somewhere in... blog

ডিস্ক পার্টিশনিং : ভাঙ্গা গড়ার খেলা (1)

০৭ ই নভেম্বর, ২০০৬ রাত ৮:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(লেখাটি প্রাগৈতিহাসিক যুগে সি-নিউজ নামের একটি পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। আজকাল আর এই পদ্ধতিতে কেউ ডিস্ক পার্টিশনিং করে না। তবু কিছু বেসিক জিনিস আলোচনা করা হয়েছে এতে। কারো কারো কাজে লাগতে পারে ভেবে প্রকাশ করছি এখানে।)

একটা সময় ছিল যখন অন্য সবার মতো আমিও হার্ডডিস্ক পার্টিশনের কথা শুনলে ভয় পেতাম। আর যারা এ ব্যাপারটিতে পারদশর্ী ছিল তাদের বেশ সমীহ করেই চলতাম। তবে আমার মধ্যে একরোখা ভাবটা ছিল বেশ প্রবল আর শেখার ইচ্ছা ছিল অদম্য। একদিন সাহস করে ব্যবহার করেই ফেল্লাম। থাক সে দীর্ঘ আর ক্লান্তিকর অভিজ্ঞতার বর্ণনা।

আসলে হার্ডডিস্ক পার্টিশনিং করাটা তেমন জটিল বিষয় নয়। ঝামেলা হচ্ছে ডিস্ক ড্রাইভ এবং তার পার্টিশনিং কনসেপ্টটা পরিষ্কার রাখা। আমি চেষ্টা করব নু্যনতম কনসেপ্টটা দিয়ে শুরু করতে, যাতে পার্টিশনিংকে আর ''ভয়াবহ'' মনে না হয়।

[গাঢ়]ডিস্ক পার্টিশনিং কি?[/গাঢ়]
একটি হার্ডডিস্কের ধারনক্ষমতা বর্তমানে আমাদের চিন্তা ভাবনার সীমানা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আর এই সমস্ত হার্ডডিস্ক কে সুবিধাজনক ভাবে ব্যবহার করার জন্য তাকে বিভিন্ন অংশে ভেঙ্গে ফেলা হয়। যে পদ্ধতিতে এই কাজটি করা হয় তাকে বলা হয় পার্টিশনিং। সোজা বাংলায় পার্টিশনিং হচ্ছে উইন্ডোজে দেখতে পাওয়া C,D, ... ইত্যাদি ড্রাইভ তৈরীর পদ্ধতি। পার্টিশনিং এর টেকনিক্যাল অনেক সুবিধা আছে - সেগুলো এই সল্প পরিসরে আর উল্লেখ নাইবা করলাম। আবার বেশী পার্টিশন করাও কিন্তু কোন কোন ক্ষেত্রে অসুবিধাজনক। সে যাই হোক, অনেকে বিভিন্ন সময় পার্টিশনিং করবার প্রয়োজনীয়তা বোধ করতে পারেন। তখন যারা এই বিষয়ে বোদ্ধা তাদের শরনাপন্ন হওয়া ছাড়া কোন গতি থাকে না। আমার উদ্দেশ্য এই ব্যাপারটিকে আপনাদের বোধগম্য করে তুলে ধরা।

