somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভাষার বিজয় গণতন্পের বিজয়ের মতোই অসমপূর্ণ

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৭ রাত ১১:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসে একুশের বিশিষদ্বতা সমঙ্র্কে বলুন।
ইতিহাসের গতিসঙ্ন্দ আছে, ইতিহাসে ছন্দসঙ্ন্দ আছে। সেই ছন্দ স্পন্দে কিছু কিছু কংত্রিক্রট ঘটনার গুরুত্দ্ব অবশ্যই আছে। প্রথমেই বলা দরকার, যাকে আমরা ভাষা আন্দোলন বলি তার শুরু কিন্তু '52-তে নয়, শেষও '52-তে নয়। ভাষা আন্দোলন নিয়ে কথা বলতে গেলে বাংলা ভাষার ইতিহাসের দিকে অর্থাৎ তার রাজনৈতিক ইতিহাসের দিকে নজর দেওয়া দরকার। টিকে থাকার স্ট্বার্থে বাংলাকে সবসময় লড়াই করতে হয়েছে। বাংলা সবসময় ব্রাত্যজনের ভাষা নিল্ফম্নবর্গের ভাষা হিসেবে থেকেছে। বাংলার সঙ্গে একসময় রাজদরবারের ভাষা ফার্সির দ্বন্দ্ব ছিল, সংস্ট্কৃতের দ্বন্দ্বও আমরা দেখেছি। সুতরাং একটি ভাষার সঙ্গে অন্য ভাষার সমঙ্র্ক যে আসলে ক্ষমতার সমঙ্র্ক, বাংলার ইতিহাস বিচার করলে সেটা বোঝা যায়। শুধু ক্ষমতার সমঙ্র্ক বললে হয় না, বলতে হয় অসম ক্ষমতার সমঙ্র্ক। এ অসম ক্ষমতার পুনরুৎপাদন আবার আমরা খেয়াল করি ব্রিটিশ উপনিবেশ প্রতিষ্ঠার সময়। তখন ইংরেজি গুরুত্দ্বপহৃর্ণ ভাষা, শাসকশ্রেণীর ভাষা এবং সাম্রাজ্যের ভাষা। তখন বাংলা আবার বিদেশি ভাষার অধীনস্টস্ন হলো। এ সময়েই বাংলা ভাষার রাজনৈতিক ইতিহাসে আরেকটা অনস্নর্দ্বন্দ্ব দেখা দিল। 1867 সালে ভাষা নিয়ে একটা বিতর্ক হয়। সে সময় হিন্দির সঙ্গে উদর্ুর দ্বন্দ্বের পরিপ্রেক্ষিতে উদর্ুকে ভারতীয় মুসলমানদের একমাত্র ভাষা করার কথা উঠেছিল। স্যার সৈয়দ আহমদ এবং মৌলভী আবদুল হকরা সেই ধ্বনি তুলেছিলেন। তখনও বাংলার কথা মোটেই খেয়ালে রাখা হয়নি। পাকিস্টস্নান আমলেও আবার বাংলাকে লড়তে হয়েছে। নিজের বিকাশের জন্য মর্যাদার জন্য তাকে প্রতিমুহহৃর্তে আধিপত্যকামী ভাষার সঙ্গে যুদব্দ করতে হয়েছে।
এ ব্যাপারে তথাকথিত বেঙ্গল রেনেসাঁসের প্রবক্তাদের মধ্যেও টানাপড়েন লক্ষ্য করা গেছে। একদিকে পাশ্চাত্য শিক্ষার দ্বারা প্রভাবিত হবার ব্যাপার, অন্যদিকে বাংলা ভাষায় তার চর্চা চলছিল। এই টানাপড়েনে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত যে সবসময় প্রগতিশীল ভূমিকা নিয়েছে তা নয়। ভাষা প্রশেম্ন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবস্ট্থান ছিল প্রগতিশীল। বাংলা ভাষাকে সামনে আনা ও সংস্ট্কার করার তাগিদ তিনিই এনেছিলেন। তার 'বর্ণপরিচয়' 'আদর্শিলিপি' এবং বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনার মাতৃভাষার প্রতি তার দায়বোধই প্রকাশ পায়। ইংরেজির সঙ্গে বাংলার দ্বন্দ্বে তার পক্ষপাত সঙ্ষদ্বভাবে বাংলার দিকে। কিন্তু তিনিও একটা পর্যায়ে এসে থেমে যান। তার পরে বগ্ধিকমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়-এর হাতে বাংলা ভাষার চর্চা ও উপন্যাসের ভিত রচনা হয়ছে। তবে সেখানেও দেখছি যে, ভাষা প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে উপনিবেশবাদ বিরোধিতার প্রয়োজন তিনি খেয়াল করছেন না। ভাষা যে সংগ্রামের ক্ষেত্র, এমনকি রাজনৈতিক মুক্তিসংগ্রামেরও ক্ষেত্র হতে পারে, ঊনবিংশ শতকে তার ওপর বেশি গুরুত্দ্ব দেওয়া হয়নি। '52 সালের ভাষা আন্দোলনে চূড়ায় এ বিষয়টিই উন্মোচিত হয়েছে।
ভাষা ও জাতীয়তাবাদের সমঙ্র্ক কি তখনই সামনে আসে?
