ মাত্রায় চেপে কিংবা মহাকালিক কোন এক অস্তিত্বহীন রূপে।
আমি ফিরব,বাবার কোলে বসে বৃদ্ধাঙ্গুলির সেই ছন্দটা আবারো খুজতে,
আমি ফিরব,কাকভেজা হয়ে স্কুল ফেরত ছেলেটার উদ্দামতা নতুন করে আবিষ্কার করতে,
লাল রঙের যে ঘুড়িটা নাটাই ছিড়ে উদ্দেশ্যহীন হয়েছিল তাকে খুজতে ফিরব,
ডাংগুলিটার গুটি হারিয়ে ফেলেছিলাম বলে যে বন্ধুটা রাগ করেছিল তাকে সেটা বানিয়ে দিতে ফিরব,
হাফপ্যান্টের ডান পকেটে রাখা ৩৩ টা মার্বেল নিয়ে দৌড়ে আসার সময় পড়ে গিয়ে ৪ টি মার্বেল হারিয়ে গিয়েছিল ওগুলো খুজতে ফিরব,
দুষ্টুমির আধিক্যে নাম পরিবর্তন হয়ে যাওয়া সেই ছেলেটাকে নাম ফিরিয়ে দিতে ফিরব,
আমি ফিরব,শৈশবটাকে আরো কিছু রঙ দিতে,
এরপর কৈশোরে যে বিষাক্ত নীলের দহনে পুড়ে গিয়েছিল আমার সকল স্বকীয়তা সেই নীলটাকে উপড়ে ফেলতে ফিরব,
আমি ফিরব মাথা নিচু করে হাটা ছেলেটাকে তার কানে কানে প্রাণস্পন্দনের মন্ত্র বলে দিতে,
ফিরব,দূরে সরিয়ে দেয়া সকল ভালবাসার কাছে ক্ষমা চাইতে,
আমি ফিরব,প্রকৃতি মায়ের কাছে অনন্তকালের ছাত্রত্তের শপথ নিতে।
যদি অস্তিত্বে ফেরা সম্ভব না হয়,
তবে হে মহাকাল, আমাকে ফিরিয়ে নিও......
প্রথম সূর্যোদয়ের রক্তিমতায়,
ভোরের শিশিরে,
প্রখর তপ্ত রোদে,
মধ্যদুপুরের ঘুমে,
বিকেলের খেলার মাঠে,
গোধূলীর ধূলোয়,
সন্ধ্যার পড়ার টেবিলে,
আর নিয়ো আমায় রাতের স্বপ্নে।
আমার সকল অনস্তিত্তের অনুভূতিতে আমি অনুভব করব আমার ফেলে আসা সেই ছাত্রত্তকে।আমি বার বার ফিরব,শত বছর ধরে,হাজার বছর ধরে,অনন্তকাল ধরে সেই শাশ্বত ছাত্রত্তের সন্ধানে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৪