[গাঢ়]ডিভাইস কনসেপ্ট[/গাঢ়]
হার্ডডিস্ক বা যেকোন আইডিই (IDE) ডিস্ক ব্যবহারের জন্য সাধারন পিসিতে চারটি সংযোগ স্থল দেখা যায়। মাদারবোর্ড থেকে দুটো ডাটা ক্যাবল বেরিয়ে আসে। এদের একটিকে বলা হয় প্রাইমারী আর অন্যটিকে বলা হয় সেকেন্ডারী ক্যাবল। ঠিক কোনটি প্রাইমারী আর কোনটি সেকেন্ডারী তা বোঝা যাবে মাদারবোর্ডের যেখানটায় ক্যাবল লাগানো রয়েছে সেখানকার লেখা দেখে। ওখানটায় লেখা থাকবে কোনটি প্রাইমারী আর কোনটি সেকেন্ডারী অথবা কোনটি পোর্ট 1 আর কোনটি পোর্ট 2 (এ ক্ষেত্রে প্রথমটি প্রাইমারী আর অন্যটি সেকেন্ডারী )। এই দুটি ক্যাবলের প্রতিটিতে দুটি করে মোট চারটি সংযোগস্থল থাকে। এই চারটি সংযোগস্থলে সর্বোচ্চ চারটি ডিভাইস, যেমন - হার্ডডিস্ক, সিডিরম, ডিভিডিরম, সিডিরাইটার অথবা অন্য যেকোন আইডিই ডিভাইস সংযুক্ত করা যেতে পারে। আবার প্রতিটি ক্যাবলের দুটি সংযোগস্থলে লাগানো দুটি ডিভাইসের জাম্পার (একটি ছোট্ট যন্ত্রাংশ) কিভাবে লাগানো রয়েছে তার উপর নির্ভর করে কোনটি কার চেয়ে বেশী প্রাধান্য পাবে। যে ডিভাইসটি বেশী প্রাধান্য পায় তাকে বলা হয় মাস্টার আর যেটি কম প্রাধান্য পায় তাকে বলা হয় স্লেভ। সুতরাং এই চারটি ডিভাইস কম্পিউটার চিনে থাকে যে নাম ধরে এবং যে অনুক্রমে তা হল : প্রাইমারী মাস্টার, প্রাইমারী স্লেভ, সেকেন্ডারী মাস্টার, সেকেন্ডারী স্লেভ। এক্ষেত্রে জাম্পার নামক যন্ত্রাংশটি ঠিক কিভাবে লাগাতে হবে তা ডিভাইসটির গায়ে এঁকে/লিখে দেয়া চিহ্ন দিখে ঠিক করে নিতে হয়। একই ক্যাবলের দুটো সংযোগ স্থলেই যদি একই ধরনের জাম্পার লাগানো থাকে অর্থাৎ দুটোতেই যদি মাস্টার বা স্লেভ জাম্পার সেটিং করে দেয়া থাকে তবে কম্পিউটার কিন্তু কোনটাকেই পাবে না। তাই অবশ্যই একটিকে মাস্টার আর অন্যটিকে স্লেভ করে নেবেন।

(চিত্র 1: মাদারবোর্ডে যেখানটায় আইডিই ক্যাবল লাগাতে হয়)


পার্টিশনিং নিয়ে আর বেশীদুর অগ্রসর হওয়ার আগে আপনাকে সাবধান করে দিচ্ছি আপনার সমস্ত ডাটা ব্যকআপ করে নেয়ার জন্য। এর জন্য যে মাধ্যমই বা সংরক্ষন পদ্ধতি ব্যবহার করুননা কেন, যেমন - অন্য একটি হার্ডডিস্ক, সিডি, ফ্লপি, জিপ ড্রাইভ বা অন্য কিছু, মাধ্যমটিকে কম্পিউটার থেকে সরিয়ে আলাদা নিরাপদ জায়গায় রাখুন। বিশেষ করে অন্য একটি হার্ডডিস্ক ব্যবহার করে থাকলে সেটাকে কম্পিউটার থেকে আলাদা করে ফেলুন - যাতে ভুল করে এই হার্ডডিস্কের ডাটা মুছে না যায়।

