somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প: জুলাই বিপ্লব, অলটারনেটিভ রিয়েলিটি

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(১)

ঢাকা, বাংলাদেশের রাজধানী, এক নিপীড়নমূলক স্বৈরশাসনের অধীনে চলছে। এই সরকার জনগণের মৌলিক মানবাধিকারের তোয়াক্কা করে না, বরং যারা প্রতিবাদ করে তাদের নির্মমভাবে দমন করে। দুর্নীতির মাধ্যমে ক্ষমতাসীনদের সম্পদ পাহাড়সমান হলেও সাধারণ মানুষ চরম দারিদ্র্যের শিকার। ধনী ও গরিবের মধ্যে ব্যবধান দিন দিন বেড়েই চলছে, আর রাষ্ট্রযন্ত্রের অবাধ দুর্নীতির কারণে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।



এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণ রাস্তায় নেমে আসে। আন্দোলন প্রথমে শান্তিপূর্ণ থাকলেও, সরকারের নির্মম দমন নীতির ফলে তা সহিংস রূপ নেয়। সরকার এই আন্দোলন দমনে প্রথমে পুলিশ, তারপর বর্ডার গার্ড, এরপর তাদের অভিজাত বাহিনী পাঠায়। শেষ পর্যন্ত, তারা সেনাবাহিনীকে নামিয়ে দেয় এবং বিক্ষোভকারীদের নির্বিচারে হত্যা শুরু করে।



শহরের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে—মিরপুর, বাড্ডা, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা—এসব এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনী সাঁজোয়া যান, হেলিকপ্টার এবং ভারী অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করে দমন অভিযান চালায়। তারা ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে, যাতে আন্দোলনকারীরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলো মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে সরকারকে নিরপরাধ ও আন্দোলনকারীদের সন্ত্রাসী হিসেবে তুলে ধরে।



তবে, এই দুঃসহ সময়েও কিছু সাহসী ব্যক্তি গোপন নেটওয়ার্ক তৈরি করে আন্দোলনের খবর সংগ্রহ করে এবং ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সত্য প্রচারের চেষ্টা চালায়। তাদের সাহায্যেই আন্দোলনকারীরা একত্রিত হতে পারে, কিন্তু সরকারের কঠোর দমননীতি তাদের অস্তিত্বকেই হুমকির মুখে ফেলে।

=========================================================================

(২)

ঢাকার রাত ছিল থমথমে। শহরজুড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর টহল, রাস্তার মোড়ে মোড়ে সশস্ত্র পাহারা। সরকার বিরোধী বিক্ষোভকে নির্মূল করতে তারা মরিয়া, আর তারই অংশ হিসেবে এক রাতে বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়া হয় এক পরিত্যক্ত গুদাম। সরকারি বাহিনী জানত না, ওই গুদামে শুধু কিছু প্রতিবাদকারীই লুকিয়ে ছিল না—ছিল এক রহস্যময় যোদ্ধার এক বছরের খাবার!



সেই যোদ্ধা, যে ছাগলটি ছিল নিঃসঙ্গ কিন্তু ভয়ংকর শক্তিশালী। এক চোখ অন্ধ, ঢেকে রাখা কালো ছোট্ট কাপড়ে। মুখে জ্বলন্ত হাভানা চুরুট, চোখে আগুনের শিখা। তার যুদ্ধের দিন অনেক আগেই শেষ হয়েছিল, সে এখন শুধু নিজের জন্য অস্ত্রের গুদাম তৈরি করেছিল, খাবারের ভান্ডার গড়ে তুলেছিল। কিন্তু যখন তার খাবার ধ্বংস করা হলো, তখন সে বুঝে গেল—এ লড়াই তারও!



গভীর রাতে, ঢাকা শহরের অন্ধকার চিরে, ছাগলটি গর্জে উঠল। প্রথম হামলাটা হলো মিরপুরের এক পুলিশ ফাঁড়িতে। উচ্চ বিল্ডিং থেকে ঝাঁপ দিয়ে নামল, ভারী মেশিনগান হাতে গুলি চালাল এত দ্রুত যে নিরাপত্তা বাহিনী বুঝতেই পারল না কী ঘটছে। মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই পোস্টটা ধ্বংস, কয়েকজন সেনা লাশ হয়ে পড়ে থাকল রাস্তায়।



শুরুটা ছিল ধ্বংসের এক ছোট ঢেউ, কিন্তু পরের কয়েক ঘণ্টায় ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তে একের পর এক আক্রমণ হলো। RPG ছুঁড়ে উড়িয়ে দেওয়া হলো বাড্ডার চেকপোস্ট, যাত্রাবাড়ীর একটি সামরিক কনভয়কে এক ঝলকেই নিশ্চিহ্ন করে দিল ছাগলটি। শহরের সব সিসিটিভি ক্যামেরায় এক অদ্ভুত দৃশ্য ধরা পড়ল—একটি বিশাল আকৃতির ছাগল, র‌্যাম্বোর মতো অস্ত্র হাতে, অসম্ভব দ্রুতগতিতে ভবন থেকে ভবনে লাফিয়ে বেড়াচ্ছে, একের পর এক নিরাপত্তা বাহিনীকে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছে।

