somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আওয়ামী মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হতাশ সেকুলারিজম

২০ শে অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৩:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[গত ১৮ অক্টোবর আওয়ামী মন্ত্রীসভার বৈঠকে “ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলও নিষিদ্ধ করা হবে না। রাষ্ট্রধর্ম ইসলামও থাকবে” – বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে মিডিয়ায় খবর বেরিয়েছে। বন্ধু নুরুজ্জামান মানিক এবিষয়ে হতাশা ব্যক্ত করে একটা পোষ্ট দিয়েছেন। Click This Link
ঐ পোষ্ট আর মন্তব্য-জবাবগুলো পড়তে পড়তে যে কথাগুলো ভাবছিলাম তাই এখানে আলাদা পোষ্ট আকারে তুলে ধরলাম।]

ভন্ড ও ছদ্ম সেক্যুলারঃ
নুরুজ্জামান লিখছেন, এই "পোষ্টের বিষয় লীগ আর দালাল বুদ্ধিজীবিরা এতদিন ধরে ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে যা বলেছে তার সাথে আজকের পত্রিকার ঐ খবর সাংঘর্ষিক কিনা এবং যদি তাই হয় তবে লীগকে ভন্ড ও ছদ্ম সেক্যুলার বললে ভূল হবে কিনা ?" – এটা পোষ্টের পাঁচ নম্বর মন্তব্যে দেয়া জবাব থেকে নেয়া।
এই জবাব লিখে মানিক পোষ্টের ডিরেকশন কী সে সম্পর্কে পাঠকের জন্য একটা গাইড হাজির করেছেন। মুল পোষ্ট পড়ার পর থেকে অনেক দিকেই ভাবনা তাড়িত হচ্ছিল। ফোকাস হাতড়ে ফিরছিলাম। এই মন্তব্য আমাকে সাহায্য করেছিল। সেখান থেকে কথা শুরু করছি।
"লীগ আর দালাল বুদ্ধিজীবিরা" - এদেরকে মানিক "ভন্ড ও ছদ্ম সেক্যুলার" বলেছেন। কিন্তু আওয়ামী 'বুদ্ধিজীবিরা" বলতে যদি ধরেন শাহরিয়ার কবীরের কথা মনে ভেসে উঠে তবে আমার মনে হয় তাঁর প্রতি একটা অবিচারে লীগ দলের সাথে এক দড়িতে ফাঁসি দেয়া হয়ে গেল। আমি নিশ্চিত আওয়ামী লীগের এই সিদ্ধান্তে সেকুলার চিন্তাধারার প্রতীক শাহরিয়ার কবীরের বা তাঁর মত যারা ভাবেন, তারা সবচেয়ে বেশি হতাশ ক্ষুব্ধ হবেন। হয়ত পরবর্তীতে আমরা প্রকাশ্যে সে হতাশা ক্ষোভের কথা আমাদের জানাতে দেখব।
মানিক বা এখানকার অনেক পাঠক যারা এই খবর শুনে কষ্ট পেয়েছেন জানাচ্ছেন এদের সবার চাওয়া শাহরিয়ার এখনও প্রতিনিধিত্ত্ব করেন, অতীতে করেছেন। অন্তত টকশোতে আপনাদের সেক্যুলারিজম ধারণাকে প্রতিনিধিত্ত্ব করে শাহরিয়ার কথা বলেছেন, আমরা দেখেছি। আওয়ামী লীগ যে এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে তিনি হয়ত জানতে পেয়ে আগেই আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য অবস্থানের বিরুদ্ধে গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
শাহরিয়ারের সেক্যুলারিজম ধারণা চিন্তা আমার ঠিক মনে না হলেও সত্যতার খাতিরে আমার কাছে এটা মানিকের অবিচার, এক দড়িতে ফাঁসি দেয়া বলে ভাবতে হচ্ছে।
লীগের সাথে শাহরিয়ার কবীরদের মত চিন্তার সম্পর্কটা হলো, লীগ এসব "বুদ্ধিজীবীদের" পৃষ্টপোষকতা দিবে, নিজের দলের পক্ষে ব্যবহার করবে, ওদের তৈরি আবহটা কাজে লাগাবে; কিন্তু এটা লীগের অবস্থান সিদ্ধান্ত মনে করবে না। অজুহাত জানিয়ে এখন হয়ত শাহরিয়ারদেরকে বলবে, “সরকার চালাতে গেলে এত চরমপন্থা হলে চলে না” এজাতীয় কিছু একটা ভাষ্য।
তবে এর পাশাপাশি “প্রধানমন্ত্রী ধর্মভিত্তিক দলের সঙ্গে সরকার মতবিনিময় করবে বলেও মন্ত্রীদের জানিয়েছেন” – পত্রিকার এই খবরটা খুবই তাৎপর্যপুর্ণ মনে হয় আমার কাছে। এর মানে কী জামাতের সাথেও আওয়ামী লীগের কথা হবে? আমরা জানি না। দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
এবার সত্যতার কথা ছেড়ে অন্য দিক থেকে মুল পাঠ বিচারে যাব।
মানিকের লেখার "বুদ্ধিজীবীদের" কথা বাদ দিলে "ভন্ড ও ছদ্ম সেক্যুলার" থাকে কেবল মুল দল আওয়ামী লীগ। মানিকের লীগকে ভন্ড বলার দুটো কারণ হতে পারে। এক, আওয়ামী লীগ কথা দিয়ে সমর্থকদের তাতিয়ে, ব্যবহার করেছে আর এখন, কথা দিয়ে কথা রাখেনি সে জন্য। দুই, সেক্যুলারিজম ধারণাটা নিজেই ভন্ড, বাস্তবায়ন অযোগ্য, অপ্রয়োজনীয়, ধর্ম বিদ্বেষী এক অলীক ধারণা সে জন্য; সেটাই মন্ত্রীসভায় আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত দিয়ে প্রকারান্তরে প্রমাণ ও প্রকাশিত হলো।
মানিক সম্ভবত প্রথম কারণটাকে মিন করে ভন্ড বলছেন। আমি দ্বিতীয়টা। এই অর্থে সেক্যুলারিজম ধারণাকে প্রতিনিধিত্ত্বকারী শাহরিয়ার কবীর মত চিন্তাকে আমি বাস্তবায়ন অযোগ্য অবাস্তব, ধর্ম বিদ্বেষী বলে বিপদজনক ভাবনা মনে করি।
একটু সময় হাতে নিয়ে সাহস করে একান্তে দুদন্ড যদি নিজের সাথে নিজে আমরা ভাবতে বসতে পারি তাহলে টের পাব এই ভাবনাটাও নিজেই একটা সাম্প্রদায়িক ভাবনা। আমাদের অনেকের ধারণা ধর্মের নামে বিভেদ ভেদবুদ্ধি টানলেই কেবল সেটাকে সাম্প্রদায়িক বলে। ধারণাটা ঠিক না; একটা দিক মাত্র। কারণ সাম্প্রদায়িকতা ধর্মের নামে না হয়ে, বসনিয়ার অথবা রুয়ান্ডার মত জাত জাতীয়তা হতে পারে, গায়ের রঙ হতে পারে, শ্রমিক এলাকায় মানুষের দেশভুগোলে নোয়াখাইল্যা-কুমিল্লা ধরণের খাড়া করা বিভেদ হতে পারে - এক কথায় মানুষকে বিভেদমুলক যতধরণের চিহ্ন পরিচয় খাড়া করে ভাগ করা যায় তার যেকোন একটা বেছে নিয়ে যখন পরস্পর পরস্পরকে খতম, মেরে কেটে সাফ করা ছাড়া বিরোধের আর কোন সমাধান নাই মনে করে ঝাপিয়ে পড়া হয় এর সবধরণের রূপই সাম্প্রদায়িক চিন্তা, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি। ইংরাজীতে এর ভাল একটা প্রতিশব্দ চালু হয়েছে ক্লিনজিং; মেরে কেটে বিনাশ সাফা পরিস্কার করা। জামাতের ১৯৭১ সালের অপরাধের বিচার দেখতে চাই। দেখা দরকারও বটে। কিন্তু মুখে বিচার বলছি বটে কোর্টকাচারী ধরণের কিছু একটা, কিন্তু আসলে কী তা চাচ্ছি? নিজেই নিজের মনের ভিতর ঝাক মারতে পারলে হয়ত দেখব আমাদের অনেকের মনই একটা ক্লিনজিং দেখতে চাচ্ছে। জামাত ক্লিনজিং। রাস্তায় পিটিয়ে মেরে সাফ করা। তার মানে কী নিজের অজান্তে আমরা একেক জন সাম্প্রদায়িক চিন্তা রাজনীতির বাহক? সমাজ থেকে জামাতের বিনাশ লোপ পাওয়া মানে কী, একটা ক্লিনজিং চাইছি? হাতে ক্লিনজিং এর রক্তের দাগ?
আমার মনে হয় ঘটনা ঘটিয়ে পরে কয়েক প্রজন্ম ধরে পস্তানোর আগে আমাদের সাহস করে নিজের সাথে নিজের এবিষয়ে মোকাবিলা করা জরুরী। আওয়ামী মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্তে কেউ হতাশবোধ করেন বা না করেন অসুবিধা নাই, কিন্তু এটা খুবই গুরুত্ত্বপুর্ণ।