[গাঢ়]উইন্ডোজ ফাইল সিস্টেম - ফ্যাট বনাম ফ্যাট থার্টিটু [/গাঢ়]
উইন্ডোজ 95 যখন বেরুল তখন সেটি হার্ডডিস্কে তথ্যাদি রাখার জন্য উইন্ডোজ 95 উত্তরাধিকারসুত্রে ডসের ফাইল সিস্টেম ফ্যাট (FAT) ব্যবহার করত। অনেকে একে ফ্যাট সিক্সটিন (FAT16) ও বলে থাকেন। এরও আগে ফ্যাট টুয়েলভ (FAT12) বলে একটি ফাইল সিস্টেম ছিল যার ব্যবহার সময়ের সাথে সাথে বন্ধ হয়ে যায়। যাই হোক, উইন্ডোজ 95 পরবতর্ীতে এতটাই জনপ্রিয় হয়ে পড়ে যে সমগ্র কম্পিউটার জগতের বেশীরভাগ কম্পিউটার এই অপারেটিং সিস্টেম সেই সাথে ফ্যাট সিক্সটিন ফাইল সিস্টেম ব্যবহার করতে শুরু করে। এরপরে রিলিজ হয় মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ এনটি ফোর (WinNT 4.0) যেটা আগের পুরোনো ফ্যাট সিক্সটিনের পাশাপাশি তার নিজস্ব নতুন ফাইল সিস্টেম এনটিএফএস (NTFS) ব্যবহার করতে পারতো। এরপর মাইক্রোসফট পরীক্ষাজনক ভাবে উইন্ডোজ 95 এর সেকেন্ড রিলিজ প্রকাশ করে যাতে ফ্যাট থার্টিটু ফাইল সিস্টেমটি উপস্থিত থাকলেও তাকে ডিফল্ট হিসেবে ব্যবহার করা হতো না। তবে এর পরবতর্ী উইন্ডোজ 98 , উইন্ডোজ 2000, উইন্ডোজ এক্সপি প্রতিটি অপারেটিং সিস্টেম ফ্যাট থার্টিটু ব্যবহার করতে সক্ষম। তদুপরি অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেম - লিনাক্স, ইউনিক্স ইত্যাদি বর্তমানে ফ্যাট থার্টিটু ব্যবহারে সক্ষম। সুতরাং যদি আপনি উইন্ডোজের এমন একটি ভার্সন ব্যবহার করতে চান যেটি ফ্যাট থার্টিটু ফাইল সিস্টেম ব্যবহার করতে পারে না তাহলে অবশ্যই ফ্যাট সিক্সটিন পদ্ধতিতে পার্টিশনিং করতে হবে। তা নাহলে নিশ্চিন্তে ফ্যাটথার্টিটু ব্যবহার করুন কেননা না এটি ফ্যাটসিক্সটিন এর চেয়ে ঢেরগুনে ভাল।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৪৫৬ বার পঠিত
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চাঁদ গাজীর ব্যান তুলে নিন/ ব্লগ কর্তৃপক্ষ ‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩




আমি যদি গাজী’ ভাইয়ের যায়গায় হতাম জিবনেও সামু’তে লেখার জন্য ফিরে আসতাম না।
হয় বিকল্প কোন প্লাটফর্ম করে নিতাম নিজের জন্য। অথবা বাঁশের কেল্লার মত কোথাও লিখতাম।
নিচে ব্লগার মিররডডল-এর করা পুরো... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারের মতো প্রতিষ্ঠানের উচিত তাদের অবস্থান পুনর্মূল্যায়ন করা এবং বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া।

লিখেছেন জ্যাকেল , ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৫

বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ভূমিকা বরাবরই সংবেদনশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে গণমাধ্যমের কাজ হলো সত্য প্রকাশ, জনমতের প্রতিনিধিত্ব এবং গণতন্ত্রকে সুরক্ষা দেওয়া। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠেছে যে, বাংলাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার সাজিদ কমেন্ট অফ রাখায় এখানে লিখছি (সাময়িক)

লিখেছেন মিরোরডডল , ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:০৫


সাজিদের বিদায় পোষ্ট দেখলাম, কমেন্ট সেকশন বন্ধ রাখায় ভাবলাম এখানেই লিখে যাই।

জানিনা কি বলবো, হয়তো এটাই দেখা বাকি ছিলো।
চলে যাবার কারণ জানিনা কিন্তু অনুমান করতে পারছি।
Man! you shouldn't leave.

ব্লগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখ হাসিনা রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হতে যাচ্ছেন?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৫৭


আজকাল মানুষ চেনা বড্ড কঠিন হয়ে পড়ছে। কে কোন উদ্দেশ্য নিয়ে কার পক্ষে দাঁড়াচ্ছে তা বুঝা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। রাজনীতিতে এই কথা আরো বেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কখনো বিদায় বলতে নাই

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



ব্লগে কিছুদিন ধরে অনিয়মিত হওয়ায় কখন কি ঘটে জানি না।
কিছুক্ষণ আগে মিররডলের একটা পোস্টে জানতে পারলাম , ব্লগার আমি সাজিদ ঘোষণা দিয়ে ব্লগ ছেড়েছেন । তার সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×