(৩)



প্রথমে সরকার বিশ্বাসই করতে চায়নি। “একটা ছাগল? এটা সম্ভব না!”—শীর্ষ কর্মকর্তারা হাসাহাসি করছিল। কিন্তু যখন ক্লোজড সার্কিট ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হলো, তাদের হাসি মিলিয়ে গেল। পর্দায় ভেসে উঠল সেই ভয়ংকর চেহারা—কালো কাপড়ে ঢাকা এক চোখ, মুখে চুরুটের ধোঁয়া, হাতে মেশিনগান। গভীর রাতে, যুদ্ধ ঘোষণা করে ঢাকা শহরে নেমে এসেছে এক নতুন দানব


ঢাকার সামরিক সদর দপ্তরে গভীর রাতেও আলো জ্বলছিল। টেবিলের চারপাশে জেনারেল ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা নীরবে বসে ছিলেন, সবাই অপেক্ষায়। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলেন একজন লম্বা, চওড়া কাঁধের মানুষ—কর্নেল জিয়া। মুখে কঠোর অভিব্যক্তি, চোখে স্থির দৃষ্টি। তিনি কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলেন, তারপর গভীর কণ্ঠে বললেন, “স্যার, এই ছাগলকে অবহেলা করা এক মারাত্মক ভুল হবে।”



ঘরে একটা শীতল নীরবতা নেমে এলো। কর্নেল জিয়া তার ল্যাপটপ খুলে একে একে ফুটেজ দেখাতে লাগলেন—একটি ছায়ার মতো দ্রুতগামী প্রাণী, এক চোখ কালো কাপড়ে ঢাকা, মুখে চুরুট, হাতে ভারী মেশিনগান। যাত্রাবাড়ীর সামরিক কনভয় ধ্বংস, মিরপুরের পুলিশ ফাঁড়ি উড়ে গেছে, উত্তরায় হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালিয়েও তাকে থামানো যায়নি।



প্রেসিডেন্টের কণ্ঠে রাগ ঝরে পড়ল, “আমাদের সেনাবাহিনী একটা ছাগলের কাছে হেরে যাচ্ছে? এটা অসম্ভব!”



কর্নেল জিয়া শান্ত স্বরে বললেন, “স্যার, এটা কোনো সাধারণ ছাগল নয়। এ এক অভিশাপ। যদি এখনই ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে আমরা পুরো রাজধানী হারাব।”



পরিকল্পনা হলো। কর্নেল জিয়ার নেতৃত্বে একটি অভিজাত বাহিনী প্রস্তুত করা হলো—দশটি সাঁজোয়া যান (APC), ভারী মেশিনগান, রকেট লঞ্চার, ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, এমনকি আকাশ থেকে হামলার জন্য হেলিকপ্টার স্কোয়াড। তাদের একটাই মিশন: “ছাগলটিকে খুঁজে বের করো এবং ধ্বংস করো!”



(৪)

যুদ্ধের শুরু



শহরজুড়ে কারফিউ জারি করা হলো, আকাশে সামরিক হেলিকপ্টার চক্কর দিতে লাগল। গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, ছাগলটি পুরনো কারখানার ধ্বংসাবশেষে আশ্রয় নিয়েছে। কর্নেল জিয়ার বাহিনী সেখানে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিল।



রাতের অন্ধকারে ধীরে ধীরে APC গুলো প্রবেশ করল সেই পরিত্যক্ত এলাকায়। জিয়া ও তার বাহিনী চারপাশে তীক্ষ্ণ নজর রাখছিল, কিন্তু কোথাও কোনো শব্দ নেই। বাতাস নিস্তব্ধ, যেন শহর নিজেই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে আছে।



হঠাৎ—বিস্ফোরণ!



একটি RPG ছুটে এল কোথা থেকে, এক মুহূর্তের মধ্যে প্রথম APC গাড়িটি আগুনের গোলায় পরিণত হলো! এরপর শুরু হলো গুলি, মেশিনগানের গোলা ছুটতে লাগল আকাশে। সেনারা দিকভ্রান্ত হয়ে গেল, কিন্তু কোথা থেকে আক্রমণ হচ্ছে, তা বোঝার আগেই আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটল!



তারপর… ছাদ থেকে ঝাঁপ দিল সেই ছাগল!



