বিগত নির্বাচনে জনগণের স¦তঃস্ফূর্ত যোগদানের জন্য সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। কতজন ভোট দিতে এসেছে কিংবা দিয়েছে সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়। যে বিষয়টি এখানে গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে- নির্বাচনের পূর্বে তিনি প্রধানমন্ত্রী, নির্বাচন চলাকালীন সময়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী এবং নির্বাচন পরবর্তী সময়েও তিনি সেই প্রধানমন্ত্রীই রয়ে গিয়েছেন। তাই তিনি অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সর্বকালেই সন্তুষ্ট জনগণের প্রতি। ঠিক এমনিভাবে সন্তুষ্ট ছিল ফেরআউন ও নমরুদ জাতীয় সৈ¦রাচারীরা। তারা অতীতে রাজা, তৎকালীন বর্তমানে রাজা এবং ভবিষ্যতেও রাজা থাকার পরিকল্পনা করেছিল খোদায়ী গজবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত।
আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য হচ্ছে, আমি তো শিখা চিরন্তনের মতো চিরন্তন প্রধানমন্ত্রী হতে চাই, এক্ষেত্রে জনগণ তো কোন সমস্যা নয়! গণহত্যার মাধ্যমে জনগণের সকল সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। মাথা ব্যথা হলে মাথা কেটে ফেল। জনগণ সমস্যা করছে? সেক্ষেত্রে জনগণকেই ফিনিশ করে দাও!
সোভিয়েত ইউনিয়নের লেনিন, স্তালিন কিংবা কম্বোডিয়ার পলপট ওরা সকলে জাতীয় সমস্যা সমাধান করতো গণহত্যার মাধ্যমে। ইউরোপের খ্রিস্টানরা আমেরিকান রেড ইন্ডিয়ানদের এবং অস্ট্রেলিয়ান এবরেজিনদের সকল সমস্যা দূর করেছে গণহত্যার মাধ্যমে। তবে ওই সকল ক্ষমতাসীনরা যে ভুলটি করেছে তা হলো খোদায়ী গজব আর মালাকুল মউত এই দুই হুমকি থেকে বাঁচার জন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি, তাই ওরা সকলে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নিয়েছে।
আমি ওই ভুলের পুনরাবৃত্তি করতে রাজি নই। খোদায়ী গজব থেকে রক্ষা পেতে আমি নির্ভর করবো মহা শক্তির (?) অধিকারী বন্ধুপ্রতিম ভারতের উপর। ওদের মা দুগ্গা, মা সরস¦তী, মা কালী ও উত্থিত শিবলিঙ্গ আমাকে রক্ষা করবে খোদায়ী গজব থেকে। (নাউযুবিল্লাহ) আর মালাকুল মউতকে ম্যানেজ করা তো কোন সমস্যাই নয়, বিশ্ব আশেকে রসুল সুফীসম্রাট দেওয়ানবাগী পীরসাব মহান আল্লাহ পাকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ রাখেন। নাউযুবিল্লাহ!
ওনার মাধ্যমেই চিরস্থায়ী প্রধানমন্ত্রিত্ব অর্জন করা সম্ভব। দুনিয়ার সবার সামনে, দিনে দুপুরে হাতেনাতে ঘুষের টাকাসহ ধরা পড়ার পরেও প্রণবদার অনুরোধে আমি যদি দেশ ও দলের মুখে থুথু দিয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে মন্ত্রী হিসেবে রাখতে পারি, তবে মহান আল্লাহ পাক, রহমানুর রাহিম, তিনি কেন হাজার হাজার মানুষ গুম ও খুন করার পরেও দোস্তের (দেওয়ানবাগের পীর) অনুরোধে আমাকে চিরস্থায়ী প্রধানমন্ত্রিত্ব দিবেন না?
জনগণের বোঝা উচিত, আমার বিরোধীদল কারা? বিএনপি? জামাত-শিবির? না, আমার যেকোন সিদ্ধান্তের বিরোধিতাকারীই হচ্ছে বিএনপি/জামাত-শিবিরের সদস্য। আমার কোন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করার অর্থই হচ্ছে দেশদ্রোহিতা, মৃত্যুদ-যোগ্য অপরাধ। আর বিচারের ক্ষেত্রে আমি আদালতের চেয়েও খুন ও গুমে বেশি বিশ্বাসী, এতে দ্রুত ঝামেলামুক্ত হওয়া যায়। এ বিষয়ে লোকে যাই বলুক, তারা তো আর গণতন্ত্র বোঝেনা! গণতন্ত্রে গণহত্যা হচ্ছে একটি চলমান রাজনৈতিক প্রক্রিয়া। ওই প্রক্রিয়ার মধ্যে ফেলেই এদেশের মানুষকে গণতন্ত্র শিক্ষা দিতে হবে। তবেই ওরা বুঝতে পারবে যে, একটি নিষ্প্রাণ অগ্নিশিখা যদি ‘শিখা চিরন্তন’ কিংবা ‘শিখা অনির্বাণ’ হতে পারে, তবে এত ক্ষমতার অধিকারী একজন প্রধানমন্ত্রী কেন চিরন্তন প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না?
বিএনপি-জামাত যদি মনে করে, সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করবে, ওরা বোকার স¦র্গে বাস করছে। ২৩ জন জেনারেলের স্থানে ৪৮ জনকে জেনারেল বানানো হয়েছে, ওদের অনেকে এখন সুযোগ পেলে আমার পায়ে হাত দিলে সালাম করে। বিজিবি দিয়ে কিছু করা? তিন শীর্ষ সন্ত্রাসীর ভাইকে বানিয়েছি বিজিবির ডিজি (আজিজ জেনারেল), যে আমার নির্দেশে চোখের পলকে যেকোন সময়ে লক্ষ লক্ষ মানুষকে পরপারে পাঠাতে পারে। সে আমার দেশের সীমান্তের দায়িত্ব ভারতীয় বিএসএফের কাছে ছেড়ে দিয়ে বিরোধী দলকে শায়েস্তা করার জন্য সকল সৈনিকদের ঢাকাসহ অন্যান্য শহরে অবস্থান করিয়েছে। আর পুলিশ? বেনজির থাকতে পুলিশকে নিয়ে কোন সমস্যা নেই। তাছাড়া আগামী ২/৩ বছরে পুলিশ বিভাগের ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ সদস্য হয়ে যাবে গোপালী, আওয়ামী ক্যাডার আর হিন্দুদের দ্বারা পরিপূর্ণ। চিরন্তন প্রধানমন্ত্রী হতে আর বাধা থাকলো কোথায়?
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয় হিন্দ, জয় অখ- ভারত, জয় বন্দে মাতরম।