বর্ষার পরপর বান্দরবানের ল্যান্ডস্কেপ এমনই সবুজ ও মনোরম। ফটোগ্রাফারের নাম উল্লেখ না থাকা ছবিসূত্র
আমাদের যাওয়ার কথা ছিলো গত বছরের মার্চে। হুট করে লকডাউনের খাড়ায় পড়ে সে দফায় ক্ষ্যান্ত দিলেও মনের মধ্যে নাফাখুম-নাফাখুম জিকির থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছিলো না; অগত্যা এই মার্চের শেষে এসে তাই ঘুরান্টি টিমের দলবল নিয়ে হাটা ধরলাম নাফাখুমের উদ্দেশ্যে....। হাটা মানে আক্ষরিক অর্থেই হাটা। পাহাড়ে আমি আগেও গিয়েছি, কিন্তু নাফাখুমে যেতে হলে মওসুমভেদে দেড়ঘন্টা থেকে আড়াই ঘন্টা হাটাপথ পাড়ি দেয়া ছাড়া উপায় নেই।
ক্যাম্পাসের বন্ধুদের যে দলটা নিয়ে আমরা গত বিশবছর ধরেই ঘুরছি, এবার সে দলের আনুষ্ঠানিক একটা নাম পাওয়া গেছে- ‘দেশ ঘুরান্টি’। ঘুরান্টি শব্দটার জন্য এই ব্লগের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। ২০০৯ সালে আমার এক পোস্টে ব্লগার নুশেরা মন্তব্য করেছিলো ‘শুভ ঘুরান্টি’। যদিও পরে শুনেছি যে শব্দটার প্রথম ব্যবহারকারী বা আবিষ্কারক নুশেরা নয়, ব্লগার বাফড়া।
আমার ইচ্ছে ছিলো নাম হবে ‘ঘুরান্টি’। কিন্তু সার্চ করে দেখি, অলরেডি একজন ‘ঘুরান্টি’ নামটা দখল করে আছে। কে জানে, সেও হয়তো এই ব্লগেরই কেউ হবে...। সে কারণে আমরা হয়ে গেলাম ‘দেশ ঘুরান্টি’।
এটা আমাদের টিম। কচ্ছপতলি থেকে এরকম পাথুরে ঝিরির পাড় ধরেই দেবতাখুম যেতে হয়।
ছোট্ট একটা দেশ হওয়ার পরও বাংলাদেশে যে কি পরিমাণ প্রাকৃতিক বৈপরীত্য আছে, তা বান্দরবান না গেলে ধারণা করা মুশকিল। এবারের ট্যুরে বেসিক্যালি আমাদের গন্তব্য ছিলো বান্দরবানের দেবতাখুম ঝর্ণা এবং নাফাখুম জলপ্রপাত। এ দুটো যায়গা-ই আমাদের চেনা পরিবেশের পুরোপুরি উল্টো। সম্পূর্ণ পাথুরে পাহাড়ের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝর্ণাধারা, নদী, জলপ্রপাত আর নিবিড় বন, অসাধারণ!
সবশেষ যখন বান্দরবান গিয়েছিলাম, তখন চিম্বুক পর্যন্ত যাওয়াটাই ছিলো রোমাঞ্চকর; নীলগীরি গেলেতো কথাই নেই। আজ প্রায় ১৩ বছর পর এসে দেখছি নীলগীরি-টিরি সব ডালভাত হয়ে গেছে। অবকাঠামো উন্নয়নের চেয়ে ট্যুরিস্টদের মানসিকতায় বড় ধরণের পরিবর্তন এসেছে এ সময়ে । ঢাকা থেকে দলে দলে মোটরবাইকে করে পাহাড়ে চলে আসছে ট্যুরিস্টরা। হরেদরে ছেলে-মেয়েরা চলে যাচ্ছে নাফাখুম থেকে আরও প্রায় ৫ ঘন্টার হাটা দুরত্বে অমিয়খুম, সাতভাইখুম বা জাদিপাই ঝর্ণা, কেওকেরাডাংয়ে।