এক হাতে মেশিনগান, আরেক হাতে RPG। সে বজ্রপাতের মতো নেমে এল, সেনাদের একের পর এক গুলি করে ধরাশায়ী করতে লাগল। APC-এর চালকরা চেষ্টা করল তাকে লক্ষ্য করতে, কিন্তু সে এত দ্রুত নড়ছিল যে কেউ টার্গেট করতে পারল না। এক লাফে সে একটা বিল্ডিংয়ের ছাদে উঠে গেল, তারপর আবার নিচে ঝাঁপ দিল, সঙ্গে এক ঝাঁক গ্রেনেড ছুঁড়ে মারল।

(৫)

কর্নেল জিয়ার শেষ লড়াই



চারপাশে আগুন, ধ্বংস, রক্তের গন্ধ। কর্নেল জিয়া বুঝলেন, তার বাহিনী প্রায় শেষ হয়ে গেছে। তিনি নিজে হাতে ভারী মেশিনগান তুলে নিলেন। “তুই যেই হোস, আজ তোকে মেরে ফেলব!”—চিৎকার করে ছাগলটিকে লক্ষ্য করে গুলি চালালেন।



কিন্তু ছাগলটি ছিল অপ্রতিরোধ্য। এক লাফে কর্নেলের ঠিক পেছনে এসে দাঁড়াল, তারপর ধোঁয়ার কুণ্ডলীর ভেতর থেকে গভীর স্বরে বলল, “তোমরা আমার খাবার ধ্বংস করেছ। আজ আমি তোমাদের ধ্বংস করব!”



পরের মুহূর্তেই কর্নেল জিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন, এক বিশাল বিস্ফোরণের আলোয় সবকিছু অন্ধকার হয়ে গেল।

(৬)

আতঙ্কের জন্ম



সকাল হলে শহরের মানুষ দেখল—ঢাকার রাস্তায় ধ্বংস হয়ে পড়ে আছে APC, জ্বলছে হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ, আর সেনাবাহিনীর নিথর দেহ ছড়িয়ে আছে চারপাশে। সরকারি বাহিনীর ভয়ানক পরাজয়, আর সেই ছাগল… কোথায় যেন মিলিয়ে গেছে।



প্রেসিডেন্ট টিভির পর্দায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন, কণ্ঠে ভয় আর হতাশার ছাপ, “এই বিদ্রোহ থামাতেই হবে, নাহলে আমাদের শাসনই টিকে থাকবে না!”



কিন্তু কীভাবে? কারণ এটি ছিল শুধু শুরুর শুরু...




(৭)


ঢাকা: এক রাতের রক্তস্নানের পর এক রহস্যময় সকাল



ঢাকা শহর এক অদ্ভুত নীরবতায় ঢাকা ছিল। আগের দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের রাস্তাগুলো রক্তে ভিজে যাচ্ছিল, সরকার ছিল অপ্রতিরোধ্য, মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই, রাতে কিছু একটা ঘটল। শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে শোনা গিয়েছিল বিকট বিস্ফোরণের শব্দ, ভারী মেশিনগানের গুলি, আগুনের উজ্জ্বল আলোর ঝলকানি। সবাই ভেবেছিল, হয়তো সেনাবাহিনী আরও ভয়ংকর কিছু শুরু করেছে। কিন্তু সকাল হলে দেখা গেল, সরকার তাদের আক্রমণ বন্ধ রেখেছে। কেউ জানে না কেন।



শহরের প্রতিটি কোণে শুরু হলো গুঞ্জন, কল্পকাহিনি, আর নানা ধরনের ষড়যন্ত্র তত্ত্ব।

১. বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল: ছাত্রদের আলোচনায় নতুন আতঙ্ক



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে কয়েকজন ছাত্র চুপচাপ বসে ছিল। গত কয়েকদিনে তারা বন্ধুদের হারিয়েছে, কিন্তু আজ সকালটা ছিল ভিন্ন। সাদিক কফির কাপে চুমুক দিয়ে বলল,



“গত রাতে কী ঘটল, কেউ বুঝতে পারছিস?”



রাফি নিচু স্বরে বলল, “শুনেছি, বাড্ডার দিকে কোনো এক গোপন বাহিনী সরকারের বিরুদ্ধে লড়ছে। কেউ বলছে, আমেরিকার স্পেশাল ফোর্স এসেছে আমাদের রক্ষা করতে!”



তন্ময় হাসল, “ধুর! আমেরিকা আসলে আমাদের বাঁচাবে? ওরা নিজের স্বার্থ ছাড়া কিছু করে না।”



জুবায়ের গম্ভীর কণ্ঠে বলল, “তাহলে কি কোনো বিদ্রোহী দল সরকারকে আক্রমণ করেছে? বা…” সে থেমে গেল।



রাফি ফিসফিস করে বলল, “বা… কোনো অশরীরী শক্তি? শোন, মিরপুরের কাছে কাল রাতে নাকি লাল চোখওয়ালা একটা জন্তু দেখা গেছে, হেলিকপ্টারের গোলাও নাকি তাকে কাবু করতে পারেনি!”



ঘরজুড়ে নীরবতা নেমে এলো। সত্যিই, এটা কী ছিল?

