somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমস্যাটা কার???

২৮ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ১১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এটা কখনোই আমার মাথা ঘামানোর বিষয় ছিলো না। এমনকী সমস্যাও নয়। কিন্তু, গত কয়েকদিন ধরেই ব্যাপারটা অনেক বেশি ভাবাচ্ছে। ভাবছি, সমস্যাটা কার? আমার, না মানুষগুলোর, না পারিপার্শিকতা তথা সমাজের?

সমস্যাটা কি তা বলার আগে নিজের একটা বর্ণণা দিয়ে নেই! আমি ৫ ফুট উচ্চতার একটা গোলগাল মানুষ। স্বাভাবিকের চেয়ে উচ্চতা অনুযায়ী ওজন একটু বেশি। সেটা নিয়ে অবশ্য আমার খুব একটা সমস্যা নেই। আমি মোটামুটি সারাদিন দৌড়ের ওপর থাকতে ভালোবাসা মানুষ। কোথাও একদন্ড অর্থহীন বেকার বসে থাকাটা খুব অপছন্দ। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠবার পর পরই দৌড়ের শুরু। আমি কাকডাকা ভোরে ঊঠে পড়ার দলে নই। নিশাচরদের দলভুক্ত হবার সুবাদে আমার সকালটাও হয় দেরিতে। আর তাই ঘুম থেকে উঠেই ঘড়ির কাঁটার সাথে পাল্লা দিয়ে শুরু হয় আমার দৌড়। এই দৌড়াদৌড়িকে সহজ করে নিতে চুলগুলোকে ঘাড়ের নিচে নামতে দেয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ করেছি। ফিতা-চিরুনির ঝামেলা নেই। হাতের পাঁচ আঙ্গুলই এখন অনেক ভালো চিরুনি! একটা ব্যান্ড হাতের কাছে পেলে তা দিয়ে চুলে ঝুটি বাঁধতে বাঁধতে সিড়ি দিয়ে নামা। নয়তো চুলে স্কার্ফ বেঁধে ফেলা, তাতে আঁচড়ানোর ঝামেলাটাও বর্জিত। পোশাকেও সেই দৌড়ের ছাপ স্পষ্ট। প্রায় দিনই বাসায় যে ট্রাউজারটা কিংবা থ্রি-কোয়ার্টার টা পরা থাকি, তার ওপরেই গেঞ্জি পালটে ফতুয়া পরে রওয়ানা হয়ে যাওয়া। সালোয়ার-কামিজের সাথে যোগাযোগ এখন অনিয়মিত। একটু সময় হাতে থাকলে তখন হয়তো কালে-ভদ্রে পরা হয়। পুরো সংসার নিয়ে চলা ব্যাগটা আগের দিন বাসায় ফিরে যেখানে রাখি সেখান থেকেই ওটাকে টান দিয়ে নিয়ে কাঁধে চাপিয়ে, খাবার টেবিল থেকে পানির ফ্লাস্কটা ব্যাগের এক কোণায় ভরে নিয়ে হাতঘড়িটা পড়তে পড়তে পায়ে স্যান্ডেল গলিয়ে বের হয়ে যাই। সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে এমপিথ্রি প্লেয়ারটা চালু হয়ে যায়। গান শুনতে শুনতে গেট দিয়ে বের হয়েই কিংবা একটু হেঁটে নিয়ে রিকশায় পদার্পণ।

আমার প্রতিদিনের চিত্রটা মোটামুটি এরকমই...