আমরা যেতে চেয়েছিলাম মার্চের প্রথমদিকে। ট্যুরপণ্ডিত মারগুবুল্লাহ কইলো- ‘ভাই, পাহাড়ে যামু, অমাবস্যার আন্ধারে যাওনের ফায়দা কি? চান্নিপসর রাইতে নাফাখুম ঝর্ণার পাশে বইস্যা চাঁন্দের আলোর লগে গপসপ না কইরলে যাইয়া লাভ নাইক্যা....’ । আমাদের মধ্যে মারগুবুল্লাহ সবচেয়ে বেশি ঘুরেছে এসব এলাকায়, তার কথা ফেলার সুযোগ নাই। সুতরাং তারিখ বদলে মার্চের শেষ সপ্তাহে চলে আসলো। কিন্তু এমনই কপাল, বিশদিন পিছিয়ে পুর্ণিমা পেলাম ঠিকই, সাথে উপরি হিসেবে পেলাম মেঘমালা!!! কিয়ের চান্নিপসর.... অবশ্য রাত বাড়ার সাথে সাথে আকাশেও আলোর বন্যা এসে গিয়েছিলো।
বান্দরবানে পাহাড়ের গা বেয়ে চলে গেছে এরকম নদী। ফটোগ্রাফারের নাম উল্লেখ না থাকা ছবিসূত্র
ট্যুরের সময় যত কাছে আসছিলো, ঢাকায় আমরা ততই বিচলিত হয়ে পড়ছিলাম। কারণ গরম বেড়ে যাচ্ছিলো এবং সবাই বলছিলো ওদিকে গেলে ফেব্রুয়ারির মধ্যেই যাওয়া উচিৎ। কিন্তু আমরা ওখানে গিয়ে সুন্দর আবহাওয়া পেয়েছি, এমনকি নাফাখুমপাড়ায় রাতে আমাদেরকে কম্বল গায়ে দিতে হয়েছে। তবে হ্যাঁ, চৈত্রের শেষদিক হওয়ায় পাহাড়ে সবুজের ছোঁয়া কম ছিলো, পরিবেশে রুক্ষতা এসে গিয়েছিলো। সেটুকু কনসিডার করলে বাকি সবকিছুই উপভোগ্য ছিলো।
থানচি থেকে রেমাক্রিবাজার পর্যন্ত যেতে সাঙ্গুনদীতে পানি কম ছিলো। যে কারণে মাঝে মধ্যেই হাটুপানিতে নেমে আমাদের ইঞ্জিনবোট ঠেলতে হয়েছে। চার-পাঁচবার একেবারে নেমে কিছু দূর হেটে আবারও বোটে উঠতে হয়েছে। এক হিসেবে সেটা ভালোই হয়েছে। ভরা মৌসুমে এই নদীর আচরণ কি পরিমাণ ভয়ংকর হতে পারে, তার কিছুটা আন্দাজ পাওয়া গেলো পানি এত কম থাকার পরও নদীর স্রোত এবং দুপাশের ক্ষয়ে যাওয়া পাথুরে পাহাড় দেখে। সে ভয়ংকর রূপের মুখোমুখিতো হতে হয়নি!
পার্বত্য অঞ্চল দেখার আগেই আমার সুযোগ হয়েছিলো কাঠমাণ্ডু ভ্রমণের। সমতলের মানুষ আমি বিশবছর আগে হিমালয়ের পাদদেশে গিয়ে পাহাড়ি সৌন্দর্য দেখে আপ্লুত হয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি-বান্দরবানে যতবার এসেছি, ততবারই মনে হয়েছে- আমাদের পাহাড় এত সুন্দর...।
বান্দরবানের রাস্তাগুলোও পাহাড়ের গা বেয়ে এরকম আঁকাবাকাভাবে উঠে গেছে। দুরে নীলগীরি রিসোর্ট এবং তার সামনে হেলিপ্যাড দেখা যাচ্ছে। ফটোগ্রাফারের নাম উল্লেখ না থাকা ছবিসূত্র
নীলগীরি পার হয়ে থানচির দিকে যাওয়ার সময় যদি চাঁন্দের গাড়িতে দাঁড়িয়ে সামনে তাকান, হঠাৎই দেখবেন আকাশ ছোঁয়া পাহাড় দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। আচমকা মনে হতে পারে এই পাহাড় পার হবো কিভাবে...। তারপর সেই পাহাড়কে কখনও ডানে, কখনও বামে রেখে ঘুরতে ঘুরতে একসময় থানচিতে পৌঁছে যাবেন। এই পথটাকে অনায়াসেই তুলনা করা যায় কাঁকরভিটা থেকে স্থলপথে কাঠমাণ্ডু যাওয়ার সেই ভয়ংকর সুন্দর পথের সাথে। তবুও আমরা নেপাল ছুটি!
