somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মেয়ের সাথে ঘটে যাওয়া সত্য কাহিনী অবলম্বনে

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভার্সিটিতে নতুন ভর্তি হয়েছে মিম ( ছদ্মনাম ) । দেখতে বেশ সুন্দরী । ক্লাশ শুরু হতে না হতেই এসে পড়েছে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্টের ঝড় । যেই ফ্রেন্ড লিষ্টে মানুষ ছিলো ১০০ কিছু দিনের ভিতরেই সেই ফ্রেন্ডলিষ্ট হয়ে গেলো ৫০০ । চলছে ক্লাশ বিকালে আড্ডা ।আর রাতভর চ্যাটিং ।
মিমের সবচেয়ে প্রিয় বান্ধবী রিমা (ছদ্মনাম) । রিমা হচ্ছে মিমের রুমমেট । সেই রকম চলে দুই বান্ধবীর আড্ডাবাজি । রাতে বসে একসাথে চাঁদ দেখা । কখনো বা চলে সারারাত ধরে মুভি দেখা আর ভোড়ে ঘুমানো । কখনো মাসের শুরুতে বাসা থেকে ৫০০০ টাকা এসে পড়লে দুই বান্ধবীর শপিং এ গিয়ে ৪০০০ টাকা শেষ করে দিবারও অভ্যাস আছে । এমনি পাগলামি আর মজায় চলছিলো মিম । ক্যাম্পাসে অনেক সিনিয়রদের প্রপোজ উপেক্ষা করেই মিমের ভালো লাগে একটি ছেলেকে নাম সোহেল ( ছদ্মনাম ) । সোহেল মিমেরই ব্যাচমেট । একসময় সোহেলের ডাকে সাড়া দেয় মিম । দুইজনে মিলে এটে ফেলে জীবন সংসারের এক বন্ধন ,
এভাবেই দুইবছর চলে যায় তাদের প্রেম জীবনে ।
মিমের পরীবার মিমকে বেশ চাপ দিচ্ছে বিয়ের জন্য । মিম বিয়ের জন্য একদম অপ্রস্তুত । কিন্তু মিমের মা একদম নাছোড়বান্দা মেয়েকে বিয়ে দিয়েই ছাড়বে । মেয়ের জন্য ছেলে দেখা শুরু করে দিছে । মিম প্রতিবার বাসায় গেলেই মায়ের সাথে ঝগড়া করে আসে তাই মেয়েটা আর বাসায় যেতেই চায়না ।
মিম সোহেলকে সব খুলে বলে । সোহেল শুনে হতবাক । এখন কি করে সে মিমকে বিয়ে করবে । কেবলতো ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু করতে শিখছে সোহেল । কিন্তু সোহেলও যে মিমকে চায় !! এক চিন্তার সাগরে মগ্ন সোহেল । কি করবে কি বেছে নিবে !!! ক্যারিয়ার না মিম !!! অবশেষে ক্যারিয়ারেই পথেই ছুটলো সোহেল ।
আজকাল মিমকে ইগনোর করছে সোহেল । দেখে না দেখার ভান করছে । ফোন ধরছে না । সোহেলের এই ব্যবহার এর জন্য মিম আরো বেশী সোহেলের প্রত দুর্বল হয়ে পড়ে । কিন্তু সোহেল সব শেষ করে নিজের ফোন নম্বর চেঞ্জ করে ফেলে । সে চায়নি মিম কষ্ট পাক । সে চায় এখন কষ্ট পেয়ে তাকে ঘৃণা করে ভুলে যাক ।
দেখতে দেখতে ৩ মাস চলে যায় ।
মিম অনেক কান্নাকাটি করছে । রিমাকে জড়িয়ে কাদছে । বান্ধবীর কান্না সহ্য করতে না পেরে আজ রিমাও কাদছে । অবশেষে এই জীবন থেকে মুক্তি পেতে মায়ের কাছে চলে গেলো মিম । হ্যা সে বিয়ে করবে । মা খুশী । বিয়ে দিলো মিমের একটি ছেলের সাথে নাম আজাদ ( ছদ্মনাম )।
আজাদের ব্যাপারে তেমন কিছুই জানেনা মিম । পরিবারের মতে বিয়ে করছে । বিয়ের পর সব কিছু ভালোই চলছিলো । ক্যাম্পাসে বন্ধু-বান্ধবদের সাথে ক্লাশও করছে ঠিক মত । সব ভালোই চলছে । এভাবেই চলে গেলো ৬ টি মাস ।
আজাদ বিয়ের সময় বলেছিলো সে এম বি এ করছে । একটি কোম্পানিতে চাকরী করে । .