বাঙালি জাতীয়তাবাদের যে চেতনা এবং যার মধ্যে একধরনের উপনিবেশবাদ বিরোধিতা থাকতে পারে, তা সীমাবদব্দভাবে হলেও আমরা লক্ষ্য করি ঈশ্বরচন্দ্রে, বগ্ধিকমে এবং আরো বেশি করে মধুসহৃদন দত্তের মধ্যে। তার 'মেঘনাদবধ কাব্যকে' বলা যেতে পারে ওই সময়ের জাতীয় মহাকাব্য। জাতীয়তাবাদের মধ্যে ভাষার ব্যাপারটি গুরুত্দ্বপহৃর্ণ। বিশেষত সেই জাতীয়তাবাদে যার মধ্যে উপনিবেশবাদবিরোধী উপাদান উদ্ঘাটনের ব্যাপার আছে। তাহলে আমরা দেখছি যে, ভাষা আন্দোলন এবং ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের শুরুটা আরো আগে এবং সাহিত্য তাতে একটা গুরুত্দ্বপহৃর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
দেখা যাচ্ছে, রাষদ্ব্রের অভিভাবকত্দ্ব ছাড়া ভাষার পহৃর্ণ বিকাশ হচ্ছে না।
অনেক ক্ষেত্রেই তো ভাষা রাষদ্ব্রের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দি্বতা করেছে, মর্যাদা দাবি করছে। আবার একইসঙ্গে উপনিবেশবাদের উপাদানগুলোকে নিজের মধ্যে পুনঃসৃষদ্বিও করেছে। অর্থাৎ ভাষার গতি একরৈখিক না যে, অত্যনস্ন নিরেট, সঙ্ষদ্ব ও সবল উপনিবেশবাদ বিরোধিতা আমরা পাব। মধ্যবিত্ত সমাজ নিজ শ্রেণীস্ট্বার্থেই ঔপনিবেশিক সমঙ্র্ককে টিকিয়েও রেখেছে। যার উদাহরণ বগ্ধিকমচন্দ্রের রাষদ্ব্রচিনস্না। তিনি যে রাষদ্ব্র কল্কপ্পনা করছেন সেটা কিন্তু ভাষাভিত্তিক নয়, সামঙ্্রদায়িক। তিনি জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা কিন্তু তার চিনস্নার মধ্যে পশ্চিম ভর করে আছে। পশ্চিম সভ্যতার জয়গানে তার রচনা ভরপুর। উপনিবেশবাদের মতাদর্শিক আধিপত্য ভাংবার লক্ষ্য তার সামনে ছিল না। '52-এর ভাষা আন্দোলনের চেতনার মধ্যে প্রথম এই পাল্কল্টা মতাদর্শিক আধিপত্যের আকাগ্ধক্ষা দেখতে পাই। যে মতাদর্শে অধিকাংশ মানুষ স্ট্থান পাবে, তাদের স্ট্বার্থই থাকবে যার কেন্দ্রে।
উনিশ শতকের গোড়ায় ভাষা সংস্ট্কারের মাধ্যমে যে প্রমিত বাংলা তৈরি হলো, তা উচ্চ বাংলা এবং নিল্ফম্ন বাংলা হিসেবে ভাষাকে বিভাজিত করল কি?
