ভালবাসা কি শুধু একটা লিপ কিস বা পাশাপাশি বসে গায়ে গা লাগিয়ে কোন উদ্যানে গল্প করা। না তা মনে হয় না। কেন না আমার ক্ষেত্রে সেরকম কিছুই হয় নি। না আমি আজ পর্যন্ত তার হাত ধরেছি, না আমি তার সাথে ভাঙ্গা প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে ফুচকা খেয়েছি অথবা আমরা কেউই কোন উদ্যান বা রিকশায় চড়ে শহর ঘুরে বেরাই নি। কিন্তু তাও আমাদের মধ্যে প্রচুর টান। প্রশ্ন হল এত কিছুই হল না টান আসল কোথা থেকে। তাহলে কি নিউটন আঙ্কেলের তৃতীয় সূত্র ভুল হয়ে গেল ...!!
আমি যখন কম্পিউটারের কীবোর্ডের সাথে ঝগড়ায় মহা ব্যস্ত তখন আমার ফোনের মেসেজের ঘরে একের পর এক বার্তা জমা হচ্ছে যেগুলা কিছুটা এরকম।
"কি কর?" ...."কই তুমি ????" ......"তোমাকে সেই কখন থেকে টেক্সট দিচ্ছি !" ....."আমি চলেই যাচ্ছই।" অতঃপর একটি মিষ্টি হাসির বদলে চোখে মুখে অভিমানের সৃষ্টি যার জন্যে দায়ী আমি নিজেই। অতঃপর যখন দেখলাম মাথায় হাত ,হায় হায় এখন কি হবে, রাগে আছে সে, কেমনে রাগ ভাঙ্গাব, কি বললে খুশি হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।
অবশেষে কিছুটা সাহস নিয়েই টাইপ করি " অছি আমি" অতঃপর টেক্সট আসে " ভাল"। রাগের মাত্রা যে চরম আকারে গিয়ে পৌঁছে গেছে বুঝতে একটুও দেরি হয় না। অবশেসে একসময় নীলিমার রাগ ভাঙ্গে।
এরকম যে খুব কম হয় তা না। মাঝে মাঝেই হয়। কিন্তু মাঝে মাঝে নিজেকে প্রশ্ন করি একজন আমাকে সামান্য টেক্সট দিয়ে পায়নাই তাই এত রাগ। কেন? কি আমি তার কাছে যে আমার সামান্য অবেহেলায় অভিমান করে বসে থাকে কবে আমি তার রাগ ভাঙ্গাব? হুম আমি সেই যাকে সে ভালবেসেছে, তার মন দিয়েছে।
মাঝে মাঝে নিজেও সেটা উপলব্ধি করি। নিজে দেখেছি সামান্য কিছুতেই কেমন জানি অনেক খানি অভিমান হয়। কেন জানি খুব রেগে যাই। কিন্তু এই এতপরিমান রাগ হটাত করেই কোথায় যেন সিন্দাবাদের সেই জিনের মত উধাও হয়ে যায়। তখন হাইড্রলিক চেয়ারে গা এলিয়ে বড় বড় কোডের মাঝখানে চিন্তা করি এই সামান্যতে কেন এত অভিমান। আশায় থাকি নিজের ভিতর থেকে কেউ কিছু একটা উত্তর দিবে। ভাবি আমি , অনেক সময় হয়ত ঘুমের ঘরে এলিয়ে পরি। কিন্তু আমার ভাবনা আমার মধ্যেই রয়েই যায়। স্বপ্নেও মনে হয় কেউ আসবে উত্তরের জন্য। অবশেষে যখন ঘুম ভাঙ্গে আর মাথার কোটি কোটি নার্ভ যখন একসাথে কাজ করা শুরু করে তখনি মনে হয় উত্তর পেয়ে গেছই। অথচ এই সহজ জিনিসটা বুঝতেই পারি নাই।
বিধাতা আসলে এক অসাধারণ এক কারিগর। উনি এই মানুষ জাতিকে তৈরি করার সময় দুইটা দামী জিনিস দিয়েছেন। একটা মন আরেকটা মস্তিষ্ক। মানুষের মস্তিষ্ক যে কখন কোন রাস্তায় হাটা শুরু করে বুঝতেই পারে না মাঝে মাঝে। এর কারণ একটাই। মন। কাউকে ভাল লাগা, ভালবাসা সব ওই মনের ব্যাপার সেপার। মন যখন মেনে নেয় আর কিছুই করার থাকে না তখন।
সবকিছুর পর যখন আমি নিজেকে জিজ্ঞাসা করি কেন এত অভিমান আমার মন আমাকে একটাই উত্তর দেয় যে আমি তাকে ভালবাসি। সত্যি আমি তাকেই ভালবাসি। এই ভালবাসায় রয়েছে শত অভিমান, শত ইচ্ছা, শত আখাঙ্খা আর শত মনের স্ফুরততা।
ভালবাসি তোমাকে ।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:২৫