২। রাষ্ট্র ও সেকুলারিজম[/sb
সেকুলারিজম থেকে একটু সরে চলে গেছিলাম বোধহয়। ফিরছি আবার।
১৯৭২ সালের আমাদের সেকুলারিজমের ভাবনা তাগিদ বাস্তবতা, এমন কী আশির দশকের সেকুলারিজমের ভাবনার সাথে ২০০১ সালে ৯/১১ এর পরে ওয়ার অন টেরর এর আমেরিকান সেকুলারিজম বা বুশের সেকুলারিজমকে এক কথা ভাবা, মিলিয়ে ফেলা বিপদজনক। কারণ, আমেরিকান সেকুলারিজম - অদ্ভুত ভাবে সেটা সেকুলারিজমের নামে এক ধর্মযুদ্ধ, ক্রুসেডের লড়াই। ক্রুসেড লড়েও যদি নিজের সাম্রাজ্য, সভ্যতা আর ওর বড়াই রক্ষা করা যায় তবে তাই সই। আমাদের পুরানো ১৯৭২ বা আশির দশকের সেকুলারিজম অন্তত আর যাই হোক কোন ধর্মে ধর্মে যুদ্ধ, ক্রুসেডের লড়াই লড়েও কোন সাম্রাজ্য, সভ্যতা রক্ষার লড়াই ছিল না। এই প্রসঙ্গে আমার এই পোষ্টটা Click This Link পাঠক দেখেছেন কী না জানি না। ওখানে ১৪ নম্বর মন্তব্য থেকে একটা আলোচনা আছে দেখতে পারেন।
১৯৪৭ সালের দাঙ্গার চিহ্ন এতদিন পার হলেও আমাদের নতুন প্রজন্ম চাইলেও এর বাইরে থাকতে পারছে না। আমরা সব পারের সবাই নানা ভাবে এইসব দাগ ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া বয়ে বেরাচ্ছি। দেশ ভাগাভাগির পর এই অঞ্চলের কমিউনিষ্ট পার্টি এঘটনাকে মুল্যায়ন করে যে, সমাজে ধর্মের বিভেদে আছে এটাই এই নৃশংস দাঙ্গার মুল কারণ। ফলে সমাধান হলো, এমন এক সমাজের কথা ভাবা কল্পনা করা যেটা ধর্মবিহীন। ব্যাক্তিগত জীবনাচারে সেটা শুরু করতে হবে, যথেষ্ট না পারলে অন্তত ইউরোপের মত নকলে রাষ্ট্র থেকে ধর্ম দূরে রাখতে হবে।
কিন্তু সমস্যা হলো, ধর্মীয় সাংস্কৃতিক চিহ্ন বিহীন মানুষ কী সম্ভব? আর সব বাদ দিলাম আমরা দৈনন্দিন যেসব শব্দ ব্যবহার করে কথা বলি সেগুলো থেকে ধর্মীয় সাংস্কৃতিক চিহ্ন বিহীন বেছে বাদ দিয়ে কথা বলব – এটা কী সম্ভব? আর এর চেয়ে বড় কথা কোনটা ধর্মীয় সাংস্কৃতিক চিহ্ন তা নির্ধারণের উপায় কী? সে প্রশ্ন আছে। এছাড়া গুরুতর প্রশ্ন ধর্ম কী? কেবলই জীবানাচার নাকি তা চিন্তাও বটে? ফলাফলে ধর্মবিহীন সমাজ এক অলীক কল্পনা হয়ে থেকে গেছে।
তবু কমিউনিষ্ট পার্টির এই ভাবনা প্রগতিশীল বলে জায়গা করে নিতে পেরেছিল। এখন ভাটির সময় হলেও অনেকে এটা এখনও বহন করেন; বিশেষত আমেরিকাসহ সারা পশ্চিমের ধর্মযুদ্ধের আমলের প্রভাবে মলিন সে চিন্তায় আবার শান পড়ছে। এখন ঘটবা হলো, ঐ ধর্মবিহীন এক কাল্পনিক সমাজের কথা ভাবা শুধু নিজগুণে অলীক তাই নয়, কমিউনিষ্ট পার্টির দেশভাগ, দাঙ্গা বিষয়ে ঐ মুল্যায়নটাও ছিল ভিত্তিহীন। সমাজে ধর্ম ছিল বলে ধর্মের কারণে দেশভাগ বা দাঙ্গা হয় নাই। বৃটিশ-ভারত থেকে নিজেদেরকে নতুন রাষ্ট্রে আমাদের রূপান্তরের সময় সেই আসন্ন রাষ্ট্রে জনগোষ্টির সব অংশের স্বার্থ প্রতিনিধিত্ত্ব নিশ্চিত করে এমন একটা চিন্তায় আমরা নিজেদেরকে পুনর্গঠিত হয়ে এক রাষ্ট্রে হাজির হতে ব্যর্থ হয়েছিলাম। [জনগোষ্ঠিকে নতুন ভাবনায় রিকনষ্ট্রাকশনে সংগঠিত পুনর্গঠন করা আর নতুন রাষ্ট্র কনষ্টিটিঊট করা একই কথা দুই দিক থেকে বলা ] ফলাফলে বিরোধী দুটো স্বার্থ আকারে তা হাজির হয়েছিল। এখন এই বিরোধ বাইরে কী ডাকনাম বা নিক নামে নিয়ে হাজির হবে? মানুষে মানুষের বিভেদমুলক যে কোন চিহ্ন পরিচয় তা হতে পারে; ধর্ম সেখানে একটা চিহ্ন পরিচয় মাত্র। আমাদের ক্ষেত্রে সে অমীমাংসিত স্বার্থ বিরোধ ঘটনাক্রমে তা "ধর্ম" এই ডাকনামে হাজির হয়েছিল। কিন্তু তাই বলে জনগোষ্ঠি স্বার্থগত বিরোধ মানেই আসলে তা ধর্মের বিরোধ রূপে হাজির হবেই একথা সত্য নয়, একথার ভিত্তি নাই। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাবার পর পুরানো রাষ্ট্রে চেপে রাখা অমীমাংসিত স্বার্থ বিরোধ, প্রতিনিধিত্ত্বের বিরোধ জাতিগত একেক জাতের ডাকনামে নিজেকে বাইরে হাজির করেছে, ধর্মের ডাকনামে নয়। ভারতের আসাম পাঞ্জাবের বিরোধ, পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের বিরোধ ধর্মের বিরোধ নামে প্রকাশিত হয়নি, হয়ে নাই। বিরোধের গোড়া আর বিরোধের ডাকনাম, অর্থাৎ কী নামে তা হাজির হবে দুটো এক জিনিষ নয়। এই গোলমালে পড়া যাবে না। চিন্তায় এই গোলমাল করেছি বলে ধর্মকে রাষ্ট্রের জন্য মারাত্মক সমস্যা মনে হচ্ছে।
কাজেই ধর্মের কারণে দেশভাগ হয়েছে এইকথা সত্যি নয়, ভিত্তি নাই। এমনকি আমরা যখন বলতে শুনি, “ওখানে ঐ দেশে জাতিগত বিরোধ দাঙ্গা চলছে” – একথাটাও আপাত চোখে দেখা ভুল।
জনগোষ্ঠির মধ্যে জাত ভিন্নতা আছে। থাকতে পারে; কিন্তু সেটা থাকার জন্যই কোন জাতিগত বিরোধ দাঙ্গা ঘটছে এই দেখাটা ভুল। বরং জনগোষ্ঠির সব অংশের স্বার্থ, প্রতিনিধিত্ত্ব নিশ্চিত করে রাষ্ট্র একটি রাজনৈতিক সিষ্টেম প্রতিষ্ঠান রূপে হাজির হতে পারে নাই বলে, মানুষের বিভেদমুলক কোন না কোন একটা চিহ্ন ধারণ করে, যেমন জাতিগত ভিন্নতাকে বাইরের ডাকনাম হিসাবে গ্রহণ করে ঐ অমীমাংসিত স্বার্থ বিরোধ, প্রতিনিধিত্ত্বের বিরোধ ওখানে বাইরে হাজির হয়েছে। ফলে যেটাকে জাতিগত বিরোধ নামে আপাতভাবে মনে হচ্ছে ওটা জাতিগত নামে না হাজির হয়ে, ১৯৪৭ সালে আমাদের বেলায় যেমন ধর্মীয়, সাঊথ আফ্রিকার বেলায় যেমন গায়ের রং, বসনীয়া রুয়ান্ডার মত দেশের বেলায় জাতিগত ইত্যাদি যে কোন ডাকনাম গ্রহণ করে হাজির হতে পারত।