হঁ্যা, সেটা আসলেই বিভাজন তৈরি করেছে। তারও কারণ উপনিবেশবাদ। ঈশ্বরচন্দ্র, মধুসহৃদন ও বগ্ধিকম এই ত্রয়ীর কথা বলতে পারি। ভাষা ও সাহিত্যের যে রাজনৈতিক কাজ তা বোঝার জন্য এদের কাজের সঙ্গে উপনিবেশবাদের সমঙ্র্ক খেয়ালে রাখতে হবে, দেখতে হবে শ্রেণীর যোগাযোগ। ওই ত্রয়ী বিভিল্পম্ন সময়ে আলাদা আলাদাভাবে পশ্চিম সভ্যতার জয়গান গেয়েছেন। পশ্চিমা সভ্যতার অনেক আলোকিত দিক আছে কিন্তু তার যে বর্বরতার দিক_ সেটাকে তারা উন্মোচিত করেননি। তাই আমরা দেখেছি যে, বাংলা ভাষার মধ্যে সেই সভ্যতার চেতনা রোপিত করতে গিয়ে তারা ভাষাকে বিভাজিত করে ফেলছেন। চাকরের ভাষা চাষার ভাষা বনাম বাবুর ভাষা প্রভুর ভাষা, এরকম আদল দাঁড়িয়ে গেছে। নানারকম উচ্চ-নীচ বিভাজন তৈরি হয়েছে। সাহিত্যিক ভাষা বনাম অসাহিত্যিক ভাষা_ এটিও আরেকটি অসম ক্ষমতাসমঙ্র্ক। ভাষার ওপর রাজনৈতিক প্রভাবের ফলেই ভদ্রলোকী বাংলার সঙ্গে শ্রমজীবী কৃষক জনগোষ্ঠীর মুখের বাংলার এ দহৃরত্দ্ব। আনুষ্ঠানিক বাংলা এবং আঞ্চলিক বাংলার মধ্যেও এই অসম ক্ষমতার সমঙ্র্ক রয়েছে। অথচ যাকে আঞ্চলিক বলা হচ্ছে, তা-ই তো সত্যিকার 'জাতীয়'। জাতির সাংস্ট্কৃতিক জীবনের প্রাথমিক প্রকাশ তো সেখানেই ঘটে। তার থেকে বিচ্ছিল্পম্ন হলে ভাষা শেকড়ছাড়া, দুর্বল ও গণবিরোধী হয়ে পড়তে পারে। আমার আশগ্ধকা গত দশ-পনের বছরে এই প্রবণতারই বাড়বৃদব্দি হচ্ছে।
ভাষার অধিকার কীভাবে সামাজিক উল্পম্নতির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে?
সংস্ট্কৃতি হচ্ছে বিভিল্পম্নমুখী আদর্শের প্রতিদ্বন্দি্বতার ময়দান। সেখানে একটা পর্যায়ে কোনো একটি আদর্শের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা হয়। এর সঙ্গে ভাষার চর্চার সরাসরি যোগ থাকে। ভাষা জনগণের সাংস্ট্কৃতিক সমঙ্দ। কিন্তু একে কে কীভাবে ব্যবহার করছে তার ওপর ভাষা ব্যবহারের চরিত্র দাঁড়ায়। ধরা যাক শিক্ষার কথা। শিক্ষার মাধ্যমে ভাষাকে সামাজিক ক্ষমতায়নে ব্যবহার করা যায়। ইংরেজির কথাই ধরুন। শাসকের ভাষা এবং সাম্রাজ্যবাদের ভাষা হিসেবে ইংরেজির দাপট এখন বিশ্বায়ন বা গোলোকায়ন মারফত বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠিত। অপরদিকে এশিয়া-আফিদ্ধকা-ল্যাটিন আমেরিকার সাবেক উপনিবেশিত দেশগুলোতে দু'ধরনের প্রবণতা আমরা শনাক্ত করতে পারি। এক দল শাসকের মতাদর্শ চর্চা করছে, আরেক দল শাসকের ভাষাকে উল্কেল্টা তাদের বিরুদব্দেই ব্যবহার করছে। যেমন উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকায় সঙ্্যানিশ একসময় ঔপনিবেশিক প্রভুর ভাষা ছিল। কিন্তু তৃতীয় বিশ্বের বড় এলাকায় সঙ্্যানিশ এখন নিপীড়িতের ভাষা। কাজেই একই ভাষাভাষীদের ঐতিহাসিক বস্ট্তুগত অবস্ট্থানের কারণে ভিল্পম্ন চরিত্র অর্জন করছে। সেটা সাহিত্যে যেমন, মুখের কথাতেও তেমন। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যবিত্ত-উচ্চবিত্তের কাছে ইংরেজি ভাষা সামাজিক অবস্ট্থান ও আত্দ্মপরিচয় নির্মাণের হাতিয়ার। অপরদিকে দক্ষিণ এশিয়া এবং ইউরোপ-আমেরিকাতেও এশীয় ইংরেজি লেখকদের আবির্ভাব ঘটছে। এদের কেউ কেউ ইংরেজিকে ব্যবহার করছেন ইংরেজির দাস হিসেবে নয়, কলকাঠি হিসেবে। কিছু নির্দিষদ্ব ঐতিহাসিক বস্ট্তুগত কারণে ইংরেজি তাদের কাছে এসেছে। সে কারণে প্রভুর ইংরেজি আর দাসের ইংরেজি এক নয়। কিন্তু বাংলাদেশে এমনও দেখা যায়, কেউ কেউ বাংলাদেেশর কাদা-মাটি-জলে বড় হয়ে কয়েক বছর বিদেশে কাটিয়ে ইংরেজিকেই একমাত্র ভাষা হিসাবে ব্যবহার করছেন। আমি মোটেই ইংরেজি চর্চার বিরুদব্দে না। আমার প্রশম্ন হচ্ছে, এই যে ইংরেজিকে সমীহ করা বা অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রবণতা, এর আদর্শিক ও রাজনৈতিক পক্ষপাতটি নিরীহ চরিত্রের নয়।
তাদের মনোজগতের নোঙর কি দেশের বাইরে পোঁতা?
খুব চমৎকার বলেছেন, তাদের মনোজগতের নোঙর দেশে নাই। এটা ইংরেজির সমস্যা না, সমস্যাটা মানসিকতার; যাকে আমি বলতে চাই ঔপনিবেশিক মানসিকতা। মধ্যযুগীয় কঠিন ইংরেজি তারা কষদ্ব করে পড়েন অথচ দেশে থেকেও বাংলা চর্চায় অমনোযোগী। আপনি ইংরেজি সাহিত্যে পড়ে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের জিজ্ঞাসা করুন তো শাহ মুহাল্ফ্মদ সগীর কে আলাওল কে, বেশিরভাগই বলতে পারবে না। কিন্তু যদি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় কারা ইংরেজিতে লিখছে, জবাব পাবেন। এসব জানা দরকার কিন্তু নিজের ভাষিক সমঙ্দকে অবহেলা করা তো প্রকৃত বিদ্বানের কাজ নয়।
উল্পম্নয়ন সাহিত্য নামে ইংরেজি নির্ভর একধরনের লেখালেখির বিস্টস্নার হচ্ছে। এর ভূমিকা কী?
এই উল্পম্নয়ন কার উল্পম্নয়ন? যাদের উল্পম্নয়ন, তাদের জন্যই এটা তৈরি করা হয়। সে কারণেই তা ইংরেজিতে রচিত হয়। যদি তা দেশবাসীর উল্পম্নয়নের লক্ষ্যে হতো, তবে তাদের পড়বার মতো করে দেশীয় ভাষায় রচিত হতো। ইতালির তাত্তি্বক ও সংগ্রামী আনস্নোনিও গ্রামসি হেজিমনি বা মতাদর্শিক আধিপত্যের কথা বলেছেন। কেবল বলপ্রয়োগ বা বৈষয়িক পন্থা দিয়েই শাসন চলে না, শাসনের জন্য আদর্শিক প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত করে শাসিতের সল্ফ্মতি আদায়ের পন্থার কথা তিনি বলেছেন। যদি শাসিতকে বিশ্বাস করানো যায় যে, বাংলার চেয়ে ইংরেজি ভালো; যদি তার মনোজগতের ভেতর ঢুকিয়ে দেওয়া যায় যে, ইংরেজির মইয়ে চড়ে শ্রেণীগত অবস্ট্থানের উল্পম্নতি ও ক্ষমতা অর্জন করা যায় এবং ইংরেজিই প্রগতি ও আলোর বাহন, তবে তারা ইংরেজির দিকেই ছুটবে। দেশীয় ভাষা-সংস্ট্কৃতি অর্থাৎ বৃহত্তর জনগণ ও তাদের স্ট্বার্থ পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়ার চেষদ্বা হবে। তখন নিল্ফম্ন শ্রেণীর লোকজনও নিজ শ্রেণী ডিঙিয়ে যাওয়াকেই লক্ষ্য নির্ধারণ করবে।
সর্বস্টস্নরে শিক্ষার বিস্টস্নার ছাড়া ভাষার পহৃর্ণ মর্যাদা প্রতিষ্ঠা সল্ফ্ভব?
