somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সংস্কৃতিচর্চা ও অসাম্প্রদায়িকতার নামে যা হচ্ছে

২৩ শে নভেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১২:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অধ্যাপক কবীর চৌধুরী বলেছেন, "দেশ থেকে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে দূর করার জন্য সাংস্কৃতিক চেতনাকে তুলে ধরতে হবে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সাংস্কৃতিক চেতনা আমাদের একটি বিরাট প্রেরণা ছিল। কাজেই দেশ থেকে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উচ্ছেদ করতে হবে। সাংস্কৃতিক কর্মীদের এই চেতনাকে ধারণ করতে হবে তাদের আন্দোলনের সাথে একটি সেকুলার বাংলাদেশের জন্য, যেখানে সবার সমান অধিকার থাকবে।" ওই সাংস্কৃতিক কনভেনশনের উদ্বোধনকালে তিনি এয়ারপোর্ট চত্বর থেকে ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের চাপে বাউলমূর্তি অপসারণের জন্য সরকারেরও সমালোচনা করেন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের অনুষ্ঠানে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, "মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার ছিল একটি সেকুলার বাংলাদেশের; যেখানে সব নাগরিক, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার পাবে। কিন্তু দেশের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী মৌলবাদী শক্তির ষড়যন্ত্রের কারণে আমরা তা অর্জন করতে পারিনি। রাষ্ট্রও তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। তিনি আরো বলেন, পুঁজিবাদী শক্তির নিজেদের স্বার্থেই বিশ্বজুড়ে মৌলবাদকে উসকে দেয়া হয়েছে এবং বাংলাদেশও এর শিকার। বুশ ক্রুসেড ঘোষণা করেছে। সেখানে ইসলামপন্থীরা জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির চাহিদা থেকে তাদের মনোযোগ সরানোর জন্য জিহাদের ঘোষণা দিয়েছে।" অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জোট সভাপতি নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের প্রধান সমন্বয়কারী লে. জে. (অবঃ) হারুন-অর-রশীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এবং অঙ্কন শিল্পী রফিকুন্নবী।
আমরা মনে করি, তারা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের একটি ক্ষুদ্র অংশ মাত্র। তারা নিজেরাই এ দেশে উগ্রতা ও চরমপন্থার বিস্তার ঘটাচ্ছেন। তারা অন্যদের চরমপন্থার কথা বলেন কিন্তু নিজেরাই এ দেশ ‘সাম্প্রদায়িক’ শক্তির উচ্ছেদের কথা বলে যা করছেন, তা প্রশ্নবোধক। এটা কি দ্বৈতনীতির পরিচয় নয়? তারা যেভাবে হুমকি দিচ্ছেন তা কোন ধরনের সম্প্রীতি? যারা দেশের এসব বাম ও অতি সেকুলার গোষ্ঠী সম্পর্কে ধারণা রাখেন, তারা জানেন তারা কী ধরনের ভাষা ব্যবহার করে থাকেন। তারা এটাও ভালো করে জানেন, তারা ‘সাম্প্রদায়িকতা’ শব্দের দ্বারা প্রকৃতপক্ষে ইসলামকেই বুঝিয়ে থাকেন। তাদের সংস্কৃতিটা আসলে কী? অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা হচ্ছে কুরুচিপূর্ণ নাচ, গান, মূর্তি বানানো এবং এ দেশের প্রতিষ্ঠিত নৈতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ বিশেষ করে ইসলামকে উপহাস করা।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কী ছিল তা দেশের জনগণ জানে। এটা যে শুধু তারাই কেবল জানেন, তা নয়। জনগণ ১৯৭৭ সালে গণভোটে এবং ৭৯ সালে তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সংসদে সংবিধানকে পরিবর্তন করেছে এবং জনগণ এভাবে তাদের মনোভাবে সত্যিকার প্রতিফলন সংবিধানে ঘটায়। বাংলাদেশের সংবিধানই জনগণের সবার জন্য সমান মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়। কিন্তু উল্লিখিত কিছু ব্যক্তি সমান অধিকারের নামে কোরাস গাইতে থাকেন। এর কোনো সত্যিকার প্রয়োজন নেই। তাদের এ রকম কর্মকাণ্ড ব্যর্থ হতে বাধ্য। জ্ঞানী লোকরা তাদের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানেন। তাদের অসৎ ও অনিষ্টকর কৌশল সম্পর্কেও জানেন। মনে রাখা দরকার, এ দেশে ইসলামের শিকড় খুবই শক্ত। বাংলাদেশে ইসলামের শক্তি দিন দিন বাড়ছে। এমনকি সারা বিশ্বেও ইসলামের শক্তি বেড়েই চলেছে। ইসলামের শত্রুদের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে মুসলিমরা বর্তমানে খুব ভালো করেই বোঝে। আল্লাহর ইচ্ছায় এ দেশে বাম ও অতি সেকুলারদের সফলতার কোনো আশা নেই। এটা তারা ভালো করেই জানেন এবং এটাই তাদের বিষণ্নতা বা অস্থিরতার কারণ। এ জন্যই তারা ইসলামের বিরুদ্ধে বারবার উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মুসলমানদের উসকে দিতে চাচ্ছেন। তাই তারা একের পর এক রাসূল সাঃ-এর ওপর কার্টুন করে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদ্রাসা ছাত্রদের ভর্তিতে বাধা সৃষ্টি করে, ভাস্কর্যের নামে হজ ক্যাম্পের কাছে মূর্তি বানিয়ে, সব শেষে নাটকে রাসূল নামের এক চরিত্র সৃষ্টি করে তাকে গালিগালাজ করেছেন। এভাবে তারা আমজনতাকে উসকানি দিচ্ছেন। তারা একের পর এক এগুলো করে যাচ্ছেন, কিন্তু আল্লাহর রহমতে তাদের ষড়যন্ত্র কখনোই সফল হবে না।

লেখকঃ শাহ আব্দুল হান্নান - ইসলামি চিন্তাবিদ, সাবেক সচিব, বাংলাদেশ সরকার
১৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×