এবার ঊপরের এই কথাগুলোর প্রাসঙ্গিকতা ধরিয়ে দেই।
সমাজে ধর্ম আছে বলে সমাজে আমরা দাঙ্গা দেখেছি, আগামিতেও দেখব কাজেকাজেই রাষ্ট্রকে সযত্নে ধর্ম থেকে দূরে রাখতে হবে – উপরে আমরা দেখলাম একথার ভিত্তি নাই। ধরা যাক কোন সমাজে কোন ধর্ম নাই; তাহলেও ঐ সমাজ রাষ্ট্রে অমীমাংসিত স্বার্থ বিরোধ, প্রতিনিধিত্ত্বের বিরোধ থাকলে পরে তা জাতিগত বা অন্য কোন বিভেদমুলক চিহ্ন পরিচয়কে আকড়ে ধরে হাজির হবেই। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় তা প্রকাশিত হবার সম্ভাবনা ওর থেকেই যাবে। কাজেই সেকুলারিজম রাষ্ট্রের গায়ে থাকতে হবে তা নিশ্চিত করলেও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ঘটার সম্ভাবনা কারণ নষ্ট হচ্ছে না। আপতিকভাবে চোখে দেখা বসনিয়া রুয়ান্ডার জাতিগত দাঙ্গা, ভারতের আসাম পাঞ্জাবের বিরোধ, পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের বিরোধ সাঊথ আফ্রিকার গায়ের রং এর বিরোধ, ইত্যাদি ঐ দেশগুলোর রাষ্ট্রকে “সেকুলার রাষ্ট্র” বানিয়ে ফেলে কোন সমাধান পাওয়া যাবে না। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দেখতে পাওয়া এড়ানো অসম্ভব। আমাদের পাহাড়ি সমতলী বিরোধে বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে একেবারে আদর্শ সেকুলার বানিয়ে ফেললেও কোন সমাধান হবে না। দাঙ্গা অনিবার্য। যতক্ষণ না রাষ্ট্র অমীমাংসিত স্বার্থ বিরোধ, প্রতিনিধিত্ত্বের বিরোধ মিটাতে পুনর্গঠিত নতুন রাষ্ট্র না হয়ে উঠতে পারে।
তাহলে দেখা যাচ্ছে মুল সমস্যাটা ধর্মের সাথে রাষ্ট্রের নয়, জনগোষ্ঠির সব অংশের স্বার্থ প্রতিনিধিত্ত্ব নিশ্চিত না করে দাঁড়িয়ে থাকা রাষ্ট্রের। আর এদিকে এটা যদি ফেলে জিইয়ে রাখি তবে এটা গোদের উপর বিষ ফোড়া হলো ঐ সমস্যার উপর বাইরের প্রভাব। যেমন আমেরিকার ক্রসেড লড়াইয়ে আমাদেরকে সামিল করে নিতে, ওদের নিজের তৈরি সমস্যা আমাদের কাঁধে ফেলতে আমেরিকান সেকুলারিজমের বয়ান আওয়াজ তুলে আমাদের উস্কানি দিচ্ছে। এতে আমাদের পুরানো অমীমাংসিত সমস্যাগুলো তাল মিলিয়ে যা আগে মারমুখী ছিল না সেগুলো জেগে উঠতে চাইছে। এতে সেকুলার আর ইসলামী বলে শার্প দুভাগে জনগোষ্ঠির ভাগ হয়ে উঠা মারাত্মক বিপদজনক হবে। যার মানে ১। দাঙ্গা ক্লিনজিং এর ভাবনা সম্ভাবনা কাধে নিয়া আমরা ঘুরছি। ২, নিজেদের সমষ্টিগত গণস্বার্থ এর ভিত্তিতে এক্কাট্টা দাড়াতে না পারার কারণে বিভক্তিতে বিদেশী স্বার্থের গোলামী রাস্তা মুখ্য হয়ে উঠছে।

সেকুলারিজম না হলে আমাদের চলবে না এভাবে ভাববার আগে আমাদেরকে এদিকগুলো নিয়ে গভীরে ভাবতে হবে। আমরা অনেকে যারা ইসলামী রাজনৈতিক চিন্তা পছন্দ করি না তাদেরকে এই চিন্তাকে পরাস্ত করার লক্ষ্যে নিজের চিন্তার মুরোদ অর্জন ও সক্ষমতা দেখাতে হবে। শুধু গায়ের জোরে এটা পরাস্ত হবে না। পরাস্ত করার সেটা পথও না।

