১৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৪
আমি, আমার দেশ এবং একটি টিকেট।
খুব স্বার্থপর হয়ে গেলাম, দেশের জন্য না একটা টিকিটের জন্য। সামান্য একটা টিকেট যার জন্য কি না আমাকে এতটা স্বার্থপর করে তুললো ? সত্যি অবাক করার মত ব্যপার। কিন্তু না হয়েও তো কোন উপায় ছিলনা।
আমার এই স্বার্থপরতার আরেক পক্ষ মানে চতূর্থ পক্ষ হলো বৃষ্টি। হ্যা, বৃষ্টি হচ্ছিলো রাতভর, তারপর দিন শুরুতেও অবিরাম।
দুটো টিকেট তাও ভিআইপি কর্ণার। কিভাবে যে সব সামাল দিবো এই ভেবে যখন টিকেটের জন্য অপেক্ষা করছি, ততক্ষণে দেশের বিপক্ষে খেলা দলটির অবস্থা যাচ্ছেতাই করুন। এক একটা খেলোয়ার যেন মাঠে শুধু তার উপস্থিতিই দিতে আসছে, যেন ছোট বেলায় স্কুলে টিচারের রোল করার মত "ইয়েস স্যার" মানে আমি উপস্থিত আছি।
স্বার্থপরতার শুরু সেখানেই, টিকেট হাতে পৌছবে বিকেল পাঁচ'টা নাগাদ, গ্যালারী'তে যেতে আরো ঘন্টা খানেকের বেশী লাগবে, এর মাঝে বিপক্ষ দলের যে ডায়েরীয়া দশা তা যদি চলতে থাকে তাহলে তো মাঠে গিয়ে প্রাইজ ছিরিমনি দেখতে পাবো কিনা তাও সন্দেহ।
উপায় একটাই, খেলা আমায় দেখতে হবে, তাও মাঠের ভিআইপি কর্ণারে বসে, উপায় একটাই, বিপক্ষ দল যদি রান করতে পারে তাহলেই আমার যাওয়া অব্দি খেলা টিকে থাকতে পারে, সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করলাম "কিছু রান ওদের দাও, আমার টিকেট দুটো যেন জলে না যায়"
"প্রার্থনা মঞ্জুর", ধপাস করে টেবিলের উপর বড় সাইজের একটা হাতুড়ির বাড়ি পড়বার শব্দ শুনলাম। হাসি আমার ঠেকাবে সাধ্যি তখন কার ! এক ওভারেই এলো ২২ রানের মত, যাক; এভাবে যদি বিপক্ষ দল কিছু রান পায় তাহলে মাঠে গিয়ে খেলা দেখার সাধ আমার পূরন হবে। প্রার্থনা এতটাই মঞ্জুর হল, শেষমেষ শনির দশা লাগলো, ৮০ রানের ৮ উইকেট থেকে সেই রান গড়ালো ১৮০ তে।
" মারহাবা " আমি এখন খেলার মাঠে। খেলা দেখছিনে। কারণ যা অবস্থা এখন তাতে শুধু একটা বুমেরাং দেখতে পাচ্ছি, সাই সাই করে একবার এপাশ ওপাশ করছে, ব্যপারখানি এমন খেলার মাঠে রয়েছি বলে বুমেরাং টা আমার গায়ে বিধতে পাচ্ছেনা, মাঠ থেকে বেরুলেই সোজা সাপাং করে আঘাত করবে।
আমার টিকেটের স্বার্থপরতার সাধ মিটিল, টিকেট আমার জলাঞ্জলি যাক, তবু আমার দেশ জিতুক; এটাই এখন চাই।