শহরের রাস্তা হাটার সময় সেই শিশুদের দেখলে মন খারাপ লাগে।যারা রাস্তায়,অলিগলিতে অনাহারে দিনযাপন করে।অথচ,তারাও তো কোমলমতি শিশু।তাদেরও তো মায়ের কোলে থাকার কথা।কোথায় সেই মায়ের কোল? অনেক সময় একবেলা খাবার পর্যন্ত মুখে জোটে না।ভিক্ষা পাত্র হাতে নিয়ে ঘুরলেও আজকাল কেউ একটা টাকা পর্যন্ত দিতে চাই না।আমরা অনেক সময় বলি-আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত।স্নেহভরা মায়ের কোল হলো একটা শিশুর নিরাপদ আশ্রয়স্থল।এটাও জানি যে,"বন্যরা বনে সুন্দর ,শিশুরা মাতৃকোলে"। কিন্তু,সব শিশুরা কি মাতৃস্নেহ পাচ্ছে?ঢাকা শহরসহ সারা দেশে লাখ লাখ শিশু আছে যাদের জন্ম রাস্তায়।পথেয় ওদের বসবাস ,পথেয় ওদের বেড়ে ওঠা।ক্ষুদার জ্বালায় শিশু বয়সে মায়ের কোল ছেড়ে পা বাড়ায় অজানার পথে।স্থান হয় রাস্তাঘাত,রেলস্টেশন,বাস টার্মিনাল,পার্ক এবং খোলা আকাশের নিচে। আর তখনই তাদের পরিচয় হয় পথশিশু।জীবনে প্রতিটি অধ্যায়ে নানা ধরনের অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হতে হয়।শৈশব পেড়িয়ে কৈশর উত্তীর্ণ হওয়ার আগে জড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন অপরাধমুলক কর্মকান্ডে। চুরি ছিনতাই,মাদকদ্রব্য সেবন,হত্যাসহ নানা ধরনের কাজে লিপ্ত হয়।এতে রাষ্ট্রের অন্যতম হুমকি স্বরুপ হয়ে পড়েছে।কিন্তু ,তাদের প্রতি যত্ন নেয়া কার দায়িত্ব?সরকারের সেই সদিচ্ছা এখনো দেখা যায়নি। ইউনিসেফের রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে সারাদেশে 6লাখ 79 হাজারের মতো পথশিশু রয়েছে।অথচ,তাদের দেখার কেউ নেই।আমাদের সরকার তাদের প্রতি কোন দৃষ্টি দিচ্ছেন না।সমাজের অহঙ্কারী জমিদার,ধনীরাও কোন সাহায্যের হাত বাড়াচ্ছে না।বিভিন্ন সময়ে বেসরকারী সংগঠন অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও কাজের কাজ কিছুই হয় না।প্রতি বছর 2রা অক্টোবরে পালিত হয়"আন্তর্জাতিক শিশু দিবস"।সেই দিবসে আমাদের প্রধানমন্ত্রী সহ সুশীল সমাজর ব্যাক্তিরা তাদের জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য দিয়ে থাকে। কিন্তু, কিছু দিন পর সেই কথা যেন বাষ্প হয়ে বাহির হয়ে যায়।সরকারের অবহেলায় সেই পথশিশুদের অধিকার হয়ে যায় অনিশ্চিত।এদের দায়িত্ব যেন কেউ নিতে চায় না। বর্তমানে বেসরকারীভাবে বিভিন্ন সংগঠন রয়েছে।যা তারা পথশিশুদের নিয়ে কাজ করে।এতে আরও শক্তিশালী হতো যদি সরকার এদের পাছে দাড়ায়।সরকারের পাশাপাশি যদি সকল সংগঠন একসাথে কাজ করে পথশিশুদের জন্য খাদ্য,শিক্ষা,কাপড়,চিকিৎসা ইত্যাদি ব্যবস্থা করে ,তাহলে এই পথশিশুদের থেকেও আমরা অনেক কিছু পেতে পারি।তাদের সুশিক্ষা প্রদান করা মানে আমাদের দেশে আরও অপরাধমুলক কর্মকান্ড কমে আনা।পথশিশুদের নিয়ে কাজ করা আমাদের ও সরকারের মানবিক দায়িত্ব।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:০৪