এবার চলুন দেবতাখুম থেকে ঘুরে আসি
প্রথম দিন আমরা দেবতাখুম গিয়েছিলাম। দেবতাখুম টুরিস্ট স্পট হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে খুব বেশিদিন হয়নি। বান্দরবান শহর থেকে রোয়াংছড়ি-কচ্ছপতলি পর্যন্ত চাঁন্দের গাড়িতে গিয়ে এরপর প্রায় ঘন্টা দেড়েকের হাঁটা পথ পেরিয়ে শহর থেকে প্রায় ৩০-৩২ কিলোমিটার দুরের এই ঝর্ণা। একদিনেই ঘুরে আসা সম্ভব। এই যাত্রায় বান্দরবান শহর থেকে কচ্ছপতলিতে যাওয়া আসায় চান্দের গাড়ি প্রতি মোটামুটি ২০০০ টাকা নেয়। প্রতিটা চান্দেরগাড়িতে ১০ থেকে ১২ জন অনায়াসে বসা যায়। তবে সাধারণত এইসব যাত্রায় দাঁড়িয়ে যাওয়ায় উৎসাহী মানুষ বেশি পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে ১৫জন যাওয়া কোনো ব্যাপারই না।
দেবতাখুমের এই ছবির সাথে বাংলাদেশের আর কোনওকিছুই মিলবে না।
আমাদের পরিচিত প্রতিবেশের বাইরে একদমই অন্যরকম এই ঝর্ণার পানি বের হয়ে আসে দুইপাশে খাড়া পাথুরে পাহাড়ের মাঝখানে ২০-২৫ ফিটের সরু এক চ্যানেল দিয়ে। প্রায় ৬০০ ফিট দৈর্ঘের এই চ্যানেলে কোনোসময়ই বোধহয় সূর্যের আলো আসতে পারে না। ফলে এই চৈত্রেও পানি ছিলো হিমশীতল এবং যথারীতি স্বচ্ছ। এখানকার গভীরতা সময়ভেদে ৫০ থেকে ৭০ ফিট হয়।
বান্দরবান শহর থেকে দেবতাখুম যেতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই গাইড নিতে হবে। গাইড ছাড়া এন্ট্রি নিষেধ। নিয়মানুযায়ী প্রতি ১০জনের জন্য ১জন গাইড প্রযোজ্য। গাইড প্রতি সাধারণত ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা নেয়। ১০ জনের দুয়েকজন বেশি হলে গাইড আপত্তি করে না। তবে কচ্ছপতলি আর্মি ক্যাম্পে রিপোর্ট করার সময় এ বিষয়ে খোঁজখবর নেয়।
কিন্ত বাংলাদেশে অতি প্রয়োজনীয় আইনই প্রায়শ বেলাইনে চলে এটা তো সাধারণ বিষয়। টিমে ১০জনের চেয়ে দুই পাঁচজন বেশি হলে কিভাবে সামলাবেন, সে আপনার বিজনেস। আমরা ১৫জন ছিলাম, আমার বেলায়, হাবাগোবা চেহারা দেখে দয়ার্দ্র হয়ে ছেড়ে দিয়েছিলো...
কচ্ছপতলিতে রিপোর্টিংয়ের জন্য একটা চার্ট করে নাম, পেশা, ফোন নাম্বার, ঠিকানা এবং বাড়ির কারও অল্টারনেটিভ ফোন নাম্বার এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি দিতে হয়। এর আগে রোয়াংছড়িতে বিজিবিক্যাম্পেও একইভাবে রিপোর্টিং করতে হয়। সুতরাং এসব ফটোকপি ঢাকা থেকে নিয়ে যাওয়াটাই উত্তম। ওখানে দৌঁড়ের উপর থাকতে হয়, ফটোকপি টপি করার সময় পাবেন না, তাছাড়া জেরক্স মেশিনও পাওয়া যাবে না।
এই ফরম্যাটেই ইনফরমেশনগুলো দরকার হয়
কচ্ছপতলিতে আমরা দেখলাম একটা রাস্তার নির্মাণযজ্ঞ চলছে; যেটা দেবতাখুমের আরও কাছে চলে যাবে বলে শুনলাম। তবে আপাতত গাড়ি এখানেই ব্রেক। এটা একটা বাজার ধরণের। দোকানপাট আছে। খাবার হোটেল আছে, স্থানীয় জনপদও আছে। দেবতাখুমের শুরুতেই ভাতটাত খাবার জন্য দুটো টং দোকান আছে, আপনি চাইলে ওখানে খেতে পারেন। তবে কমন প্রাকটিস হলো কচ্ছপতলির আর্মিক্যাম্পে রিপোর্টিং সেরে এখানকার হোটেলে পছন্দসই খাবারের অর্ডার করে যাওয়া, তারপর ফেরার পথে দুপুরের খাবার খাওয়া। শেরাটনের খাবার তো আর এখানে পাওয়া যাবে না, তবে ১৫০-২৫০ টাকায় যা পাওয়া যায় সেটা এই ঘন্টা দেড়েক পাহাড়ি পথ হেটে আর দেবতাখুম ঝর্ণায় ভেলা চালানোর পর অমৃতর চেয়ে কম কিছু মনে হয় না।