২. চায়ের দোকানে জনতার জল্পনা-কল্পনা



নিউ মার্কেটের এক ছোট্ট চায়ের দোকানে মানুষ জমে উঠেছিল। চায়ের ধোঁয়া উড়ছিল, আর সেই সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছিল একের পর এক গুজব।



একজন বৃদ্ধ বলল, “আমি ছোটবেলা থেকে এ শহর দেখেছি, কিন্তু এমন কিছু কখনও ঘটতে দেখিনি। রাতের আকাশে আগুনের গোলা উড়ছিল, হেলিকপ্টার ভেঙে পড়ছিল! কীসের এত বড় লড়াই?”



চায়ের দোকানের মালিক হাসান মাথা নেড়ে বলল, “আমার এক কাজিন সেনাবাহিনীতে আছে, সে বলল কিছু একটা আকাশ থেকে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, আর মুহূর্তেই তাদের শেষ করে দিল! কোনো মানুষ ছিল না, কোনো বিদ্রোহী দল ছিল না, ছিল একটা জন্তু!”



পাশ থেকে একজন মধ্যবয়সী লোক বলল, “ভাই, শুনেছি, এ শহরে নাকি এক অভিশপ্ত ছাগল আছে! যার এক চোখ অন্ধ, মুখে চুরুট, আর হাতে বিশাল মেশিনগান! সে-ই নাকি সেনাবাহিনীর উপর হামলা করেছে!”



সবাই চুপ করে গেল। কেউ বিশ্বাস করল না, কিন্তু কেউই একেবারে উড়িয়ে দিতেও পারল না।

৩. এক দম্পতির আলোচনা: বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের টানাপোড়েন



পুরনো ঢাকার এক ফ্ল্যাটে রাকিব আর তার স্ত্রী ফারহানা নাস্তার টেবিলে বসে ছিল। ফারহানা টিভির খবরে চোখ রেখে বলল, “আজ সব পত্রিকা বলছে, গত রাতে সেনাবাহিনী নিজেদের মধ্যেই যুদ্ধ করেছে! এটা বিশ্বাসযোগ্য?”



রাকিব মাথা নাড়ল, “একেবারেই না। এত ভয়ংকর লড়াই, এত মৃত্যু, অথচ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ব্যাখ্যা নেই? এটা অবশ্যই অন্য কিছু।”



ফারহানা চিন্তিত কণ্ঠে বলল, “তাহলে আমরা কি আসলেই জানি না গত রাতে কী হয়েছে?”



রাকিব একটু থেমে বলল, “আমার মনে হয়, কেউ বা কিছু এসেছে, যা সরকারের চেয়েও ভয়ংকর!”

৪. বাজারে জনতার তর্ক-বিতর্ক



কারওয়ান বাজারে সকালে মাছ-শাকসবজি কিনতে আসা মানুষজনের মধ্যে একটাই আলোচনা—গত রাতে আসলে কী ঘটেছিল?



একজন দোকানদার বলল, “ভাই, শুনেছি, কোনো অজানা শক্তি সরকারের বিরুদ্ধে লড়ছে! সেনাবাহিনী নাকি পালিয়ে গেছে!”



এক তরুণ বিরক্ত হয়ে বলল, “এসব গল্পগুজব বাদ দাও, আসলে সেনাবাহিনীর কোনো গোপন লড়াই হয়েছে।”



একজন বৃদ্ধ মহিলা ফিসফিস করে বললেন, “তোমরা বিশ্বাস করো বা না করো, কিন্তু আমার নাতি বলেছে, একটা ছাগলকে নাকি দেখা গেছে, সে এক লাফে বিল্ডিং থেকে বিল্ডিংয়ে যাচ্ছে, আর সেনাদের গুলি করে মারছে!”



সবাই স্তব্ধ হয়ে গেল।

৫. পত্রপত্রিকায় নানা জল্পনা



সকালে দৈনিক পত্রিকাগুলোও রহস্যে ভরা ছিল।

• “নতুন বিদ্রোহী শক্তি কি রাজধানী আক্রমণ করেছে?”

• “সেনাবাহিনী নিজেদের মধ্যেই লড়াই শুরু করেছে?”

• “ঢাকার রাস্তায় ভয়ংকর জন্তু? কীসের লাল চোখ, কালো কাপড়?”



সরকারের কোনো অফিসিয়াল বিবৃতি আসেনি, কিন্তু জনগণ জানত—কিছু একটা বদলে গেছে।

(৮)

আতঙ্কের নতুন অধ্যায়



ঢাকা আজ অন্যরকম। গত রাতে যা ঘটেছে, তার কোনো সরাসরি ব্যাখ্যা নেই, কিন্তু শহরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কিছু একটা সরকারের বিরুদ্ধে লড়ছে, এমন কিছু যা মানুষ কল্পনাও করতে পারেনি।



এটা কি বিদ্রোহ? কোনো অদৃশ্য শক্তি? নাকি সত্যিই সেই রহস্যময় ছাগল?