আমরা যদি অন্তত আমেরিকান সেকুলারিজম বাইরের এই প্রভাব থেকে এই মুহুর্তে নিজেদের দূরে রাখতে পারি তবে শ্বাস নেবার কিছু সময় মিলতে পারে। আমাদের পুরানো চিন্তার সমস্যা, রাষ্ট্রে জনগোষ্টির সব অংশের স্বার্থ, প্রতিনিধিত্ত্ব নিশ্চিত করে এমন এক পুনর্গঠিত রাষ্ট্র করে নিতে সময় পাব। নইলে কী হতে পারে তা ভাবতে পারি না।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৪:১৫
৪৫৬ বার পঠিত
১০টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

১. ২০ শে অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৪:০২

সবুজ সাথী বলেছেন: বরাবরের মতই মুন্সীয়ানা পোস্ট। অর্ধেক পড়েছি। বাকীটা সময় করে পড়ার ইচ্ছা রইল।

২০ শে অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৪:২৬

লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ সবুজ সাথী।

বাকী অংশ সময় করে পড়বেন আশা রাখি।

২. ২০ শে অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৪:০৫

মুখ ও মুখোশ বলেছেন: ভাল লাগল বেশ, অর্ধেক পড়েছি বাকীটুকু পরে। পোষ্টে +++

২০ শে অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৪:২৮

লেখক বলেছেন: আপনার কেন ভাল লাগল তা জানা থেকে বঞ্চিত রাখলেন।

৩. ২০ শে অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৪:৪৭

নুরুজ্জামান মানিক বলেছেন: ধন্যবাদ । আমার পোষ্টে দেয়া আমার লেখা "ধর্ম যার যার কিন্তু রাষ্ট্র হোক সবার " লিঙ্কে কিছু আলোচনা আছে , পড়ার আমন্ত্রন রইল ।



"বন্ধু নুরুজ্জামান মানিক এবিষয়ে হতাশা ব্যক্ত করে একটা পোষ্ট দিয়েছেন ।"



হতাশার প্রশ্ন আসে যদি আগে আশা থাকে , বিশ্বাস ও আস্থা থাকে ।আমি ভাল করেই জানি -‘আশা সে তো বেশ্যা মাত্র (ল্যু সুন ) । আমার পোষ্ট দুটি ও মন্তব্য পড়ে যদি মনে হয় আমি লীগের প্রতি আস্থাশীল ছিলাম তবে এটা আপনার বুঝার ভূল নয় বরং আমারই ব্যর্থতা হিসেবে মেনে নিলাম । আমার পোষ্ট আর মন্তব্যের দুই লাইন এখানে কোট করলাম:



সেক্যুলারিজম নিয়ে আওয়ামীলীগের বিভ্রান্তি ও ভন্ডামি নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই

এই খবরে হতাশ , খুব্ধ বা মর্মাহত হবার অবকাশ থাকলেও বিস্মিত হবার কিছুই নেই ।





"আওয়ামী 'বুদ্ধিজীবিরা" বলতে যদি ধরেন শাহরিয়ার কবীরের কথা মনে ভেসে উঠে"

কিন্তু ঐ পোষ্ট ও মন্তব্য লেখার সময় আমার কিন্তু তার নাম মনেই আসেনি , বিরাট ভূল হয়ে গেছে B-)/:)



লীগের সাথে শাহরিয়ার কবীরদের মত চিন্তার সম্পর্কটা হলো, লীগ এসব "বুদ্ধিজীবীদের" পৃষ্টপোষকতা দিবে, নিজের দলের পক্ষে ব্যবহার করবে, ওদের তৈরি আবহটা কাজে লাগাবে; কিন্তু এটা লীগের অবস্থান সিদ্ধান্ত মনে করবে না। অজুহাত জানিয়ে এখন হয়ত শাহরিয়ারদেরকে বলবে, “সরকার চালাতে গেলে এত চরমপন্থা হলে চলে না” এজাতীয় কিছু একটা ভাষ্য।



হ ।



এখন আমি অফিসে তাই আপাতত এটুকু থাকল । পরে আলাপে যোগ দিব । লীগের ভন্ডামির চেয়ে খোদ সেক্যুলারিজম নিজেই একটা ভন্ড ও ভ্রান্ত ধারনা কিনা সেই আলাপেই আপনার আগ্রহ টের পাচ্ছি কিন্তু সেক্যুলারিজম নিয়ে শাহরিয়ার কবিরের মতামতকে মানদন্ড ধরে আলাপ করতে চাইলে আমি সরি ।



আমার "ধর্ম যার যার কিন্তু রাষ্ট্র হোক সবার " লেখায় সেক্যুলারিজমের কিছু সংজ্ঞা ও মতামত দেয়া আছে । পোষ্টটি সামুতেও আছে , লিঙ্ক দিলাম এখানে

২০ শে অক্টোবর, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৩০

লেখক বলেছেন: আপ্নার নাম আমার বুঝার ভুল থেকে কেটে দিলাম।

শাহরিয়ার কবীর বলতে একটা ধারার চিন্তার প্রতীক মাত্র। এখানে সুনির্দিষ্ট শাহরিয়ার কবীর গুরুত্ত্বপুর্ণ না।



আপনার মন্তব্যে জন্য ধন্যবাদ জানাই।

৪. ২০ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ১১:৩৩

এম চৌধুরী বলেছেন: প্রিয়তে রাখলাম। ভাল করে পড়তে হবে। সময় নেই এখন।



একটা প্রশ্ন।

দেশের ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান। তাদের অধিকাংশই জানে না সেকুলারিজম জিনিসটা কি। তারা যখন দেখবে দেশের সরকার সংবিধান থেকে তাদের ধর্মকে তুলে নিচ্ছে, তখন তারা বিষয়টাকে সহজভাবে নেবে কি?

আরেকটা কথা, দেশের এখন হাজারো সমস্যা, যার কোন শেষ নেই। দেশে যানজট মারাত্মক, বিদ্যুৎ এর তীব্র সংকট, পানি গ্যাস ইত্যাদি প্রয়োজনীয় উপকরণের নিশ্চয়তা নেই, জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রনের মাঝে নেই। সবচেয়ে বড় সমস্যা এদেশের মানুষগুলোর বেঁচে থাকার নিরাপত্তা নেই। মানুষগুলো মরে। ট্রেনে কাটা পড়ে মরে, বাসের চাপায় মরে, লঞ্চ ডুবে মরে, বাস পানিতে ডুবে গিয়ে মরে, রাসায়নিকের আগুনে মরে, ভবন ধ্বসে মরে, মাটি চাপায় মরে, দুই দলের নোংরা সংঘর্ষের মাঝে পড়ে মরে, রাত বিরাতে খুন হয়ে মরে। দেশের মানুষগুলোর জীবনের কোন নিশ্চয়তা নেই।

এত সব সমস্যা কি সেকুলারিজম কিংবা ৭২'র সংবিধানে ফিরে যাব কি যাব না এসব ব্যাপারের আগে বিবেচ্য নয়?