কচ্ছপতলিতে ছোট ছোট দোকানে পাহাড়ে সৌখিন হাঁটিয়েদের জন্য প্রয়োজনীয় স্যান্ডাল, থ্রি কোয়ার্টার, ক্যাপ বা এ ধরনের গেজেট এন্ড গিয়ার পাওয়া যায়। এখানকার স্থানীয় জনগোষ্ঠী এখনও অন্য অনেক ট্যুরিস্ট স্পটের মানুষের মত ধান্ধাবাজ হয়ে পারেনি, ফলে এসব দ্রব্যাদির দাম যথেষ্ঠই রিজনেবল। তাই আমার পরামর্শ, ঢাকা থেকে ঘাড়ে করে এসব বয়ে নেয়ার কোনো মানে নেই।
দেবতাখুমের আরও একটা ছবি। এ রকম গীরিপথ ধরে ভেলায় করে ঝর্ণার উৎসমুখে যেতে হয়।
আমার মতে, দেবতাখুম এবং নীলগিরিসহ বান্দরবান ভ্রমণের জন্য দুইদিন দুইরাত চমৎকার কর্পোরেট সময়। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে জার্নি করে পরের দুইদিন এসব যায়গা দেখে শনিবার রাতে ঢাকায় রওনা হয়ে পরদিন সুন্দর অফিস করা যায়।
যাই হোক, কচ্ছপতলিতে খাবারের ব্যবস্থা করে হাঁটা ধরুন দেবতাখুমের দিকে। দেবতাখুম পৌঁছুতে মোটামুটি দেড়ঘন্টার মতো সময় লাগবে। পাহাড়, বন, নদী ঝিরির পাশ দিয়ে হাটতে হবে, ঝিরি পারও হতে কয়েকবার। যে ঝিরি বা নদীর কুল ধরে আমরা হাটছিলাম, পানি বেশি থাকলে সে নদি ধরে অনেকখানি বোটে যাওয়া যায় বলে শুনলাম।
পথে আমরা কাছাকাছি যায়গায় এরকম দুটো আদিবাসী পাড়া পেয়েছিলাম। এই পাড়াগুলোতে মাতৃতান্ত্রিক ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর বসবাস
পথে দুয়েকটা আদিবাসী পাড়া পাওয়া যাবে। এভাবে একসময় শীলবাঁধা পাড়ায়। এই পাড়া থেকে দেবতাখুম প্রায় ৩০ মিনিটের পথ। এরপর আর কি! শীতল ঝর্ণার পানিতে সাতার কেটে বা ভেলা চালিয়ে ঘুরে আসুন উৎসমুখ পর্যন্ত। এখানে ভেলা এবং লাইফজ্যাকেটের ব্যবস্থা আছে। জনপ্রতি ১০০ টাকা। তবে বর্ষার বাড়বাড়ন্ত সময়ে ওই ঝর্ণায় ভেলা চালানো আদৌ সম্ভব কি না কে জানে!
অভিজিৎ দাসের তোলা এই ছবিটি নেয়া হয়েছে উইকি থেকে।
এখন শুষ্কসময় হওয়াতে এবং আমাদের মধ্যে ব্লগার মরুভূমীর জলদস্যু, রাজীব নুর ভাই বা মনিরা সুলতানা আপার মত ফটোগ্রাফার না থাকাতে কিছু ছবি ইন্টারনেট থেকে ধার করতে হলো। তাছাড় লেখাটা তৈরীতে কিঞ্চিত সহায়তা নেয়া হয়েছে এই সাইট থেকে। দেবতাখুমে পানির মধ্যে আমি একটা পুজোর একটা অস্থায়ী বেদির মত দেখেছিলাম। ভাষ্যমতে, এখানে মাছের দেবতাকে পুজো দেয়া হয়, যে কারণেই এই ঝর্ণার নাম দেবতাখুম। কিন্তু ইন্টারনেটে কোথাও এই তথ্যের সপক্ষে কোনো প্রমাণ পেলাম না।
একটা কথা, আমরা যেহেতু গ্রুপে গিয়েছিলাম, তাই আমার অভিজ্ঞতা মোটের উপর গ্রুপের জন্যই প্রযোজ্য। এছাড়া একলা বা দুই তিনজন মিলেও নিশ্চয় যাওয়ার ব্যবস্থা আছে, সেক্ষেত্রে গাইডই আপনাকে হেল্প করবে। একা যান বা চৌদ্দজন, গাইড আপনাকে নিতেই হবে।
পরবর্তীপর্বে নাফাখুমে যাওয়ার আমন্ত্রণ।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:৩৭