পুরনো শিল্পাঞ্চল: আশা ও সরকারের চূড়ান্ত হামলার যুদ্ধে শেষ প্রতিরোধ



ভোরের আলো ছড়াতে শুরু করলে, একসময় ব্যস্ত ছিল এমন শিল্পাঞ্চলের রাস্তাগুলো ধ্বংসাবশেষে পরিণত। সাধারণ মানুষ ও ছাত্ররা, রহস্যময় যোদ্ধা ছাগলের দ্বারা উন্মুক্ত নতুন আশার ঝলক দেখে, অবিচল সাহস নিয়ে অস্ত্র হাতে দাঙ্গা শুরু করে। রাস্তার কোণে কোণে তৈরি করা স্থানীয় অস্ত্র—হকি স্টিক, হাতে তৈরি পাইপ গান, পেট্রোল বম্ব—দেখে প্রতিরোধের ইচ্ছে আরও জাগ্রত হয়। যারা একসময় নিস্তব্ধ ছিল, তারা এখন বলল, “এখনই সময়, সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারী প্রতিবাদ করার।”



সরকার অবশ্যই এই বিদ্রোহকে সহ্য করতে চায়নি। একদিকে সরকার ছাগলটিকে নিধন করার প্রত্যাশায় ছিল, অন্যদিকে তারা জনসাধারণের উন্মাদ প্রতিবাদের বিরুদ্ধে বিশাল সামরিক অপারেশন শুরু করে। ট্যাঙ্কের গর্জনে, সুপারসনিক লড়াইবিমান ও ভারী অস্ত্রসজ্জিত মিলিটারি হেলিকপ্টার আকাশ ভেদ করে, সরকারী বাহিনী পুরনো শিল্পাঞ্চলে মোড় নেয়। একই সাথে, সামরিক নজরদারি, স্যাটেলাইট চিত্র, তাপীয় ইমেজিং, রেডিও জ্যামিং ও রাডার প্রযুক্তি—সবই ব্যবহার করে সরকার এই অপারেশন পরিচালনা করে।

(৯)


অপারেশন: ফিনিক্স ফায়ার





সরকার শুরু করল অপারেশন ফিনিক্স ফায়ার—এক সম্পূর্ণ, সুসংগঠিত হামলার মাধ্যমে বিদ্রোহ এবং ছাগল উভয়েরই নির্মূল করার পরিকল্পনা। বিদ্রোহ ক্রমশ পুরনো শিল্পাঞ্চলে কেন্দ্রীভূত হওয়ায়, সরকারের কমান্ড সেন্টারে ব্যস্ততা ক্রমশ বেড়ে গেল। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে স্যাটেলাইট, রেকন ড্রোন এবং তাপীয় ইমেজিং ব্যবহার করে ছাগলের অবস্থান নির্ণয় করছিলেন। এই অপারেশনের মূল লক্ষ্য ছিল স্পষ্ট—ছাগলটিকে ধ্বংস করা, কারণ ছাগল না থাকলে বিদ্রোহ ধীরে ধীরে নিস্তব্ধ হয়ে যাবে।



বৃহৎ স্যাটেলাইট ডিশের মাধ্যমে শিল্পাঞ্চলের রিয়েল-টাইম ছবি নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সামনে তুলে ধরা হলো, যেখানে প্রতিবাদকারীদের অবস্থান, তাদের হাতে থাকা অস্ত্র এবং ছাগলের অদৃশ্য গতি সনাক্ত করা হচ্ছিল। রেকন জেটসমূহ উপরে উপরে উড়ে চলেছিল, দৃশ্যমান ও ইনফ্রারেড তথ্য সরবরাহ করে, যা প্রমাণ করছিলো বিদ্রোহকারীদের গুচ্ছবদ্ধ অবস্থা। তাপমাত্রা মাপের রিডিং-এ দেখা যাচ্ছিলো প্রতিবাদকারীদের হিট সিগনেচার, আর সেই সাথে ছাগলের অল্প অল্প গতি। নিয়ন্ত্রণ কক্ষটি জোরে জোরে হুজুগে ভরে উঠেছিল।



একই সময়, দুটি স্কোয়াড্রন লড়াইবিমান আকাশে মোড় নেয়, তাদের গায়ে প্রচুর বিস্ফোরক বোমা নিয়ে, নিচে শিল্পাঞ্চলে আঘাত করার জন্য। এই বিমানের রাডার সিস্টেম শিল্পাঞ্চলের সঠিক অবস্থান চিহ্নিত করছিল, যা পরে স্থল বাহিনীর কাছে প্রেরিত হলো।

(১০)