আশা করি বিশ্লেষণ করে উত্তর দিবেন।



ভালো থাকুন। অনুসরণে রাখলাম।

২১ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ২:১৯

লেখক বলেছেন: দেশের মানুষ ১০০ ভাগ মুসলমান হলেও কনষ্টিটিউশনে রাষ্ট্র-ধর্ম বলে একটা কিছু থাকতে হবে বিষয়টা এমন না। মুল কারণ এর কোন প্রয়োজনীয়তা নাই। বরং বেকুবি, মানুষের কর্তব্যকর্মে ফাকি দিয়ে বদমতলবি সর্টকার্ট বাজি মারা লোকের জন্য রাস্তা করে দেয়া। এরশাদ এই অবদানটাই রেখে গেছেন।



কেন রাষ্ট্রে সংগঠিত হতে গেলে জনগোষ্ঠির কনষ্টিটিউশন দরকার? সেটা আগে পরিস্কার জানতে হবে। তাহলে নিজেই জবাব জেনে যাবেন। জনগোষ্টির সব অপরের সাথে মিলে একটা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রে জড়ো হতে চান, তাই নিজেদেরকে পরিচালনার জন্য একটা রাজনৈতিক সিষ্টেম গড়ে তুলার কথা ভাবতে হচ্ছে। কিন্তু পরস্পর সকলে কী বুঝাবুঝির উপর দাঁড়িয়ে রাষ্ট্র, ঐ রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গড়বেন অথবা গড়তে চান সেটা বুঝে নেয়া জরুরী।

এই বুঝাবুঝি আন্ডারষ্টান্ডিংটা আগে সবাইকে জানিয়ে সামাজিক রাজনৈতিক আন্দোলন লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে তা নিজেদের কাছে প্রতিষ্ঠা করতে হয়। প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন কীনা এটা জানা যায় যদি দেখেন ঐ রাজনৈতিক আন্দোলন লড়াইয়ের ফলে একটা গণক্ষমতা হাজির হয়ে গেছে। ক্ষমতা দেখা যায় না হয়ত কিন্তু টের পাওয়া যায়। এরপর সেই ক্ষমতা বলে জনগোষ্ঠির প্রতিনিধিদের সভা ডেকে বুঝাবুঝি গুলো লিপিবদ্ধ করে রাখাটাই কনষ্টটিউশন।



কনষ্টটিউশনে লিপিবদ্ধ করার কাজের এই অংশটা জরুরী এজন্য যে আপনি একটা ক্ষমতা তৈরি প্রক্রিয়ায় জড়িত হচ্ছেন। এখানে এমন ক্ষমতা নিশ্চয় আমি তৈরি করতে চাইবেন না যা আপনার উপরে কারও নিপীড়ক এক ক্ষমতা হয়ে তা হাজির হয়ে যায়।



এখন লক্ষ্য করেন, এই পুরা প্রক্রিয়াটায় একদিকে তা আপনার জনগোষ্ঠির সব অপরের সাথে মিলিত হয়ে এক শক্তি হবার ব্যাপার। আবার ঐ শক্তি আপনার নিজের বিরুদ্ধে ব্যবহারের কারও হাতিয়ার না হয়ে যাক এটাও বুঝে নেবার ব্যাপার সেটা।

এই বিষয়গুলো কনষ্টিটিউশনে একটা রাষ্ট্রধর্মের কথা লিখে রেখে নিশ্চিত করা যাবে না। দুটো সম্পুর্ণ ভিন্ন বিষয়। জনগোষ্ঠির ১০০ ভাগ একই ধর্মালম্বী হলেও এই বিষয়গুলো আপনা আপনি নিশ্চিত করা যাবে না। অখন্ড পাকিস্তান রাষ্ট্রে ইসলামী রাষ্ট্র বলে ঘোষণা ও মনে করে রাখা হয়েছিল। এতে কী পাকিস্তান রাষ্ট্র জনগোষ্ঠির সব অংশের স্বার্থ, প্রতিনিধিত্ত্ব করতে পেরেছিল? না ঐ নিপীড়ক রাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে পেরেছিল? এসব নিয়ে ভাবতে হবে।



তবে নিজের জনগোষ্ঠির মানুষকে এক্ত্র করার যে তাগিদের কথা বললাম সেটা কী বয়ান হাজির করে করবেন, মানুষও তা পছন্দ আগ্রহ করবে? এই মুল বয়ান তৈরি করতে গেলে এর জন্য একটা ভাব বা দার্শনিক ভিত্তি লাগে। লাগে এজন্য যে জনগোষ্ঠি হিসাবে আমরা মানুষ কারা, কী হতে চাই; মানুষ মানে কী, দুনিয়ার বাকী সব মানুষ, জীব জড় প্রকৃতির সাথে আমাদের সম্পর্ক কী, কর্তব্য দায় কী - এসবের ভাব বা দার্শনিক উত্তর দিতে পারতে হয়। ওর জন্য জ্ঞানবুদ্ধি সংগ্রহ করতে পুরানো জ্ঞান বা ওল্ড স্ক্রীপ্ট হিসাবে ধর্ম, পুরাণ, মিথ ইত্যাদির একটা প্রভাব ভুমিকা থাকবেই, যদিও বয়ান তাফসিরটা নতুন হবে। আপনি যে ধর্মেরই হোন না কেন সব রাষ্ট্রে এটা থাকবে। ইউরোপের আধুনিক রাষ্ট্রগুলোকে বোকার মত আপাত চোখে সেকুলার বলে বুঝা হলেও ওর বয়ান তাফসির এর মধ্যে খ্রীশ্চান ধর্ম থেকে আসা জ্ঞানবুদ্ধির ছাপ খুজলে বের করা সম্ভব।



সারকথায় ধর্মের ছাপ প্রভাব নতুন রাষ্ট্র গড়তে বয়ান তাফসিরে থাকবেই। আমাদের বেলায় ইসলামের ছাপ প্রভাব থাকবে, এটা সবচেয়ে স্বাভাবিক। কিন্তু এর মানে এটা নিজেদের ইসলামী রাষ্ট্র দাবী করা অথবা রাষ্ট্রধর্মের তিলক লাগানোর মত বদমতলবি সর্টকার্ট বাজি মারা না। গভীর জ্ঞানবুদ্ধির চর্চা সংগ্রহের বিষয়। যার মুল লক্ষ্য হলো, জনগোষ্ঠির মানুষকে একত্র করতে উপযুক্ত একটা বয়ান তাফসির দাঁড় করানো।



শেষ প্রসঙ্গেঃ

"সেকুলারিজম কিংবা ৭২'র সংবিধানে ফিরে যাবে কি না" - এসব বিষয় মানুষের বিষয়-আশয়ের জীবনের বাইরে মনে হলেও এগুলো জরুরী।

মানুষ মানে কেবল জীবের জীবনের কারণে জৈবিক না। ওর পরমের কর্তব্যও আছে। কেউ "সেকুলারিজম কিংবা ৭২'র সংবিধানে" এর মাধ্যমে তা পুরণের কথা ভাবছে, এই আর কী! ওর ভাল মন্দ বিচার আলাদা কথা।

৫. ২১ শে অক্টোবর, ২০১০ সকাল ৯:৪৬

নুরুজ্জামান মানিক বলেছেন: সেক্যুলারিজম নিয়ে আওয়ামীলীগের বিভ্রান্তি ও ভন্ডামি নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই



বিনীতভাবে আমার উপরের লাইনের প্রতি আবারও দৃষ্টি আকর্ষন করছি । এখানে ভন্ডামি ছাড়াও বিভ্রান্তি শব্দ আমি সচেতনভাবে ব্যবহার করছি । বর্তমান সরকারের কর্তা ব্যক্তিদের একেকজনকে একেক রকম ব্যাখ্যা আমরা দিতে দেখি । তারা যে সেক্যুলারিজম নিয়ে চেচামেচি করে মাঠ গরম করেন সে ব্যাপারে খোদ তাদেরই পরিষ্কার ধারণা আছে কিনা সে ব্যাপারে আমার সন্দেহ আছে । এই চিত্র আমরা মুজিবামলেও দেখেছি । আমি "ধর্ম যার যার কিন্তু রাষ্ট্র হোক সবার " লিখেছিলাম ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ । পরে সর্বজনাব বদরুদ্দীন উমর ১০ জানুয়ারি যুগান্তরে লিখেন-ধর্মনিরপেক্ষতার ক্ষেত্রে আ’লীগের ডিগবাজি



যা হোক,উপরে ৪নং কমেন্টে আপনার জবাব ভাল লেগেছে ।

৬. ২১ শে অক্টোবর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৫৮

পি মুন্সী বলেছেন: চিন্তার কারণ নাই মানিক, আমি আগেই বুঝেছি আপনি আওয়ামী লীগের সেকুলারিষ্ট না। তবে সেকুলারিজম নিয়ে একটা ধারণা আপনি পারসু করেন। কিন্তু আমি লিখার সময় সাধারণভাবে সেকুলারিষ্টদের কথা বলতে গিয়ে আপনাকে আলাদা করে আপনার আওয়ামী ভন্ডামির সমালোচনাটা স্পষ্ট করে রাখতে পারিনি।



আওয়ামি লীগের সেকুলারিজমের বিভিন্ন ব্যাখ্যা আছে কিন্তু ওর সারকথা হলো, ঐ ব্যাখ্যা গুলোর যেটা যখন নিজের ক্ষমতা রক্ষা করতে কাজে লাগে, সেকাজে ব্যবহার করা।

অর্থাৎ আগে ক্ষমতা এরপর ওকে কুক্ষিগত রাখতে স্বপক্ষে নানান কিসিমের "সেকুলার" ধারণা। উল্টাটা নয় যে, একটা সেকুলার ধারণা লীগের আছে যেটা সে নীতিগতভাবে আকড়ে ধরে এরপর সেটা ক্ষমতায় পারসু করে।



আমি আপনার লেখা, উমর সাহেবের লেখা আগে দেখেছি। কিন্তু আমার কাছে সেকুলারিজম ধারণাটা রাষ্ট্রে জন্য অপ্রয়োজনীয় যদি জনগোষ্ঠির সব অংশের স্বার্থ প্রতিনিধিত্ত্ব রাষ্ট্রে ঘটানো যায়। সেকাজটা সিন্সিয়ারলি করা হয় নাই বলেই আমাদের এই অঞ্চলের রাজনীতিতে যে ফুটা তৈরি হয়ে আছে তা সেকুলারিজম দিয়ে তালি মারার চেষ্টা করা হয়েছে। এতে সমস্য আরও ভয়াবহ করা হয়েছে। এরমাঝে আবার আমেরিকান সেকুলারিজমের ক্রুসেড নিজের পেটের কামড়ে আমাদেরকে উস্কানিতে তাতাতে হাজির হয়েছে।



আপনার "ধর্ম যার যার কিন্তু রাষ্ট্র হোক সবার " ধারণাটার সমস্যা হলো,

১, এখানে রাষ্ট্র "ধর্মমুক্ত" না হয়ে নতুন ধর্ম, নতুন ঈশ্বরে কাছে বায়াত নেয়। এই ঈশ্বর হলো পুঁজি।

২ এতে আর পাচটা ধর্মের যার যার যে পারলৌকিক দুনিয়ার ভাবনা আছে তা ঐ নতুন ঈশ্বরের দুনিয়াতেও অটুট থাকে।



পারলৌকিক দুনিয়ার কথাটা শুনলে আমরা বুঝে ফেলি এক ধর্মীয় আলাপ শুরু হবে এখন। কারণ ব্যাপারটা বোধহয় ধর্মীয় এমন একটা ভ্রান্তি বুঝ আমাদের মধ্যে কাজ করে।

এই বিচারে রাষ্ট্রকে পারলৌকিক দুনিয়ার ধারণা থেকে দূরে রাখার কথা ভাবি। আর সেজন্য সেকুলার রাষ্ট্র গড়তে প্রাণান্তকর কোশিশ করি। "ধর্ম যার যার কিন্তু রাষ্ট্র হোক সবার " বলে শ্লোগান দেবার পিছনের বুঝটা মনে করে, রাষ্ট্র ইহলৌকিক, সবার; আর পারলৌকিক দুনিয়া যার যার, ধর্মের।

এভাবে পুঁজি দুনিয়ার নতুন ঈশ্বর তার সাম্রাজ্য সাজাতে চায়। এই ভাবনাটা সেকুলার তো নয়, ঘোরতর ধর্মীয়। ভাব করছে পারলৌকিক দুনিয়ার দায়িত্ত্ব তার নয়; কিন্তু পারলৌকিক দুনিয়াটা সাথে না রাখলে তার সাম্রাজ্য অচল - এটা সে বুঝে।



আমাদের অবশ্যই পরলোকের সমস্যার সমাধান করতে পারতে হবে। দরকার, ইহলোকে পরলোকে কায়েম করা। কেন?



ইহলোকের বেইনসাফি, অন্যায়, অবিচার এবং এসবের কারণে মানুষের মনকষ্ট, দুংখ সাফারিং - এথেকে মুক্তি আমাদের দরকার।



ইহলোকের এই ব্যর্থতা থেকে পরলোকের ভাবনা ধারণার জন্ম। পরলোকে এর বিচার হবে। আল্লাহ এর বিচার করবেন। এই আমাদের বেচে থাকার শান্ত্বনা। আমাদের পারলৌকিক আকাঙ্খা। এই শান্ত্বনাটুকু আমাদের না থাকলে এত অবিচার, এত বেইনসাফির দুঃখে আমরা সবাই একের পর এক আত্মহত্যা করতাম হয়ত।

এখান থেকে বুঝার ব্যাপার হলো, মানুষের পারলৌকিক আকাঙ্খাটা আসলে কী? কী পেতে চায় সে? কেন পারলৌকিক আকাঙ্খা এরকম হয় ইত্যাদি।



এর একমাত্র সমাধান হলো, আমাদের পরলোকের আকাঙ্খা ইহলোকে বাস্তবায়ন করে দেখানে। ইহলোকে পরলোক কায়েম করা। ইহলোকের বেইনসাফি, অন্যায়, অবিচার বিরুদ্ধে লড়াই করা। ইনসাফের দুনিয়া কায়েম করা।



সেকুলার রাষ্ট্র ভাবনা ধর্মীয় ধারণার মত একইভাবে পরলোক ইহলোকের বাইরে গায়েবি কোথাও সে আছে এভাবে ফেলে রাখতে চায়। বোকামি করে নিজের ঘোরতর ধমীয় দিকটা দেখতে পায় না বলে নিজেকে শান্তনা দেয় এক সেকুলার রাষ্ট্র বলে।



অথচ ইহলোকে পরলোক কায়েম করা গেলে রাষ্ট্র ও ধর্মের বিভেদ বিরোধ নিয়ে ভাববার প্রয়োজন পড়বে না। কোনটা রাষ্ট্র আর কোনটা ধর্ম আলাদা করা মুশকিল হবে।