প্রথমত যে শিক্ষা কাঠামো তৈরি হয়েছে তাতে সর্বস্টস্নরে বাংলাকে বাধ্যতামহৃলক করলেও তা ইংরেজির কাছে পরাস্টস্ন হবে। কারণ কাঠামোটাই এমন যে, তার ওপর বাইরে থেকে বাংলাকে চাপিয়ে দিলে তা কার্যকর না-ও হতে পারে। যেমন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাথর্ীদের মধ্যে শ্রেণীগত ব্যবধান আছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে কারা যায়, কেন যায়, তাদের টাকা কোথা থেকে আসে, এর একটা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পশ্চাৎ কারণও আছে। শ্রেণীবিভক্ত সমাজে যেমন এক শ্রেণী অন্য শ্রেণীর ওপর আধিপত্য করে, তেমনি এক ভাষাও অন্য ভাষার ওপর দাপট প্রতিষ্ঠা করে। ইংরেজি বাংলার ওপর, আর বাংলা চাকমা বা মান্দি ভাষার ওপর আধিপত্য করছে। সেজন্য শিক্ষা ব্যবস্ট্থার মধ্যে কাঠামোগত পরিবর্তন না হলে বাংলাকে সর্বস্টস্নরে প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। এ জন্য আমাদের সরকারগুলো কোনো ব্যবস্ট্থা নেয়নি। শুরু থেকে বিজ্ঞান, দর্শন, ইতিহাস, অর্থনীতিসহ জ্ঞানের সব শাখার গুরুত্দ্বপহৃর্ণ বইগুলো অনুবাদ করার ব্যবস্ট্থা থাকলে কিছুটা অগ্রগতি হতো। গত 35 বছরে এটাকে সাংস্ট্কৃতিক ধারায় পরিণত করা গেলে আজ বাংলাকে আরো ভালো জায়গায় দেখতে পেতাম। তার ফলে বিজ্ঞান, দর্শন ও সাহিত্যসহ সকল জ্ঞানের বিকাশ হতো। কিনস্ন এ লক্ষ্যে কেবল অনুবাদ সংস্ট্থাই যথেষদ্ব নয়, এর জন্য সামাজিক আন্দোলন দরকার। ভাষার সাত্যিকার বিকাশক্ষেত্র হচ্ছে জনসংস্ট্কৃতি। জনসংস্ট্কৃতির সত্যিকার বিকাশ ঘটে সত্যিকার গণতন্পে। যে গণতন্প মানুষকে প্রজা হিসেবে বিবেচনা করবে না, সমান মর্যাদার নাগরিক ভাববে। সে রকম একটি রাষদ্ব্রে ভাষাভাষীরা নিজেদের ভাষিক সমমদে বলীয়ান হয়ে নিজেদের সাংস্ট্কৃতিক জীবনে বিদেশি ভোগবাদী ও ব্যক্তিনির্ভর সংস্ট্কৃতির সংত্রক্রমণ প্রতিহত করতে পারবে। ভাষা মুক্ত না হলে যেমন মুক্ত মানুষ হয় না, তেমনি মুক্ত মানুষ ছাড়া মুক্ত সংস্ট্কৃতিও বিরাজ করে না। ভাষা প্রশম্ন এ কারণেই অতিমাত্রায় রাজনৈতিক। তাই ভাষার পহৃর্ণ প্রতিষ্ঠা যখন হয়নি, তখন ভাষার আন্দোলনও সমাপ্টস্ন হয়নি।
বাংলাদেশে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠিত নয়। বিশ্বায়নের প্রভাবেও প্রানস্নিক ভাষা ও সংস্ট্কৃতি বিপল্পম্ন বলে একটা উদ্বেগ লক্ষ্য করা যায়। ভাষা আন্দোলনের সহৃতিকাগারে এমন হলো কেন?