যুদ্ধ শুরু: গ্রাউন্ড জিরো





প্রথম আক্রমণের সূচনা হলো আর্টিলারি গুলির মাধ্যমে। কয়েক কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত ভারী আর্টিলারি থেকে শিল্পাঞ্চলের দিকে বিস্ফোরক শেল ছুঁড়তে শুরু করল। শেলগুলো শিল্পাঞ্চলের ওপর অবিরত পড়তে লাগল, কারখানা, গুদাম এবং আশপাশের বাড়িগুলোকে ধ্বংস করে রুখে গেল। ধোঁয়া ও ধ্বংসের শব্দে বাতাস ভারী হয়ে উঠল, আর ২০০টি ট্যাঙ্ক শিল্পাঞ্চলের চারদিকে মোড় নিয়ে এগিয়ে চলল। তাদের বড়ো কামানগুলো ক্রমাগত আগুন ছুঁড়তে লাগল, যেন পুরো অঞ্চলে ধ্বংসের প্রলয় আনতে চায়।



ট্যাঙ্ক যুদ্ধ শুরু হলো, যখন কিছু প্রতিবাদকারী, হাতে থাকা সীমিত অস্ত্র নিয়ে, ট্যাঙ্কের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করল। কয়েকজন সাহসী যুবক তাদের হাতে তৈরি পাইপ গান ও পেট্রোল বম্ব দিয়ে আক্রমণ করলেও, ট্যাঙ্কের ভারী বর্মধারার ক্ষতি কম হলেও তারা কিছু ক্ষুদ্র ক্ষতি করতে সক্ষম হলো।



একই সময়, রাস্তায় ছাত্র ও সাধারণ মানুষ সরকারী পারামিলিটার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছিল, হাতে রাখা হকি স্টিক, স্ক্র্যাপ মেটালে তৈরি গান ও নানান ধরনের ক্রুৎ অস্ত্র নিয়ে। সরকারী বাহিনী, যাদের হাতে ছিল APC ও অন্যান্য আধুনিক অস্ত্র, প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি আর গুলি চালাতে লাগল। জনসাধারণের ক্ষয়ক্ষতি দ্রুত বাড়তে থাকে, শত শত মানুষের প্রাণ হারাতে থাকে।



(১১)


আকাশ থেকে মৃত্যুঃ বিধ্বংসী বোমাবর্ষণ



আকাশে, লড়াইবিমানগুলি একে একে বিধ্বংসী হামলা চালায়। স্যাটেলাইট ও রেকন সিস্টেমের সাহায্যে, তারা শিল্পাঞ্চলের উপরে প্রবেশ করে এবং উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বোমা ছুঁড়ে দেয়। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে, ভবনগুলো ভেঙে পড়ে যায়, আর পুরনো শিল্পাঞ্চল এক একাই আগুন ও ধ্বংসের যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিমানের গর্জন ও বোমার বিস্ফোরণের শব্দ পুরো শহর কাঁপিয়ে দেয়। মাটিতে থাকা সাধারণ মানুষ উপরে তাকিয়ে থাকে, বুঝতে পারে যে যুদ্ধের আগমন এখনো দুরবর্তী নয়।



সরকারের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে বিমানের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ চালু ছিল। রেডিও জ্যামিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোনো সাধারণ ব্যক্তি বা প্রতিবাদকারী কার্যকরভাবে যোগাযোগ করতে পারেনি। একই সঙ্গে, রেকন ড্রোন শিল্পাঞ্চলের চারপাশ ঘোরাফেরা করে, ছাগল ও প্রতিবাদকারীদের গতিবিধি নিয়মিত জানিয়ে দিত।


(১২)

ছাগলের রোষ ও প্রতিশোধ


এই বিশৃঙ্খলার মাঝেই, যোদ্ধা ছাগল তার পাল্টা আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিল। একটি হাতে ভারী মেশিনগান, অপর হাতে RPG হাতে, ছাগলটি ছাদের থেকে ছাদে ঝাঁপিয়ে পড়তে লাগল। তার অন্ধ এক চোখ, কালো কাপড়ে ঢাকা, আর মুখে হাভানা চুরুট—এই চেহারায় সে এক দৈত্যের মতো ভয়ানক।



একটি উঁচু ভবনের ছাদ থেকে, ছাগলটি এগিয়ে এসে ট্যাঙ্কের দিকে মেশিনগান চালায়। ট্যাঙ্কগুলো তার নিখুঁত আক্রমণে হঠাৎ করে ধরা পড়ে। পরবর্তীতে, ছাগলটি RPG ছুঁড়ে APC-গুলোর বিরুদ্ধে হামলা চালায়, যার ফলে বিশাল বিস্ফোরণ শুরু হয়। একের পর এক ট্যাঙ্ক ও APC দুর্বল হয়ে পড়ে, ছাগলটি তার নিখুঁত লক্ষ্যভেদে তাদের ধ্বংস করতে থাকে।