কিন্তু সব ফ্যাকাশে হয়ে যায় একসময় । আসলে আজাদ এইচ এস সি পাশও না । ভার্সিটিতে একসময় ইভটিজিং ও করে বেড়াতো সে । নিজের অফিসে যৌণ হয়রানির দায়ে সে বিতারিত এক বেকার যুবক বর্তমানে । শুধু এই নয় মিমের তার বিয়ে করা ২য় বউ ।
আজাদের সাথে মিমের প্রায় ১ মাস ধরে তেমন কোন যোগাযোগ হয়না । আজাদের সাথে ডিভোর্সের চেষ্টা করছে সে । মিম ভার্সিটির হলেই থাকে । নিজেকে নিয়ে খুব অস্থিরতায় ভুগে সে । কেন হলো এমন তার সাথে ? তার ভালোবাসাকেও সে পেলোনা । আবার সামীর ভালোবাসাও সে পেলোনা । কেন ? কিসের জন্য তার সাথে এই প্রতারণা !! সে মেনে নিতে পারেনা । আবার সেই প্রায় ৪ বছর পর মিম কাদছে । রিমাকে জড়িয়ে কাদছে । রিমাও কাদছে তার এই প্রিয় বান্ধবীর জন্য । সেই মিম আজ ভুলে গেছে একসাথে রাত জেগে চাঁদ দেখার কথা । রাতভর মুভি দেখার কথা । মিমের জীবনই যে আজ একটা চলচিত্রের কাতারে চলে গেছে ।
কাহিণীটা এইখানেই শেষ হতে পারতো । কিন্তু এটা কোন কাহিনী না যে সুন্দর করে বানিয়ে লেখা যায় । এ এক বাস্তব জীবনের কাহিনী । মিম আজও লড়াই করছে নিজের জীবনের এই নিয়তির সাথে । তার বন্ধুরা তার সাথে আছে । কিন্তু হয়তো জানেনা । সে লজ্জায় বলতে পারেনা কাউকে । শুধু রিমাকে কাদতে কাদতে জড়িয়ে ধরে সব বলে দেয় । বড় নির্দয় এই প্রকৃতি । নির্মম এই সমাজ । যাতে পিষে মরছে মিমের মত কোমল জীবন ।
আমাদের সমাজের মা-বাবার মেয়েকে কেবল নির্দিষ্ট সময়ে বিয়ে দিতে পারলেই বেচে যায় । মেয়ের বয়স পেড়িয়ে যাবে । কেউ বিয়ে করবে না এইভেবে অনেক সময় যাচাই বাচাই ঠিকমত না করে একটি ছেলের হাতে তুলে দেয় নিজের মেয়েকে যার পরিণতি এমন হয়ে যায় কখনো কখনো । সংবাদপত্র কিংবা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে থাকে এখন প্রতারণার ফাদ । নিজেকে নিয়ে অনেককিছুই লিখে থাকে প্রচারকারীরা কিন্তু ওনেক সময় বাস্তব পুরাই ভিন্ন থাকে । মেয়ের পরিবার ছেলের সার্টিফিকেট,বন্ধু-বান্ধব,আত্নীয়-সজন এর খোজ খবর ঠিকমত নেয় না ছেলের পরিবারের সম্মানার্থে । এভাবেই মিমের মত কোমলমতি মেয়েদের জীবনে ঘটে যায় দুর্ঘটনা । আর এর থেকে অনেক সময় বের হতে পারেনা এর কারণও ঐ সমাজ যারা এদের বলে অপয়া !!! থু থু মারতে ইচ্ছা করে এই ঘুণে ধরা সমাজব্যবস্থাকে । X(( X(
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×