এই বিশ্বায়ন বলতে কী দুনিয়ার সাম্য বোঝানো হচ্ছে, নাকি বোঝানো হচ্ছে বিশ্বের আমেরিকায়ন? বিশ্বায়নের নামে যে সংস্ট্কৃতির প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে, সেটা তো মার্কিন সাংস্ট্কৃতিক আগ্রাসন। এটা নিয়ে প্রশম্ন তোলা দরকার। সে জন্যই বলেছি, ভাষা সমঙ্র্ক হচ্ছে ক্ষমতার সমঙ্র্ক। একটা ভাষা আরেকটার সঙ্গে নিরীহভাবে থাকে না। একটা আরেকটাকে প্রভাবিত করে, নিয়ন্পণ করতে চায়। সংষ্ফ্কৃতির ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার। এটা ঘটে রাজনীতির মধ্যস্ট্থতায়। তাই ভাষাকে কীভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে সেটা খেয়াল করতে হবে। ভাষার মধ্যে কী চিনস্না ধ্যান-ধারণা, রুচি ও আদর্শ সঞ্চারিত হচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করে ভাষার রাজনৈতিক চরিত্র। বাংলাদেশে যে নাগরিক মধ্যবিত্তীয় সংস্ট্কৃতি তৈরি হয়েছে তার মধ্যে গণতান্পিক ও প্রগতিবাদী উপাদানের ঘাটতির কারণেই এই ভাষা দিয়ে দুর্বল জাতির ভাষার ওপর আধিপত্য করানো সল্ফ্ভব হচ্ছে। আবার এর জন্য এই ভাষা ও সংস্ট্কৃতির মধ্যেকার মানবতাবাদী, ইতিবাচক ও সমুহবাদী উপাদানগুলোকে সচেতনভাবে চাপাও দেয়া হচ্ছে।
'52-র আন্দোলন গ্রামাঞ্চল তো বটেই এমনকি শহরের শ্রমজীবী জনসাধারণকেও আলোড়িত করেছিল। এটা কীভাবে সল্ফ্ভব হলো?
1948 সালে যখন প্রথম ভাষা নিয়ে আলোড়ন তৈরি হয়, তখন সেটা ছিল মধ্যবিত্তের আন্দোলন। কিন্তু 1952 সালে শুধু ছাত্রছাত্রী বা মধ্যবিত্তই না সেখানে কৃষক-শ্রমিকরাও জড়িত হয়। এ ব্যাপারে বদরুদ্দীন উমরের গবেষণাকে আমি গুরুত্দ্বপহৃর্ণ মনে করি। তিনি দেখিয়েছেন, কীভাবে এবং কেন এটা বড় গণআন্দোলনে রূপানস্নরিত হয়েছে। ভাষা প্রশম্ন এখানে তার নির্দিষদ্ব সীমিত বৃত্ত অতিত্রক্রম করে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রশেম্ন অর্থাৎ দাবিতে রূপানস্নরিত হয়েছে। এমনি মাত্রায় যে, '52-তে ভাষার অধিকারের প্রশম্ন শ্রেণীর অধিকারের প্রশম্ন পর্যনস্ন উল্পম্নীত হয়েছে এবং সাধারণ জনগণকে তা সঙ্র্শ করতে পেরেছে। যার ফলে ভাষা আন্দোলনে কৃষক-শ্রমিকের অংশগ্রহণ ছিল। তারা মনে করছিল, অধিকাংশ মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া মানে তাদের অধিকার কেড়ে নেওয়া। এই অর্থে ভাষা আন্দোলন আমাদের প্রথম জাতীয় আন্দোলন যেখানে সমগ্র জাতি একত্রিত হতে পেরেছিল। তাই ভাষা আন্দোলনকে এখন যে রকম প্রায় অরাজনৈতিক আন্দোলন বলে চিত্রিত করা হয় তা মেনে নিতে পারি না। ভাষার অধিকারকে অন্যান্য অধিকারের সঙ্গে একত্রেই বুঝতে হবে।
অবরুদব্দ অবস্ট্থায় বাংলা ভাষার চিনস্না-দর্শন-সাহিত্যে যে সৃজনশীলতা ছিল স্ট্বাধীন বাংলাদেশে তাতে মন্দাভাব দেখা যাচ্ছে কেন?
