somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগের নীতিমালা কেমন?

১৬ ই অক্টোবর, ২০০৭ রাত ১১:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঈদে ভারতীয় মুসলিম এক বাঙ্গালী ভদ্রলোকের সাথে আলাপ হচ্ছিল। ভদ্রলোক এখন আমেরিকান নাগরিক এবং জানালেন সে হিসেবেই এখন ভারতে বিনিয়োগ করছেন। ভারত এখন এন আর আই তথা নন-রেসিডেন্ট ইন্ডিয়ানদের দেশে বিনিয়োগে প্রচন্ড উতসাহিত করছে এবং প্রচুর প্রবাসী ইন্ডিয়ান দেশে বিনিয়োগ করছেন। ভারতীয় ভদ্রলোকের কাছ থেকেই জানলাম ভারতে বিদেশী বিনিয়োগ হলে, মুনাফার শতকরা ৫০ ভাগ ভারত সরকার রেখে দেয় এবং বাকী ৫০ ভাগ আপনি বিদেশে নিয়ে আসতে পারেন। মুনাফার শতকরা ৫০ ভাগ ভারত সরকার রেখে দেয় তার মানে হল ওই ৫০ ভাগ ভারতেই আপনাকে পুনর্বিনিয়োগ বা খরচ করতে হবে, কোনভাবেই ভারতের বাইরে নিয়ে আসতে পারবেন না।

ব্লগে কিছুদিন আগেগ্রামীন ফোনঃ এক ছদ্মবেশী বহিরাগত লুটেরা শিরোনামের পোস্টে নানা আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছিল। দেশী নাম নিয়ে যে সব মোবাইল ফোন কোম্পানী বাংলাদেশে ব্যবসা করছে তার প্রায় সবই বিদেশী মালিকানাধীন (অন্তত সিংভাগ শেয়ারের মালিক)। আমি জানতে চাই, বাংলাদেশে বিনিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী, মুনাফার একটি নির্দিষ্ট অংশ কি দেশেই পুনর্বিনিয়োগ করতে হয় (হলে কত ভাগ?), নাকি মুনাফার পুরো টাকাই এই কোম্পানীগুলো বিদেশে পাচার করে?

আরও অবাক ব্যাপার এই রকম একটি দেশের স্বার্থবিরোধী নীতিমালা (আমি ধরে নিচ্ছি মুনাফা পুনর্বিনিয়োগ বিষয়ে কোন বাধ্যবাধকতা নেই যেহেতু কখনো শুনিনি) যেখানে আপনি পুরো মুনাফাই দেশের বাইরে নিয়ে যেতে পারেন- থাকা সত্বেও বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগের হার হতাশাব্যঞ্জক। এর মূল কারণ হিসেবে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দুর্বল অবকাঠামো ইত্যাদিকে আমরা সাধারণভাবে দায়ী করলেও এরকম একটি বিনিয়োগ নীতিমালা থাকাই প্রমাণ করে এর পেছনে বিশাল দুর্নীতিও জড়িত যেখানে পদে পদে রয়েছে ঘুষের দৌরাত্ব। ওয়ারিদ টেলিকমের লাইসেন্স পাবার পেছনে কোকো, লবী প্রমুখের বিশাল টাকা আত্বসাতের ঘটনা কিছুদিন আগেই পত্রিকায় এসেছে। চিন্তা করে দেখুন গ্রামীণফোন (ওরফে টেলিনর), ওয়ারিদ এসব বড় বড় কোম্পানীর কাছে এসব ঘুষের টাকা দেয়া কোন ব্যাপারই না। এসব দিয়ে দেশের মানুষকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে তারা বিদেশে দেশের টাকা পাচার করছে। পক্ষান্তরে প্রবাসী ছা-পোষা বাংলাদেশীরা যারা দেশে বিনিয়োগ করতে যান তারা বেশীরভাগই ঘুষের দৌরাত্বে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ঘুরপাক খেয়ে বিফল মনোরথ হয়ে ফিরে আসেন। মুনাফার শতভাগ হস্তান্তর তাদের কাছে ‘নাকের সামনে ঝুলানো একটি মূলা’ ছাড়া আর কিছুই না।

