বর্তমানে ভাবতেই যেখানে অবাক লাগে সেখানে পণ্যের বিনিময়ে পণ্য ,পণ্যের বিনিময় শুটকি একদিনের বাস্তবতা,একদিনের বাজার বা মেলা আয়োজন হচ্ছে প্রতি বছর।
প্রায় দু’শ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী শুটকির মেলা।আধুনিক সভ্যতার আগে থেকেই বিনিময় প্রথা চালু ছিল। সেই বিনিময় প্রথার ধারাবাহিকতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাসিরনগর সদরের লঙ্ঘন নদীর পাড়ে ভোর থেকে চলে পণ্যের বিনিময়ে পণ্যের বেচাকেনার মেলা। কেউ আসেন ধান, চাল, আলু, গম নিয়ে আবার কেউ সরিষা, মরিচ নানা সবজি নিয়ে আসেন। এসব বিনিময়ের মাধ্যমে তারা নিচ্ছেন শুটকি।
কি পরিমাণ শুটকি দেয়া হবে সেটা নিয়ে এখানে চলে দর কষাকষি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শেষ হয়ে যায় এই পণ্যের বিনিময়ে পণ্য দেয়ার বাজারের কার্যক্রম। এখানে মহিলাদের উপস্থিতিই বেশি। স্থানীয়রা জানায়, এ মেলা আয়োজনের কোন কমিটি নেই। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শুটকি ব্যবসায়ী ছাড়াও ভোজন রসিকরা আসেন এ মেলায়।
স্থানীয়রা তাদের পূর্ব-পুরুষদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এ মেলার আয়োজন করে। এ মেলা নিয়মিতভাবে প্রতিবছর বৈশাখের দ্বিতীয় দিনে কুলিকুন্ডা উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয়।
মেলায় প্রায় দু’শর বেশি রকমের শুটকির পসরা নিয়ে বসেছেন দোকানিরা। এসব পসরায় বোয়াল, গজার, শোল, বাইন, পুঁটি ও টেংরাসহ দেশীয় মাছের তৈরি শুটকিই বেশি। এছাড়া মেলায় ইলিশসহ সামুদ্রিক বিভিন্ন জাতের মাছের শুটকি পাওয়া যায়। শুটকি ছাড়াও ইলিশ ও কার্প জাতীয় বিভিন্ন মাছের ডিমও উঠেছে এ মেলায়। এখানে নাসিরনগর ও পার্শ্ববর্তী এলাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম, সিলেট ও সুনামগঞ্জের ব্যবসায়ীরা শুটকি নিয়ে আসেন।
সময় করে একবার দেখার ইচ্ছা মেলাটি। ইউনেস্কো কত ঐতিহ্য কে স্বীকৃতি দেয় (যেমন মঙ্গল/অমঙ্গল শোভাযাত্রা ) ,আবেদন করা হলে ,যাচাইবাছাইয়ের মাধ্যমে। স্থানীয়রা বা যে কেউ আবেদন করে দেখতে পারে ,হলে হয়েও যেতে পারে বিশ্বের সংস্কৃতি
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ৮:৪৯