ঘড়ির কাঁটা রাত সাড়ে আট’টা তখন। অন্যন্যা বলছিল কেন যেন কিছু’ই তার ভাল লাগছিল না।
কেন? হঠাৎ হঠাৎ তোর হয় কি?
বুঝেও না বুঝার ভান করলে তারে বুঝানো যায় না।
হুম।
হুম হুম করবা না তো মেজাজ খারাপ হয়।
তোর মেজাজ যদ্দুর মনে পড়ে কোনদিন তো ভালই দেখলাম নাহ্ তো খারাপ কেমন হবে?
হলে দ্যান টের পাবা।
তোর মেজাজ খারাপ করতেই আমার ভাল লাগে, এইটা কি জানিস?
দুশমনের থেকে এর চেয়ে বেশী ভাল আর কি আশা করা যায়।
তাই নাকি?
হুম। একদম চুপ। লেকচার দিবা না। চান্স পেলে’ই হলো লেকচার র্স্টাট।
আহা্ শুন’না।
বলো।
আচ্ছা তোর কি মনে হয়না আমরা আমাদের জীবন’টাকে ব্যবসা বা ব্যবসার পণ্য মনে করি?
তা কেমন?
এই যেমন ধর তোর ভাল লাগে তেমন কিছু তুই করছিস যার কোনই অর্থ নাই। শ্রেফ তোর ভাল লাগা ছাড়া। ঠিক তখন কেউ যদি জিজ্ঞেস করে এটা কেন করছিস? কি লাভ হবে শুনি?
ওতো ঘ্যাঁন ঘ্যাঁন করো নাতো। কর্পোরেট জীবনাচারে সব’ই নির্ধারণ হয় লাভ ক্ষতির পাল্লায়। যেমন একটা উদাহরণ দেই - এই ধর তুমি হুম, তোমার ফ্যামিলিতে তুমি বড় কিন্তু তোমার উপার্জন কম বিদায় তুমি হয়তো সবার চাহিদা বা ইচ্ছের মূল্য রাখতে অপারগ হয়ে যাও। অপরান্তে তোমার ছোট বা -
জুনিয়র কেউ যদি তা করতে সক্ষম বা উতরে যেতে পারে তাহলে তাদের সম্মুখে তুমি তাচ্ছিল্যে’র কারণ হবে। এবং তোমায় শাসন করতেও দ্ধিধা কেউ করবে না। কারণ তুমি কর্পোরেট লাইফে পিছিয়ে পড়া নর্দমা।
তার অর্থ মানবিক মূল্যবোধ, অনুভুতি এসবের কোন মূল্য নাই, এটা বুঝাতে চাইছিস?
সময় বিচার করে লাভ ক্ষতির যেথায় তোমার সেই মূল্যবোধ আর অনুভূতি পুরান বইয়ের পাতায় ছাপানো অক্ষর শ্রেফ। আক্ষরিক অর্থে প্রয়োজন’টা হলো জীবনের মূল উপাদান। এই উপাদানে তুমি যত বেশী ঘনিষ্ট হবে ততই তুমি মূল্যবান হয়ে উঠবে। কারণ প্রয়োজনের বলয় বৃত্তের নির্দিষ্ট কোন অবস্থান নাই, যা অসীম সীমা রেখায় থাকে। তোমার তুমি’কে যত বেশী উজাড় করে দিতে পারবে বীণা বাক্যে তার নাম হয় উদরতা। চাই সে তুমি মরে যাও বলার কোন যোগ্যতা তোমার থাকবে না তুমি মরে যাচ্ছ। - অ্ন্যন্যা থামল এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে।
কি হলো?
মেজাজটাই সত্যি সত্যি খারাপ করে দিলে -
বাইরে খুব বৃষ্টি হচ্ছে চল ভিজি
যাও তুমি ভিজ্ আমার ইচ্ছে করছে না।
- কতদিন পর জানি না আজ বৃষ্টিতে ভিজলাম। অনেকটা পথ ভিজে ভিজে হাটলাম একা একা। কেন জানি খুব হাসলাম পাগলের মতো, আর নিজেই নিজেকে বলছি - বৃষ্টিতে ভেজা আমার কর্পোরেট লাইফ। রাত শেষ প্রায় মধ্যরাত তিনটা। রাস্তায় কোন গাড়ী চোখে পড়ছে না। রাস্তায় দাড়িয়ে কিসের অপেক্ষায় আছি তাও বুঝতে পারছি না। কর্পোরেট লাইফে কি কোন অপেক্ষা থাকে? খুব জানতে ইচ্ছে করছে। অন্যন্যা নিশ্চয় এতক্ষণে গভীর ঘুমে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:০১