যুদ্ধে তীব্রতা বাড়তে থাকলে, সরকার বুঝতে পারে যে তাদের প্রচেষ্টা যথেষ্ট নয়। উন্নত প্রযুক্তি সত্ত্বেও, তাদের বাহিনী ছাগল এবং প্রতিবাদকারীদের নিরন্তর গতিতে চিরে যেতে পারছে না। যদিও দুটি স্কোয়াড্রন লড়াইবিমান প্রতিবাদকারীদের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছিল, ছাগলের নির্ভুল আক্রমণ বাহিনীর মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল।



সরকারের স্থল বাহিনী, আধুনিক অস্ত্র ও ট্যাঙ্ক ও APC দ্বারা সুরক্ষিত, পুরনো শিল্পাঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার চেষ্টা করছিল। প্রতিবাদকারীরা, যদিও অপেক্ষাকৃত কম ক্ষমতাসম্পন্ন অস্ত্র ব্যবহার করছিল, তবুও তাদের হাতে থাকা প্রতিটি অস্ত্র দিয়ে সরকারী ভারী বাহিনীর বিরুদ্ধে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আঘাত করতে সক্ষম হয়। যুদ্ধ শুধুমাত্র সরকার ও জনসাধারণের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না—এখন তা সরকার ও যোদ্ধা ছাগলের মধ্যেও লড়াইয়ে রূপান্তরিত হয়েছিল। ছাগল, নিজের ক্ষতিপূরণের স্মৃতিতে ও রোষে, নিষ্ঠুরভাবে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছিল।



দিনের শেষে, শিল্পাঞ্চলের অনেক অংশ ধ্বংস হয়ে গেল। ধ্বংসাবশেষ, ভাঙ্গা যানবাহন ও ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনগুলো মাটিতে ছড়িয়ে পড়েছিল। সরকারের বিশাল অস্ত্রসজ্জা সত্ত্বেও, ছাগল ও প্রতিবাদকারীরা তাদের চিহ্ন রেখে গিয়েছিল।

(১৩)

পরবর্তী পরিণতি: এক রক্তক্ষয়ী দেশের অবস্থা



নিয়ন্ত্রণ কক্ষটি বিশৃঙ্খলায় ভরে উঠেছিল। ক্ষতিপূরণ ও মারাত্মক লোকক্ষয় সম্পর্কে রিপোর্ট আসতে থাকল, এবং ধীরে ধীরে বুঝতে শুরু করল—এটি একটি ধ্বংসাত্মক দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের সূচনা। সরকার ছাগলটিকে ধ্বংস করতে ব্যর্থ হয়েছে, আর প্রতিবাদ ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে। একসময় যেখানে শিল্পাঞ্চল উৎপাদনের প্রতীক ছিল, আজ সেটি বিদ্রোহের চিহ্নে পরিণত হয়েছে।



সূর্য অস্ত যাওয়ার সাথে সাথে, সরকার বাহিনী যদিও সেই নির্দিষ্ট যুদ্ধক্ষেত্রে বিজয় ঘোষণা করেছিল, তবুও পুরো যুদ্ধ এখনও চলমান ছিল। জনসাধারণে নতুন আশার সঞ্চার ঘটেছিল, আর যোদ্ধা ছাগল প্রমাণ করেছিল যে, সবচেয়ে শক্তিশালী বাহিনীরও মোকাবিলায় দাঁড়ানো সম্ভব।

সরকারের সর্বোচ্চ অস্ত্রের ব্যবহার ও কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ



সরকার এই যুদ্ধে সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ও আধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করে চলেছিল।

• স্যাটেলাইট চিত্রগ্রহণ, তাপীয় ইমেজিং ও রাডার: পুরনো শিল্পাঞ্চলের সঠিক অবস্থান, প্রতিবাদকারী এবং ছাগলের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ কক্ষে রিয়েল-টাইম আপডেটে আসছিল।

• দুটি স্কোয়াড্রনের লড়াইবিমান ও মিলিটারী হেলিকপ্টার: আকাশ থেকে বিধ্বংসী বোমাবর্ষণ চালানো হয়েছিল।

• ২০০ ট্যাঙ্ক ও ভারী আর্টিলারি: শিল্পাঞ্চলের চারদিকে মোড় নিয়ে ট্যাঙ্কগুলো ও আর্টিলারি শেল দিয়ে সম্পূর্ণ এলাকাটিকে নিখুঁতভাবে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়েছিল।

• কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ: সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা একত্রে বসে, রেডিও জ্যামিং, স্যাটেলাইট চিত্র, ইনফ্রারেড ও অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পূর্ণ অপারেশন পরিচালনা করছিলেন।



সরকারের প্রধান ফোকাস ছিল—পুরনো শিল্পাঞ্চলে ছাগলটিকে খুঁজে বের করে ধ্বংস করা। কারণ, ছাগলটি যদি বেঁচে থাকে, তবে বিদ্রোহ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। জনসাধারণের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা হালকা অস্ত্রের সীমিত আঘাত, সরকারের প্রধান শত্রুর—ছাগলের—ধ্বংস করা ছাড়া এই যুদ্ধ সফল হতে পারবে না।