কারণ স্ট্বাধীন বাংলাদেশে স্ট্বপম্নভঙ্গ হয়েছে। একটা শ্রেণী যখন নিজেকে বিকশিত করতে পারে না, জাতীয় বৈষয়িক ও আদর্শিক বিকাশের পথনির্দেশ করতে পারে না তখন সে-ই হয়ে দাঁড়ায় গণতন্প ও মুক্তির বাধা। '71-এর আগে তাদের একটা আদর্শ ছিল। যার মধ্যে জনগণের বড় অংশ নিজেদের অধিকার আদায়ের সল্ফ্ভাবনা দেখতো। এখন তারা আর সেই ভূমিকায় নেই। এদের সঙ্গে সমঙ্র্কিত বুদব্দিজীবীরাও যখন একই রকম আদর্শিক দেউলিয়াত্দ্বে ভোগেন তখন তাদের পক্ষেও সৃজনশীল ও বুদব্দিবৃত্তিক বিকাশ ঘটানো সল্ফ্ভব হয় না।
ভাষা চরিত্রগতভাবে গণতান্পিক। কেউ একা একা বা গোষ্ঠীগতভাবে ভাষা চর্চা করতে পারে না। ভাষা বেঁচে থাকে বৃহত্তর জনগণের মুখে ও হূদয়ে। তা যদি আধিপত্যমুক্ত না হয় তবে ভাষারও মুক্তি হয় না। বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করা মানে গণতন্পকে প্রতিষ্ঠা করা। সে কারণে ওই শ্রেণী যখন গণতন্পবিরোধী অবস্ট্থানে চলে গেল, আপনাআপনি তারা ভাষারও বিরুদব্দে চলে গেল। অন্যদিকে অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যে ভাষার দাপট, চিনস্নার ক্ষেত্রেও তারই দাপট সাধারণত দেখা যায়। আমাদের দেশে তথা গরিব দুনিয়ায় নিজস্ট্ব ভাষার সেই দাপট না থাকায় তা পরাস্টস্ন হচ্ছে। গত 36 বছরে তিলে তিলে তিলোত্তমা করে আমরা যে রাজনৈতিক সংস্ট্কৃতি গড়ে তুলেছি, সেই রাজনৈতিক সংস্ট্কৃতিতে কয়েকটি পরসঙ্র সমঙ্র্কিত প্রবণতা লক্ষ্য করি; একটি হচ্ছে রাজনীতির বাণিজ্যকীকরণ এবং বাণিজ্যের রাজনীতিকরণ। আমরা দেখেছি, রাজনীতির সামরিকীকরণ এবং সামরিক বাহিনীর রাজনীতিকীকরণ। আমরা দেখেছি আমলাতন্পের রাজনীতিকরণ এবং রাজনীতির আমলাতন্পায়ন। আমরা দেখেছি ধর্মের রাজনীতিকরণ এবং রাজনীতির ধমর্ীয়করণ। আমাদের রাজনৈতিক সংস্ট্কৃতির এই চারটি প্রবণতা পরসঙ্র সমঙ্র্কিত। এই সংস্ট্কৃতিতে ভাষার সুষ্ঠু বিকাশ সল্ফ্ভব নয়। এই সংস্ট্কৃতিতে একুশ পালিত হয় শোক দিবস হিসেবে, অথচ এটা ছিল প্রতিরোধের দিবস। একুশের এই প্রতিরোধ চেতনাকে আজ দ্রবীভূত করে বিলীন করা হচ্ছে। একুশ এখন জাতীয়তাবাদী রোমান্টিসিজম আত্রক্রানস্ন। এই অবস্ট্থায় এর আবেগের ধারা শুকিয়ে যাওয়াটাই স্ট্বাভাবিক। রাষদ্ব্র কিন্তু ত্রক্রমাগতভাবে জনগণের সংগ্রামী চেতনা এবং তার স্ট্মারক ও প্রতীককে আত্দ্মসাত করে। স্ট্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে তার ধার ও চেতনাকে প্রশমিত করে নিজের কাজে লাগায়। এমনকি শক্তিকে সংহত করার স্ট্বার্থে প্রতিরোধকে প্রতীকি দিবসে পরিণত করে। রাষদ্ব্র বা শাসকশ্রেণী এভাবে জনগণের রাজনৈতিক সঙ্ৃহাকে ত্রক্রমাগত বিরাজনৈতিক করে, তাকে আড়ল্ফ্বরসর্বস্ট্ব করে জনজীবন থেকে বিচ্ছিল্পম্ন করে। এভাবে 21 ফেব্রুয়ারির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, আত্দ্মসাৎকরণ ও বিরাজনীতিকীকরণের মাধ্যমে এ দিবসটির প্রতিরোধী চরিত্রকে দুর্বল ও অবলুপ্টস্ন করে দিতে সক্ষম হয়েছে।
বলা হয়, স্ট্বাধীন রাষদ্ব্র জাতীয় ভাষার বিকাশে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। তারপরও কেন বাংলা আত্রক্রানস্ন?
