সুধা সদনে হাসিনা এরশাদের বৈঠক চলছে। কি কি আলোচনা হতে পারে তা কি কেউ আঁচ করতে পারেন।
এরশাদ: ভাবী, আমার কথা একটাই মহাজোটে ফেরার বিনিময়ে অন্ততঃ ছয় মাসের জন্য আমাকে প্রেসিডেন্ট করতে হবে আর দলের জন্য ৬০ টি আসন।
হাসিনা: না ভাই, তা কি করে হয়? আওয়ামি লীগ ক্ষমতায় গেলে প্রেসিডেন্ট তো আওয়ামিলীগের কেউই হবেন ... তাইনা? ৯৬ সালে যে ভুল করেছি তা আর দ্বিতীয় বার করতে চাইনা।
এরশাদ: না ভাবী, এতদিন পরে আপনি এটা কি বলছেন? ২০০৭ সালে আপনার সাথে কি এমন চুক্তি ছিল?
হাসিনা: ২০০৭ সালে আমার দরকার ছিল নির্বাচন ভন্ড়ুল করা অথবা যে কোন উপায়ে ক্ষমতায় যাওয়া, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। দেখেননি তখন জঙ্গি, দুর্নীতিবাজ মুফতি শহিদুলের খেলাফত মজলিশের সাথেও চু্ক্তি করেছিলাম। ২৮ অক্টোবর কিভাবে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করেছি, আপনি তো নেজেই জানেন কিভাবে নুর হোসেন কে খুন করে আপনার ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছি, আমার ক্ষমতায় যাওয়াই হলো শেষ কথা।
এরশাদ: ২০০৭ সালের সাথে এখনকার পরিস্থিতি কি ভিন্ন?
হাসিনা: অট্ট হেঁসে, .... দুর বোকা ... তাও বুঝলেননা, আমি তো জেলে থাকতেই ক্ষমতা পেয়ে গেছি। জেল থেকে বেরিয়েই সাংবাদিকদের বলেছি ... জেলে বসে বসে একাকি আমি আগামি দিনের সরকার পরিচালনার খসড়া তৈরী করেছি। দেখলেননা সবাইকে জেলে রেখে আমি কিভাবে বিদেশ গেলাম হাওয়া খেতে। এয়ার পোর্টে বাংলাদেশ দুতাবাসে রিসিপশান পেলাম, বিদেশী সরকারের আতিথেয়তা পেলাম। দেশে আসার আগেই আমার নামে চাদাবাজির অভিযোগ প্রত্যাহার হয়ে গেল । জীবনে কোনদিন শুনেছেন চার্জসীট হবার পর, হাইকোর্ট সুপ্রিম কোর্ট জামিন নাকচ করার পর থানার দারোগা ফাইনাল রিপোর্ট দিতে? বুঝলেন ভাই, সব ক্যারিশমা। আমি ক্যারিশমাটিক নেত্রী।
এরশাদ: আপনার বিরুদ্বে এতগুলো চাঁদাবাজির মামলা অথচ দেখুন অন্য কোন দলের প্রধান নেতা নেত্রীর বিরুদ্বে অন্ততঃ চাঁদাবাজির অভিযোগ নেই.... ব্যাপার টা আমাকেও আহত করেছে, হাজার হউক আমরা একসময় সোল মেট ছিলাম।
হাসিনা: আবার অট্ট হেঁসে, আরে রাখেন সে সব, এদেশের সব হলো রাজাকার - বেঈমান, আমি চাঁদা নিয়েছি ঠিকই ... তবে তাদেরকে বিজনেসও দিয়েছি। আমার আর এদেশের কারো উপর বিশ্বাস নাই। দেখেননি আমি জেলে যাবার পর বিদেশ থেকে উকিল ভাড়া এনেছি, এদেশের ডাক্তার - হাসপাতাল দিয়ে চিকিৎসা নিতে অস্বিকৃতি জানিয়েছি, এমনকি পরীক্ষাও করাতে রাজি হইনি। আমার জন্য বিদেশই ভাল। এদেশের মানুষ হলো অকৃতজ্ঞ, তারা আমার মা, বাপ, ভাই, আত্মিয় স্বজন
সবাইকে খুন করেছে, এদের আমি দেখে নেব।
এরশাদ: তাহলে আপনার ক্ষমতায় যাওয়া নিশ্চিত?
হাসিনা: সে রকমই তো কথা হয়েছে তাদের সাথে। সিইসি আমাদের সাজেদা চৌঃ বেয়াই। তাছাড়া তিনি আওয়ামিলীগে শুভাকাংখি।ফখরুদ্দিনের সরকার আর বিদেশের সব কুটনীতিক দের ম্যানেজ করবে আমার দাদারা।
এরশাদ: (কাচু মাচু হয়ে) ভাবী ... তাহলে আমার কি হবে,,, এতদিন যে আপনা আশায় বসে ছিলাম ....
হাসিনা: স্মৃতি কাতর হয়ে ... আমার খুব শখ আরেকবার আপনার সাথে লং ড্রাইভে যেতে ............................. সে কি মধুর ............. অবশ্য তুমি বেশ বুড়িয়ে গেছ ... ......
এরশাদ: না ভাবি ... আমি চীর যৌবনা ... চীর সবুজ .... আপনি দেখবেন .......
তো যা বলছিলাম, আমার প্রেসিডেন্ট হবার কি হবে ?
হাসিনা: বঙ্গ ভবন গনভবন নিয়ে আমারও অনেক স্বপ্ন, আমার মন্ত্রীসভার অনুমোদন নিয়ে দখন নিয়েও অকৃতজ্ঞ জনগনের আন্দোলনের মুখে ২০০১ সালে লোটা কম্বল নিয়ে এই ভবন ছাড়তে হয়েছিল.... আমি আবারও সে ভবন দখন নিতে চাই ।
এরশাদ: (কাঁদো কাঁদো কন্ঠে) তাহলে আমি ?
হাসিনা: সে কথা লং ড্রাইভে চুড়ান্ত হবে ..... গত লং ড্রাইভে আমি আপোষ করেছিলাম ... এবার না হয় আপনি আপোষ করবেন ........ মিট মিট করে হাসছেন নেত্রী ......
এরশাদ: দীর্ঘ্যশ্বাস ফেলে .... এখন সাংবাদিকদের কি বলব ?
হাসিনা: বলুন দেশের স্বার্থে জনগনের স্বার্থে গনতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আমরা মহাজোটে ছিলাম আছি থাকব,,,,, পাওয়া না পাওয়ার বেদনা তো থাকবেই ..... দেশের বৃহত্তর স্বার্থে সবাইকে ত্যাগের মানসিকতা রাখতে হবে ..... তারপর আঁতেল মার্কা দেঁতে হাসি দেবেন।
(পাদটিকা: এটি একটি কল্পিত কল্পনা ,,,, কাউকে আহত করা উদ্দেশ্য নয়)
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই নভেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:৫০