তবু আহবান জানাই, দেশকে ভালবেসে দেশে বিনিয়োগ করুন। বাংলাদেশের খ্যাতিমান জিন বিজ্ঞানী ডঃ আবেদ চৌধুরী বাংলাদেশে ‘কৃষাণ’ নামে একটি বায়োটেকনোলজী নির্ভর কোম্পানী স্থাপন করতে যাচ্ছেন। এটা প্রবাসীদের বিনিয়োগে মূলত একটি বাংলাদেশী কোম্পানীই হবে। বাংলাদেশ প্রতি বছর ৩ বিলিয়ন ডলারের চাল, ডাল, ভোজ্য তেল বিদেশ থেকে আমদানী করে। উন্নত কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে এসব পণ্য দেশেই উতপন্ন করে বিদেশী আমদানী নির্ভরশীলতা হ্রাস করাই এ কোম্পানীর উদ্দেশ্য। পাশাপাশি এটি আধুনিক গবেষণাগার স্থাপন করে বাংলাদেশী ছাত্র-শিক্ষকদের এ বিষয়ে গবেষণার সুযোগ করে দেবে। কোম্পানীটি আশা করছে আনুমানিক ৪০০ বাংলাদেশী নূন্যতম ৫০০০ ইউএস ডলার বা সমপরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করে কোম্পানীর শেয়ারহোল্ডার হবে।

এ ধরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। সেই সাথে নিন্দা জানাই যারা বিদেশী লুটেরাদের দেশে অবাধে লুট-পাটের সুযোগ করে দিচ্ছে। আশা করছি, অচিরেই দেশের স্বার্থবিরোধী এসব নীতিমালার পরিবর্তন হবে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০০৭ বিকাল ৪:৩০
১২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আরাকানে 'স্বাধীন মুসলিম রাজ্য' প্রস্তাব কতটা বাস্তবসম্মত ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:১২


বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী সম্প্রতি একটি ‘স্বাধীন মুসলিম রাজ্য’ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে, যা আসলে হাস্যকর এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতি, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা, আরাকান আর্মি , এবং চীনের ভূ-রাজনীতির ব্যাপারে সম্পূর্ণ অজ্ঞতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

১০০ টা নমরুদ আর ১০০ টা ফেরাউন এক হলেও একজন হাসিনার সমান নৃশংস হওয়া সম্ভব ছিলো না!!

লিখেছেন তানভির জুমার, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১২:৫২

সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর জন্য কবর খুঁড়তে হয়েছিলো ২ টা।
একটা না।
ফাঁসির ৪ ঘন্টা আগেও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী জানতেন না, আজকেই তাকে যেতে হবে।
ফ্যামিলি যখন শেষবারের মতো দেখা করতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিলিস্তিন নিয়ে এতো লাফালাফির কি আছে?

লিখেছেন অপলক , ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১:১০

ফিলিস্তিনে গত ৩ বছরে মারা গেছে এখন পর্যন্ত মাত্র ৫১ হাজার। বাংলাদেশে ১৯৭১এ মাত্র ৯মাসে মারা গেছে ৩ লক্ষ, যদিও শেখ মুজিব বলেছিল, ৩০ লক্ষ।
কোথায় ৫১ হাজার কোথায় ৩০ লক্ষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন ...

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:১৯





****
আরো দেখতে চাইলে ভেতরে আসেন ...







...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুগে-গুজবে বাংগালী....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:২৩

হুজুগে-গুজবে বাংগালী....

"হুজুগে-গুজবে বাংগালী"- বলে আমাদের একটা দুর্নাম প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে। গুজব আর হুজুগ যমজ ভাই।
গুজব বা হুজুগের সবকিছু মানুষ কিনতে পারে না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দ্যোতনা দেয় অন্ধ বিশ্বাস।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×