এসব নিয়ে আমার কোন এক পোষ্ট আলোচনা তুলেছিলাম অনেক আগে।

৭. ২২ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ৯:৩১

জামিনদার বলেছেন: আমাদের দেশে কোন কিছুরই পরিপূর্ণ অর্থ জানানেই। না ইসলাম, না স্যাকুলারিজম, না কমিউনিজম। যখন যেখানে যেটা ব্যবহার করে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করা যাবে তখন সেটাই হল এর প্রকৃত অর্থ। এভাবে সব কিছুই হালকা আবার সব কিছুই সময়মত গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠে। অনেক দিন আগে আমি রহমান পিয়ালের একটা লেখা পড়ে ছিলাম লেখাটার লিংক পাচ্ছিনা। সেটা হল শেখ মুজিবের স্যাকুলার ভাবনা। ধর্ম নিরপেক্ষতা ধর্ম হীনতা নয়। তাইলে আমি মনে করি নিরপেক্ষ শব্দটার অর্থ ক্লিয়ার হওয়া দরকার। মাঠে খেলোয়ার কোন দিন নিরপক্ষ থাকে না। নিরপেক্ষ থাকে আম্প‌্যায়ার। কিন্তু তারো একটা ব্যক্তিগত পছন্দ আছে যেটা তিনি প্রকাশ করেন না। এখন রাষ্ট্র বা রাষ্টের জনগণকে ধর্ম নিরপেক্ষ বললে কিভাবে বুজবো এটা ধর্ম হীনতা নয়।?



অ:ট: বিনীতভাবে বলছি আপনার পিক প্রোফাইল সম্ভবত বিসমিল্লা দিয়ে ক্যালগ্রাফি করা হয়েছে। সমস্যা হল এখানে একটা বক ছবি দেখা যাচ্ছে। আল্লার নাম+ বক= ??????

২৫ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ১২:৫০

লেখক বলেছেন: মাফ করবেন, একটু অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম তাই ফিরতে দেরী হলো।



যখন যেখানে যেটা ব্যবহার করে "পেটি সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থ" হাসিল করা যাবে তখন সেটাই হল এর প্রকৃত অর্থ। ওটা যে পেটি স্বার্থ তা আমাদেরকে অবশ্যই উদোম করে দেখিয়ে দিতে হবে।



বাংলাদেশ কীভাবে সেকুলারিজমে জড়িয়ে গেলঃ

বিশেষত ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের আগে আওয়ামী লীগ বা শেখ মুজিবের সেক্যুলার ভাবনা ছিল কীনা - এর জবাব হলো, না ছিল না। ঐ সময় আমাদের আলাদা হতে হবে এই ভাবনা পরিস্থিতির কারণে তা আমাদের মনে এতটাই ছেয়ে বসে ছিল যে আমাদের কাম্য আলাদা রাষ্ট্র কেমন হবে, সেক্যুলার হবে কি না, কেমন চাই সেটা সামাজিক চিন্তায় হাজির হতে পারেনি, ভাববার বিষয় ছিল না। এমনকি ব্যক্তি তাজউদ্দিনের মাথাতেও সেক্যুলার ভাবনা ছিল এমন প্রকাশ আমরা দেখি নাই। যদিও ব্যক্তি চিন্তায় কী ছিল এটাতে কিছু এসে যায় না যতক্ষণ ঐ চিন্তার সামাজিক হয়ে হাজির না হতে দেখি।



পরিস্থিতি বললাম এজন্য যে আনুষ্ঠানিকভাবে অটুট পাকিস্থান রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যে আমরা সমাধান চাই একথা স্বীকার করেই আমাদের আন্দোলন, নির্বাচন, লড়াই সংগঠিত হতে হয়েছিল।

ওর মধ্য আলাদা রাষ্ট্র করতে চাই, এর উপর আবার সেটা সেক্যুলার রাষ্ট্র চাই - একথা বলার কোন সুযোগই সেখানে ছিল না। তাহলে পাকিস্তান রাষ্ট্র সহজেই দেশদ্রোহী বলে ফাঁসি দিয়ে দিতে পারত।



এখানে আমার সারকথাটা হলো, জনগণের আন্দোলনের চিন্তা চৈতন্যে সেকুলারিজম এই জিনিষটাই বা কী এমন কোন ভাবনাই লেশমাত্র কোথাও ছিল না।



তাহলে সেক্যুলার চিন্তা চালু হলো কোথা থেকে? কখন থেকে?

এ নিয়ে আমাদের সমাজে ভারতের ষড়যন্ত্র বলে এক ধারণা চালু আছে। ষড়যন্ত্র দিয়ে ইতিহাস ব্যাখ্যা চলে না। ভারতের স্বার্থ প্রভাব অবশ্যই ছিল কিন্তু সেটা কোন ষড়যন্ত্র নয়।



১৯৭১ সালে ভারতকে যদি আমরা যুদ্ধে আমাদের পাশে দেখতে চাই তবে স্বভাবতই ভারত সবার আগে তার রাষ্ট্রস্বার্থের দিক থেকেই সে প্রস্তাব বিবেচনা করবে। কারণ এটা যেকোন রাষ্ট্রের নিজস্ব নিরাপত্তার প্রশ্ন, স্রেফ ভালবাসা আবেগ দিয়ে এটা নির্ধারিত হতে পারে না। তাই ঘটেছিল।

ভারতের চোখে একটা মুসলমান নতুন বাংলাদেশ রাষ্ট্র - এই উত্থান ভারত রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য সমস্যা হবে কী না - এটাকে ভারত কীভাবে দেখবে এই ভাবনাটাই ছিল ঐ সময়ের মুখ্য ইস্যু।

ফলে আমরা নিজেদের একটা “ধর্মনিরেপক্ষ রাষ্ট্র” এক তিলক লাগালে পরে কেবল সেই শর্তেই স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য ভারত যুদ্ধ জড়িয়ে পরতে রাজি হয়।



ঘটনাটা এভাবে সমাধা হয়ে ঘটবার জন্য আমাদের নিজস্ব সামর্থের সীমাবদ্ধতাই দায়ী। আমরা এমন শক্তিশালী ছিলাম না যে আমাদের যুদ্ধ আমরা নিজেরা একাই লড়তে পারি। আমাদের রাজনৈতিক লড়াই গণআন্দোলনের রাস্তা ধরে চলেছিল বলে শেষের দিকে কোন সশস্ত্র প্রস্তুতির আগেই ২৫ মার্চের পাকিস্তানের সামরিক হামলার মুখোমুখি হতে হয়েছিল আমাদের। এমনকি যুদ্ধ প্রস্তুতি নিয়ে কোন পরিকল্পনার স্তরেও আমরা সেসময় ছিলাম না।



আমরা যদি মন মেজাজে ও সশস্ত্রতায় সবল থাকতাম তবে ভারতের ইন্দিরা গান্ধীর সাথে তাজউদ্দিনের কথা বলার সময় ভারতের শর্ত ভিন্ন হত।

তবে একথা মনে রাখতে হবে, যেকোন পরিস্থিতিতে আমরা নিজস্ব ক্ষমতায় সবল হই আর না হই, ভারতকে আস্থায় না নিয়ে, আমরা ভারত রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারি এধারণা বজায় রেখে ভারতের পাশে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে জন্মাতে পারতাম না। সেক্ষেত্রে নিজেদেরকে সেক্যুলার বলে কবুল হয়ত করতে হত না, কিন্তু কোন না কোনভাবে ভারতকে আস্থায় অবশ্যই নিতে হত।



সারকথা হলো, শেখ মুজিব অথবা তাজউদ্দিন কত মহান সেক্যুলারিষ্ট ছিলেন বা ছিলেন না এই তথ্যে কিছু এসে যায় না। মুল বিষয় ছিল ক্ষমতার সমীকরণ – ভারতকে কিভাবে আমরা আস্থায় নিতে পারছি।

