উচ্চ মুল্যের বাজারেও অতি সস্তায় যা বিক্রি হয় আমাদের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় বাজারে তার নাম হলো বুদ্ধিজীবী। অতিব দুঃখের সাথে এবং পরিতাপের বিষয় তাদের জন্যে (বুদ্বি বাজারজাত করার জন্যে, যেমন পণ্য বাজারজাত করার জন্যে কত্ত কি হয়) কোনরকম বাজার ব্যবস্থা নাই বা রাখা হয় নাই। এটা অবশ্যই কমিউনিস্টের ভাষায় শ্রেণী বিভাজন যা সামাজিক আর রাষ্ট্রীয়ি আভিধানিক শব্দে পরিকল্পিত বৈষম্য। এরা আমাদেরই পরিবার সমাজ তথা রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
সবারই জানা আছে ক’দিন আগের এক মন্ত্রীর ‘খবিশ’ আর ‘বেয়াদব’ মন্তব্য নিয়ে সাংবাদিকরা আগ্নেগিরির স্ফুলিঙ্গের মতো করতে শুরু করলেন। যে ব্যক্তি স্কুল পার করতে পারেনি তার শিক্ষাজীবনে তার থেকে এর থেকে ভাল সম্বোদন যে আশা করছে তাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে বলবো বড় আহম্মক। কারণ এসব মানুষের অন্ধকার জীবন লুকিয়ে যখন একজন সাংবাদিক তাকে জনদরদী’র আসন দিয়ে মর্মস্পর্শী প্রতিবেদন তৈরী করেন তখন কি একবার নিজেকে প্রশ্ন করেন নিজে কোন অনৈতিক কাজ করছেন কি না?
সাগর-রুনি’র যে কারণে জীবন দিতে হলো তা নিয়ে কি এখন আর কোন সাংবাদিক
একবারের জন্যে চিন্তা করেন? করেন নাহ। কারণ এটা নিয়ে এখন আর মাতামাতি করে লাভ নাই। যারা মাতামাতি খুব বেশী করেছিলেন তাদেরকে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ এমন সন্তুষ্ট করে দিয়েছেন তার নিজের এবং পরের প্রজন্ম অন্তত কিছু না করেই উচ্চ বিত্তের জীবন-যাপন করতে পারবে। সাংবাদিকদের আন্দোলনেও অনেক নাটক। আপনারা নিজেদেরকে সমাজের দর্পণ হিসাবে জাহির করেন, সে দায়িত্বে কতটা সততার আর নিষ্ঠার সাথে পালন করছেন তার নমুনা অযস্র আছে যা হরহামেশাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
আমার এক বন্ধুর ছোট্ট একটা ঘটনা মনে পড়ল। সে যেখানে চাকরি করে সেখানে নাকি একটা অলিখিত নিয়ম চালু আছে। কাউকে চুরি করতে দেখলেও কিছু বলতে পারবে না। যদি হাতে নাতে ধরতে পার তো নিজের হিস্য’র অংশ নিয়ে চুপ হয়ে যাও। কারণ এমন অনেক প্রমাণ আছে অভিযোগকারী’ই চোর হয়ে গিয়েছে। অভিযোগকারীর উপর’ই চুরির আরোপ চলে এসছে। তার কারণ অনুসন্ধানে এই তথ্য পাওয়া গেল যে, “ভাগে কম পাওয়ায় এখন অভিযোগ করে নিজে ধোয়া তুলসিপাতা সাজতে এসেছে।”
উদাহরণ নম্বর ১ :
ডেসটিনি একদিনে তাদের ব্যবসার বিস্তার করে নাই দেশজুড়ে। হাজার কোটি টাকা তারা একদিনে লুপাট করে নাই। বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রের পুরানো নতিপত্র ঘাটলে বের হয়ে আসবে কোন কোন বাঘা বাঘা মন্ত্রী, আমলা, হোমড়া-ছোমড়া, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, সমাজের চিন্তাবিদ, প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়ে বিশাল মঞ্চে চেহারা আলোকিত করে বসতেন। তখন কোন সাংবাদিকের মনে হয়নি ডেসটিনির ব্যবসা যুচ্চুরি’র মতন। কেন মনে হয়নি তা কি এখন অনুমেয়? হঠাৎ করেই বিশাল একটা খবর ছেপে জাতিকে বিশাল এক ক্ষতির থেকে উদ্ধার করলো সাংবাদিক সমাজের এক প্রতিনিধি। লোকমুখে এমন খবর চাউর হয় দাবিকৃত আড়াই কোটি টাকা না পেয়ে সচেতন বিবেকের তাড়নার পরিচয় নিয়ে আসল। চোরের মায়ের উচা গলা বা বড় গলা একটা প্রবাদ আছে এক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম হবে না।
উদাহরণ নম্বর ২ :
হলমার্ক - সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা লোপাট করছে তাও কিন্তু একদিনে হয়নি। প্রিন্ট মিডিয় ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া অনেক উচা গলায় বলে থাকে তারা অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করে। হলমার্কের বেলায়ও ডেসটিনির ব্যতিক্রম হয়নি। সংবাদ প্রকাশ হলো যখন দাবীকৃত অর্থ নিশ্চয় পাওয়া যায়নি ঠিক তখন। দেশের স্বার্থ বিবেচনা করে যে সংবাদ করেছে বা ভবিয্যতে করবে এমন চিন্তা যে বা যিনি করছেন তিনি আমার বিবেচনায় পুরোপুরি না হলেও কিছুটা অন্তত মানষিক ভারসম্যহীনতায় আছেন। তার জ্বলন্ত উদাহরণ আমাদের অর্থমন্ত্রী স্বয়ং। কারণ তারই বক্তব্য কারো ভূলে যাওয়ার কথা নয় যে , “চার হাজার কোটি টাকা কোন বড় ব্যাপার নয়।”
শানে নুযুলঃ অর্থনৈতিক সম্পর্কীত যত সংবাদ প্রকাশ পায় তার পিছনে অন্ধকারময় এক যোগসুত্র থাকেই। যা পুরণ না হলে কলম সরব হয়। মোদ্ধাকথায় বুদ্ধির বাজারজাত করণে বাজারমূল্য নির্ধারণ। যা হয় অপরিনামদর্শী এবং সস্থা বিবেচনা প্রসুত।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:৫২