গেট দিয়ে বের হবার আগ পর্যন্ত সমস্যা হয়না। গেট পার হবার সাথে সাথেই মনে হয় আমি যেন একটা ভিনগ্রহ থেকে আসা প্রাণী! প্রথম প্রথম ভাবি, কেন আমার দিকে সবাই তাকাচ্ছে এভাবে?...তারপর নিজের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলি!...আমার গেট-আপ! কানে হেডফোন থাকে, তাই মানুষ ভাবে পাশ দিয়ে যাবার সময় একটা বিশ্রী মন্তব্য করে গেলে সেটা শুনবো না। কিন্তু মাঝে মাঝে শুনে ফেলি। মানুষের বিভিন্ন জাতের দৃষ্টির সাথে বিনিময় করতে হয়। কতগুলো দৃষ্টির প্রত্যুত্তর দৃষ্টি দেই, কতগুলা দেই না। মাঝে মাঝে হাসিই পায়, মানুষ আমাকে পাগল ভাবে! কিংবা ভাবে উচ্ছৃঙ্খল। আবার কেউ কেউ ভাবে আমি ‘চারুকলা প্রডাক্ট’ তাই এমন গেট-আপ। তাদের ধারণা এমন চলাফেরা কেবল চারুকলা গোত্রেরই হয়ে থাকে। মাঝে মাঝে বিরক্তও লাগে। কেন মানুষগুলো স্বাভাবিক দৃষ্টিতে তাকায় না? কেন সহজভাবে ব্যাপারগুলো নিতে পারেনা? ...এই বিরক্তিটা কেবল নিজের জন্য কাজ করে না, অন্যদের কথাও ভাবনায় আসে। যেই মেয়েটা আপাদমস্তক বোরখায় নিজেকে ঢেকে রাখে, আবার যে নিজের কাজের সুবিধার্থে কিংবা আরামের প্রয়াসে নিতান্তই ঘরের মতো ক্যাজুয়াল গেট-আপে থাকে, সবার জন্যই এই মানুষদের দৃষ্টিতে থাকে কামনা, বিরক্তি কিংবা কৌতুক!

সমস্যাটা কার? আমার কিংবা আমাদের?...আমি বা আমরা তাদের এভাবে ভাবাই? ...

মানুষগুলোর? ...তারা ওভাবে ভাবে?...

নাকি সমাজের?...সময়ের সাথে প্রগতিশীল না হয়ে ক্রমাগত যে পিছিয়ে যাচ্ছে সেই সমাজ ওদেরকে এভাবে ভাবায়?...

সমস্যাটা আসলে কার?......

৩০টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাত্রদের কারা মাইনাস করতে চায় ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৮ ই মে, ২০২৫ রাত ১১:১৭


আজ তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম 'কৈফিয়ত কিংবা বাস্তবতা' শিরোনামে ফেইসবুক পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করেছেন, ইন্টেরিম সরকারের ভরকেন্দ্র অনেকগুলো। তাই ইচ্ছা করলেই ছাত্র-জনতার সকল দাবী পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শুধুমাত্র চোর এবং কাপুরুষরাই রাতে আক্রমণ করে

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৮ ই মে, ২০২৫ রাত ১১:৩৪



ভারতের সম্প্রতি হামলা নিয়ে পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি সম্প্রতি একটি আবেগঘন বক্তব্য পেশ করেছেন। তিনি বলেছেন "শুধুমাত্র চোর এবং কাপুরুষরাই রাতে আক্রমণ করে। যদিআ... ...বাকিটুকু পড়ুন

নবীজির জন্মের আগে আরবে গজব অবস্থা ছিলো

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৯ ই মে, ২০২৫ সকাল ১১:০২



নবীজির জন্মের আগে আরবে বেশ কিছু ধর্ম ছিলো।
ধর্ম না বলে কুসংস্কার বলা ভালো। সেই সময় মানুষ রসিকে সাপ মনে করতো। মগজহীন মানুষ দিয়ে ভরা ছিলো আরব। সেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনু গল্পঃ ব্যর্থ বাসনার দাহ

লিখেছেন সামিয়া, ০৯ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৮

ছবিঃনেট

খুব তাড়াহুড়া করে বের হয় তন্দ্রা, আজ স্কুলে যাবে না, কোনো টিউশনি করাবে না, ফোন করে সব student-কে মানা করে দিয়েছে। এগারোটার আগে ওকে এয়ারপোর্ট পৌঁছতে হবে।

নাবিল আসছে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ডায়েরী- ১৫২

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৯ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৫:২৩



এনসিপি আওয়ামীলীগকে এত ভয় পাচ্ছে কেন?
অলরেডি আওয়ামীলীগের তো কোমর ভেঙ্গে গেছে। তবু রাতদুপুরে এত আন্দোলন কেন? দেশে ১৮/২০ কোটি মানুষ। তারা তো আওয়ামীগকে ভয় পাচ্ছে না। তাহলে এনসিপির এত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×