(১৪)

উপসংহার: এক বিদ্রোহের অন্ধকারে নতুন সূচনা



সরকারের সর্বোচ্চ অস্ত্র ও আধুনিক প্রযুক্তি সত্ত্বেও, ছাগল ও জনসাধারণের নিরলস প্রচেষ্টায় যুদ্ধ ক্রমশ আরও জটিল হয়ে উঠল। জনসাধারণে নতুন আশার সঞ্চার ঘটলেও, তাদের হাতে ছিল মাত্র স্থানীয় অস্ত্র। সরকার, তাদের সর্বোচ্চ প্রযুক্তির সাথে, পুরনো শিল্পাঞ্চলে এক বিস্তীর্ণ, বিধ্বংসী অপারেশন পরিচালনা করছিল।

সরকার জানত—যদি ছাগলটি ধ্বংস না করা যায়, তবে বিদ্রোহের আগুন নিভে যাবে না, বরং আরও বিস্তৃত ও জোরালো হয়ে উঠবে।



এভাবেই, একদিকে হালকা অস্ত্র নিয়ে জনসাধারণের প্রতিবাদ ও স্থানীয় সংঘর্ষ চলছিল, অন্যদিকে আধুনিক অস্ত্র ও প্রযুক্তি নিয়ে সরকারের সামরিক বাহিনী পুরনো শিল্পাঞ্চলে শেষ জয়ধ্বনি আনতে লড়াই করছিল। যুদ্ধের এই মুহূর্ত ছিল এক অভূতপূর্ব সংঘর্ষের সাক্ষ্য, যেখানে প্রযুক্তি, রক্তক্ষয় এবং অদম্য সাহসের সংমিশ্রণে এক নতুন যুগের সূচনা ঘটতে চলেছে।

এরপর কী হবে? ছাগল কি অবশেষে সরকারের অত্যাধুনিক বাহিনীকে পরাস্ত করতে পারবে, নাকি সরকারের সর্বোচ্চ অস্ত্রে জনসাধারণের বিদ্রোহ নিড়বে? পুরো দেশ এক বিরাট অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে, আর এই যুদ্ধের পরিণতি সবার ভাগ্য নির্ধারণ করবে।

এ আই দিয়ে লেখা, উৎসর্গ: জুলাই বিপ্লবের শহীদ এবং আহতদেরকে।

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৯
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ভারত-পাকিস্তান উভয় দেশের কিছু নাগরিক উভয় দেশের মানচিত্র মুছে দিতে আগ্রহী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১১ ই মে, ২০২৫ রাত ৯:০১



ভারত-পাকিস্তান উভয় দেশের কিছু নাগরিক উভয় দেশের মানচিত্র মুছে দিতে আগ্রহী। পাকিস্তান+ভারত= পাকিস্তান অথবা ভারত+পাকিস্তান=ভারত- এ ধরনের ইচ্ছা কিছু লোকের। তবে যে পক্ষের ইচ্ছাই পূরণ হোক তারা আমাদেরকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সে দূরে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১১ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:১৫

সে দূরে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

সে দূরে, দূরে আছে সে
হঠাৎ ইচ্ছে হলো পেতে।
মনমতো কতকিছুই নজরে পড়ে
দিন যায়, যায় তারে ভেবে।
ছোঁয়া যায় না, ধরা যায় না
কেবল খেয়ালে আসে, অন্যমনা।
উৎসাহ না পেয়ে, পেয়ে, শেষ
একটু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা নিয়ে ছোট্ট দুটি কথা।

লিখেছেন অন্তর্জাল পরিব্রাজক, ১১ ই মে, ২০২৫ রাত ১১:৪৩


আওয়ামী লীগের কার্যক্রম তো নিষিদ্ধ হল। অনেক আলোচনা সমালোচনা চারিদিকে। থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কিছু কথা আছে যেগুলো এড়ানো যায়না। আফটার অল,অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এহেন সিদ্ধান্ত ঠিক এদেশের আমজনতার ম্যাণ্ডেট... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিচারের জায়গা না পেলে মানুষ প্রেত হয়ে ওঠে

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ১২ ই মে, ২০২৫ সকাল ১১:৩৯


(সামাজিক অবিচার, রাষ্ট্রীয় অনুপস্থিতি এবং আন্ডারওয়ার্ল্ড কাঠামোর মধ্যে সাধারণ মানুষ কীভাবে হারিয়ে যায়।)

মানুষ যখন বারবার অবিচারের শিকার হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

Bangladesh bans ousted PM's Awami League under terrorism law

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ১২ ই মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৬





হায়রে এরেই বলে কর্মফল। ১৭ টা বছর গুম , খুনের মাধ্যমে এক ভয়ের রাজ্য তৈরী করে কেড়ে নেয়া হয়েছিল মানুষের বাকশক্তি। চোখ, কান, মুখ থাকতেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×