কোন রাষ্ট্র ওর পড়শি জনগোষ্ঠিকে আলাদা রাষ্ট্র হতে সহায়তা করতে পারে না যে নতুন রাষ্ট্র তার বিপদের কারণ হতে পারে।





আপনার অফটপিক আমার পিক প্রোফাইল প্রসঙ্গেঃ

এরকম কোন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে কখনও হতে হবে ভাবি নাই। ওটা বক তো নয়ই, বাস্তব দুনিয়ায় দেখতে পাওয়া সম্ভব এমন কোন কিছুর সাথে ওর মিল নাই। তবে অবশ্যই বিমুর্তভাবে পাখি।



দুনিয়াতে কোন পাখি নাই; আপনি আমাকে দেখাতে পারবেন না। দেখাতে চাইলে আপনাকে দেখাতে হবে বক, শালিখ, চড়ুই, ময়না ইত্যাদি কোন না কোন একটা বাস্তবে পাখির সাকার মুর্ত রূপ, যার কোনটাই কেবল পাখি না, বিমুর্ত পাখি না।

বিমুর্ত পাখি ধারণাকে রূপে, সাকারে ধরতে গেলে তা আর বিমুর্ত নিরাকার পাখি থাকে না। আমি নিরাকার পাখি চেয়েছিলাম; পাখি মুক্তির প্রতীক। নিরাকারে মুক্তি আমার কাম্য। তাই পিক প্রোফাইলটা ওরকম কিছু একটা। নিরাকার আর সাকার এর ধারণা, সমস্যা, সম্পর্ক যদি বুঝেন তাহলে আপনাকে আর প্রশ্ন করতে হবে না। একটা কাগজে আল্লাহ শব্দটা লিখার পর ঐ কাগজটা কী আল্লাহ হয়ে যায়? ভাবতে থাকুন।

আমার অনুমান calligraphy শব্দটা আপনাকে কিছুটা বিভ্রান্ত করছে। calligraphy মানে বড় জোড় হাতের সুন্দর আঁকিবুকি।

calligraphy -

[Early 17th century. < Greek kalligraphia "beautiful writing" < kallos "beauty" + graphein "write"]



ভাল থাকবেন।

৮. ২৫ শে অক্টোবর, ২০১০ দুপুর ২:০৪

সুবিদ্ বলেছেন: ১) বিসমিল্লাহ আদৌ কি সংবিধানের অংশ?? আমার মনে হয়না...

২) In God We Trust আমেরিকার motto, আমেরিকা কি তাতে ধর্মনিরপেক্ষতা হারিয়ে ফেলেছে??

৩) ব্রিটিশরাজ/রানী আজো চার্চের প্রধান।



সে হিসেবে আমাদের দেশে দৃশ্যমান অসঙ্গতিগুলো রাখা না-রাখা অথবা থাকা না-থাকা খুব বড় সমস্যা নয়। যেটা প্রয়োজন আমাদের চিরাচরিত হিপোক্রেসি বন্ধ করা আর সততা, দক্ষতা আর যোগ্যতার নিরিখে সিদ্ধান্ত গ্রহন আর তার বাস্তবায়ন...



সে আশার কপালে হয়তো গুড়েবালিই:(



এই সরকার আসার অল্প কিছুদিন পর আমি লিখেছিলাম...



দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আমাদের কি কি দিতে পারবেনা???



পড়লে খুশি হবো।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৩৮

লেখক বলেছেন: পড়লাম, ঠিকই বলেছিলেন।



হিপোক্রাসীর চেয়ে বড় বিষয় হলো উদ্দেশ্য অভিপ্রায়। মতলব ঠিক থাকলে কাজে ভুল হলে সে ভুল সংশোধন করা যায়; কিন্তু মতলব খারাপ হলে কিছুই করার থাকে না, একের পর এক সব ধরা খেতে থাকে।



নিয়ত বাধাটা গুরুত্ত্বপুর্ণ।

৯. ২৫ শে অক্টোবর, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৪৩

ত্রিভুজ বলেছেন: "অনেকের ধারণা ধর্মের নামে বিভেদ ভেদবুদ্ধি টানলেই কেবল সেটাকে সাম্প্রদায়িক বলে। ধারণাটা ঠিক না; একটা দিক মাত্র। কারণ সাম্প্রদায়িকতা ধর্মের নামে না হয়ে, বসনিয়ার অথবা রুয়ান্ডার মত জাত জাতীয়তা হতে পারে, গায়ের রঙ হতে পারে, শ্রমিক এলাকায় মানুষের দেশভুগোলে নোয়াখাইল্যা-কুমিল্লা ধরণের খাড়া করা বিভেদ হতে পারে - এক কথায় মানুষকে বিভেদমুলক যতধরণের চিহ্ন পরিচয় খাড়া করে ভাগ করা যায় তার যেকোন একটা বেছে নিয়ে যখন পরস্পর পরস্পরকে খতম, মেরে কেটে সাফ করা ছাড়া বিরোধের আর কোন সমাধান নাই মনে করে ঝাপিয়ে পড়া হয় এর সবধরণের রূপই সাম্প্রদায়িক চিন্তা, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি।"



সহমত।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ৮:০৮

লেখক বলেছেন: থ্যাঙ্কু।

অনেক দেরিতে আসলেন।

১০. ২৫ শে অক্টোবর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:০৩

একজন আমি বলেছেন:

+++++++

২৫ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ৮:৩৫

লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চিন্ময় ব্রহ্মচারী প্রভুকে গ্রেফতার করা হল কোন উদ্দেশ্যে?

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৯

আমার ধারণা চিন্ময় ব্রহ্মচারী প্রভুকে গ্রেফতার করা হয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার জন্য। ভালো উদ্দেশ্যে তাকে গ্রেফতার করা হয় নাই। চিন্ময় ব্রহ্মচারীর কথা বার্তা আমার ভালো লাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অসমাপিকা, ২২শ অধ্যায়

লিখেছেন মেহবুবা, ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫৬


২১ অধ্যায়: Click This Link

তোমাকে বলেছিলাম
----নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
"তোমাকে বলেছিলাম, যত দেরীই হোক,
আবার আমি ফিরে আসব।
ফিরে আসব তল-আঁধারি অশথগাছটাকে বাঁয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিন্দুরা কেন ভারতে যায়?

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ২৬ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩২



দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে তোমাদের বাড়ি-ঘর থেকে বের করে দেয়নি, তাদের প্রতি সদয় ব্যবহার করতে এবং তাদের প্রতি ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদের নিষেধ করছেন না।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইলিশনামা~ ১

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৬ শে নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৭


১৯৮৫ সালে ডক্টর মোকাম্মেল হোসাইন ‘ ব্রিটিশ কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে যেই রিসার্চ পেপারটা( থিসিস – এম এস এর জন্য) জমা দিয়েছিলেন সেটা এখানে মিলবে;
[link|https://open.library.ubc.ca/cIRcle/collections/ubctheses/831/items/1.0096089|Spawning times and early life history of... ...বাকিটুকু পড়ুন

৯০% মুসলমানের এই দেশ? ভারতে কতগুলো মসজিদ ভেঙ্গে মন্দির করা হয়েছে? গতকালও ভারতে মসজিদের পক্ষে থাকায় ৩ জন মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছে।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২৬ শে নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৪২
×