তাবৎ জনগোষ্ঠীর ভাষিক সমঙ্দ ও ভাষিক ঐতিহ্য কিন্তু কেবল সাহিত্য ধারণ করতে পারে না। তার জন্য ভাষার রাষদ্ব্রীয় ও সামাজিক-সাংস্ট্কৃতিক প্রতিষ্ঠা চাই। কিন্তু আমি আগেই বলেছি, বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক ক্ষমতাসমঙ্র্ক ও রাজনৈতিক সংস্ট্কৃতি তাতে জনগণের আর সব সমঙ্দের মতো ভাষা ও ভাষিক সমঙ্দও নিরাপদ নয়। জনগোষ্ঠীর ভাষা চর্চার সামগ্রিকতা রক্ষার কাজ সাহিত্য বা লিখিত ভাষা একা পারে না। যদি জনগণের বড় অংশই শিক্ষা ও সমঙ্দ থেকে বঞ্চিত হয় তবে কিভাবে তারা ভাষার ওপর অধিকার কায়েম করবে?
পশ্চিমবঙ্গে বাংলা রাষদ্ব্রমর্যাদায় আসীন নয়। সেখানেও বাংলা হিন্দি ও ইংরেজির সঙ্গে লড়ছে। লড়াইরত থাকার কারণে ভাষা বিকাশের ক্ষেত্রে তাদের যে পদক্ষেপ আছে সেটা আমাদের এখানে নেই_ রাষদ্ব্র থাকা সত্ত্বেও। আমি বলছি না কে এগিয়ে আছে আর কে পিছিয়ে আছে। কেউ কেউ বাংলাদেশকে বিশ্বের কোটি কোটি বাংলাভাষীর সাংস্ট্কৃতিক বা ভাষিক রাজধানী বলেন। কিন্তু তা হওয়ার জন্য যা যা করা দরকার তা কি আমরা করেছি? আমি প্রশম্ন করছি, '71-এর পর গুটিকয়েক উপন্যাস ছাড়া তেমন বড় মাপের কাজ কী হয়েছে? কবিতার ক্ষেত্রে কি বড় বাঁকবদল লক্ষ্য করছি? সমালোচনা সাহিত্যে এখনও আমরা অনেক পেছানো। বাংলায় দর্শন চর্চার অগ্রগতি কতটা? সব ক্ষেত্রেই আমরা সামনস্নবাদী ও ঔপনিবেশিকতাবাদী অসম ক্ষমতা সমঙ্র্কই উৎপাদন ও পুনরুৎপাদন করে চলেছি। তাই আমি ভাব গদগদ হয়ে বলতে পারছি না যে, বাংলাদেশ বাংলা ভাষার রাজধানী হবার যোগ্য।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ।

সূত্রঃ Click This Link

আজফার হোসেন একাধারে প্রাবল্পিব্দক, গবেষক এবং শিক্ষক। প্রায় 11 বছর মার্কিন যুক্তরাষট্রে অবস্থানের পর সমপ্রতি দেশে ফিরেছেন। তিনি ওয়াশিংটন সটেট বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনায় জড়িত। এর আগে অধ্যাপনা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। যুক্তরাষট্রের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি অতিথি অধ্যাপকের দায়িত্দ্ব পালন করেন। তিনি ফুলব্রাইট ফেলোশিপ নিয়ে যুক্তরাষট্রে যান এবং সেখানে 10 বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করে 'ডিসটিংশান' নিয়ে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ ও পিএইচডি অর্জন করেন। শিক্ষকতা, গবেষণা ও থিসিস রচনায় রেকর্ড ভঙ্গকারী একাডেমিক সাফল্যের জন্য তাকে ব্ল্যাকবার্ন ফেলোশিপে ভূষিত করা হয়। তার গবেষণার বিষয় উত্তর ঔপনিবেশিক সাহিত্য, সংস্কৃতিতত্ত্ব ও রাজনৈতিক অর্থনীতি। বর্তমানে তিনি ঢাকার নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনায় জড়িত আছেন। আনতর্জাতিক স্তরে তার বহুবিধ প্রকাশনা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দুটি সমপাদিত গ্রন্থ এবং আরো দুটি গ্রন্থ রাউটলেজ থেকে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×